জুলাই বিপ্লব
ছেলের স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আবু সাঈদের মা
আজ ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের বছরপূর্তি। এই দিনে সারা দেশে বিজয় উৎসব হলেও ছেলের স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখাই এখন একমাত্র ইচ্ছা বলে জানিয়েছেন জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম।
মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে যে স্বপ্ন নিয়ে জীবন বিসর্জন দিয়েছে, সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আছি। যেন এ দেশে আর কোনো দিন ফ্যাসিস্টের জন্ম না হয়। এ দেশে আর যেন বৈষম্য, হানাহানি, খুনোখুনি না থাকে।’
পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়ায় শহীদ আবু সাঈদের পৈতৃক নিবাসে ছেয়ে আছে শূন্যতা। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রয়েছেন বাড়িতে, রয়েছে তার ব্যবহৃত জামা-কাপড়সহ অন্যান্য জিনিসপত্রও।
তবে প্রকৃতির নিয়মে সব আগের মতো চললেও বাবা-মায়ের কাছে আবু সাঈদের শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।
রংপুর শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়ার একটি সাধারণ পরিবারের সন্তান ছিলেন আবু সাঈদ। বাড়িতে ঘরের পাশেই আবু সাঈদের কবরের সামনে নিষ্পলক দাঁড়িয়ে ছিলেন মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা মকবুল হোসেন।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে: আইন উপদেষ্টা
মা মনোয়ারা বলেন, ‘আমার সন্তানের কারণে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। আমার ছেলের মতো যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়—এটাই সবার কাছে আমার দাবি। সে যে চেতনা নিয়ে বুকের রক্ত দিয়েছে, সেই চেতনার বাংলাদেশ দেখে মরলে শান্তি পাব।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে এখন সবাই আসেন, জানতে চান আমার ছেলের আত্মদানের কথা। সকাল হচ্ছে, সন্ধ্যা হচ্ছে, মানুষজন আগের মতোই বাড়িতে আসেন। কিন্তু হাজার মানুষের ভিড়েও আমার বুকে এক শূন্যতা বিরাজ করে। এক বুক হাহাকার নিয়ে প্রতিটি মুহূর্ত কাটে আমার। সেই শূন্যতা কে পূরণ করবে? আমি একজন মা হিসেবে আমার ছেলের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আছি।’
বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলের আত্মদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ জালিম সরকারের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। দেশের মানুষ স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে।’
আন্দোলনে তার ছেলের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছেলেরা পড়াশোনা করে চাকরি না পাওয়ায় আন্দোলন করেছে। এটা ছিল ন্যায্য দাবি।’
আবু সাঈদের হত্যাকারীদের ব্যাপারে মকবুল হোসেন বলেন, ‘যে পুলিশ সদস্য আমার ছেলের বুকে গুলি চালিয়েছে, সেই পুলিশসহ অন্যান্য হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
১২১ দিন আগে
জুলাই বিপ্লবের খুনিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে: ডা. শফিকুর রহমান
প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে প্রতিশ্রুত ৩০ লাখ টাকা ও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের খুনিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো অন্যায় বিচার চাই না, ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
সোমবার(১৭ মার্চ) বেলা ১২টায় ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এক পথসভায় জামায়াত আমির এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বরগুনায় নিহত মন্টুর ১৮ মাসের শিশুর দায়িত্ব নিলেন জামায়াত আমির
তিনি বলেন, কোরআন বাংলাদেশের সংবিধান হলে এবং ইসলামী দলগুলো দেশের সেবা করতে পারলে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে।
২৬২ দিন আগে
জুলাই বিপ্লব চলাকালে পরিকল্পিত দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে: জাতিসংঘের প্রতিবেদন
২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সময় বাংলাদেশের সাবেক সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ে বাংলাদেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদন এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য এবং অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে এটি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী এবং সহানুভূতিশীলদের আক্রমণ ও সহিংসভাবে দমন করার একটি সরকারি নীতিও খুঁজে পেয়েছে। যা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে। এসবের জন্য আরও জরুরি ফৌজদারি তদন্ত প্রয়োজন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিক্ষোভ দমনে সরাসরি জড়িত সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ সূত্র বর্ণনা করেছে কীভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী– শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বড় আকারের অপারেশন পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান করেছিলেন। সেসময় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা করেছিল। করেছিল নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন।
