তদন্ত কমিশন
গোপালগঞ্জে সহিংসতা: তদন্ত কমিশনের মেয়াদ বাড়ল ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশনের মেয়াদ আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। কমিশনের মেয়াদ ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময়সীমা ৩৪ দিন বাড়িয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করে এ তথ্য জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
দ্য কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬–এর সেকশন ৩–এর দেওয়া ক্ষমতাবলে সরকার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি ড. মো. আবু তারিককে সভাপতি করে গত ২৪ জুলাই ছয় সদস্যের এই তদন্ত কমিশন গঠন করে।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে সহিংসতা: আরেক মামলায় আসামি সাড়ে ৫ হাজার
প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে সুস্পষ্ট মতামত ও সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল। গত ১৩ আগস্ট সেই মেয়াদ শেষ হয়। এরপর কমিশন ও প্রতিবেদন দাখিলের সময় ১৪ দিন বাড়ানো হয়। সেই সময়ও শেষ হয় গত ২৭ আগস্ট।
তদন্ত কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর নতুন আদেশ গত ২৮ আগস্ট থেকে কার্যকর ধরা হয়েছে।
কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম, ২১ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহীদুর রহমান ওসমানী, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক সরদার নূরুল আমিন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী।
কমিশনকে উদ্ভুত ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ উদঘাটন, রাজনৈতিক জনসভায় আক্রমণের জন্য দায়ী ব্যক্তি/সংগঠনকে চিহ্নিতকরণ, উল্লিখিত ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি/সংগঠনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ প্রদান, উক্ত ঘটনাকালীন জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার বিষয়সহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ঘটনা বিশ্লেষণপূর্বক মতামত এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে।
৯১ দিন আগে
গুম তদন্ত কমিশনের মেয়াদ বাড়ল আরও সাড়ে ৩ মাস
আওয়ামী লীগ শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিশনের মেয়াদ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
১৫ মার্চ থেকে কমিশনের মেয়াদ আরও সাড়ে ৩ মাস বাড়িয়ে সোমবার (১৭ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
'কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬' অনুযায়ী ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে গুমের ঘটনা তদন্তে গত ২৭ আগস্ট কমিশন গঠন করেছিল সরকার। পরে ১৫ সেপ্টেম্বর কমিশনের দায়িত্বে ও প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমায় পরিবর্তন আনা হয়।
পাঁচ সদস্যের এ কমিশনের সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।
আরও পড়ুন: রবিবারের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যাবে
তদন্ত সম্পন্ন করে তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল কমিশনের। পরে সময় বাড়ানো হয়। বাড়ানো সেই সময় গত ১৪ মার্চ শেষ হয়।
তদন্ত কমিশন ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা ও অনুরূপ যেকোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টির 'আয়না ঘর' বা যেকোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা ও কোনো পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল— তা নির্ধারণ করা এবং সেই উদ্দেশ্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ যেকোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছে।
২৬২ দিন আগে
‘বিচার বিভাগের প্রতি কোনো সরকারই যথার্থ নজর দেয়নি’
গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, যদি মানুষ অনুভব করে যে বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, তাহলে রাষ্ট্রে সেই বিচার বিভাগের কোনো আস্থার স্থান থাকে না। বিচার বিভাগের প্রতি কোনো সরকারই কখনও যথার্থ নজর দেয়নি। ফলে বিচার বিভাগ সরকারের সবচাইতে দূর্বলতম বিভাগে পরিণত হয়েছে।
‘নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ১৭ বছর’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মিনৌরী বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বুধবার এই মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন’ এবং মাসিক আইন ও বিচার।
মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বিচার বিভাগের আজকের অবস্থা আমাদের সামষ্টিক ব্যর্থতা। আইনজীবীরা বিচারকদের বিচারিক কার্যক্রমের সহযোগী। কোর্টে বেঞ্চ আর বার একই মুদ্রার দুই পিঠ। এজন্য এই দুই অংশকে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগ সাজাতে হবে।’
‘বিচারকদের মানসিকভাবে স্বাধীন হতে হবে, তা না হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কাঙ্ক্ষিত ফল আনতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘জুডিশিয়ারির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো তার এক্সেস। আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের স্বচ্ছতা নির্ধারণে বিচার বিভাগ কাজ করতে পারে, কিন্তু তা অবশ্যই স্বাধীনভাবে। বিচার বিভাগের টাইরানির চেয়ে বাজে বিষয় হতে পারে না। এর কারণে মানুষ যে ভোগান্তিতে পড়ে তা অস্বাভাবিক। যদি মানুষ অনুভব করে যে বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, তাহলে রাষ্ট্রে সেই বিচার বিভাগের কোনো আস্থার স্থান থাকে না।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নির্বাচন করবে কি না, তা ঠিক করবে জনগণ: ফখরুল
হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন আইন সংস্কার কমিশনের সদস্য মাজদার হোসেন; সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্টার, জেলা জজ ও সংবিধান আলোচক ইকতেদার আহমেদ; গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য জিমি আমির; বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট মো. খাদেমুল ইসলাম; জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট শাকিল আহমেদ; সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান প্রমূখ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. পারভেজ।
