আইআরজিসি
ইসরায়েলে ইরানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইসরায়েলের দ্বিতীয় দফা আক্রমণের জবাবে এবার দেশটির সামরিক ও বিমানঘাঁটিগুলোতে একযোগে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা থামা চলমান থাকায় তা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
শুক্রবার (১৪ জুন) ভোর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশদুটির পাল্টাপাল্টি হামলায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। তবে হতাহতের বেশিরভাগই ইরানের।
উভয় পক্ষের কর্মকর্তারাই তাদের অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) শুক্রবার রাতে এ হামলা চালানোর কথা জানায়। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ইসরায়েলের হামলার জবাবে ‘ট্রু প্রমিস ৩’ নামের এই অভিযান শুরু হয়েছে।
ইসারায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, ইরান ১০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যেগুলোর বেশিরভাগ তারা প্রতিহত করেছে।
অপরদিকে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে। ভূমিতে স্থাপিত ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থার মাধ্যমেই সেগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে এখনও যুদ্ধবিমান কিংবা যুদ্ধ জাহাজের সহায়তা নেওয়া হয়নি।
এদিকে, তেল আবিবের পূর্ব এলাকা রামাত জানে ইরানের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের আশপাশ থেকে আহতদের সরিয়ে নেওয়ার ছবি ও ভিডিও দেখা গেছে।
তেল আবিব মহানগর এলাকায় রকেট হামলায় পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় অ্যাম্বুলেন্স সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম।
আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মাগেন ডেভিড অ্যাডমের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত তেল আবিব এলাকায় হামলার খবর পাওয়া সাতটি স্থানে আমাদের উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে।’
১৭৪ দিন আগে
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিহত
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া পৃথক হামলায় দেশটির অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান হোসেইন সালামিসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
খবরে বলা হয়, শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ একাধিক স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। তেহরানে আইআরজিসির সদর দপ্তরেও হামলা হয়েছে। তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও গুরুত্বর্পূর্ণ সামরিক কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে চালানো হামলার নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন রাইজিং লায়ন।
বাঘেরি ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা। শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়া ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তাও তিনি।
শুক্রবার ভোরে ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা নাতানজসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। পরে দেশটির আরও কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে।
টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, ইরানে ইসরায়েলি হামলায় ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়, যেগুলো দেশটির ভেতরে প্রায় ১০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি নিহত
এদিকে, একইদিনে পৃথক একটি হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের অভিজাত বাহিনী আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি। ইরানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। এই হামলায় সালামি, জরুরি কমান্ড ইউনিটের প্রধান জেনারেল গোলাম আলি রশিদসহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নিহত হয়েছেন বলেও খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত হোসেইন সালামিকে ইরানের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সালামির নেতৃত্বেই ২০২৪ সালে ইরান প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক হামলা চালায়। ওই হামলায় ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়।
দুই পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণু জ্বালানি সংস্থার (এইওআই) সাবেক প্রধান ফিরেদুন আব্বাসি ও তেহরানের ইসলামি আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ মেহদি তেরাঞ্চি এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোর দেখভাল করে থাকে পরমাণু শক্তি সংস্থা (এইওআই)।
কড়া জবাবের হুশিয়ারি ইরানের
এদিকে, ইসরায়েলের হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তেহরান।
ইসরায়েলের হামলার জবাবে এবার পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান। দেশটির পক্ষ থেকে ইসরায়েলের দিকে প্রায় ১০০টি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন জানিয়েছেন, গত এক ঘণ্টায় ইসরায়েল অভিমুখে অন্তত ১০০টি ইউএভি (ড্রোন) ছোড়া হয়েছে, যেগুলো আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করছি।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের মুখপাত্র আবুলফজল শেখারচি বলেন, ‘জায়নবাদী এ হামলার জবাব অবশ্যই দেবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলকে তার হামলার চড়া মূল্য দিতে হবে এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর কঠোর জবাবের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
১৭৫ দিন আগে
নিহত আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি কে ছিলেন?
