কার্লো আনচেলত্তি
ব্রাজিলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ‘নিয়ে ফেলেছেন’ আনচেলত্তি
চলতি মৌসুমে অসংখ্যবার সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে জেরবার হয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি—রিয়াল মাদ্রিদ থেকে আপনার সরে যাওয়ার বিষয়ে কী বলবেন? মৌসুমের শেষের দিকে এসে একের পর এক ব্যর্থতায় এই প্রশ্নবাণে আরও বেশি বিদ্ধ হতে হচ্ছে এই ইতালিয়ান কোচকে। তবে কোপা দেল রের ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে রিয়ালের হারের পর সিদ্ধান্তটি তিনি নিয়েই ফেলেছেন—আর নয়, সরে যাওয়ার সময় এসেছে।
শনিবার রাতে চরম উত্তেজনাপূর্ণ এল ক্লাসিকো ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে ৩-২ গোলে হেরে কোপা দেল রের শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের। তার আগে গত ১৬ এপ্রিল আর্সেনালের কাছে দ্বিতীয়বার হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিতে হয় গতবারের চ্যাম্পিয়নদের।
বার্সেলোনার কাছেই স্প্যানিশ সুপার কাপও খোয়ানোর পর লা লিগায়ও খুব বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে নেই আনচেলত্তির দল। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা কাতালানদের চেয়ে চার পয়েন্টে পিছিয়ে দলটি। সামনে আর পাঁচটি ম্যাচ থাকলেও তার একটি আবার রয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে, তাদের মাঠেই। ফলে লিগ জয় বার্সেলোনার জন্য যতটা সহজ এবার, ঠিক ততটাই কঠিন হয়ে পড়েছে বর্তমান লা লিগা চ্যাম্পিয়নদের জন্য। আর তাতে করে শিরোপাহীন এক মৌসুম কাটানোর আশঙ্কায় পড়েছে ইউরোপের অত্যন্ত প্রভাবশালী এই ক্লাবটি।
একের পর এক শিরোপা হাতছাড়া হওয়ায় মাঝেমধ্যেই রিয়াল মাদ্রিদের ডাগআউটে আনচেলত্তির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ার রাতেই তিনি তাৎক্ষণিক বরখাস্ত হতে পারেন বলে গুঞ্জন ওঠে। তেমন কিছু হলে সবসময় তৈরি আছেন বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন আনচেলত্তি। তবে কোপা দেল রের ফাইনাল পর্যন্ত দেখার অপেক্ষায় ছিল সবাই। এমনকি এই ট্রফিটি জিততে পারলে চুক্তির বাকি সময়টুকুও, অর্থাৎ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত তিনি রিয়ালে টিকে যেতে পারেন বলে সমালোচক মহলে আলোচিত হয়। কিন্তু হতাশাজনক হারে সব হিসাব উল্টে গেছে।
এর মাঝে খবর এলো, বরখাস্ত হওয়া তো পরের কথা, তিনি নিজেই নাকি রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন।
এ বিষয়ে দ্য অ্যাথলেটিকের রিয়াল মাদ্রিদ বিটের সাংবাদিক মারিও কর্তেগানা লিখেছেন, লা লিগার যে পাঁচ ম্যাচের খেলা বাকি, তা সম্পন্ন করেই রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আনচেলত্তি। তার পরবর্তী গন্তব্য ব্রাজিল। জুন মাসের আন্তর্জাতিক বিরতি শুরু হওয়ার আগেই দেশটির জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে চলেছেন তিনি।
আর তা-ই যদি হয়, তাহলে আসন্ন জুন-জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়াল মাদ্রিদের ডাগআউটে দেখা যাবে না ৬৫ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান কোচকে।
আরও পড়ুন: অগ্নিঝরা ফাইনাল জিতে কোপা দেল রের শিরোপা পুনরুদ্ধার করল বার্সেলোনা
ব্রাজিলের সঙ্গে আনচেলত্তির সংযোগের এই বিষয়টি অবশ্য একেবারে নতুন নয়। গত দুই বছর ধরে রিয়াল বসকে জাতীয় দলের দায়িত্ব দেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে ব্রাজিল। এ নিয়ে একাধিকবার তার ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ট্রান্সফার গুরু ফাব্রিৎসিও রোমানো জানিয়েছিলেন, সবশেষ সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে আর্সেনালের বিপক্ষে হারের ওই ম্যাচের আগে ব্রাজিলের একজন দূত মাদ্রিদে আসেন। ম্যাচটির পর আনচেলত্তির ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগও করেন তিনি। তবে কোপা দেল রের ফাইনাল সামনে থাকায় তার অপেক্ষা বাড়ে।