আরও পড়ুন: জুলাই অভ্যুত্থান: জাতিসংঘ মিশনের প্রতিবেদন মধ্য-ফেব্রুয়ারিতে
বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রকাশিত মৃত্যুর খবরের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে যে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার আহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই নিহত হয়েছেন বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে। এর মধ্যে নিহতদের মধ্যে ১২ থেকে ১৩ শতাংশই শিশু। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
সরকারি চাকরিতে বাতিল হওয়া কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের উচ্চ আদালতের রায়ের পর এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল। তবে এর মূলে ধ্বংসাত্মক ও দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের ব্যাপক অভিযোগও ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতায় থাকার জন্য আগের সরকার ক্রমবর্ধমান সহিংস উপায়ে এই বিক্ষোভ দমনে ধারাবাহিকভাবে পদ্ধতিগত চেষ্টা করেছিল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, 'ব্যাপক বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা ধরে রাখতে সাবেক সরকারের একটি পরিকল্পিত ও সুসমন্বিত কৌশল ছিল— যা নিষ্ঠুর প্রতিক্রিয়া।
তিনি আরও বলেন, ‘বিক্ষোভ দমনে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের পরামর্শ, সমন্বয় ও নির্দেশনা দিয়ে শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ব্যাপকহারে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে।’
তুর্ক বলেন, আমরা যে সাক্ষ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করেছি তা ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং লক্ষ্যবস্তু হত্যার একটি বিরক্তিকর চিত্র উঠে এসেছে। মানবাধিকারের সবচেয়ে গুরুতর লঙ্ঘনগুলোর মধ্যে একটি এবং যা আন্তর্জাতিক অপরাধও হতে পারে। জাতীয় স্বস্থি এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য জবাবদিহিতা এবং ন্যায়বিচার অপরিহার্য।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের অনুরোধে গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস বাংলাদেশে ভয়াবহ ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় তদন্তে একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম পাঠায়। তদন্ত দলে একজন ফরেনসিক চিকিৎসক, একজন অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ও একজন মানবাধিকার তদন্তকারী ছিলেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তদন্তে উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা করেছে। তদন্তের জন্য যেসব সুবিধিা অনুরোধ করা হয়েছিল, তা মঞ্জুর করেছে এবং যথেষ্ট প্রমাণপত্র সরবরাহ করেছে।
প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে এবং বেআইনিভাবে বিক্ষোভকারীদের হত্যা বা পঙ্গু করার প্রমাণ পেয়েছে। যার মধ্যে পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে লোকজনকে গুলি করার ঘটনাও রয়েছে।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন চলাকালে আবু সাঈদ পুলিশের দিকে খালি হাত উচিয়ে 'আমাকে গুলি করো' বলে চিৎকার করার ঘটনাটিও বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা করে এর সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:অভ্যুত্থানে আহতদের আজীবন চিকিৎসাসহ ভাতা দেওয়ার চিন্তায় সরকার
ভিডিও ফুটেজ, ছবি এবং জিও-লোকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তকারীরা কীভাবে এটি ঘটেছিল তার সাক্ষ্যের সত্যতা প্রমাণ করার জন্য তার হত্যাকাণ্ডটি তদন্ত করেছেন।
একটি ফরেনসিক বিশ্লেষণ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে তার আঘাতগুলো প্রায় ১৪ মিটার দূরত্ব থেকে ধাতব ছররা বোঝাই শটগান দিয়ে কমপক্ষে দু'বার গুলি করা হয়েছিল।
প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে, আবু সাঈদ পুলিশের ইচ্ছাকৃত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে।
প্রথম দিকের বিক্ষোভের পুরোভাগে থাকার কারণে প্রতিবাদী নেতাসহ নারীরাও নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও দুর্ব্যবহার এবং হামলার শিকার হয়েছিলেন।
