ড. আসিফ নজরুল
মানুষ নিরুপায় হয়ে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়: ড. আসিফ নজরুল
মানুষ বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায় বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনাদের মতে চিকিৎসা খাতে চার থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বাজার রয়েছে। এই বাজার আপনি নিতে পারছেন না? কেন মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়? এমনকি এমন মানুষও বিদেশে যায়, যারা কখনও ঢাকায় আসেনি।”
তিনি বলেন, “মানুষ বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে বিদেশে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে। দেশে পর্যাপ্ত সেবা থাকলে কেউ বিদেশে যেতো না। যদি এই বাজার দখল করতে পারেন, আপনারাও লাভ করবেন, দেশেরও লাভ হবে।”
ড. আসিফ নজরুল আরও উল্লেখ করেন, “অনেকে চিকিৎসক অনর্থক বিভিন্ন টেস্ট দেন। আমার বাসার হেল্পিং হ্যান্ড, গরিব ছেলে, ঢাকার একটি হাসপাতালে ১৪টি টেস্ট করিয়েছিল। সে রাগ করে বাড়ি চলে আসে। সেখানে টেস্ট ছাড়া ভালো হয়ে ফিরেছে। তার পরিচিত ডাক্তার ছিল। এই অত্যাচার এখনও বন্ধ হয়নি।” তিনি গরিব রোগীদের জন্য অনর্থক ১৪–১৫টি টেস্টের প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান জানান।
পড়ুন: চোখের চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল
আইন উপদেষ্টা বলেন, “নির্দিষ্ট ওষুধ কেন কিনতে হবে? পৃথিবীর কোনো জায়গায় প্রাইভেট ক্লিনিকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির জন্য ডাক্তারদের নির্দিষ্ট সময় থাকে? আপনাদের কি ওষুধ কোম্পানির দালাল হওয়ার প্রয়োজন?”
তিনি হাসপাতালের মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা কি কম লাভ করেন? যারা হাসপাতালের মালিক, তাদের কাছে কোটি টাকার বাগানবাড়ি থাকতে পারে। নার্সদের ভালো বেতন দেওয়া সম্ভব। যদি নার্স ১২ হাজার টাকা বেতন পান, তাহলে কি ভালো সেবা দেবে? সে বিরক্ত থাকবে। আপনি লাভ করছেন, কিন্তু ন্যায্যভাবে করতে হবে।”
ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, “আজ মানুষ ভারত বা থাইল্যান্ডে যেতে চায় না। আপনাদের চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। করোনাকালে প্রমাণ করেছেন। কর্মীদের বেতন বাড়ালে সামান্য লাভ কমলেও তারা ভালো সেবা দিতে পারবে। যদি ১০০ কোটি টাকা লাভ করেন, ১০ শতাংশ কমলেও সেই সেবা বিনিময়ে পূরণ হবে।”
উপদেষ্টা মালিকদের সচেতন হওয়ার এবং কর্মীদের ন্যায্য বেতন নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।
১১১ দিন আগে
ঢাকায় দপ্তর স্থাপন করতে যাচ্ছে ওএইচসিএইচআর
বাংলাদেশে মানবাধিকার বিষয়ক সহযোগিতা জোরদারে তিন বছরের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) দপ্তর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রবিবার (২৯ জুন) এ সংক্রান্ত খসড়া সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
পরবর্তীতে বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের আলোচনার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।’
তিনি জানান, বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য তাদের দপ্তর চালু করা হবে। প্রয়োজন হলে পরে দুপক্ষের সম্মতিতে মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ থাকবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, কয়েকজন উপদেষ্টা আরও একবার খসড়া এমওইউ পর্যালোচনা করবেন এবং তারপর চূড়ান্ত খসড়া জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের কাছে পাঠানো হবে।
‘ওই পক্ষ (জাতিসংঘ) সম্মতি দিলে দ্রুতই চুক্তি স্বাক্ষর এবং দপ্তর স্থাপন করা হবে,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সরকারের কঠোরতায় ‘মব সন্ত্রাস’ কমে এসেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আসিফ নজরুল আশা প্রকাশ করেন, গত বছর জুলাই-আগস্টের রাজনৈতিক সহিংসতার পর অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরকে স্বাধীন তদন্ত মিশন পরিচালনার আমন্ত্রণ জানায়। সেই মিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জুলাই-আগস্ট সময়কালে সহিংসতায় প্রায় এক হাজার ৪০০ জন নিহত হন।
