পাউ কুবারসি
অসীম ধৈর্য্য ও স্টান্সনির কৃতিত্বে জিতে ফিরল ১০ জনের বার্সেলোনা
শুরুতেই দশজনের দলে পরিণত হয়ে গত মৌসুমের মতো আরও একবার বিপর্যয়ের আশঙ্কা জাগিয়েছিল বার্সেলোনা, তবে হান্সি ফ্লিকের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া দলটি এদিন দিল অসীম ধৈর্যে্যর পরীক্ষা। সেইসঙ্গে প্রতিপক্ষের অসংখ্য শটের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন অবসর ভেঙে বার্সেলোনায় খেলতে আসা পোলিশ গোলরক্ষক ভয়চিয়েখ স্টান্সনি। সব মিলিয়ে বিপদে হাল না ছেড়ে দুরন্ত বেনফিকাকে রুখে দিয়ে জয় নিয়ে ঘরে ফিরেছে কাতালান জায়ান্টরা।
বার্সেলোনার পাওয়া লাল কার্ডের সুযোগ নিতে কতটা মরিয়া ছিল পর্তুগলের ক্লাবটি, তা পরিসংখ্যানের ওপর চোখ মেললেই স্পষ্ট হয়ে যায়। ম্যাচজুড়ে মোট ২৬টি শট নিয়ে তার আটটি লক্ষ্যে রাখে তারা। সেখানে ১০টি শটের পাঁচটি লক্ষ্যে রাখতে পারে বার্সেলোনা।
অবশ্য আটটি শট নিলেও সেগুলোর অধিকাংশই ছিল গোল পাওয়ার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু স্টান্সনির দৈবিক পারফরম্যান্সের সামনে বেনফিকার খেলোয়াড়দের অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে বারংবার।
আটটি গোল সেভ করে নিজেদের জাল অক্ষত রেখেও ম্যাচসেরার মুকুটটি ওঠেনি স্টান্সনির মাথায়। তবে ম্যাচের সব আলো কেড়ে নিয়ে সমালোচকদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন তিনি। এছাড়া অবসর থেকে ফিরে বার্সেলোনার জার্সি গায়ে জড়িয়ে নিজের অপরাজেয় যাত্রাটি আরও একবার দীর্ঘ করে নিলেন এই গোলরক্ষক। অবসর থেকে ফেরার পর এখন পর্যন্ত গ্লাভস পরে মাঠে নেমে হারেননি তিনি।
এছাড়া, ২০০৩-০৪ মৌসুমের পর এই প্রথম কোনো বার্সেলোনা গোলরক্ষক চ্যাম্পিয়ন্স লিগের একটি ম্যাচে আটটি সেভ করে ক্লিনশিট ধরে রাখল।
এবার আসা যাক খেলার ফলাফলে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচ খেলতে লিসবনে বার্সেলোনাকে আতিথ্য দেয় বেনফিকা। রাফিনিয়ার ৬১তম মিনিটের গোলে ম্যাচটি ১-০ ব্যাবধানে জিতেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
২৭৪ দিন আগে
আট গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি আতলেতিকো মাদ্রিদের
দারুণ সব ফুটবলারে ভরা অসাধারণ ভারসাম্যের আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে কেমন খেলবে বার্সেলোনা—তা নিয়ে দলটির সমর্থকদের অনেকেই ছিলেন সংশয়ে। তবে চলতি মৌসুমের প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও দলটির বিপক্ষে হতাশা সঙ্গী হয়েছে কাতালান জায়ান্টদের।
মঙ্গলবার রাতে বার্সেলোনার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে কোপা দেল রের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ৪-৪ গোলে ড্র করেছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
ম্যাচের প্রথম ৬ মিনিটের মধ্যে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও একপর্যায়ে ৪-২ গোলে পিছেয়ে পড়েছিল দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। কিন্তু শেষের দিকে বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের সমন্বয়হীনতা আর রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সমতায় ফেরার স্বস্তি নিয়েই মাঠ ছেড়েছে মাদ্রিদের দলটি।
অপরদিকে, ৪-২ গোলে এগিয়ে গিয়েও শেষ মুহূর্তে সেই ব্যবধান খোয়ানোয় বার্সেলোনার সঙ্গী হয়েছে হতাশা।
পরের লেগের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আতলেতিকোর মাঠে। ফলে এই ড্রয়ের পরে ঘরের মাঠে নিজ সমর্থকদের সামনে আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামার সুযোগ থাকবে তাদের।
আরও পড়ুন: কোপা দেল রে: আরও একটি এল ক্লাসিকো ফাইনালের সম্ভাবনা
