জামায়াত আমির
জামায়াত আমিরের সঙ্গে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর বসুন্ধরায় জামায়াত আমিরের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় বলে দলটির এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এসময় হুমা খানের সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির মানবাধিকার বিষয়ক জুনিয়র উপদেষ্টা ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরাম খান।
সাক্ষাতের শুরুতেই হুমা খান জামায়াত আমিরের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন ও তার পূর্ণাঙ্গ সুস্থতা কামনা করেন। পরবর্তীতে আন্তরিক পরিবেশে উভয়পক্ষ পারস্পরিক মতবিনিময় করেন।
চলতি বছরের ২৯ জুলাই রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার আয়োজিত ‘জুলাই স্মরণ সভায়’ জামায়াত আমিরের দেওয়া বক্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মিস হুমা খান।
পড়ুন: জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ইইউ রাষ্ট্রদূত মিলার
আলোচনায় তারা বাংলাদেশে বিদ্যমান মানবাধিকার পরিস্থিতি, গুম-খুনের বিচারসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে খোলামেলা মতবিনিময় করেন। হুমা খান জামায়াতের প্রস্তাবিত সংস্কার কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে জামায়াত আমির তাকে বিস্তারিত অবহিত করেন।
উল্লেখ্য, এসময় ডা. শফিকুর রহমান জাতিসংঘ প্রতিনিধিদলকে নিজের দলের উদ্যোগে ‘জুলাই শহীদদের’ স্মরণে প্রকাশিত ইংরেজি সংস্করণের ১২ খণ্ডের বই উপহার দেন।
দলটির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের এবং ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসেম আরমান প্রমুখ।
৮৭ দিন আগে
জামায়াত আমির ডা. শফিকুরের হার্টে ব্লক, দেশেই করবেন বাইপাস সার্জারি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে। চিকিৎসকরা বাইপাস সার্জারির নির্দেশনা দিয়েছেন। বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে জামায়াত আমিরের ব্যক্তিগত সহকারী নজরুল ইসলাম ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘জামায়াত আমিরের হার্টে মেজর তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে। বর্তমানে তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আগামীকাল চিকিৎসকরা তার চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এছাড়া ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ধানমন্ডি থানা জামায়াতের আমির হাফেজ রাশেদুল ইসলাম তার ফেসবুক পোস্টে জামায়াত আমিরের অসুস্থতার কথা জানান।
ডা. শফিকুর রহমানের পরিবার ও তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দেশের বাইরের হাসপাতালে বাইপাস সার্জারি করার পরমর্শ দিলে তিনি তাতে সম্মত হননি।
দেশেই তিনি সার্জারির সিন্ধান্ত নিয়েছেন বলে পোস্টে উল্লেখ করেন রাশেদুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য দেওয়ার সময় ডা. শফিকুর রহমান দুবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত তিনি বসেই সমাবেশের বক্তব্য শেষ করেন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। তখন থেকে তার শারিরীক ধারাবাহিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা চলছিল।
পড়ুন: আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে জামায়াত: ডা. শফিকুর রহমান
১২৭ দিন আগে
হাসপাতালে জামায়াত আমিরকে দেখতে গেলেন ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদল
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাত দফা দাবিতে দলের জাতীয় সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপির প্রতিনিধি দল।
শনিবার(১৯ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে তাকে দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
এসময় ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তারা ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন এবং তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
ফখরুল বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জামায়াত আমিরের স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং তার পক্ষ থেকে তাকে দেখতে যেতে বলেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো রাজনৈতিক নেতা অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া আমাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব। এজন্যই আমরা এখানে জামায়াত আমিরের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।’
তিনি ডা. শফিকুরের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বলেন, ‘বর্তমান সংকটময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জামায়াত আমিরের দ্রুত সুস্থতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