জাতিসংঘের দপ্তরটি দেশে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, পুলিশ ও বিচার বিভাগীয় সংস্কারসহ বিভিন্ন চলমান প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।
গত ৪ জুন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেছিলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সরকার ইতোমধ্যে সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত করেছে। খুব দ্রুত সই হওয়ার পর বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের দপ্তর চালু হবে।’
১৫৯ দিন আগে
এক মাসের মধ্যে গুম বিষয়ক কমিশন গঠন করা হবে: আইন উপদেষ্টা
গুম বিষয়ক আইনের অধীনে আগামী এক মাসের মধ্যে একটি শক্তশালী গুম বিষয়ক কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আজ সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে জাতিসংঘের বলপ্রয়োগে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে গুম সম্পর্কিত কার্যনির্বাহী দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এসব জানান।
এ সময় গুম বিষয়ক আইনটি আগামী এক মাসের মধ্যে হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইন উপদেষ্টা।
আইন করলে পরবর্তী সরকার আইনটি বাতিল করবে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি বা যে সরকারই আসুক তারা সবাই গুমের শিকার। তারা সবাই সোচ্চার ছিলেন। বিএনপি-জামায়াতই সবচেয়ে বেশি শিকার ছিলেন।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে তারা বারবার বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তারাই গুমের ঘটনাগুলো ঘটিয়েছিল বলে আমাদের বিশ্বাস। সেজন্য তারা জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপকে বাংলাদেশে আসতে দেয়নি, তাদের চিঠির উত্তর পর্যন্ত দেয়নি।’
আসিফ নজরুলের ভাষ্যে, ‘আমাদের সরকারের একটা প্রতিশ্রুতি ছিল গুমের তদন্ত ও বিচার। জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশে এসেছে, তাদের সঙ্গে মিটিং করেছি। মিটিংয়ে বসার পর তারা আমাদের কিছু কার্যক্রমের প্রশংসা করেছে। গুম কমিশনের, তদন্ত কমিশনের প্রশংসা করেছে, এ ছাড়াও আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছি সেটার প্রশংসা করেছে।’
ওয়ার্কিং গ্রুপ গুম বিষয়ক কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলেছেন বলে জানান তিনি। জবাবে উপদেষ্টা বলেছেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে সবাই বসে নেবে। তিনি বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করবেন।
এ সময় তিনি জানান, যারা অতীতে গুমের শিকার হয়েছেন, তাদের মিসিং সার্টিফিকেট দেওয়ার প্রস্তাবও সরকার বিবেচনা করছে। এটি বাস্তবায়িত হলে মৃত্যুসনদের মতো আইনি কাজেও ব্যবহার করা যাবে।
‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন’ (সত্য ও পুনর্মিলন) কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তাঁরা দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ব্যাপারটি জেনে এসেছেন। এখন দ্বিতীয় ধাপে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি আঞ্চলিক পরামর্শ (কনসালটেশন) করা হবে। সেখানে শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিনিধিদের আনা হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, মানবাধিকারকর্মী, ছাত্র—সবার মতামত নিয়ে কী করা যায়, সে বিষয়ে চিন্তা করা হবে।
আরও পড়ুন: জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে সরকার: আইন উপদেষ্টা
১৭২ দিন আগে
ইতালিতে বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চলছে: ড. আসিফ নজরুল
ইতালিসহ ইউরোপীয় দেশগুলোতে বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চলছে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে পর্তুগাল ও অস্ট্রিয়াসহ ইউরোপের ৬টি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’