আইন সংস্কার কমিশনের সদস্য মাজদার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, ‘পৃথক সচিবালয় স্থাপনের দাবি নিয়েই আমাদের সংগ্রাম। সেই দাবি থেকে আদৌ সরে যাইনি এবং এ দাবির প্রতি অটল রয়েছি। বিচার বিভাগ প্রধান বিচারপতির নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। এমন একটি অবকাঠামো তৈরি করতে হবে যেখানে বিচারকদের নিয়োগ, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সকল সিদ্ধান্ত প্রধান বিচারপতির নিকট অর্পিত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘যেই সিআরপিসি বৃটিশরা ফেলে দিয়েছে, আমরা এখনও তা আঁকড়ে ধরে আছি। বাংলাদেশে কাগজে-কলমে বিচার বিভাগ স্বাধীন হলেও তা আমার আশা পূরণ করতে পারেনি। রায়ের ১২ দফার কোনোটিই পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।’
‘আজও বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে প্রশাসন। অথচ আইন বিভাগের কাজে প্রশাসন ইন্টারফেয়ার করতে পারে না। বিগত ৫৩ বছরে কোনো রাজনৈতিক দলও জনস্বার্থে আইন করেনি, তারা নিজেদের রক্ষা ও ক্ষমতার স্বার্থেই আইন করেছে। তারা কোনো কালাকানুন বাতিল করেনি। আমরা আষ্টেপৃষ্ঠে শাসকগোষ্ঠী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।’
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্টার, জেলা জজ ও সংবিধান আলোচক ইকতেদার আহমেদ বলেন, ‘বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ এখন আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে, তা সুপ্রিম কোর্টের অধীনে নিতে হবে। তবে আগে সুপ্রিম কোর্টে তা নিয়ন্ত্রণের মতো অবকাঠামো ও পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে। অধিকতর যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা নিম্ন যোগ্যতাসম্পন্ন লোকদের নিয়ন্ত্রণ করবে। কিন্তু বর্তমানে উচ্চ আদালতে যারা বিচারক হিসাবে আসীন রয়েছেন তাদের যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ।’
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য জিমি আমির বলেন, ‘মানুষ সুবিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল বলেই ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়েছে। তাই সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে। আর এজন্যই বিচার বিভাগকে পুর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দিতে হবে।’
আরও পড়ুন: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে, যা ত্রুটিপূর্ণ: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট মো. খাদেমুল ইসলাম খাদেমুল বলেন, ‘বিচার বিভাগ ও বিচারকদের স্বাধীনতা নিশ্চিত না করতে পারলে মানুষের আস্থা অর্জন সম্ভব নয়।’
সভাপতির বক্তব্যে হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৬ বছর নয়, ৫৩ বছরের অবিচার ধরে কথা বলতে হবে। বিচার বিভাগের সংকট কখনওই কাম্য নয়। আমরা জুডিশিয়ারি টাইরানি দেখেছি। আদালতে আইনজীবীদের বিচারকদের অন্যায় সহ্য করতে হয়ে যা কাম্য নয়। মানুষ ৫৩ বছরের পরে হলেও কথা বলা শুরু করেছে যা আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
প্রসঙ্গত, নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ নিছক বিচারক বা আইনজীবীদের বিষয় নয়। পৃথকীকরণ না হলেও জজ সাহেব বেতন বা উকিল সাহেব ফি পাবেন, তাদের ক্ষতি নেই। ক্ষতি পুরোটাই জনগণের। এটি জনগণের প্রতিদিনের ন্যায় পাওয়ার বিষয়, একটি সাংবিধানিক প্রত্যাদেশ।
শুধু তাই নয়, এদেশের জনগণের কমপক্ষে ১০০ বছরের প্রত্যাশা ও রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকারের অন্যতম একটি বিষয় হলো বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ।
অবিভক্ত বঙ্গের বিধানসভায় ১৯২১ সালে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস হয়। তারপর ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার ১৫ নম্বর দফা ছিল বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ। ১৯৭০ সালের যে নির্বাচনের ফলের ভিত্তিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে, তাতে বিজয়ী পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের নির্বাচনি মেনিফেস্টোর অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগ থেকে সম্পূর্ণভাবে পৃথক করা।
দেশ স্বাধীনের পর এটিকে ১৯৭২ সালের সংবিধানের অন্যতম ম্যান্ডেট ঘোষণা করা হয়। ১৯৯০ সালের ৩ জোটের রূপরেখার ৩(খ) দফায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষ ও আইনের শাসন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করা হয়। ২০২৪ সালের শিক্ষার্থী-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানের প্রধান স্পিরিট ছিল রাষ্ট্র মেরামত ও নয়া বন্দোবস্ত কায়েম করা।
জনগণের দাবির সঙ্গে কোনো আপোষ চলে না। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এসে কোনো পেশাজীবী গোষ্ঠী, কায়েমি বা কোটারি স্বার্থ চাইলেও নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ না করা বা তা মুলতবি রাখার সুযোগ নেই। যদি করা হয়, তবে তা হবে জনগণকে উপেক্ষা করার নামান্তর।
এমন শতাব্দী-প্রাচীন নিরঙ্কুশ জন-অভিপ্রায় আর তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রণীত সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার সম্মিলিত প্রকাশ ঘটেছিল মাসদার হোসেন মামলার রায়ে। এর ফলেই ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিচার বিভাগের পৃথকীকরণের প্রথম পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে, মাসদার হোসেন মামলাও ছিল একটি বৈষম্য বিরোধী মামলা।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেয়া তার প্রথম ভাষণেও বিচার বিভাগের সংস্কারকে সরকারের অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি বলে অভিহিত করেছেন। প্রধান বিচারপতির ঘোষিত রোডম্যাপের প্রধানতম লক্ষ্য ছিল সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় স্থাপন।
নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ ছাড়া রাষ্ট্র মেরামত কোনোভাবেই অর্থবহ ও পরিপূর্ণ হবে না। আমাদের গত ৫৩ বছরের রাষ্ট্রনৈতিক অভিজ্ঞতাই তার জাজ্বল্যমান উদাহরণ। আর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণের আবশ্যকীয় পদক্ষেপ হলো পৃথক সচিবালয় স্থাপন।
আরও পড়ুন: আ. লীগ-জাপা নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে কফিন মিছিল
৩৭৯ দিন আগে