দিয়েগো ফের্নান্দেস নামের ওই ব্রাজিলীয় ব্যবসায়ী শনিবার লা কার্তুহা স্টেডিয়ামেও উপস্থিত ছিলেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য অ্যাথলেটিক। এমনকি রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই আনচেলত্তির সঙ্গে তিনি মিটিং করেছেন বলেও খবরে বলা হয়েছে। আর সেখানেই আনচেলত্তি ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন বলে লিখেছেন কর্তেগানা।
ট্রেনিং গ্রাউন্ড সূত্রের বরাত দিয়ে এই সংবাদিক জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছার কথা ড্রেসিংরুম সদস্যদের জানিয়ে দিয়েছেন রিয়াল বস আনচেলত্তি। আশা করা হচ্ছে, জুন মাসেই তিনি ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেবেন। ফলে এই গ্রীষ্মে অনুষ্ঠিত হতে চলা ক্লাব বিশ্বকাপে তাকে কোচ হিসেবে পাবে না রিয়াল।
এক্ষেত্রে বিকল্প কোচের সন্ধানে নামতে হবে মাদ্রিদ জায়ান্টদের। দলটির সাবেক অধিনায়ক ও বায়ের লেভারকুজেনের বর্তমান কোচ শাবি আলোনসোকে বের্নাবেউতে টানার ইচ্ছার কথা জানা গিয়েছিল গত গ্রীষ্মেই। কিন্তু জার্মান ক্লাবটিতে তার কাজ তখনও শেষ হয়নি জানিয়ে তখন লেভারকুজেনেই থেকে গিয়েছিলেন আলোনসো। আনচেলত্তি যদি সত্যি সত্যিই চলে যান, সেক্ষেত্রে আলোনসো যদি নতুন মৌসুম শুরু হওয়ার আগে আসতে না পারেন, তবে অন্তর্বর্তী কোচ হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়ালের টাচলাইনে দেখা যেতে পারে রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবল বিভাগের পরিচালক সান্তিয়াগো সোলারিকে। অন্তত স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কাসহ দেশটির একাধিক ক্রীড়া সাংবাদিকের মত তা-ই। ফাব্রিৎসিও রোমানো ও কর্তেগানাও বলছেন একই কথা।
আসন্ন কয়েক ঘণ্টা রিয়াল মাদ্রিদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। সোমবার ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা আনচেলত্তি ও তার ক্যাম্পের। সেখানেই আনচেলত্তির থাকা-না থাকার বিষয়টির ফয়সালা হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ব্যাপক তোড়জোড় করেও হেরে গেল রিয়াল, সেমিফাইনালে আর্সেনাল
কর্তেগানা বলছেন, মূলত দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়েই রিয়াল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানে আসবেন এই কোচ। এরপরই তিনি ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন। এমনকি ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ পর্যন্ত ব্রাজিল ফুটবল দলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন বলে মৌখিকভাবে সম্মতও নাকি হয়েছেন।
অন্যদিকে, বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৪-১ গোলে হারের পর গত ২৮ মার্চ কোচ দরিভাল জুনিয়রকে বরখাস্ত করে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন। তারপর থেকে অভিভাবকহীন রয়েছে দেশটির জাতীয় ফুটবল দল। ফলে জুনের আন্তর্জাতিক বিরতি শুরুর আগে ফেডারেশন যদি আনচেলত্তিকে দায়িত্ব অপর্ণ করতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে বিকল্প নামও ঠিক করে রেখেছে তারা। এক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ সৌদি ক্লাব আল হিলালের কোচ হোর্গে হেসুস।
পিএসজি ছেড়ে ২০১৩ সালে প্রথমবার রিয়াল মাদ্রিদের হাল ধরেন আনচেলত্তি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত বের্নাবেউতে কাটানোর পর বায়ার্ন মিউনিখ-নাপোলি-এভারটন ঘুরে ফের ২০২১ সালে রিয়ালে জিনেদিন জিদানের স্থলাভিষিক্ত হন এই ইতালিয়ান।
দুই দফায় তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটি লা লিগাসহ রিয়ালকে মোট ১৫টি শিরোপা জিতিয়েছেন তিনি। বর্ণিল রিয়াল মাদ্রিদ ক্যারিয়ারে আনচেলত্তি দলটিকে সম্ভাব্য সব শিরোপার স্বাদ পাইয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (৩), লা লিগা (২), কোপা দেল রে (২), স্প্যানিশ সুপার কাপ (২), উয়েফা সুপার কাপ (৩), ক্লাব বিশ্বকাপ (২) ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ (১)।