শুক্রবার তেহরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলায় ইরানের অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। এই হামলায় সালামিসহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নিহত হয়েছেন বলেও খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ (শুক্রবার) ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ একাধিক স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, তেহরানে আইআরজিসির সদর দপ্তরেও হামলা হয়েছে।
গত ২০ মাসে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ও অস্থিরতার মাঝে একাধিক সংকটে পড়ে গেছে তেহরান। এরই মধ্যে দেশটির অন্যতম ক্ষমতাধর বাহিনীর নেতৃত্বে থাকা সালামির এই মৃত্যু ইরানের নেতৃত্বে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
হোসেইন সালামিকে ইরানের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার জন্ম ১৯৬০ সালে, ইরানের গোলপায়েগান শহরে।
কলেজে পড়াকালীন ১৯৮০ সালে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় তিনি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীতে (আইআরজিসি) যোগ দেন। পরে বাহিনীর বিমান শাখার নেতৃত্ব দেন তিনি।
সামরিক বাহিনীতে থাকাকালেই ধাপে ধাপে পদোন্নতি পেয়ে একপর্যায়ে আইআরজিসির উপপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। এই সময় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থানের জন্য তিনি দেশে-বিদেশে পরিচিতি লাভ করেন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের আশঙ্কা ও সতর্কতার পরই ইরানে হামলা ইসরায়েলের
২০১৬ সালে এক ভাষণে সালামি বলেছিলেন, ‘ইহুদিবাদী শাসন নিষ্ক্রিয়, পতন এবং ধ্বংস করতে উর্বর ক্ষেত্র প্রস্তুত।’ সে সময় যুক্তরাষ্ট্রকেও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।
এরপর ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জাফারিকে সরিয়ে সালামির কাঁধে আইআরজিসির ভার দেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
এমন এক সময়ে তিনি আইআরজিসির নেতৃত্বে আসেন, যখন প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকাকালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি প্রত্যাহার করে দেশটির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে আইআরজিসিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবেও তালিকাভুক্ত করে ট্রাম্প প্রশাসন।
২০২০ সালে বাগদাদের বিমানবন্দরের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় আইআরজিসির কুদস ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর সালামি হুঁশিয়ারি দেন, ‘মার্কিন ও ইসরায়েলি কমান্ডারদের পাল্টা হামলার লক্ষ্য বানানো হবে। আমাদের কমান্ডারদের হুমকি দিলে, শত্রুদের কোনো কমান্ডারই নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাবে না।’
সে সময় দুটি ইরাকি ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও ছোড়ে ইরান, যাতে কেউ নিহত না হলেও আহত হন অনেকেই।
১৭৫ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি নিহত
শুক্রবার তেহরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী—আইআরজিসির প্রধান হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। এই হামলায় সালামিসহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নিহত হয়েছেন বলে খবরে বলা হয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, দেশটির অভিজাত বিপ্লবী গার্ড বাহিনী—আইআরজিসির প্রধান হোসেইন সালামি ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। তেহরানে আইআরজিসির সদরদপ্তরেও আঘাত হেনেছে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকায় হামলায় বেসামরিক নাগরিকের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি শিশুও নিহত হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের সংবাদমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুসারে, দেশটির প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা নাতানজসহ বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
আইআরজিসির সদরদপ্তরও হামলার শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। খবরে বলা হয়েছে, ওই স্থাপনা থেকে আগুন ও ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে।
ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি শাখা এবং দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী সংগঠন হিসেবে বিবেচিত।
দুই বিজ্ঞানী নিহতের তথ্য প্রকাশ
অপারেশন রাইজিং লায়ন নামের এই হামলায় ইরানের দুই জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানীও নিহত হয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার সাবেক প্রধান ফিরেদুন আব্বাসি এবং তেহরানের ইসলামি আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ মেহদি তেরাঞ্চি এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নিহত আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি কে ছিলেন?
দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোর দেখভাল করে থাকে পরমাণু শক্তি সংস্থা (এইওআই)। আব্বাসিকে এর আগেও একবার হত্যার চেষ্টা করা হয়। ২০১০ সালের ওই হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। তবে ১৫ বছর পর এসে আরেক হামলায় প্রাণ হারাতে হলো এই বিজ্ঞানীকে।
এদিকে, ইসরায়েলের এই হামলার চূড়ান্ত জবাব দেওয়া হবে বলে ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অন্তত ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার খবরে এমন দাবি করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নাতানজ পরমাণু স্থাপনার একটি অংশ ভূ-উপরিভাগে এবং বাকিটা ভূগর্ভে অবস্থিত। পারমাণবিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে সেখানে ইউরেনিয়াম গ্যাস ঘূর্ণায়নের জন্য একাধিক সেন্ট্রিফিউজ হলঘর রয়েছে।
ইরানীয় কমান্ডার ও ক্ষেপণাস্ত্র কারখানাকে হামলার নিশানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। এ ছাড়া পরমাণু বোমা, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও নাতানজ পরমাণু সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় কাজ করা বিজ্ঞানীদেরও হামলার নিশানা বানানো হয়েছে।
এই হামলার নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন রাইজিং লায়ন।
ইরানের হুঁশিয়ারি ও পাল্টা ব্যবস্থা
এদিকে পাল্টা হামলার আশঙ্কা থেকে ইসরায়েলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
একটি ধারণকৃত ভিডিওবার্তায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের ইতিহাসের এক চূড়ান্ত মুহূর্তে রয়েছি।’