মঙ্গলবার (৬ মে) ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে মাইগ্রেশন ও মোবিলিটি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং ইতালির পক্ষে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি সমঝোতা স্মারকে সই করেন। অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করা ও বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতালির সঙ্গে প্রথমবারের মতো মাইগ্রেশন অ্যান্ড মবিলিটি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করল বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘বৈধ পথে মাইগ্রেশন বৃদ্ধি করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। যারা ইতালি যেতে ইচ্ছুক তারা যেন নিরাপদে যেতে পারেন, ভালো পারিশ্রমিক পান সেটাই লক্ষ্য আমাদের’। তিনি বলেন, ‘ইতালি সিজনাল ও নন সিজনাল দুইভাবে লোক নিবে। আমাদের পরিকল্পনা আমরা জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ করব। তারা বছরে একবার করে মিটিং করবে। আমাদের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার আছে, যেখানে ইতালি যেন আমাদের কর্মীদের ইতালি ভাষা শিখতে পারে, আমরা এই বিষয়ে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, আমাদের এম্বাসির ফাইল গুলো যেন দ্রুত কার্যকর হয়। এছাড়া ইতালিতে যারা বাংলাদেশি ছাত্র আছে, তাদের ভিসা প্রক্রিয়া যেন সহজ হয়। অভিবাসনের দিক দিয়ে আমাদের যেন ইতালির সরকারের ঝুকিপূর্ণ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, সেই বিষয়টিও আলোকপাত করা হয়েছে।
ইতালিতে কোন কোন সেক্টরে কি পরিমাণ লোক পাঠানো হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘সমঝোতা স্মারকে এত ডিটেইলস থাকে না। বর্তমানে আমাদের যে কোটা আছে, সেটা বাড়ানো হবে। কোটা বৃদ্ধির বিষয়ে ইতালি চিন্তাভাবনা করবে। আমরা আশা করছি, অবৈধ পথে যাওয়া অনেকটা বন্ধ হয়ে যাবে।’
এসময় ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আমরা সবসময় শ্রমিকদের বৈধ পথে আসার জন্য অনুপ্রাণিত করি। ইতালি সরকার দীর্ঘদিন থেকে এটা নিয়ে কাজ করে আসছে। এই সমঝোতা স্মারকের উদ্দেশ্যে দুইটা দেশের বন্ধুত্ব আরও বাড়বে।’
এছাড়াও ড. আসিফ নজরুল সম্প্রতি সৌদি সফরের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, সৌদি আরবে অবৈধভাবে বসবাসকারী নারী কর্মীদের বৈধ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যক দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী প্রেরণের বিষয়েও সৌদি সরকারের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
তিনি জানান, ‘জর্ডানে পুরুষ কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়েও জর্ডান সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া জর্ডানে কর্মরত যে সকল নারী কর্মী নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মস্থল পরিবর্তনসহ নানা কারণে অবৈধ হয়েছেন, তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বীকারোক্তির মাধ্যমে বৈধ হতে পারবেন। এর ফলে তারা জরিমানা ছাড়াই বৈধতা পাবেন।’ অন্যথায় তাদের বড় অঙ্কের জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
২১৩ দিন আগে
গড়ে প্রতিবছর ৫ লাখ মামলা দায়ের হয়: আইন উপদেষ্টা
দেশে গড়ে প্রতিবছর পাঁচ লাখ মামলা দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘আর জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয় ৩৫ হাজার মামলা। সংস্থাটিতে বছরে দুই লাখ মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হলে আদালতে মামলার চাপ কমপক্ষে ৪০ শতাংশ হ্রাস পাবে।’
সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আলোচনায় সন্তুষ্ট বিএনপি, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা
উপদেষ্টা বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর আমার প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিচারকাজে বিড়ম্বনা কমানো, সময় বাঁচানো ও অর্থ ব্যয় কমানো। এজন্য এরইমধ্যে আমরা বেশকিছু সংস্কারকাজ করেছি। এটা হয়তো খুব বেশি বোঝা যাচ্ছে না কিন্তু যারা আইন বিশেষজ্ঞ আছেন, তাদের বোঝার কথা।