আরও পড়ুন: আক্রমণভাগে পরিবর্তন আসায় দলে ভারসাম্যের অভাব দেখছেন আনচেলত্তি
২২১ দিন আগে
ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
হাজারো সংকটের মাঝেও কীভাবে লক্ষ্যে অটল থেকে, মাথা ঠান্ডা রেখে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়, তা-ই যেন দেখিয়ে চলেছেন হান্সি ফ্লিক। একের পর এক খেলোয়াড়ের চোট এবং ক্লাবের আর্থিক সংকটে নতুন খেলোয়াড় না পেয়ে একাডেমি লা মাসিয়া থেকে যুবাদের মূল দলে এনে জোড়াতালি দিয়ে শিষ্যদের মাঠে নামিয়ে চলেছেন এই জার্মান কোচ। অথচ এমনই তার দলের পারফরম্যান্স যা কোটি বার্সাভক্তকে ভুলিয়ে দেয়— দলটি ঠিক কতটা সংকটের মধ্যে সময় পার করছে। আর তেমনই এক স্মরণীয় ম্যাচ তিনি উপহার দিলেন রবিবার রাতেও।
সবশেষ কয়েক ম্যাচ উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে আসার মাঝে দানি অলমো ও পাউ ভিক্তরের নিবন্ধন নিয়ে জটিলতা, রোনালদ আরাউহোর দল ছাড়ার গুঞ্জন— সব মিলিয়ে ঝটিকাসংকুল সময়ের মাঝে কে ভেবেছিল, এই বার্সেলোনা সম্প্রতি ছন্দে ফিরতে শুরু করা রিয়াল মাদ্রিদকে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করবে? তাও আবার শেষের অন্তত ৪০ মিনিট দশজন নিয়ে খেলে? অথচ মাঠের খেলায় সেটিই বাস্তবতা হয়ে ধরা দিল। আর হাজারো সমস্যার মাঝে লাল-নীল জার্সির মায়ায় পড়া বিশ্বব্যাপী কোটি কুলেরের হৃদয় বিগলিত করা একটি রাত উপহার দিল দলটি।
পড়তে পড়তে অনেকেরই হয়তো চোখ ভরে উঠবে, কিন্তু মরুর বুকে যে বিজয়গাঁথা বার্সেলোনা রচনা করল, তা কি এসব উপমার তুলনায় কম কিছু?
৩২৫ দিন আগে
ভিনিসিউসের হ্যাটট্রিকে রিয়ালের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন
ঘরের মাঠে পরপর দুই ম্যাচ হারের পর জয়ে ফিরতে শিষ্যদের যে তাগিদ দিয়েছিলেন কার্লো আনচেলত্তি, তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই যেন দুর্বার ফুটবল খেলল রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়রা। আর তাদের নৈপুণ্য ও ক্ষিপ্র ফুটবলে ভেসে গেল ওসাসুনা।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে শনিবার লা লিগায় ওসাসুনাকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
এদিন চমৎকার এক হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছেন ভিনিসিউস। আর মৌসুমের প্রথম গোল পেয়েছেন সমালোচনায় জর্জরিত জুড বেলিংহ্যাম।
আরও পড়ুন: সমাধান খুঁজে পেয়েছি, এখন মাঠে দেখানোর পালা: আনচেলত্তি
তবে বড় জয়ের দিন দুর্ভাবনা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই ম্যাচে চোট নিয়ে প্রথমার্ধেই মাঠ ছাড়তে হয় এদের মিলিতাও ও রদ্রিগোকে। এছাড়া হাঁটুর চোটে বিরতির পর আর মাঠে নামা হয়নি লুকাস ভাসকেসের।
৩৯০ দিন আগে
রিয়াল-ডর্টমুন্ড: ধ্রুব লড়াইয়ে ম্যাচজুড়ে যা হলো
ম্যাচের আগে শিষ্যদের প্রতি দলগত ঐক্যের যে ডাক দিয়েছিলেন নুরি সাহিন, মাঠে তার প্রতিফলনের মাধ্যমেই প্রথমার্ধে দাপুটে ফুটবল উপহার দিয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কার্লো আনচেলত্তির মাস্টারমাইন্ডের কাছে মার খেয়ে যায় তার কৌশল। ফলে দুই গোলে এগিয়ে থেকেও শোচনীয় পরাজয় বরণ করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে গতবারের রানার-আপদের।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে খেলতে নামে গতবারের দুই ফাইনালিস্ট। প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে মাঠে নেমে শুরুতে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেও ঘুরে দাঁড়িয়ে ডর্টমুন্ডকে ৫-২ গোলে হারিয়েছে রিয়াল।
