আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ: জাবিতে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতাদের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১০ মে) রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে মিষ্টি বিতরণ করেন। পরে রাত পৌনে ১২টায় সেখান থেকে একটি মিছিল বের করেন তারা।
মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে দেশে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, দুর্নীতি, শিক্ষাক্ষেত্রে দলীয়করণ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির অধীনে ক্যাম্পাসে সহিংসতা, ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে দলীয় দখলদারত্ব এবং মুক্তচিন্তার জায়গাগুলোর কমে গিয়েছিল। এই নিষেধাজ্ঞা শিক্ষাঙ্গনকে আবারও শান্তিপূর্ণ, গঠনমূলক এবং পাঠভিত্তিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।’
মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, ‘আমরা দেখেছি এই স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকার শাহবাগে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। তারা শাপলায় গনহত্যা চালিয়েছিল। তারা এদেশে গুম খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আজকে তারা নিষিদ্ধ হয়েছে, এ জন্য আমরা ইন্টেরিমকে (অন্তর্বর্তী সরকার) ধন্যবাদ জানাই।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সিলেট-শরীয়তপুরে বিক্ষোভ
তিনি আরও বলেন, ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমাদের প্রধান দাবি ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। আজকে সেটা হয়েছে শুধু নির্বাহী আদেশে। বিচারিক প্রক্রিয়ায় এই আদেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।'
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, 'আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় বাংলাদেশ একটি নতুন যুগে প্রবেশ করল। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে আমরা সাময়িক খুশি, তবে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে যখন নিষিদ্ধ করা হবে তখন সেটা আমাদের চূড়ান্ত বিজয় হবে।’
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম লিমন বলেন, 'আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের নির্বাহী আদেশকে অবিলম্বে বিচারিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করতে হবে এবং সেইসঙ্গে অতিদ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।’
এর আগে, রবিবার (১১ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় একটি গরু ও একটি খাসি জবাই করে আনন্দভোজ উৎসবের ঘোষণাও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
২০৮ দিন আগে
আ. লীগের সাবেক ১৩ মন্ত্রী-উপদেষ্টাকে আনা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর সোমবার তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এসব আসামির সবাই অন্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ট্রাইব্যুনালের যাদের হাজির হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন-সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, শ্রমিক পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।
এছাড়াও রয়েছেন-সাবেক মন্ত্রী ড. দীপু মনি, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এবং ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম।
সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাককে হাজির করার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তাকে হাজির করা যায়নি।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর ১৪ আসামিকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে হাজির করার নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এছাড়া সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল কাফি, আরাফাত হোসেন, আবুল হাসান ও মাজহারুল ইসলামকে ২০ নভেম্বর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন আদালত।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ ও হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তথ্যপ্রযুক্তিতে জমা পড়ে। জুলাই ও আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ১০০০ এর বেশি মানুষ নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন।
৩৮২ দিন আগে