সংশোধনের কিছু উদাহরণ দিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘দেওয়ানী কার্যবিধির যুগান্তকারী বেশকিছু সংশোধন করা হয়েছে, যা উপদেষ্টা পরিষদে নীতিগতভাবে অনুমোদন হয়েছে। আশা করছি, উপদেষ্টা পরিষদের আগামী সভায় এটি চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করবে।’
ফৌজদারী কার্যবিধিতেও ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘যদি বিচার করার সময় অর্ধেকে নামিয়ে আনা যায় এবং ৪০ শতাংশ মামলা জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রধান সংস্থার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যায়, তাহলে বিচারপ্রার্থী মানুষের জন্য অনেক বড় একটা কাজ করা হবে।’
পারিবারিক মামলা, এনআই এক্টের মামলা, আপসযোগ্য ফৌজদারি মামলাসহ ছোট ছোট মামলাগুলো বাধ্যতামূলকভাবে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থায় পাঠানো সম্ভব হলে আদালতগুলোতে বিপুল সংখ্যক মামলাজট কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোতে মাত্র একজন করে সহকারী/সিনিয়র সহকারী জজ পদমর্যাদার বিচারক কাজ করছেন। কাজের গতি বাড়াতে এসব অফিসে একজন সিনিয়র সহকারী জজ ছাড়াও একজন যুগ্ম জেলা জজ এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নিয়োগ দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মডেল মেঘনাকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি: আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থাকে আমরা এমন একটা পর্যায়ে উন্নীত করতে চাই, যেখানে অন্তত এক লাখ মামলা নিষ্পত্তি হবে এবং আগামী এক বছরের মধ্যে সেখানে দুই লাখ মামলা নিষ্পত্তি হবে। এটা করা সম্ভব হলে, বাংলাদেশে বিচারপ্রার্থী মানুষের জন্য অনেক বড় সুবিধা তৈরি করবে।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সেরা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সেরা প্যানেল আইনজীবীর হাতে সম্মাননাসূচক ক্রেস্ট তুলে দেন আইন উপদেষ্টা।
২২১ দিন আগে
দেশ পরিচালনায় কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থতার কথা স্বীকার আইন উপদেষ্টার
দেশ পরিচালনায় কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, পরিস্থিতির উত্তরণে সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর পিটিআইয়ের সম্মেলন কক্ষে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ বিষয়ক কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, নতুন বাংলাদেশে কয়েকটি ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করছে সরকার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পুলিশ বাহিনী।
‘নিয়োগ থেকে শুরু করে বাহিনীটির সবক্ষেত্রেই ভঙ্গুরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় বেশ কিছু জায়গায় ব্যর্থতা থাকলেও তা উত্তরণে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।’
আরও পড়ুন: সাড়ে ১৬ হাজার গায়েবি মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে: আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা কোটি কোটি টাকা খরচ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটনোর চেষ্টা করছে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের কিছু অংশ দেশের বাইরে পালিয়ে গেলেও অধিকাংশই দেশের ভেতরে অবস্থান করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে, একই অনুষ্ঠানে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, একটি গোষ্ঠী চাচ্ছে না দেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করুক। চেষ্টা করছে যেভাবে হোক দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে। তবে বর্তমান সরকার মানবাধিকারের ওপরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। অপারেশন ডেভিল হান্টে গুরুত্বপূর্ণ অপরাধীরা ধরা পড়ছে বলেও উল্লেখ করেন আইজিপি।
২৮৪ দিন আগে
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ হবে কাউন্সিলের মাধ্যমে, অধ্যাদেশ জারি
স্বতন্ত্র কাউন্সিলের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ করা হবে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) `সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর গেজেট জারি হয়েছে।