প্রতিবেদনে নারীদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে শারীরিক নির্যাতন এবং ধর্ষণের হুমকিসহ লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের হত্যা ও পঙ্গু করে দিয়েছে। তারা নির্বিচারে গ্রেপ্তার, অমানবিক পরিস্থিতিতে আটক ও নির্যাতন চালিয়েছে। বেশ কয়েকটি মারাত্মক ঘটনার মধ্যে একটি হলো- ধানমন্ডিতে ১২ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী প্রায় ২০০ ধাতব ছররা গুলি অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে মারা গেছেন।
নিহতদের মধ্যে খুব ছোট শিশুও ছিল। শিশুগুলো তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে বিক্ষোভে গিয়েছিল কিংবা যারা পথচারী হিসাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে একটি বিক্ষোভে সহিংস সংঘর্ষ পর্যবেক্ষণ করার সময় ছয় বছরের এক মেয়ে তার ভবনের ছাদে দাঁড়িয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে।
৫ আগস্ট - বিক্ষোভের চূড়ান্ত এবং সবচেয়ে মারাত্মক দিনগুলোর মধ্যে একটি ঘটনা হলো- আজমপুরে পুলিশের গুলিতে ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে গুলিবিদ্ধ হন। তিনি বলেন, সেসময় পুলিশ ‘চারদিকে বৃষ্টির মতো গুলি চালাচ্ছিল। তিনি অন্তত এক ডজন মানুষের মৃতদেহ দেখেছেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জুলাই অভ্যুত্থানের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ আহ্বান
প্রতিবেদনে এমন ঘটনাও নথিভুক্ত করা হয়েছে যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী আহত বিক্ষোভকারীদের গুরুতর চিকিৎসা সেবা দিতে অস্বীকার করেছে বা বাধা দিয়েছে। রোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং হাসপাতালে তাদের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে। চিকিৎসা কর্মীদের ভয় দেখিয়েছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ জব্দ করেছে।
আগের সরকার দেশের নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করলে আওয়ামী লীগের কর্মী ও সমর্থক, পুলিশ ও গণমাধ্যমকে লক্ষ্য করে প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড এবং অন্যান্য গুরুতর প্রতিশোধমূলক সহিংসতার উদ্বেগজনক উদাহরণও নথিভুক্ত করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
হিন্দু, আহমদিয়া মুসলমান এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছিল।
বিভিন্ন ধর্মীয় ও আদিবাসী গোষ্ঠীর ওপর হামলার ঘটনায় প্রায় ১০০ জনকে গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেলেও প্রতিশোধমূলক সহিংসতা ও এ ধরনের গোষ্ঠীর ওপর হামলার অপরাধীরা এখনও দায়মুক্তি ভোগ করছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগের সংস্কার, নাগরিক ও রাজনৈতিক মতবিরোধ দমনের জন্য পরিকল্পিত দমনমূলক আইন ও প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত করা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক শাসনব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন সাধনের জন্য বিস্তারিত সুপারিশও করা হয়েছে।
হাইকমিশনার তুর্ক বলেন, 'বাংলাদেশের সামনে এগিয়ে যাওয়ার সর্বোত্তম উপায় হলো- সত্য বলা, আহতদের সুস্থতা নিশ্চিত করা ও জবাবদিহিতার একটি বিস্তৃত প্রক্রিয়ার অনুসরণ। এর মাধ্যমে এই সময়কালে সংঘটিত ভয়াবহ অন্যায়ের মুখোমুখি হওয়া এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের উত্তরাধিকারের প্রতিকার করা। এছাড়া ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয় তা নিশ্চিত করা।’
গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় জবাবদিহিতা ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস প্রস্তুত রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তুর্ক।
আরও পড়ুন: ‘ভয়ংকর ও অবিশ্বাস্য’, আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে ড. ইউনূস
২৯৫ দিন আগে
‘জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র ও পাঠ্যপুস্তকে কোটা আন্দোলনের কথা থাকতে হবে’
জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্রে ও পাঠ্যপুস্তকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের রূপকার, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার রিটকারীদের নেতা জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোহাম্মদ আবদুল অদুদ।
তিনি বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পটভূমিতে ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূত্রপাতে সাড়া জাগানো ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারিতে হাইকোর্টে দায়েরকৃত ঐতিহাসিক রিটের কথা উল্লেখ করতে হবে।’