এদিন দুই অর্ধে দুই দলের দাপট দেখে দর্শক। প্রথমার্ধে রিয়ালের মাঠে তাদের ওপরই ছড়ি ঘুরিয়ে এবং কার্যকর রক্ষণাত্মক ফুটবলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের পর আক্রমণে এমন চাপ সৃষ্টি করে রিয়াল যে তা সইবার সামর্থ্য ছিল না ডর্টমুন্ডের রক্ষণভাগের। ফলে রিয়াল মাদ্রিদ একটি গোল পাওয়ার পরই বালির বাঁধের মতো ভেসে যায় দলটির রক্ষণ দেওয়াল।
আরও পড়ুন: রিয়ালের অগ্নিঝরা ফুটবলে পুড়ে ছাই ডর্টমুন্ড
প্রথমার্ধে যেখানে কেবল একটি শট গোলে রাখতে সক্ষম হয় রিয়াল মাদ্রিদ, দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে সেখানে আক্রমণই শানায় তারা ১৭টি, তার ৯টি শট ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে, প্রথমার্ধে নেওয়া ৬টি শটের পাঁচটিই লক্ষ্যে রাখলেও দ্বিতীয়ার্ধে ডর্টমুন্ড শটই নিতে পারে মাত্র দুটি; দুটিই অবশ্য লক্ষ্যে ছিল।
এদিন সাবধানি শুরুর পর ম্যাচের ৩০তম মিনিটে খেলা গড়াতেই ডর্টমুন্ডের অনবদ্য একটি দলীয় প্রচেষ্টা দেখে দর্শক। আর এতেই দারুণ একটি গোল পেয়ে ম্যাচে এগিয়ে যায় সফরকারীরা।
লম্বা লম্বা পাসে মাঠের এপাশ থেকে ওপাশে বল আদান-প্রদান করতে করতে রিয়ালের বক্সের সামনে উঠে আসে ডর্টমুন্ড। সেখান থেকে হঠাৎ বক্সের ভেতরে কিছুটা ডান দিকে বল ঠেলে দেন সেরিউ গিরাসি, তা ধরেই থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন ডনিয়েল মালেন।
এর পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ডর্টমুন্ডের জেমি গিটেন্স। এবার তাকে অ্যাসিস্ট করেন মালেন।
রিয়ালের একটি আক্রমণ প্রতিহত করে পাল্টা আক্রমণে উঠে ডান পাশ দিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন মালেন। এরপর বিপরীত দিকে ক্রস বাড়ান তিনি। তা দেখে পেছন থেকে দ্রুত এগিয়ে গিয়ে পা প্রসারিত করে বল একপ্রকার ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে দেন ২০ বছর বয়সী এই ইংলিশ উইঙ্গার। অবাক করার বিষয় হচ্ছে, রিয়ালের দুজন ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে তিনি ভেতরে ঢুকে পড়লেও তাকে মার্কই করেননি তাদের কেউ।
এর ফলে, রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বকনিষ্ঠ ইংলিশ ফুটবলার বনে যান গিটেন্স। ২০ বছর ৭৫ দিন বয়সে তিনি এ রেকর্ড গড়েন। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল লিডস ইউনাইটেডের অ্যালান স্মিথের দখলে। ২০০১ সালে ২০ বছর ১২৯ দিন বয়সে রিয়াল মাদ্রিদের জালে বল জড়ান তিনি। শুধু তা-ই নয়, প্রথম ডাচ ফুটবলার হিসেবে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে রিয়ালের বিপক্ষে একই ম্যাচে গোল ও অ্যাসিস্ট করার কীর্তি গড়েন মালেন।
৪০৮ দিন আগে
গত মৌসুমের হারের প্রতিশোধ নেওয়াই রিয়ালের লক্ষ্য: আনচেলত্তি
ঘরোয়া লিগে সব মিলিয়ে গত মৌসুমে মাত্র দুই ম্যাচ হারে রিয়াল মাদ্রিদ; দুটিই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে। তাই এ মৌসুমের প্রথম মাদ্রিদ ডার্বিতেই তার শোধ তুলতে চান আনচেলত্তি।
মাদ্রিদের সিভিতাস মেত্রোপলিতানো স্টেডিয়ামে রবিবার রাতে লা লিগায় মৌসুমের প্রথম মাদ্রিদ ডার্বিতে মুখোমুখি হবে স্প্যানিশ রাজধানীর দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী। এই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে আসেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের গত বছরের ভুলগুলো এবার কোনোভোবেই পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যাবে না। ওই শিক্ষাটা (গত মৌসুমের) আগামীকাল কাজে লাগাতে হবে। সেখানে (মেত্রোপলিতানোয়) খেলা সবসময়ই কঠিন।’
আরও পড়ুন: মাদ্রিদ ডার্বির আগে রিয়াল শিবিরে দুঃসংবাদ
কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে বেশকিছু খেলোয়াড় কিনে এবার লিগ জয়ের উদ্দেশ্যেই নতুন মৌসুম শুরু করেছে আতেলেতিকো মাদ্রিদ। হুলিয়ান আলভারেস, আলেকজান্ডার সোর্লথ, কনর গ্যালাগার, রবিন লে নরমান্দ, হুয়ান মুসোর মতো তারকা খেলোয়াড় দলে ভিড়িয়েছে তারা। সেইসঙ্গে ক্লাবটির পুরনো খেলোয়াড়রাও ছন্দে রয়েছেন। এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে পয়েন্ট টেবিলেও, রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে মাত্র দুই পয়েন্টে পিছিয়ে রয়েছে তারা। ৭ ম্যাচের চারটি জয় ও তিনটি ড্র করলেও হারেনি এখন পর্যন্ত। তাদের সে শক্তিমত্তার কথা ঝরল আনচেলত্তির কণ্ঠেও।
‘এ বছর তারা অনেক উন্নতি করেছে। বেশকিছু দারুণ খেলোয়াড়ও কিনেছে তারা। ফলে লিগের শেষ পর্যন্ত যে ওরা আমাদের ও বার্সেলোনাকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে যাবে, তা একপ্রকার নিশ্চিত।’
তবে নিজের শিষ্যদের বোঝাপড়া নিয়েও আত্মবিশ্বাসী ৬৫ বছর বয়সী এই কোচ।
‘আমাদের দলও আগের চেয়ে অনেক ঐক্যবদ্ধ ও কার্যকর এবং আগামীকাল তাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা দিতে হবে।’
তবে সর্বোপরি এমন একটি লড়াই হবে, যা থেকে দর্শক আনন্দ পাবে বলে মনে করেন আনচেলত্তি।
আরও পড়ুন: জয়ে আনচেলত্তির ৩০০তম ম্যাচ রাঙাল রিয়াল মাদ্রিদ
৪৩২ দিন আগে
জয়ে আনচেলত্তির ৩০০তম ম্যাচ রাঙাল রিয়াল মাদ্রিদ
কার্লো আনচেলত্তির কোচিং ক্যারিয়ারের ৩০০তম ম্যাচ ছিল এটি। তবে মাঠে নেমে দারুণ এক জয়ের মাধ্যমে তাকে গুরুদক্ষিণা দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়রা।
লা লিগায় সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে মঙ্গলবার রাতে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে দেপর্তিভো আলাভাসকে আতিথ্য দেয় রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচটি ৩-২ গোলের বড় ব্যবধানে জিতেছে আনচেলত্তির শিষ্যরা।
অবশ্য স্কোরলাইন দেখে মনে হতে পারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছে দুদল। তবে পুরো ম্যাচজুড়েই আলাভেসকে কোণঠাসা করে রাখে স্বাগতিকরা। আর শেষ মুহূর্তে সান্ত্বনাসূচক দুটি গোল পেয়ে যায় আলাভেস।
দলের হয়ে প্রথম মিনিটেই প্রথম গোলটি করে রিয়াল মাদ্রিদকে এগিয়ে নেন রাইট ব্যাক লুকাস ভাসকেস। এরপর কিলিয়ান এমবাপ্পে ও রদ্রিগোর গোলে ব্যবধান বাড়ায় তারা। তারপর ম্যাচের শেষ সময়ে আলাভেসের গোলদুটি করেন কার্লোস বেনাভিদেস ও কিকে গার্সিয়া।
এই জয়ে লিগে টানা ৩৯ ম্যাচ অপরাজিত রইল মাদ্রিদ জায়ান্টরা। বার্সেলোনার ৪৩ ম্যাচের রেকর্ড ছোঁয়ার লক্ষ্যে আরও একধাপ এগোল ভিনিসিউস-এমবাপ্পেরা। শুধু তা-ই নয়, লিগে প্রথম ৬ ম্যাচ মিলিয়ে প্রথমার্ধে মাত্র একটি গোল করা রিয়াল মাদ্রিদ এই ম্যাচে গোল পেয়েছে দুটি।
আরও পড়ুন: নিজের ‘এক্সপায়ার ডেট’ দেখতে পাচ্ছেন না আনচেলত্তি
এদিন কার্যত গোল খেয়েই ম্যাচ শুরু করে আলাভেস। ম্যাচের ৫৪তম সেকেন্ডে বাঁ পাশ দিয়ে বক্সে ঢুকে গোললাইনের কাছ থেকে গোলমুখে থাকা লুকাস ভাসকেসকে পাস দেন ভিনিসিউস। বল পেয়ে প্রথম ছোঁয়াতেই গোল আদায় করে নেন ভাসকেস। ফলে অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামার প্রথম মিনিটেই সমর্থকদের আনন্দে ভাসান ৩৩ বছর বয়সী এই রাইট ব্যাক।
৪৩৬ দিন আগে
নিজের ‘এক্সপায়ার ডেট’ দেখতে পাচ্ছেন না আনচেলত্তি
বয়স ছাড়িয়েছে ৬৫ বছর, এখনও বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাবের দায়িত্ব নিয়ে একের পর এক সফলতা পেয়ে চলেছেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি। বয়স বাড়লেও কোচিং থেকে এখনই অবসরে যাওয়ার কথা ভাবছেন না এই ইতালিয়ান।
মঙ্গবার রাতে লা লিগায় সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে আলাভেসকে আতিথ্য দেবে রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচটির মাধ্যমে ক্যারিয়ারের ৩০০তম ম্যাচ কোচিংয়ের মাইলফলক স্পর্শ করবেন আনচেলত্তি।
এই ম্যাচের আগে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করেন রিয়াল মাদ্রিদ বস। সেখানে সাংবাদিকরা তার অবসরে যাওয়ার প্রসঙ্গটি তুললে বিষটি স্পষ্ট করেন তিনি। অবসরের প্রশ্নে মাদ্রিদে আরও অনেক বছর থেকে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানান আনচেলত্তি।