এরআগে এদিন সচিবালয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ আইনসহ সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এ কথা জানান। গত ১৭ জানুয়ারি অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ ২০২৫ এর গেজেট আজকে জারি হয়েছে। আপনারা সবাই জানেন, বিগত সরকারের সময় যে অনাচার হতো, মানবাধিকার লঙ্ঘন হতো, মানুষকে যে দমন-নিপীড়ন করা হতো—সেটার একটা বড় প্ল্যাটফর্ম ছিল উচ্চ আদালত। চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরেও মানুষ সেখানে প্রতিকার পেতেন না।
আরও পড়ুন: ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে প্রত্যর্পণ চুক্তির লঙ্ঘন হবে: আইন উপদেষ্টা
‘কারণ ছিল উচ্চ আদালতে রাজনৈতিক সরকারগুলো সম্পূর্ণভাবে দলীয় বিবেচনায়, অনেক ক্ষেত্রে অযোগ্য লোকদের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিত। উচ্চ আদালতে বিচারক হিসেবে যদি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষ ও যোগ্য লোক নিয়োগ না পান, তবে ১৮ কোটি মানুষের মানবাধিকারের প্রশ্নটি অমীমাংসিত ও ঝুঁকির মধ্যে থেকে যায়।’
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে দক্ষ, অভিজ্ঞ, দল নিরপেক্ষ, প্রকৃত যোগ্য ব্যক্তিরা বিচারক নিয়োগ পাবেন—এমন একটি চাহিদা সমাজে বহু বছর যাবত ছিল। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠন থেকে এই ধরনের দাবি উত্থাপন করা হয়েছিল।
আসিফ নজরুল বলেন, অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই যে, এই আইনটা হয়েছে। আইনটি রচনা করার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির অফিস থেকে একটা ড্রাফট (খসড়া) পাঠানো হয়েছিল, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন থেকে একটা খসড়া পাঠানো হয়েছিল। ২০০৮ সালে এরকম একটি অধ্যাদেশ করার প্রক্রিয়া ছিল সেটার কপি—কিছু পর্যালোচনা করেছি আমরা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমরা একটি পরামর্শক সভা করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি ভালো একটা আইন করার জন্য।
আধ্যাদেশে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল করার কথা বলা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, সেই কাউন্সিল হবে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দুজন বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগের দুজন বিচারক ও এটর্নি জেনারেল—তাদেরকে নিয়ে এ কাউন্সিল গঠন করা হবে।
‘এ কাউন্সিল প্রথমে যাচাই-বাছাই করবে। তারা নিজ উদ্যোগে অনেক নাম সংগ্রহ করবেন। একই সঙ্গে যে কোনো মানুষ, যে কোনো আইনজীবী বা যে কেউ কাউকে রেফার (বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার জন্য) করে চিঠি পাঠাতে পারবেন। সেটা উন্মুক্ত থাকবে। কাউন্সিল প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করার পর ইন্টারভিউ নেবেন।’
আরও পড়ুন: বিবাহ কর বাতিল, ডকুমেন্ট সত্যায়ন এখন অনলাইনে
আসিফ নজরুল বলেন, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উচ্চ আদালতে বিচারকরা নিয়োগ পাবেন। আশা করছি, উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে আগামী তিন মাসের মধ্যে হাইকোর্টে যে পরবর্তী নিয়োগ আছে, আগের যে কোনো আমলের চেয়ে একটা বেটার নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ দিতে পারব।
জুডিশিয়াল সার্ভিস এবং আইনজীবীদের মধ্য থেকে এখন হাইকোর্টে বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়। নতুন আইন অনুযায়ী দুই ক্ষেত্র থেকে নিয়োগের জন্য কোনো অনুপাত নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে কিনা- এ বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এটি দীর্ঘদিনের টেনশন—কতজন আইনজীবী থেকে বিচারক করা হবে আর কতজন নিম্ন আদালতের বিচারক থেকে করা হবে। আমরা এটা কাউন্সিলের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আমরা বলেছি যথোপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব যাতে থাকে।
৩১৭ দিন আগে
