নতুন বাংলাদেশ
নতুন বাংলাদেশ পুরোনো ব্যবস্থায় চলতে পারে না: নাহিদ ইসলাম
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা পুরোনো ব্যবস্থায় চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রবিবার (৬ জুলাই) চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘বিচার, সংস্কার, তারপর নির্বাচনের’ দাবিতে চলমান জুলাই পদযাত্রার পথসভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। এরআগে পাশের জেলা নওগাঁ থেকে দুপুর ২টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শান্তিমোড়ে উপস্থিত হন এনসিপির নেতারা। এরপর পদযাত্রা শুরু হয়।
পরে এটি বাতেনখাঁ মোড়, নীমতলা মোড়, বড় ইন্দারা মোড়, গাবতলা মোড় ও ক্লাব সুপার মার্কেট হয়ে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন নতুন এই রাজনৈতিক দলের নেতারা।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা এসেছি, জুলাই অভ্যুত্থানের বার্তা নিয়ে, যে বার্তা একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েমের স্বপ্ন দেখায়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায়।’
‘গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা নতুন বাংলাদেশ চেয়েছি, আমরা রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার চেয়েছি, আমরা গণত্যাকারীদের বিচার চেয়েছি। আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ চেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ খাতে বৈষম্যের শিকার। বাংলাদেশের সব জেলায় এমন বৈষম্য দূর হবে আমরা সেই স্বপ্ন দেখি।’
সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কঠোর সমালোচনা করে নাহিদ বলেন, ‘সীমান্তে বিএসএফ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গ্রেনেড মারে, এখানে বোমার বিস্ফোরণ ঘটনায়। আমরা কিন্তু এইসব আগ্রাসন আর মেনে নেব না।’
আরও পড়ুন: ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে বাণিজ্যের চোখে দেখে ওয়াশিংটন: কুগেলম্যান
‘সীমান্তে দাদাদের বাহাদুরির দিন শেষ হয়েছে। আর আগ্রাসন চালানো হলে, আমার ভাইদের হত্যা করা হলে আমরা লং মার্চ ঘোষণা করবো। আমাদের সীমান্ত আমরাই রক্ষা করবো।’
দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন, সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ওপর দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নির্মম নির্যাতন করেছে। সেই নির্যাতনকে সায় দিয়ে দিল্লির সরকারও সীমান্তে হত্যা চালিয়েছে।’
সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াই চলবে। ভারত আর কোনোদিন আঙুল উঁচিয়ে কথা বলতে পারবে না। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ আঞ্চলিক বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। আগামীর বাংলাদেশে আর কোনো বৈষম্য দেখতে চাই না। ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে যে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, আর পুরোনো সিস্টেমে চলতে পারে না ‘
এ সময়ে এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিতি ছিলেন। পরে এনসিপির চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয় উদ্বোধন শেষে রাজশাহীর উদ্দেশে রওয়ানা দেন তারা।
১৫১ দিন আগে
‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণে জাপান ও দেশটির উদ্যোক্তাদের পাশে চাইলেন অধ্যাপক ইউনূস
বাংলাদেশের কোটি কোটি তরুণের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণে জাপান সরকার ও দেশটির উদ্যোক্তাদের পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টোকিওতে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার ইন টোকিও’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। জেট্রো ও জাইকার আয়োজনে এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা বড় সমস্যায় আছি। বাস্তবিক অর্থেই বাংলাদেশ গত ১৬ বছর ধরে একটি ভূমিকম্পের মধ্য দিয়ে গেছে। সবকিছু ভেঙে পড়েছে... এখন আমরা সেগুলো গুছিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।’
বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে জাপানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘একজন ভালো বন্ধু কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ায়; জাপান তেমনই এক বন্ধু। আমি এসেছি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে এবং আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে।’
আরও পড়ুন: জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ৬ সমঝোতা স্মারক সই
তরুণদের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের কোটি কোটি তরুণের অসংখ্য স্বপ্ন আছে। সেই স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নে তাদের সহযোগিতার দরকার।’