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকালে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসানের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: জুলাই বিপ্লবে আহত ১৮ জনকে বিজিবির সহায়তা
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্রে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল পক্ষকে সম্পৃক্ত করলে ভালো হয়। আমরা ১৯৭১-পরবর্তী ইতিহাস লিখলে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কোটা সংস্কার রিটের কথা অবশ্যই আসবে। কেননা, জুলাই বিপ্লবের পটভূমিতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে কোটা সংস্কার আন্দোলন।’
৫৬ শতাংশ কোটার কারণে বিসিএসে বঞ্চিত হয়ে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি মোহাম্মদ আবদুল অদুদের নেতৃত্বে হাইকোর্টে রিট করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বিশেষ প্রতিনিধি মো. দিদারুল আলম ও ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান মীর। আইনজীবী ছিলেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভুইয়া।
৩১৭ দিন আগে
জুলাই বিপ্লবে আহত ১৮ জনকে বিজিবির সহায়তা
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত ১৮ জনকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান তাদের হাতে সহায়তার চেক তুলে দেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছে। বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিজিবিও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছে। জুলাই বিপ্লবের শুরু থেকেই বিজিবি স্ব-উদ্যোগে বর্ডার গার্ড হাসপাতালে আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতাকে চিকিৎসা দিয়েছে।’
৩১৯ দিন আগে
১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দিতে হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকাকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেছেন, ‘সরকার ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের ব্যবস্থা করা। যেখানে সরকার থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ছিল কিন্তু তাও নেওয়া হয়নি।’
হাসনাত বলেন, আমরা এই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে গিয়েছি। কিন্তু সরকার যেহেতু নিজেই দায়িত্ব নিয়েছে, তাই সকল রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করবে। তাই আমরা ৩১ ডিসেম্বর ঘোষণাপত্রটি ঘোষণা করিনি।
বুধবার (০৮ জানুয়ারি) কুমিল্লা নগরীতে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের সমর্থনে জনসংযোগ শেষে শহরের টাউন হল মাঠে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে পুলিশ লাইন থেকে শুরু করে কান্দিরপারসহ নগরীর বিভিন্ন সড়কে জনসংযোগ করেন হাসনাত।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, আমরা রাজনৈতিক ঐকমত্যকে প্রাধান্য দিয়েছি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো ৩১ ডিসেম্বরের পর এতদিন কেটে গেলেও সরকার এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।
হাসনাত বলে, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, যারা এই ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছিল, গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল ও সকল শ্রেণির পেশার মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র ঘোষণা করতে হবে।’
আরও পড়ুন: জুলাই বিপ্লবের ঘোষণার মাধ্যমে ১৯৭২’র সংবিধানের কবর হবে: হাসনাত
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ঘোষণাপত্রে অবশ্যই শহীদ ও আহতদের স্বীকৃতি দিতে হবে। ৪৭, ৭১ ও ২৪ এর যে ধারাবাহিকতা সেখানে সুস্পষ্ট তার বর্ণনা থাকতে হবে। আর সেটাতে আমরা কোন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পেয়েছি তার বর্ণনা থাকতে হবে। যে রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করেছে তাদের অংশগ্রহণের স্বীকৃতি সেখানে থাকতে হবে। জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা ফ্যাসিবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে সে আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এই ঘোষণাপত্র থাকতে হবে। আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলে ঘুরে বেড়াব এবং সাধারণ মানুষ যারা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল তারা এই ঘোষণাপত্রের কি চায় আমরা তুলে ধরব। যাতে ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদ মাথা চাড়া না দিতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে আহত ও শহীদদের পরিবারকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথা ছিল। কিন্তু আমরা এখনো আহতদের ও শহীদ পরিবারের আর্তনাদ শুনি। যেটি অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। আমরা চাই এই সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে আহত ও শহীদদের প্রতি। আমরা দেখেছি, আহত ও শহীদদের পরিবারের জুলাই ফাউন্ডেশন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার শিকার হয়েছিল। আমরা বলতে চাই, ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশের যেন কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা না থাকে।’