বিবাহ কর বাতিল, ডকুমেন্ট সত্যায়ন এখন অনলাইনে
বিয়ের ক্ষেত্রে আরোপিত কর বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। এছাড়া সত্যায়ন প্রক্রিয়া এখন থেকে অনলাইনে সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ আইনসহ সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এসব কথা জানান।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বিবাহ সম্পাদনে আরোপিত একটা কর ছিল। মন্ত্রণালয় এই অযৌক্তি কর আরোপকে বাতিল করেছে।’
আরও পড়ুন: ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে প্রত্যর্পণ চুক্তির লঙ্ঘন হবে: আইন উপদেষ্টা
বিয়ের কর বাতিলের সিদ্ধান্ত কবে থেকে কার্যকর হবে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিয়ের ট্যাক্সে আজকে সাইন করলাম। আপনি ট্যাক্স ছাড়া বিয়ে করতে পারবেন।’
আসিফ নজরুল বলেন, “এছাড়া বিয়ের ফরমে লেখা থাকত—বিবাহিতা নাকি কুমারী। এটা একটা মেয়ের জন্য অমার্যাদাকর শব্দ। সেটা আমরা (পরিবর্তন করে) ‘অবিবাহিতা’ করে ফেলেছি। এমন ছোটো ছোটো অনেক কাজ করেছি। আরও অনেক কাজ করার চিন্তা আছে।”
ডকুমেন্ট সত্যায়ন প্রক্রিয়া
আসিফ নজরুল বলেন, ‘৩৬ ধরনের ডকুমেন্ট সত্যয়ন করে আইন মন্ত্রণালয়। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে এই সত্যায়ন প্রক্রিয়াকে অনলাইনভিত্তিক করা হয়েছে। তাই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সত্যায়ন করার জন্য জনগণকে আর লাইনে দাঁড়াতে হয় না।’
‘আমি শুনেছি, আমাদের আইন মন্ত্রণালয়ের সামনে দীর্ঘ লাইন থাকত সত্যায়ন করার জন্য। বর্তমান পদ্ধতিতে দুই-একদিনের মধ্যেই ঘরে বসে কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে সত্যায়নের পর বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশি দূতাবাসে সার্ভিস ফি দিয়ে সত্যায়ন করা লাগছে না। আমাদের হিসাব অনুযায়ী, এতে বছরে জনগণের ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা বেঁচে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: অন্তর্ভুক্তিমূলক 'জুলাই ঘোষণা' নিয়ে ঐকমত্য সব দল: আসিফ নজরুল
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার আনার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির আরও কিছু এরিয়া (জায়গা) চিহ্নিত করেছি। ১৫ থেকে ২০টি এরিয়া ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা আশা করি, সমস্ত আইনগত সংস্কার আগামী ছয় মাসের মধ্যে করব। আমাদের যে প্রত্যাশা, সেই অনুসারে সবগুলো সংস্কার করে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বিচার বিভাগ সংস্থার কমিশন করা হয়েছে। তাদের সাহায্য নিয়ে আমরা এ কাজগুলো করার চেষ্টা করছি, যাতে একটা সমন্বয় থাকে।’
৩১৮ দিন আগে
যেতে না পারা প্রায় ১৮০০০ কর্মীকে মালয়েশিয়া পাঠানোর বিষয়ে কাজ করছে সরকার: উপদেষ্টা
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, টিকিট জটিলতায় মালয়েশিয়া যেতে না পারা প্রায় ১৮ হাজার কর্মীকে সে দেশে পাঠানোর বিষয়ে কাজ করছে সরকার।
তিনি বলেন, দেশটিতে বন্ধ শ্রমবাজার চালু ও বাংলাদেশের সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সমান সুযোগ সৃষ্টি এবং কর্মীদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে কাজ করছে সরকার।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির সংলাপ
প্রবাসীকল্যাণ ভবনের বিজয়-৭১ মিলনায়তনে শনিবার (৫ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সমঝোতা সইকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ সুনিশ্চিত করতে ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রবাসী কর্মীদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রবাসীরা বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। প্রত্যেকেই বাংলাদেশের একেকটি পতাকা হয়ে কাজ করেন।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। তাদের যথাযথ মূল্যায়ন, প্রবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের কল্যাণমূলক সুরক্ষা নিশ্চিত করা আবশ্যক। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড এ কাজটি নিরলসভাবে করে যাচ্ছে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিনের উপস্থিতিতে চুক্তিতে ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান এবং মালয়েশিয়ার পারকেসোরর মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আজমান আজিজ মোহাম্মদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ শুরু আজ