এই চ্যালেঞ্জকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিহাসকে দেখাতে চাই—হ্যাঁ, এটি সম্ভব হয়েছিল এবং তা হয়েছিল নিখুঁতভাবে।’
‘আমরা নিজেদের প্রস্তুত করেছি এবং বলছি— আমরা কাজে নামার জন্য তৈরি। আপনাদের সহযোগিতা থাকলে এটি সম্ভব। চলুন একসঙ্গে এগিয়ে যাই এবং কাজটি শেষ করি। এটি অর্থ শুধু উপার্জন নয়, মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার বিষয়।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছে তার সরকার, আর সে পথে জাপান বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার।
তিনি বলেন, ‘আরেকটি বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করুন, যাকে আমরা “নতুন বাংলাদেশ” নাম দিয়েছি। আমরা একসঙ্গে সেই বাংলাদেশ গড়ব। আপনারা পাশে থাকলে এটি অবশ্যই সম্ভব, আর তার ভিত্তি ইতোমধ্যে আমরা স্থাপন করেছি।’
মাতারবাড়ী উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, এটি একটি পিছিয়ে পড়া দেশের অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ১০৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার সহায়তা দেবে জাপান
প্রধান উপদেষ্টার ভাষ্যে, ‘নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যের মানুষ মাতারবাড়ীর মাধ্যমে বিশ্ববাজারে প্রবেশাধিকার পেতে পারে। মাতারবাড়ী হবে বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্তির দরজা... আমরা এই দরজা সবার জন্য খোলা রাখব।’
জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারি ভাইস-মিনিস্টার শিনজি তাকেউচি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বাংলাদেশ এশিয়ার দেশগুলোকে সংযুক্তকারী কৌশলগত কেন্দ্র এবং এই অঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
তিনি জানান, বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানির সংখ্যা এখন ৩০০ ছাড়িয়েছে, যা গত এক দশকে ৭৫ শতাংশ বেড়েছে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশে জাপানের অব্যাহত সহযোগিতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে জাপান এখন বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও জোরদার করতে চায়।
জাপান সরকার দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ বাড়াতে উৎসাহ দিচ্ছে বলে জানান তিনি। জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে বলেও মন্তব্য করেন শিনজি। বর্তমানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য মূলত টেক্সটাইলকেন্দ্রিক হলেও তা আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার আহ্বান জানান ভাইস-মিনিস্টার।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং টোকিওতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকার ও সংস্কার প্রচেষ্টায় জাপানের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত
অনুষ্ঠান শেষে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতাবিষয়ক ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জেট্রো চেয়ারম্যান ও সিইও নোরিহিকো ইশিগুরো। এ ছাড়া বক্তব্য দেন জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটির চেয়ারম্যান এবং মারুবেনি করপোরেশনের নির্বাহী করপোরেট উপদেষ্টা ফুমিয়া কোকুবু।
১৮৮ দিন আগে
শ্রমিকদের অবস্থার পরিবর্তন না হলে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠন সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা
শ্রমিকদের অবস্থার পরিবর্তন না হলে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় শ্রমিকদের কল্যাণে যৌথ প্রচেষ্টার গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১লা মে) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি শ্রমিকদের অবস্থা আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে নতুন বাংলাদেশ গঠনের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না।’
এ সময় শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের ভালো অবস্থান নিশ্চিত করা আমাদের সবার দায়িত্ব। এটি আমাদের জন্য এক বিশাল সুযোগ।’
কমিশনের দেওয়া সুপারিশগুলো দেখে তিনি ব্যক্তিগতভাবে খুবই মুগ্ধ হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘যেসব সুপারিশ তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, আমাদের দায়িত্ব সেগুলো নিয়েই যাত্রা শুরু করা।’
এই সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন নতুন বাংলাদেশের মজবুত ভিত্তি গঠনে সহায়ক হবে বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
ইতোমধ্যে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করা হয়েছে বলেন জানান তিনি। পাশাপাশি এই পদক্ষেপের সফলতার নিয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান।
আরও পড়ুন: মে দিবসের ১৩৫ বছর পরও আট শ্রমঘণ্টা কতটা যৌক্তিক?
