সমৃদ্ধ
'স্থিতিশীল, প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধ' বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত ভারত: প্রণয় ভার্মা
ভারতের সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ততার বাড়ানোর পাশাপাশি বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের নতুন মেয়াদে দুই দেশ তাদের অংশীদারিত্বে "অধিক গতিশীলতার" দিকে নজর রাখছে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, 'আমরা কানেক্টিভিটি ইস্যুগুলো নিয়ে অনেক গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়েও আলোচনা করেছি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত প্রণয় ভার্মার
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে চালু হওয়া মার্কিন ডলারকে উপেক্ষা করে রুপি রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ঐতিহাসিক আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য নিষ্পত্তি ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘এটা এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। কীভাবে এর সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয় করা যায় এবং সবার কাছে পৌঁছানো যায় তা আমরা খতিয়ে দেখছি। যদি তা করা যায়, তাহলে ডলার বা অন্যান্য মুদ্রার ওপর দুই দেশের নির্ভরতা কমে আসবে।’
তিনি বলেন, এই উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়ক হবে। উভয় পক্ষ সীমান্ত হাট নিয়েও আলোচনা করেছে।
আরও পড়ুন: ভারতের আইটেক কর্মসূচিতে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে: প্রণয় ভার্মা
ড. হাছান মাহমুদ গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের কাজ শুরুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যার মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে।
তিনি ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত ইস্যুগুলো সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সমাধানের উপরও জোর দিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা উত্তর-পূর্ব ভারতে পণ্য পরিবহনের জন্য মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন এবং এর কার্যকর সম্প্রসারণের জন্য আরও অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস উদযাপন মূল্যবোধের সর্বজনীনতা পুনর্ব্যক্ত করে: প্রণয় ভার্মা
কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা এ নিয়ে বিশেষ আলোচনা করেননি, বরং বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ নিয়ে কথা বলেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার প্রথম দ্বিপাক্ষিক ভারত সফরের পরিকল্পনার কথা জানান। তবে সফরের তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি বলেন জানান। পরিকল্পিত সফরের লক্ষ্য কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা। এছাড়া আগামী ১৭ জানুয়ারি উগান্ডায় বহুপাক্ষিক সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে মাহমুদের।
তিনি উগান্ডার কাম্পালায় ১৯ থেকে ২০ জানুয়ারি জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বের কাছে যোগ হলো ভারতের উপহার: প্রণয় ভার্মা
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের নতুন মেয়াদে দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্বে আরও গতি অর্জন করবে এবং জাতীয় উন্নয়নে আরও জোরালো অবদান রাখবে।
তিনি বলেন, 'সামগ্রিকভাবে আমি মনে করি, আমরা খুবই আশাবাদী ও আত্মবিশ্বাসী, এই সরকারের নতুন মেয়াদে আমরা আমাদের দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব আরও বেশি গতিশীল হবে। উন্নয়ন অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে আমাদের জাতীয় উন্নয়নে আরও জোরালোভাবে অবদান রাখতে সক্ষম হব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর হাইকমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, তারা সবসময় বলেছেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত অভিন্ন আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে পরিচালিত একটি 'স্থিতিশীল, প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধ' সমাজের জন্য বাংলাদেশের জনগণকে সহায়তা করতে এবং তাদের সঙ্গে কাজ করতে ভারত সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন অংশীদারিত্বে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে ঢাকা ও দিল্লির সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা: প্রণয় ভার্মা
নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক 'খুবই ভালো' হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রণয় ভার্মা। কূটনীতিক বলেন, দুই দেশের জন্য 'অত্যন্ত ইতিবাচক এজেন্ডা' এগিয়ে নিতে তিনি আগামী দিনগুলোতে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রত্যাশায় রয়েছেন তিনি।
যদিও এটি একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল, হাইকমিশনার বলেছিলেন যে তারা সম্পর্কের বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ‘আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে এবং আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে আগ্রহী।’