আরও পড়ুন: ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের হামলা
নাতানজ থেকে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, তেহরানে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়েছে। দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি সতর্ক।
ইরানের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশটির শীর্ষ নেতারা একটি নিরাপত্তা বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।’
১৭৫ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় ইরানের দুই পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত
ইসরায়েলি হামলায় ইরানের দুই পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৩ জুন) পারস্য উপসাগরীয় দেশটির পরমাণু সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণু জ্বালানি সংস্থার (এইওআই) সাবেক প্রধান ফিরেদুন আব্বাসি ও তেহরানের ইসলামি আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ মেহদি তেরাঞ্চি এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোর দেখভাল করে থাকে পরমাণু শক্তি সংস্থা (এইওআই)। আব্বাসিকে এর আগেও একবার হত্যার চেষ্টা করা হয়। ২০১০ সালের ওই হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। তবে ১৫ বছর পর এসে আরেক হামলায় প্রাণ হারাতে হলো এই বিজ্ঞানীকে।
শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের সংবাদমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দেশটির প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা নাতানজসহ বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এ হামলার চূড়ান্ত জবাব দেওয়া হবে বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার খবরে দাবি করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে, নাতানজ পরমাণু স্থাপনার আংশিক ভূ-উপরিভাগে, কিছুটা ভূ-গভীর অবস্থিত। পারমাণবিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে সেখানে ইউরেনিয়াম গ্যাস ঘূর্ণনের জন্য একাধিক সেন্ট্রিফিউজ হল রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি নিহত
ইরানীয় কমান্ডার ও ক্ষেপণাস্ত্র কারখানাকেও হামলার নিশানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলার নাম দেওয়া হয়েছে ‘রাইজিং লায়ন’ বা জেগে ওঠা সিংহ।
এদিকে পাল্টা হামলার আশঙ্কা থেকে ইসরায়েলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
একটি ধারণকৃত ভিডিওবার্তায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের ইতিহাসের এক চূড়ান্ত মুহূর্তে রয়েছি।’
পরমাণু বোমা, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও নাতানজ পরমাণু সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় কাজ করা বিজ্ঞানীদেরও হামলার নিশানা বানিয়েছে ইসরায়েল।
নাতানজ থেকে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, তেহরানে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়েছে। দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি সতর্ক।
ইরানের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশটির শীর্ষ নেতারা একটি নিরাপত্তা বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের হামলা
১৭৫ দিন আগে
ইরানের হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার নেতানিয়াহুর
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে গুরুতর ভুল হিসেবে বর্ণনা করে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
মঙ্গলবার ইসরায়েলে ১৮০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। এর প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে এ অঙ্গীকার জানান।
ইরানের দাবি, লেবাননে হিজবুল্লাহর ওপর সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। গাজা সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়ে আসছে ইরান সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
এর আগে ওই দিন সকালে ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে।
ইসরায়েলজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয়।
দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশকিছু ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বয়স করতে পারলেও ইসরায়েলের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এতে দুইজন আহত হয়েছে।
ইসরায়েলের চ্যানেল থার্টিন টিভি নিউজ জানিয়েছে, ইরান থেকে অন্তত ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। বিকট বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাখ লাখ বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
ইসরায়েলের উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো জানায়, শ্রাপনেলের আঘাতে তেল আবিবে দুইজন সামান্য আহত হয়েছে। শহরের উত্তরাঞ্চলে একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েলের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তাজনিত কারণে জর্ডান ও ইরাকের নিকটবর্তী দেশগুলোও তাদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে বিমান চলাচল স্থগিত করেছে।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় আইআরআইবি টিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) অর্ধশতক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে।
এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানায়, হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ও আইআরজিসির জ্যেষ্ঠ কমান্ডার আব্বাস নিলফোরুশানকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এবং মার্কিন সহায়তা নিয়ে লেবানন ও ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ বাড়াতে থাকায় এ হামলা চালানো হয়েছে।
আইআরজিসি আরও জানায়, সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের অনুমোদন এবং সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের নির্দেশনার পর এ অভিযান চালানো হয়।
আইআরজিসি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইসরায়েল যদি প্রতিশোধ নিতে ইরানে হামলা চালায় তাহলে দেশটিকে আরও ধ্বংসাত্মক হামলার মুখোমুখি হতে হবে।
অন্যদিকে পশ্চিম তীরে জেরিকোর কাছে এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তির মৃত্যুর খবর দেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। যদিও এই ক্ষেপণাস্ত্র ইরান থেকে ছোড়া না ইসরায়েলের তা স্পষ্ট নয়।
ইসরায়েলে ইরানের এই হামলা দুই দেশ ও তাদের আঞ্চলিক মিত্রদের মধ্যে সংঘাত তীব্র করে দিলো যার প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় আকারের যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে।
৪২৯ দিন আগে