তিনি বলেন, ‘এ বছরের মে দিবস অন্যান্য বছরের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন, কারণ এই বছর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান, আইএলও মহাপরিচালক (রেকর্ডকৃত বক্তব্যে), বাংলাদেশে আইএলওর পরিচালক, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, শ্রমিক ও মালিকপক্ষের প্রতিনিধি প্রমুখ। এ উপলক্ষে একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে শ্রমিক ও তাদের পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে পারস্পরিক সহায়তা জোরদার হলে বাংলাদেশের অগ্রগতি আরও গতি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে মে দিবস ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীকে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘শ্রমিক-মালিক সম্প্রীতি জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে।’
আরও পড়ুন: ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমের মূল্য
তিনি বলেন, ‘মে দিবস শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্কের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।’
এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘দেশ গঠনে শ্রমিক ও মালিক একে অপরের অপরিহার্য অংশীদার। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি শক্তিশালী, স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে।’
পোশাক, কৃষি, শিল্প, নির্মাণ, পরিবহন ও প্রযুক্তিসহ প্রতিটি খাতের উন্নয়নের পেছনে শ্রমিক ও মালিক উভয়ের কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠা রয়েছে বলে মত দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং আস্থার পরিবেশ সুদৃঢ় করতে হবে।’
সব শ্রমিকের ন্যায্য স্বীকৃতি ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ কেবল একটি অধিকার নয়, এটি শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তি।’
এ সময় সব শ্রমিক, বিশেষত যারা শ্রম অধিকার রক্ষায় আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মে দিবস ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন ড. ইউনূস।
২১৭ দিন আগে
যত বাধাই আসুক, ঐক্যবদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গঠন করবই: ড. ইউনূস
ঈদের দিন জাতির উদ্দেশে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শত বাধা সত্ত্বেও ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে আমরা নতুন বাংলাদেশ গঠন করবই।
সোমবার (৩১ মার্চ) জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে মোনাজাতের আগে তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যের শুরুতে জাতির পক্ষ থেকে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান অধ্যাপক ইউনূস। বলেন, ‘ঈদ মোবারক! আজ বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি বাজারে, প্রতিটি গঞ্জে, প্রতিটি শহরে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জামাতে যারা শরিক হয়েছেন, আমরা জাতির পক্ষ থেকে তাদের ঈদ মোবারক জানাচ্ছি।’
‘যারা ঈদের জামাতে শরিক হওয়ার সুযোগ পাননি, তাদেরও ঈদ মোবারক জানাচ্ছি। আমাদের মা-বোনেরা যারা ঘরে আছেন, তাদেরও আমরা ঈদ মোবারক জানাচ্ছি।’
প্রবাসীদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রবাসী শ্রমিকেরা, যারা বিদেশে আছেন, সারা বছর কষ্ট করেছেন, ঈদের জামাতে হয়তো যেতে পারবেন, হয়তো যেতে পারবেন না, তাদেরও ঈদ মোবারক জানাই। যেসব বাংলাদেশিরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আছেন, তাদের আমরা ভুলে যাইনি, তাদেরও ঈদ মোবারক জানাচ্ছি।’
‘অনেকে হাসপাতালে আছেন, রোগী, বিভিন্ন কারণে ঈদের জামাতে যেতে পারেননি, তাদেরও ঈদ মোবারক জানালাম।’
আরও পড়ুন: ঈদের নামাজ আদায় করলেন প্রধান উপদেষ্টা
এ সময় জুলাই যোদ্ধাদের স্মরণ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ দিয়েছেন বীর সন্তানেরা, আত্মাহুতি দিয়েছেন, আমরা যেন মোনাজাতে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। যারা আহত হয়েছেন, যারা স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছেন, এই দেশের জন্য নিজেদের স্বাভাবিক জীবন ত্যাগ করতে যারা বাধ্য হয়েছেন, তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষমতা দেওয়ার জন্য, রোগমুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে যেন আমরা প্রার্থনা করি আজকের দিনে।’
২৪৯ দিন আগে
'নতুন বাংলাদেশ'র সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্তের আহ্বান ড. ইউনূসের
জালিম শাসক ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র ও তরুণদের নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে সৃষ্ট 'নতুন বাংলাদেশের' সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রোমে আইএফএডির সদর দপ্তরে গভর্নিং কাউন্সিলের (ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট) ৪৮তম অধিবেশনে তার পূর্ব ধারণকৃত ভিডিও মূল প্রবন্ধের বক্তব্য প্রচার করা হয়।
বৈশ্বিক দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাসে ভূমিকার জন্য ইফাদকে অভিনন্দন জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে বিশেষ করে কৃষি ও জলবায়ু খাতে ইফাদের চার দশকের সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেন।
তিনি ইফাদের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পসমূহে বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়নের প্রশংসা করেন।
ড. ইউনূস তার 'সামাজিক ব্যবসা' ধারণাকে গ্রামীণ উন্নয়নের নতুন মাত্রা হিসেবে উল্লেখ করেন। যা একটি সত্য চক্র তৈরি করে যেখানে সমাজের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে ব্যবসায় সমৃদ্ধি লাভ করে এবং এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন: ‘ভয়ংকর ও অবিশ্বাস্য’, আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে ড. ইউনূস
তিনি ইফাদের প্রচেষ্টা এবং বিশ্বের 'থ্রি জিরো' শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ ভিশনের মধ্যে একটি সাদৃশ্যের কথাও তুলে ধরেন চিত্র তুলে ধরেন।