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে মাঝেমধ্যে দোহাই দিয়ে বলতে শুনি, সিন্ডিকেটের হাত পরিবর্তন হয়েছে, চাঁদাবাজির হাত পরিবর্তন হয়েছে, টেন্ডারবাজির হাত পরিবর্তন হয়েছে। আপনাদের আমরা দোহাই দেওয়ার জন্য এখানে আনি নাই। এক্সকিউজ দেওয়ার জন্য এখানে আনি নাই। আপনাদের এখানে এনেছি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। যেই হাত চাঁদাবাজি করে, টেন্ডারবাজি করে, সেই হাত ভেঙে দিতে হবে। এক্সকিউজ দেওয়ার সুযোগ আপনাদের নেই। আপনাদের যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। ৫ আগস্টের পূর্বে আমাদের যে অবস্থান ছিল, আমাদের সে অবস্থান অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের সর্বোচ্চ মর্যাদায় ভূষিত করতে হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
৩৩০ দিন আগে
জুলাই বিপ্লবের ঘোষণার মাধ্যমে ১৯৭২’র সংবিধানের কবর হবে: হাসনাত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বর জুলাই বিপ্লবের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ১৯৭২ সালের মুজিববাদী সংবিধানের কবর দেওয়া হবে।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর রূপায়ন টাওয়ারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা মুজিববাদী সংবিধানকে অচল ঘোষণা করার দাবি জানাচ্ছি। যেখানে এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল সেই স্থানেই ১৯৭২ সালের মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে। আমরা আশা করি, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা বাংলাদেশে নাৎসি শাসক আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করবে।’
এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সংগঠক আবদুল হান্নান মাসুদ উপস্থিত ছিলেন।
হাসানাত বলেন, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার দাবিতে ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে জড়ো হবেন মানুষ।
সারজিস বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা ঐতিহাসিক গুরুত্বের একটি দলিল হিসেবে কাজ করবে, যা জনগণ প্রত্যাখ্যান করা পুরানো ব্যবস্থা এবং বাস্তবায়িত হবে এমন একটি নতুন ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারবে। এটি দেশের নতুন নেতৃত্বকে দিকনির্দেশনা দেবে এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ঘোষণাটি আরও আগে দেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহায়তার অভাবে দেশ এগোতে পারছে না।
আরও পড়ুন: এই দেশে আর কোনোদিন ভারতের আধিপত্য চলবে না: হাসনাত আব্দুল্লাহ
আবদুল হান্নান মাসুদ বলেন, ফ্যাসিবাদী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করা হবে এবং নতুন বাংলাদেশের জন্য জনগণের আকাঙ্ক্ষা ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে এই ঘোষণার খসড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে এবং শহীদ পরিবার ও গণঅভ্যুত্থানে সমর্থন দেওয়া রাজনৈতিক দলসহ সর্বস্তরের মানুষ শহীদ মিনারে সমবেত হবেন।’
৩৪০ দিন আগে
শহীদ নাফিজকে বহনকারী ‘রিকশা’ জুলাই বিপ্লব স্মৃতি জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ গোলাম নাফিজকে বহনকারী রিকশাটি জুলাই বিপ্লব স্মৃতি জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বৃহস্পতিবার(৭ নভেম্বর) গণভবন পরিদর্শন শেষে এ ঘোষণা দেন।
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা নাহিদ ঘটনার দিন গুলিবিদ্ধ নাফিজকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সাহসিকতার জন্য রিকশাচালক নূর মোহাম্মদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সংকটময় মুহূর্তে ভূমিকার জন্য নূর মোহাম্মদকে আর্থিক সহায়তার আশ্বাসও দেন তিনি।
গত ৫ নভেম্বর প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রিকশাটি যেখানে রাখা হয়েছিল, সেটি মালিক বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রতিবেদনটি পড়ে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম দ্রুত রিকশা ও এর মালিককে খুঁজে বের করার জন্য তার অফিসকে নির্দেশ দেন।