আরও পড়ুন: ভালো খেলার চেয়ে ম্যাচ জেতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ: আনচেলত্তি
তার ভাষ্য, ‘এই কাজটি আমি ভালোবাসি, তাই (নিজের) ভবিষ্যত নিয়ে এখনই কিছু ভাবতে চাই না। ক্যারিয়ারে বেশকিছু বড় বড় ক্লাবের কোচ হতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। বিশ্বের সেরা ক্লাবে (রিয়াল মাদ্রিদ) আমি ৩০০তম ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করতে চলেছি। এই ডাগআউটে বসে এমন অর্জন সত্যিই বিশেষ কিছু, অলৌকিক বিষয়ের চেয়ে এটি কম কিছু নয়।’
‘খেলোয়াড়দের ক্লান্তির সঙ্গে আমার ক্লান্তির তুলনা করবেন না। হ্যাঁ, প্রেসার (চাপ) আছে সত্যি, তবে আমি তা উপভোগ করি। এই মুহূর্তে আমি নিজের কোনো এক্সপায়ার ডেট (কোচ হিসেবে) দেখছি না। আসন্ন আরও অনেক বছর আমি এখানেই থাকতে চাই।’
কার্লো আনচেলত্তির তত্ত্বাবধায়নে গত মৌসুমে লা লিগা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জেতে রিয়াল মাদ্রিদ। ওই মৌসুম থেকে এখন পর্যন্ত লা লিগায় টানা ৩৮ ম্যাচ অপরাজিত মাদ্রিদ জায়ান্টরা।
গত মৌসুমে মাত্র দুটি ম্যাচ হেরেছিল রিয়াল, দুটিই তাদের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে। ৩-১ ব্যবধানে প্রথমবার তারা হারে লা লিগায় গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এবং দ্বিতীয় ম্যাচটি কোপা দেল রের শেষ ষোলোর ম্যাচে। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচটি রিয়াল মাদ্রিদ হেরেছিল ৪-২ ব্যবধানে।
আরও পড়ুন: আক্রমণভাগে পরিবর্তন আসায় দলে ভারসাম্যের অভাব দেখছেন আনচেলত্তি
টানা ৩৮ ম্যাচ জিতে লা লিগায় টানা সর্বোচ্চ সংখ্যক ম্যাচ জয়ের রেকর্ড ভাঙার দ্বারপ্রান্তের রয়েছে আনচেলত্তির শিষ্যরা। ৪৩ ম্যাচ জিতে এই রেকর্ড এখন বার্সেলোনার। ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে পরের বছরের মে মাসের মধ্যে কোচ লুইস এনরিকে ও এর্নেস্তো ভালভার্দের তত্ত্বাবধায়নে ওই রেকর্ড গড়ে কাতালান জায়ান্টরা।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, আগামী ২৭ অক্টোবর বার্সেলোনার বিপক্ষেই ওই রেকর্ড স্পর্শ করার সুযোগ রয়েছে লস ব্লাঙ্কোসদের। এরপর ৩ নভেম্বর ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচটি জিতলে রেকর্ডটি নিজেদের করে নেবে তারা।
অবশ্য এই গৌরব অর্জনে তার আগে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে আনচেলত্তির শিষ্যদের। আলাভেস ম্যাচের পর আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের পরবর্তী প্রতিপক্ষ সেই আতলেতিকো মাদ্রিদ। শুধু তা-ই নয়, চলতি মৌসুমের মাদ্রিদ ডার্বিটি আবার অনুষ্ঠিত হবে আতলেতিকোর সিভিতাস মেত্রোপলিতানোয়। ফলে সেখানে কঠিন পরীক্ষা দিয়েই উৎরাতে হবে ভিনিসিউস-এমবাপ্পেদের।
আরও পড়ুন: আনচেলত্তির ‘কৌতুকে’ ভড়কে গিয়েছিলেন বেলিংহ্যাম
তার পরের দুই প্রতিপক্ষ ভিয়ারিয়াল ও সেল্তা ভিগো। নতুন কোচ মার্সেলিনোর কোচিংয়ে এ মৌসুমের শুরুটা বেশ ভালো করেছে ভিয়ারিয়াল। তাদের খেলায়ও এসেছে যথেষ্ট ধার, গত কয়েক ম্যাচেই তা স্পষ্ট হয়েছে। এছাড়া, গত কয়েক মৌসুম ধরে ভুগতে থাকা সেল্তা ভিগোও এবার দারুণ ছন্দে রয়েছে। ছয় ম্যাচে তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের নবম স্থানে রয়েছে ক্লাউদিও গিরালদেসের শিষ্যরা। ভিয়ারিয়াল, বার্সেলোনার মতো শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হারলেও ম্যাচজুড়ে তাদের পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো।
এই সব বাধা অতিক্রম করে রিয়াল মাদ্রিদ শেষ পর্যন্ত রেকর্ডটি নিজেদের করে নিতে পারে কিনা, তা দেখতে উন্মুখ হয়ে রয়েছে ক্লাবটির সমর্থকরা।
৪৩৬ দিন আগে
ভালো খেলার চেয়ে ম্যাচ জেতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ: আনচেলত্তি