ড. ইউনূস ইফাদের গভর্নিং কাউন্সিলকে জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো, টেকসই কৃষি চর্চা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি সমাধান খাতে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান, যাতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নতি করতে পারে।
তিনি ইফাদের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সবচেয়ে অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগগুলো কাজে লাগাতে এবং একটি উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানান- যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।
তরুণ ও শিক্ষার্থীদের যারা ভবিষ্যতের নেতৃত্ব ও পরিবর্তনকারী তাদের সম্পৃক্ত করার জন্য নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
সকলের জন্য একটি উন্নততর পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য তাদের মধ্যে সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন এবং আবেগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ জানিয়েছে, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ইফাদ গভর্নিং বোর্ডের গভর্নর হিসেবে কাউন্সিল সভায় যোগ দেন এবং অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে যোগ দিতে দুবাই যাচ্ছেন ড. ইউনূস
২৯৫ দিন আগে
নতুন বাংলাদেশ গড়তে দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আমরা প্রচণ্ড আত্মকেন্দ্রিক। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করতে হবে। তাহলে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বংশানুক্রমিকভাবেই আমাদের অন্তর সংকীর্ণ এবং অন্যদের স্থান দিতে পারি না। এদেশে বসবাসকারী সবার ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য।
আরও পড়ুন: ঢাকার নদী ও খালগুলোকে বাঁচাতে হলে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান
বুধবার (৯ অক্টোবর) সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, পূর্বের সরকারগুলো দুর্গাপূজাতে পূজামণ্ডপগুলোতে সহযোগিতা করার জন্য সাধারণত দুই কোটি বরাদ্দ দিত। কিন্তু বর্তমান সরকার এ বছর চার কোটি বরাদ্দ দিয়েছেন। এছাড়া, এবারই প্রথম প্রথাগত নিয়ম ভেঙে দুর্গাপূজার ছুটি একদিন বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আবহমানকাল থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করে থাকে। এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য। এবছরও তারা আনন্দমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপন করতে পারবে। এ লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর বেশকিছু মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডা পরিদর্শন করেছি। কয়েকটি মন্দিরে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছি। পরেও আমি বিভিন্ন উপাসনালয় পরিদর্শনে যাব। আমরা সবসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করে আসছি, আগামী দিনেও রক্ষা করব।
তিনি বলেন, হিংসা-বিদ্বেষ আমাদের ছোট করে দেয়। বাংলাদেশ আমাদের সবার। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সবার অধিকার সমান। ধর্মচর্চা, ধর্ম পালন ও ধর্ম অনুশীলন আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করতে চাইলে সরকার কঠোর হাতে দমন করবে।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে সেনাবাহিনী জড়ো হয়নি, গুজব ছড়ানো হয়েছে
৪২১ দিন আগে
সততা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে নতুন বাংলাদেশ গড়তে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলুন: সচিবদের উদ্দেশে ইউনূস
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা বৈষম্যহীন মানবিক দেশ গড়ার যে প্রত্যয় ও ভয়হীন চিত্ত আমাদের উপহার দিয়েছে, তার ওপর দাঁড়িয়ে বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহি নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে গৎবাঁধা চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে এবং চিন্তার সংস্কার করে সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সচিবদের নিয়ে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি সচিবদের নিয়ে প্রথম বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার।
আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ককে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন
সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ‘মার্চিং অর্ডার’ দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণ করতে হবে।’
দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে, সেবা সহজ করার মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস বলেন, সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি ক্রয়ে যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করাসহ স্বচ্ছতা, জবাবদিহি নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূর করতে হবে।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যৌক্তিক মেয়াদের বিষয়ে শীর্ষ সম্পাদকদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ
তিনি বলেন, সৃষ্টিশীল, নাগরিকবান্ধব মানসিকতা নিয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কর্মসূচির সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা দাখিল করবে, যা নিয়মিত মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ করা হবে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বব্যাপী তৈরি হওয়া আগ্রহ, ইতিবাচক ধারণাকে দেশের স্বার্থে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন অধ্যাপক ইউনূস।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্ভয়ে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে গণমাধ্যমের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
৪৫৬ দিন আগে