নূর মোহাম্মদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশি আহসানুল কবির সিদ্দিকী কায়সারের কাছে ৩৫ হাজার টাকায় রিকশাটি বিক্রি করেছেন তিনি। কায়সার রিকশার গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত হলে এটি জাদুঘরে দান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এরপর বৃহস্পতিবার জাদুঘর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে রিকশাটি হস্তান্তর করা হয়।
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ঢাকার ফার্মগেটে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয় বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী গোলাম নাফিজকে। নাফিজকে গুলি করার পর পুলিশ তাকে জীবিত অবস্থায় পা ঝুলন্ত করে একটি রিকশার তুলে রাখে। যেখানে সে তখনও হাত দিয়ে রিকশার রড ধরে ছিল। রিকশাচালক নুর মোহাম্মদ নাফিজকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে পরে আঘাতজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার: নাহিদ ইসলাম
৩৯২ দিন আগে
জুলাই বিপ্লবের শহিদেরা দেশ-জাতির স্বার্থে আত্মোৎসর্গ করেছেন: উপদেষ্টা
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের শহিদদের জাতি স্মরণে রাখবে। দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে নিজেদের জীবন দিয়েছেন। তারা দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আত্মোৎসর্গ করেছেন।
তিনি বলেন, এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদের মানুষ ফ্যাসিবাদী সরকারের শোষণ, অত্যাচার ও নির্যাতনে নিষ্পেষিত ছিল। কারণ তৎকালীন সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা এবং মানুষের বাকস্বাধীনতাকে হরণ করেছিল।
আরও পড়ুন: অসহযোগিতা করলে সিস্টেম ভেঙে নতুন লোক নিয়োগ হবে: উপদেষ্টা
শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে কক্সবাজারের চকোরিয়া উপজেলার আছদ আলীপাড়া গ্রামে জুলাই বিপ্লবের শহিদ আহসান হাবিবের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এই অবস্থা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে দেশের ছাত্র-জনতা অভাবনীয় ভূমিকা রেখেছে। দেশমাতৃকাকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে তারা জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। তাদের এই ঋণ শোধ করা যাবে না।
উপদেষ্টা শহিদ আহসান হাবিবের বাবার উদ্দেশে বলেন, আপনার ছেলে দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত গর্বের। আপনার সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে পারব না। তবে সরকার সবসময় আপনার পাশে আছে।
এছাড়া জুলাই বিপ্লব ফাউন্ডেশনের পক্ষ হতে এ বিপ্লবে শহিদ প্রত্যেকটি পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা প্রদান করা হবে বলে জানান ধর্ম উপদেষ্টা।
এসময় উপদেষ্টা আস্ সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় শহিদ আহসান হাবিবের বাবার হাতে ২ লাখ এবং চট্টগ্রামের প্রথম শহিদ ওয়াসিম আকরামের বাবার হাতে ২ লাখ টাকার চেক তুলে দেন।
পরে উপদেষ্টা চকোরিয়া আবাসিক মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিদর্শন এবং চকোরিয়া গ্রামার স্কুলে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মু. আ. আউয়াল হাওলাদার, উপদেষ্টা একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ, রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম প্রমূখ।
আরও পড়ুন: বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সবার দায়িত্ব: উপদেষ্টা
৪১১ দিন আগে
জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসা-পুনর্বাসনে সরকার বদ্ধপরিকর: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
জুলাই বিপ্লবে আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে অন্তর্বতীকালীন সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে বর্তমান সরকার খুবই সিরিয়াস। আমি পুনরায় নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, যতদিন পর্যন্ত তাদের সাপোর্ট (সহযোগিতা) প্রয়োজন পড়বে, সরকার তা দিতে বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোই একমাত্র সমাধান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশনে (পঙ্গু হাসপাতালে) চিকিৎসাধীন জুলাই বিপ্লবে আহতদের দেখতে গিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন ও তাদের সমস্যার কথা শুনেন।
চিকিৎসা শেষে আহতদের পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের জন্য চাকুরির ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আহতদের বিদেশে উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত আছে- চিকিৎসকরা যখন বলবেন আমাদের এখানে চিকিৎসা সম্ভব নয়, তখন আমরা বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করব।
আরও পড়ুন: সহযোগিতার গভীর সম্পর্কের 'ঐতিহাসিক সুযোগের' সম্মুখে ঢাকা-বেইজিং: রাষ্ট্রদূত
৪১৫ দিন আগে