ঋণ দেওয়ার সময় কঠোর যাচাই-বাছাই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার আহ্বান অর্থ উপদেষ্টার
৪২৬ দিন আগে
দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য বিচার নিশ্চিত করতে চাই: ড. আসিফ নজরুল
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য বিচার নিশ্চিত করতে চাই। আমরা প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসার বিচার চাই না, বরং আমরা সুবিচার নিশ্চিত করতে চাই।
তিনি বলেন, গত জুলাইয়ে হত্যাকাণ্ড জনগণ নিজ চোখে দেখেছেন। একটি বৃদ্ধ প্রজন্ম দেশের তরুণ প্রজন্মকে উন্মত্তভাবে খুনের নেশায় মেতেছিল।
আমাদের বুকের ভেতর যত কষ্ট, হতাশা ও ক্ষোভ থাকুক না কেন এই খুনের বিচারকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩’ সংশোধন বিষয়ক একটি মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী-জনতাকে ধৈর্য ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান আসিফ নজরুলের
উপদেষ্টা বলেন, অতীতে দেখেছি, এদেশে বিচারের নামে কী ধরণের অবিচার হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য বিচার নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।
আসিফ নজরুল বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমকে সচল করার লক্ষ্যে প্রসিকিউশন ও ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করা হয়েছে। এখন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ট্রাইব্যুনালকে পুনর্গঠন করা।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩’ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। সংস্কার কার্যক্রম এখানেই থেমে থাকবে না। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে আইন সংশোধন করা হবে।
সভায় ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩’ সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনী উপস্থাপন করা হয়।
প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনীতে ৪এ, ১৩এ ও ২০এ নামে ৩টি নতুন ধারা ও ৩(৩) ও ১২(২) নামে ২টি নতুন উপধারা যুক্ত করা হয়। এছাড়া ৩(২)(এ), ৪(২) ও ১৯ ধারায় সংশোধন আনার প্রস্তাব করা হয়।
আরও পড়ুন: জনগণের সংস্কার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে নতুন নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশার সমন্বয় করেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থাকবে: আসিফ নজরুল
আইনটির প্রস্তাবিত সংশোধনী নিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ, শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম রব্বানী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব (চলতি দায়িত্ব) ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. বদিউল আলম মজুমদার, সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ইকতেদার আহমেদ, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ও অধ্যাপক নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বেগম আসমা সিদ্দীকা, রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্মসচিব (ড্রাফটিং) মো. রফিকুল হাসান, ঢাকাস্থ জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী অফিসের কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন, সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সোস্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট ড. জাহেদুর রহমান, সাংবাদিক সাঈদ আব্দুল্লাহ, সানজিদা ইসলাম, শরিফ ভূঁইয়া প্রমুখ তাদের নিজ নিজ মতামত তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: আশা করি সাকিবকে গ্রেপ্তার করা হবে না: আসিফ নজরুল
৪৩৭ দিন আগে