কিলিয়ান এমবাপ্পে, ভিনিসিউস জুনিয়র, রদ্রিগো, জুড বেলিংহ্যামের মতো তারকাসমৃদ্ধ আক্রমণভাগ থাকা সত্ত্বেও চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই মাঠের খেলায় ভুগছে রিয়াল মাদ্রিদ। এ নিয়ে সমালোনাও কম হচ্ছে না ইউরোপের সফলতম এই ক্লাবটিকে নিয়ে। তবে এসব নিয়ে একদমই ভাবছেন না রিয়াল মাদ্রিদ বস কার্লো আনচেলত্তি।
৬৫ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান কোচ মনে করেন, ভালো খেলার চেয়ে দিন শেষে জয়টাই আসল, আর সেটিই করে চলেছে তার দল।
মৌসুমের শুরু থেকেই চোট সমস্যায় ভুগছে রিয়াল মাদ্রিদ। এছাড়া দলটির সেরা ফুটবলাররাও ফর্মে নেই। এমন দল নিয়েও সব মিলিয়ে সাত ম্যাচ খেলে এখনও অপরাজিত আনচেলত্তির দল, যেখানে পাঁচটি ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি দুই ম্যাচ ড্র করেছে তার শিষ্যরা। সমস্যার মাঝেও ফল নিয়ে আসতে পারায় দল নিয়ে খুশি আনচেলত্তি।
লা লিগায় কাতালুনিয়ার ক্লাব এসপানিওলের বিপক্ষে শনিবার রাতে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ। তার আগে সংবাদ সম্মেলেনে কথা বলেন আনচেলত্তি।
আরও পড়ুন: আক্রমণভাগে পরিবর্তন আসায় দলে ভারসাম্যের অভাব দেখছেন আনচেলত্তি
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমর্থকরা ভালো খেলার চেয়ে ম্যাচ জয়কে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আসলে ভালো খেলা এবং ম্যাচ জেতা দুটোই দরকারি, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা জয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি, কারণ সবাই জানে যে দল এখন নিজেদের সেরা ফর্মের অনেক দূরে রয়েছে।’
‘আমরা আমাদের সেরা অবস্থায় নেই আর ক্যালেন্ডারের শুরুতে এটা অস্বাভাবিক নয়। মৌসুম এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের (খেলায়) উন্নতি করতে হবে, কারণ ধীরে ধীরে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো সামনে আসবে। তবে এই মুহূর্তে আমরা যা করছি, তাও মন্দ নয়।’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচে জুড বেলিংহ্যাম ও অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি চোট থেকে ফিরলেও ডেভিড আলাবা, এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা, দানি সেবাইয়োস ও ব্রাহিম দিয়াসের মাঠে ফিরতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান কোচ।
আরও পড়ুন: আনচেলত্তির ‘কৌতুকে’ ভড়কে গিয়েছিলেন বেলিংহ্যাম
এ সময় ভিনিসিউস-এমবাপ্পেদের ফর্ম নিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের ফর্ম নিয়ে আমি ভাবছি না। কারণ ওরা একটি উন্নয়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে এবং প্রতি সপ্তাহেই তাদের উন্নতি চোখে পড়ছে। ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণে নিজেদের সেরা অবস্থায় ফিরতে তাদের খুব বেশি সময় লাগবে না।’
‘আর সমালোচনা? আসলে আমি এ নিয়ে ভাবছিই না, কারণ আমাদের সমর্থকরা (দলের পারফরম্যান্সে) খুশি।’
আনচেলত্তি বলেন, ‘আমার মতে সুন্দর ফুটবল নির্ভর করে খেলোয়াড়দের খেলোয়াড়ি বৈশিষ্ট্যের ওপর- আক্রমণে ওঠো, রক্ষণ ভালোভাবে সামলাও, কাউন্টারে আরও ধারালো হও। তবে এ নিয়ে একেক দলের দর্শন একেক রকম।’
লা লিগায় পঞ্চম রাউন্ডের খেলা শেষে তিনটি জয় ও দুটি ড্রয়ে ১১ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। তিনটি জয় ও দুটি ড্রয়ে রিয়াল মাদ্রিদের সমান ১১ পয়েন্ট নিয়েও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় দ্বিতীয় স্থানে আতলেতিকো মাদ্রিদ। এছাড়া সমান পারফর্ম করেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ভিয়ারিয়াল।
তবে পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিই জিতে নতুন মৌসুমে দুর্দান্ত শুরু করেছে বার্সেলোনা। পূর্ণ ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তাই পয়েন্ট টেবিলের চূড়ায় রয়েছে হান্সি ফ্লিকের দল।
