নির্বাসন
দক্ষিণ সুদানে এশীয় অভিবাসীদের নির্বাসন-চেষ্টার অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ সুদানে দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের নির্বাসনের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। এই ধরনের বিতর্কিত প্রচেষ্টা দক্ষিণ সুদানের রাজনৈতিক সংকট আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত ২১ মে যুক্তরাষ্ট্রের এক ফেডারেল বিচারক জানান, দক্ষিণ সুদানে অভিবাসী পাঠানো আদালতের পূর্ববর্তী আদেশ লঙ্ঘন করেছে। ওই আদেশে বলা হয়েছিল, কোনো ব্যক্তিকে তৃতীয় দেশে নির্বাসন দেওয়ার আগে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবর, মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি আটজন অভিবাসীকে দক্ষিণ সুদানে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। তাদের মধ্যে দক্ষিণ সুদান ছাড়াও কিউবা, লাওস, মেক্সিকো, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামের নাগরিক ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ড, ডাকাতি ও অন্যান্য গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত।
তবে দক্ষিণ সুদানের পুলিশ মুখপাত্র মেজর জেনারেল জেমস এনোকা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কোনো অভিবাসী দেশটিতে পৌঁছায়নি। তিনি বলেন, ‘যদি কেউ এসে থাকে, তাহলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। তারা দক্ষিণ সুদানের নাগরিক না হলে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন: মার্কিন বিমান হামলায় ইয়েমেনে কারাগারে ৬৮ অভিবাসী নিহত
২০১১ সালে স্বাধীনতা অর্জনকারী বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ দেশ দক্ষিণ সুদান। স্বাধীনতার পর থেকেই দেশটি রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক দুর্নীতি ও দারিদ্র্যের কবলে পড়ে। প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই চরম দারিদ্র্যসীমার মধ্যে বসবাস করে।
দরিদ্র হলেও দক্ষিণ সুদানে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ (তেল) রয়েছে। দেশটির অর্থনীতি তেল রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল হলেও অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে এই খাত থেকে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি অর্জিত হয়নি। বিদ্যুৎ, পাকা রাস্তা ও অন্যান্য অবকাঠামোর অভাব এখনো দেশের বেশিরভাগ এলাকায় প্রকট।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের দিক থেকেও দক্ষিণ সুদান অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর দেশটিতে ভয়াবহ বন্যায় ৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
এমন এক প্রেক্ষাপটে চলতি বছরের মার্চে দেশটির সরকার বিরোধীদলীয় নেতা ও প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়েক মাশারকে গৃহবন্দী করে। তার বিরুদ্ধে সমর্থকদের উসকানি দিয়ে বিদ্রোহের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।
মার্চের শুরুর দিকে মাশার-সমর্থিত ‘হোয়াইট আর্মি’ কমিউনিটি মিলিশিয়া নাসির কাউন্টিতে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে একটি ঘাঁটি দখল করে নেয়। মিলিশিয়ার দাবি, এটি ছিল আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ। তবে পাল্টা অভিযানে সরকার বোমা হামলা চালায় ও বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: শতাধিক অবৈধ অভিবাসীকে ভারতে পৌঁছে দিল মার্কিন উড়োজাহাজ
রিয়েক মাশারের দল এসপিএলএম-আইও দাবি করেছে, মাশারকে গৃহবন্দি করার মধ্য দিয়ে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সংঘটিত গৃহযুদ্ধ অবসানে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তি কার্যত ভেঙে গেছে। ওই গৃহযুদ্ধে মাশার-সমর্থিত নুয়্যার যোদ্ধা ও প্রেসিডেন্ট সালভা কিরের ডিনকা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ৪ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়।
চলতি বছর নতুন করে তৈরি হওয়া উত্তেজনায় শান্তিচুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ ইতোমধ্যে দক্ষিণ সুদানে সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কায় সতর্কতা দিয়েছে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট কির গত মঙ্গলবার (২০ মে) তার দ্বিতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন বোল মেলকে এসপিএলএমের উপ-সভাপতি পদে উন্নীত করেন। তাকে কিরের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে। কির পদত্যাগ করলে তিনি অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেন।
এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের, এমনকি কঙ্গোর এক নাগরিককে দক্ষিণ সুদানের নাগরিক বলে দেশটিতে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাগুলো নিয়ে দক্ষিণ সুদান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনার চলছে।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞার মুখে অভিবাসীবাহী মার্কিন ফ্লাইট অবতরণে অনুমতি দিল কলোম্বিয়া
১৯৪ দিন আগে
‘আরেকটি একতরফা জাতীয় নির্বাচন আ.লীগকে নির্বাসনে পাঠাবে’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আরেকটি একতরফা জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেবে।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি তাদের (আওয়ামী লীগের) উদ্দেশ্য কী। তারা ৭ জানুয়ারি বিভিন্ন স্থানে ব্যালট বাক্স স্থাপন করবে এবং সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণা করবে। এটা এমন কোনো নির্বাচন নয়, যা আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে।’
রবিবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে মান্না এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পেছনে আছে সরকারি সিন্ডিকেট: মান্না
মান্না বলেন, সরকার যতই চেষ্টা করুক না কেন প্রহসনের নির্বাচন না করে ভালো কিছু করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি, দেশের জনগণ এবং বিশ্ব সম্প্রদায় এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। আমি বলছি, ভালো দিন আসছে। কী ঘটতে পারে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করুন। এটা সরকার বা আওয়ামী লীগের নির্বাচন নয়, এটা তাদের নির্বাসনে পাঠাবে। এটি দেখার জন্য অপেক্ষা করুন।’
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নিষ্ক্রিয়তা ও রাজপথে অনুপস্থিত থাকার কারণে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই রবিবার দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের সমর্থনে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে যোগ দেন মান্না। এদিকে অসুস্থ থাকায় জোটের সাম্প্রতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেননি তিনি।
মান্না বলেন, ‘আমি এখনও অসুস্থ। আমি এখানে এসেছি কারণ আমার অবস্থান সম্পর্কে একটি প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। মাহমুদুর রহমান মান্না দালাল নন।’
মান্না বলেন, সরকার যাই বলুক না কেন, জনগণ বিরোধী দলের হরতাল ও অবরোধের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, তারা সরকার ও একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
বিভিন্ন দলকে বিভক্ত করে নির্বাচনের জন্য লোক নিয়োগের ‘অশুভ’ প্রচেষ্টার জন্য মান্না সরকারের সমালোচনা করেন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসের রাজত্ব মোকাবিলায় তারা দেশব্যাপী অবরোধ আরোপ করছে।
তিনি বলেন, ‘মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য আমরা মাঝে মাঝে বিরতি দিই। তবে আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।’
তিনি বলেন, জনগণ তাদের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আবার জেগে উঠছে।
এর আগে গণতন্ত্র মঞ্চের শতাধিক নেতা-কর্মী রাজধানীর বিজয়নগর ও তোপখানা রোড এলাকায় বিক্ষোভ করেন।
৪৮ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিনে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় আকস্মিক মিছিল বের করে।
এদিকে বিজয়নগর, নয়াপল্টন, পুরাতন পল্টন, পান্থপথ ও জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় বিক্ষোভ এবং সমাবেশ করেছে— গণতন্ত্র মঞ্চ, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদ, ১২ দলীয় জোট, বাম গণতান্ত্রিক জোট, জাতীয়তাবাদী সমন্বয় জোট, লেবার পার্টি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কার মতো হবে না: এম এ মান্নান
প্রধানমন্ত্রীর নতুন রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন প্রক্রিয়ার সমালোচনা মান্নার
৭৩৯ দিন আগে