বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ক
বাংলাদেশ ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে’ উত্তরণে সফল হোক, চায় ইইউ
সফলতার সঙ্গে ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে’ উত্তরণ এবং সমমনা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশকে দেখতে চান বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রধান মাইকেল মিলার।
তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যেন এই উত্তরণে সফল হতে পারে, তা আমরা চাই। এটি বাস্তবায়নে কিছু বিষয়ের দ্রুত পরিবর্তন দরকার, আর এক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য রয়েছি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমরা দক্ষতা, বিনিয়োগ ও ধারাবাহিকতার অংশীদার হিসেবে এখানে (বাংলাদেশে) আছি।’
‘আমরা বাংলাদেশ ২.০ এর উত্থান এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদের পরও এ দেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব বজায় রাখতে চাই।’
‘বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে রাষ্ট্রদূত মিলার এসব কথা বলেন। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বে অব বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় কসমস গ্রুপের দাতব্য সংস্থা কসমস ফাউন্ডেশন এই সংলাপের আয়োজন করে।
প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ইইউ কেন অন্তর্বর্তী সরকারের সকল সংস্কার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করতে চায়, তা ব্যাখ্যা করেন রাষ্ট্রদূত মিলার। বলেন, ‘এই সম্পর্ককে সর্বোচ্চ পর্যায়ে এগিয়ে নেওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি আমাদের এটিও নিশ্চিত করতে হবে যে এখানে মৌলিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে, দেশের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে, আইনের শাসন সমুন্নত রয়েছে এবং সব (নাগরিক) অধিকার বৈষম্যহীমভাবে সবার জন্য প্রযোজ্য হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার সবার জন্য। এগুলো শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য নয়, বিশ্বের সবার জন্য; এক কথায় সর্বজনীন। সব ধরনের মানবাধিকার প্রাপ্তি যেমন এই দেশের সকল নাগরিকের অধিকার, তেমনই আমাদের (ইইউ) দেশগুলোর নাগরিকদেরও অধিকার।’
‘এই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থিতিশীলতা আনতেও এগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে; এক্ষেত্রে সকলের অধিকারই সমান। ফৌজদারি অপরাধের যৌক্তিক অভিযোগে আটক না হলে কাউকেই কারাগারে রাখা উচিৎ নয়।’
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন কসমস ফাউন্ডেশন ও বে অব বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট কূটনীতিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
এছাড়া বে অব বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ও কসমস ফাউন্ডেশনের সম্মানিত উপদেষ্টা ইমেরিটাস অ্যাম্বাসেডর (অব.) তারিক এ করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন, কসমস গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের সম্মানিত কনসাল মাসুদ খান, কসমস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাহার খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিশিষ্ট কূটনীতিক ও শিক্ষাবিদরাও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ইইউয়ের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ মূল্য দেয় জানিয়ে এনায়েতুল্লাহ খান বলেন, ‘আসুন আমরা কৌশলগত সহযোগিতা, অংশীদারত্ব ও বৈশ্বিক সম্পৃক্ততার একটি যুগের দিকে তাকাই। বাংলাদেশ ২.০ নামে একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। এ সময় ইইউয়ের অব্যাহত সমর্থন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রচেষ্টার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
২৮৯ দিন আগে
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফর বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ব্রাসেলস সফরকে ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এই সফর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সহায়তা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এই সফর ‘গুরুত্বপূর্ণ সময়ে’ হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ সফর। এটি আমাদের জন্য একটি অর্জন।’
কেন এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়- জানতে চাইলে মোমেন বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইইউ বাংলাদেশকে ৪০৭ মিলিয়ন ইউরো রেয়াতযোগ্য ঋণ ও অনুদান হিসেবে দেবে।
এর মধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো রেয়াতযোগ্য ঋণ হবে বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইইউ সাত সদস্যের একটি দল পাঠাবে এবং বাংলাদেশ বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জন্য অর্থ ব্যয় করবে না।
প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দেবেন, যেখানে বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিশ্বজুড়ে সরকারের প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
আগামী ২৫ ও ২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে এই ইভেন্ট।
মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২৭ অক্টোবর দেশে ফিরবেন।
তিনি বলেন, ফোরামের সাইডলাইনে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন সম্প্রতি জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান।
টেকসই উন্নয়ন এবং সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং সমান অংশীদারিত্বের মতো ইউরোপীয় মূল্যবোধের উপর জোর দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্লোবাল গেটওয়ে কৌশল। একই সঙ্গে পরিবহন ও সরবরাহ শৃঙ্খল, সবুজ শক্তি, আধুনিক টেলিযোগাযোগ, শিক্ষা ও গবেষণার বৈশ্বিক নেটওয়ার্কে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে বিশ্বজুড়ে দেশ ও অঞ্চলগুলোকে সংযুক্ত করে।
আরও পড়ুন: আ. লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ফখরুল ইসলাম মুন্সীর মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
বিদেশিদের ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি দেখা উচিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৭৭৫ দিন আগে