আরও পড়ুন: ভিনিসিউসের মন্তব্যে ‘চটেছে’ রিয়াল মাদ্রিদ
৪৪০ দিন আগে
আক্রমণভাগে পরিবর্তন আসায় দলে ভারসাম্যের অভাব দেখছেন আনচেলত্তি
প্রাক-মৌসুম, এমনকি উয়েফা সুপার কাপের ম্যাচেও রিয়াল মাদ্রিদের যে পারফরম্যান্স, তার ধারেকাছেও ছিল না লা লিগায় মায়োর্কার বিপক্ষে দলটির প্রথম ম্যাচে। ওই ম্যাচের পর দলের রক্ষণভাগের পারফরম্যান্সকে দুষলেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি।
রবিবার (১৮ আগস্ট) রাতে মায়োর্কার মাঠ থেকে কোনোমতে ১-১ গোলের ড্র করে ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
ম্যাচের ত্রয়োদশ মিনিটে রদ্রিগোর দারুণ এক গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। প্রথমার্ধে আধিপত্য ধরে রাখতে পারলেও দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। ভেদাত মুরিচির অসাধারণ এক হেডারে ঠিকানা খুঁজে নেয় বল।
এরপর দুই দলই বেশ কয়েকটি সুযোগ পায়, তবে সেগুলোর একটিও কাজে লাগাতে পারেনি কেউ। ফলে ম্যাচ শেষে শক্তিশালী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ১ পয়েন্ট পেয়ে উল্লাস করেন মায়োর্কার খেলোয়াড়রা। অন্যদিকে, প্রত্যাশিত তিন পয়েন্ট না পেয়ে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা।
আরও পড়ুন: ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতে বার্সার ‘ফ্লিক অধ্যায়’ শুরু
ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন আনচেলত্তি, ‘আজকে আমি মোটেই সন্তুষ্ট নই। আমার মনে হয়, আমরা এর চেয়ে অনেক ভালো করতে পারতাম।’
‘খেলায় আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে, দলগতভাবে আরও ভালো খেলতে হবে। এটা শারীরিক সমস্যা নয়, সমস্যাটি মানসিক।’
হারসম এই ড্রয়ের পর কোনো অজুহাত খুঁজতে চাননি রিয়াল বস। তিনি বলেন, ‘আমাদের আরও ভালো খেলা উচিৎ ছিল; মাঠে আরও বেশি তাড়না দেখানো উচিৎ ছিল। এই ম্যাচ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। এই ম্যাচে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, আমাদের কোথায় কোথায় সমস্যা রয়েছে।’
এসময় রক্ষণভাগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আক্রমণভাগে কিলিয়ান (এমবাপ্পে), রদ্রিগো, ভিনি (ভিনিসিউস) ও বেলিংহ্যামের মতো ফুটবলার থাকায় আমাদের সিস্টেমে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। ডিফেন্ডারদের নতুন এই সিস্টেমে আরও ভালোভাবে মানিয়ে নিতে হবে, রক্ষণে আরও শৃঙ্খলা আনতে হবে।’
ম্যাচটি রিয়াল মাদ্রিদ অনায়াসেই হারতে পারত জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘নিজেদের ভুলের কারণে ম্যাচটি হারলেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। তবে এই ম্যাচটি থেকে শিখে আমাদের দ্রুত ভুলগুলো শুধরে নিতে হবে।’
‘আমরা শুরুটা ভালো করেছিলাম, সেকারণে প্রথমার্ধে এগিয়েও গিয়েছিলাম। দ্বিতীয় গোলটি করে আরও এগিয়ে যাওয়ার মতো কিছু সুযোগও এসেছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে (খেলায়) আমাদের ভারসাম্য হারিয়ে যায়।’
‘এসময় আমরা বল দখলে নিতে ব্যর্থ হয়েছি, বল হারিয়ে তা পুনরুদ্ধার করতে পারিনি, আর রক্ষণে গিয়ে অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় শিরোপা জিতে রিয়াল মাদ্রিদ অধ্যায় শুরু এমবাপ্পের
৬৫ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান বলেন, ‘রক্ষণের পুরো বিষয়টিই হচ্ছে সম্মিলিত প্রচেষ্টা। খেলোয়াড়রা একইরকম ভাবলে খেলায় ভারসাম্য আসে। আর এখানে ভারসাম্য হারিয়ে গেলে শুধু স্ট্রাইকারদের জন্যে নয়, মিডফিল্ডার-ডিফেন্ডার সবার জন্যেই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।’
সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে আগামী রবিবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে মাঠে নামবে বর্তমান লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
৪৭১ দিন আগে