ম্যাচ শুরু হতেই এদিন স্বাগতিকদের চেপে ধরে গোল আদায়ের চেষ্টা করে আতলেতিকো মাদ্রিদ, তাতে দারুণ সাফল্য পায় দলটি। প্রথম মিনিটেই আন্তোয়ান গ্রিজমানের ক্রসে বার্সার ডি-বক্সের ভেতর থেকে হেডারে লক্ষ্যভেদ করার চেষ্টা করেন হুলিয়ান আলভারেস, কিন্তু বল ক্রসবার ঘেঁষে জালের ঢোকার আগমুহূর্তে তা ক্লিয়ার করেন ভয়চিয়েখ স্টান্সনি।
তবে পরের মুহূর্তে আর জাল অক্ষত রাখতে পারেননি বার্সার এই পোলিশ গোলরক্ষক। কর্নার থেকে ছোট পাসে বল পেয়েই গোলমুখে উড়িয়ে দেন গ্রিজমান, এরপর দূরের পোস্টের কাছ থেকে হেডারে ঠিকানা খুঁজে নেন আলভারেস।
প্রথম মিনিটেই গোল হজম করার পর সমতায় ফেরায় মনোযোগ দেয় বার্সেলোনা। তবে তাদের হাই ডিফেন্স লাইন ভেঙে ষষ্ঠ মিনিট পড়তেই আরও এক গোল করে এগিয়ে যায় আতলেতিকো মাদ্রিদ।
এবারও সেই আলভারেস-গ্রিজমান যুগলবন্দি, তবে এবারের গোলটি করেন গ্রিজমান। আলভারেসের ডিফেন্সচেরা পাস ধরে এগিয়ে গিয়ে খানিকটা এগিয়ে আসা স্টান্সনিকে বোকা বানান ফরাসি তারকরা।
২৮২ দিন আগে
মুখে ১০ সেলাই নিয়েও খেলতে চান কুবারসি, তৈরি হচ্ছে মাস্ক
মাত্র ১৬ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলে অভিষেকের পর থেকেই বার্সেলোনার শুরুর একাদশে নিয়মিত মুখ পাউ কুবারসি। রক্ষণে দুর্দান্ত পারফর্ম করে এরই মাঝে সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন ১৭ বছরে পা দেওয়া এই তরুণ। বার্সার প্রতি তিনি এতটাই নিবেদিত যে এবার অসুস্থ অবস্থাতেও মাঠে নামতে অনড় এই ডিফেন্ডার।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেড স্টার বেলগ্রেদের বিপক্ষে ৫-২ গোলে জয়ের ম্যাচে দুর্ঘটনার শিকার হন কুবারসি। নিজেদের বক্স থেকে বল ক্লিয়ার করার জন্য অনেকটা নিচু হয়ে হেড করেন তিনি। একই সময়ে প্রতিপক্ষের উরোস স্পাইচ বলে কিক করলে তা লাগে কুবারসির মুখে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে শুরুতে মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন টিম ফিজিওরা। তবে অবস্থা বেগতিক দেখে ম্যাচের ৬৭তম মিনিটে তুলে নেওয়া হয় তাকে।
রুমাল চেপে কুবারসি যখন মাঠ ছাড়ছেন, তখন দেখা যায় রক্তে ভরে গেছে মুখ। পরে ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মুখে দশটি সেলাই লাগলেও ভালো আছেন এই ডিফেন্ডার।
এরপর সাংবাদকিদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘(বার্সেলোনার) ব্যাজের জন্য এটুকু করা কিছু নয়।’
আগামী রবিবার রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে মাঠে নামবে বার্সেলোনা। চোট থেকে এখনও সেরে না ওঠায় রোনালদ আরাউহো ও এরিক গার্সিয়া দলে না থাকায় কুবারসির অনুপস্থিতিতে দলের রক্ষণভাগ নিয়ে কার্যত বিপাকে পড়ে গেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
তবে নিজের অসুস্থতা নিয়ে মোটেও ভাবছেন না কুবারসি। মুখে ক্ষত নিয়েই লা রিয়ালের বিপক্ষে মাঠে নামতে চান তিনি।
আরও পড়ুন: রেড স্টারের মাঠে বার্সেলোনার গোল উৎসব
মুন্দো দেপর্তিভোর খবরে বলা হয়েছে, মাঠে নামতে নিজের অনড় অবস্থানের কথা ফ্লিকের কাছে স্পষ্ট জানিয়েছেন এই তরুণ। আর দলের অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তাই তাকে খুব বেশি জোর করেননি কোচও।
তবে সোসিয়েদাদের বিপক্ষে মাঠে নামলেও ঝুঁকি এড়াতে বিশেষ মাস্ক পরে মাঠে নামতে দেখা যাবে তাকে।
মুন্দো দেপর্তিভো জানিয়েছে, বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের অনুশীলনের সময় একজন বিশেষজ্ঞ খেলোয়াড়দের পরিদর্শন করেছেন। কুবারসির জন্য কী ধরনের মাস্ক পরা ঠিক হবে, তা নির্ধারণ করতেই বার্সার অনুশীলন ক্যাম্পে আসেন তিনি।
তবে শেষ পর্যন্ত তিনি মাঠে নামবেন কিনা এবং নামলেও কতক্ষণ খেলবেন, তা নির্ধারণ করবেন হান্সি ফ্লিক।
লা লিগায় ১২ ম্যাচে ১১ জয়ে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে বর্তমানে টেবিলের চূড়ায় রয়েছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ২৪। শনিবার ওসাসুনার বিপক্ষে মাঠে নামবে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
৩৯১ দিন আগে