তিনি বলেন, গত এক দশকে দুই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সম্পর্ক কীভাবে 'অভূতপূর্ব গতি ও প্রবৃদ্ধি' অর্জন করেছে এবং কীভাবে এটি জনকেন্দ্রিক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে তা নিয়ে তারা আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন প্রণয় ভার্মা দম্পতি
উভয় পক্ষ সম্পর্কের সাম্প্রতিক কিছু অগ্রগতি ও উন্নয়ন অংশীদারিত্ব কীভাবে দুই দেশের জনগণকে উপকৃত করছে এবং কীভাবে এই সহযোগিতা উভয় পক্ষের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে তা নিয়েও আলোচনা করেছে।
হাইকমিশনার ২০২৩ সালে অনেক ইতিবাচক অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন। সে সময় দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি পাইপলাইন, দুটি রেলপ্রকল্প, একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ভারতীয় রুপিতে বাণিজ্য ব্যবস্থা চালু এবং ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমসহ বড় বড় প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ায় হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন: রমজানে আগাম পণ্য ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
এক্স (পূর্বে টুইটার নামে পরিচিত) অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা একটি বার্তায় তিনি বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী (বন্ধুত্ব) আরও গভীর করার জন্য কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি।
শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ ও রূপান্তরের আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
একটি সমন্বিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতির মাধ্যমে বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ ও রূপান্তরিত করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২৩ উপলক্ষে ইউনেস্কো, প্যারিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) এ আহ্বান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান শিক্ষার ক্ষেত্রগুলোকে একটি সমন্বিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতির মাধ্যমে সমৃদ্ধ ও রূপান্তরিত করতে হবে; যাতে সাক্ষরতা অর্জন করতে কেউ পিছিয়ে না থাকে।
ইউনেস্কো সদর দপ্তরে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে ইউনেস্কোর শিক্ষাবিষয়ক এডিজি, এমএস স্টেফানিয়া জিয়ানিনি এবং সেনেগাল, বেনিন এবং ইকুয়েডরের শিক্ষামন্ত্রীরাও অংশগ্রহণ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে, এইচএসসি এপ্রিলে: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এমপি ট্রান্সফর্মিং এডুকেশনের উচ্চ পর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য হিসেবে সম্মেলনে যোগ দেন।
সম্মেলনের মূল বিষয় ছিল পর্যাপ্ত অর্থায়নের মাধ্যমে যুব ও প্রাপ্ত বয়স্কদের সাক্ষরতার উপর গুরুত্ব দিয়ে এসডিজির টার্গেট ৪ দশমিক ৬ অর্জন করা। যা জীবনব্যাপী শিক্ষার সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করার উপায়গুলো অন্বেষণ করার যত প্রোগ্রাম, বিষয়বস্তু ও অনুশীলনগুলো কার্যকর করবে।
মন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন যে, আমাদের বিশ্ব, সমাজ, জাতিতে দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য শিক্ষাই শ্রেষ্ঠ আশা। আমাদের সমাজের সচেতনতাসহ সমালোচনামূলক মন আছে এমন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন স্তরের মানুষকে সহায়তা করতে হবে।
তাদের রূপান্তরমূলক ভূমিকা টেকসই ও শান্তিপূর্ণ সমাজের ভিত্তি গড়ে তুলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। সাক্ষরতা এই সমস্ত কিছুর পূর্বশর্ত হিসেবে কাজ করে কারণ এটি শিক্ষার প্রবেশদ্বার।
সাক্ষরতা আন্দোলনকে শক্তিশালী করার জন্য স্টেকহোল্ডার ও সম্প্রদায় বিশেষ করে যুবকদের সম্পৃক্ত করার ধারণাটি চালু করার কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী সম্মেলনে সাক্ষরতা প্রসারে বাংলাদেশে গৃহীত উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
তিনি জানান যে, ২০২৩ সালের সাক্ষরতা মূল্যায়ন সমীক্ষায় সাক্ষরতার হার ২০১১ সালে ৫৩ দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে ৭৩ দশমিক ৬৯ শতাংশে উন্নীত হওয়ার আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি প্রকাশ করা হয়েছে।
তিনি দর্শকদের জানান যে, এটি সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতার ভালো অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও জানান যে, আমরা জীবনব্যপী শেখার জন্য পলিসিতে মৌলিক সাক্ষরতার উপর গুরুত্বারোপ করছি। এটি সাক্ষরতাকে মৌলিক দক্ষতা বিকাশ এবং জীবনব্যাপী শেখার সুযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করে করা হবে।
আরও পড়ুন: স্কুলে বোরকা পরা নিষিদ্ধ করবে ফ্রান্স: শিক্ষামন্ত্রী
নতুন শিক্ষাবর্ষের বই ছাপাতে কোনো ধরনের সমস্যা নেই: শিক্ষামন্ত্রী