সাক্ষাৎকালে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জামায়াতের একজন নেতা বিএনপির প্রতিনিধিদলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পড়ুন: দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি তত জটিল হচ্ছে: ফখরুল
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়ার পর সন্ধ্যায় ডা. শফিকুর রহমানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দলের প্রেস উইং জানিয়েছে, ডা. শফিকুর রহমানের শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল, তার রক্তচাপ এবং সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তার দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে জামায়াত।
১৩৮ দিন আগে
হাসপাতালে নেয়া হয়েছে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানকে
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। দলটির প্রেস উইং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রেস উইং ডা. শফিকুর রহমানের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছে। বলেছে, তার পেশার, সুগার লেভেল ঠিক আছে। তার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে।
এর আগে বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দুদফায় অসুস্থ হয়ে পড়লেও তিনি মঞ্চে বসেই বক্তব্য শেষ করেন।
সাত দফা দাবিতে শনিবার (১৯ জুলাই) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে বক্তব্য শুরুর প্রায় সাড়ে সাত মিনিট পর তিনি পড়ে যান। পরে তিনি বসে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।
পড়ুন: মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন ডা. শফিক
তবে মঞ্চে থাকা চিকিৎসকরা তাকে বক্তব্য না দেওয়ার অনুরোধ করেছেন উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আল্লাহ যত সময় হায়াত দিয়েছেন, তত সময় মানুষের জন্য লড়াই করব ইনশাল্লাহ। বাংলার মানুষের মুক্তি অর্জন হওয়া পর্যন্ত আমার লড়াই অব্যাহত থাকবে।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি শহীদ আবু সাঈদসহ অন্যান্য শহীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। সমাশাহ আলম নামে এক কর্মীর ম
সমাবেশে বক্তব্য দেন শহীদ পরিবারের সদস্য, ২৪’র জুলাই যোদ্ধা, দলের নির্বাহী পরিষদের সদস্য, নায়েবে আমির, সেক্রেটারি, সহকারী সেক্রেটারি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম শহীদ আবরারের পিতাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
১৩৮ দিন আগে
পুরোনো ব্যবস্থায় নয়, নতুন ব্যবস্থাপনায় নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে: জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, পুরোনো বস্তাপচা ব্যবস্থাপনায় নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়, তাই নতুন ব্যবস্থাপনায় নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন, ‘পুরোনো সব যদি টিকে থাকে, তাহলে কেন তারা জীবন দিলো? যারা ওই বস্তাপচা ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে আবার গড়তে চায়—তাদেরকে আমরা বলি জুলাই যুদ্ধ করে যারা জীবন দিয়েছেন, আগে তাদের জীবনটা ফেরত এনে দেন—আপনারা পারবেন না। কাজেই নতুন ব্যবস্থাপনায় নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে ইনশাআল্লাহ।’
তারুণ্য ও যৌবনের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ফ্যাসিবাদের ও দুর্নীতির মুলোৎপাটন করে বিজয় অর্জনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জামায়াত আমির এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘একটা লড়াই হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এই দুর্নীতির মুলোৎপাটন করার জন্য যা দরকার, আমরা তারুণ্য ও যৌবনের শক্তিকে একত্রিত করে সেই লড়াইয়েও ইনশাআল্লাহ বিজয় লাভ করব।’
জামায়াত আমির বলেন, কঠিন অন্ধকার যুগের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে যারা তিলে তিলে নির্যাতিত হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, অপশক্তিকে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিদায় নিয়েছেন, যারা লড়াই করে আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেছেন—তাদের কাছে আমরা গভীরভাবে ঋণী। জামায়াতের অস্তিত্ব যতদিন থাকবে তাদের ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা কামনা করেন তিনি।
পড়ুন: মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন ডা. শফিক
তিনি বলেন, আবু সাঈদ যদি বুক পেতে না দাঁড়াতো, এই জাতির মুক্তির জন্য বুক চেতিয়ে বুকে গুলি লুফে না নিতো—তাহলে হয়তোবা আজকের বাংলাদেশ আমরা দেখতাম না। হয়তো আরও মানুষের জীবন ফ্যাসিবাদীদের হাতে চলে যেত।
ডা. শফিকুর বলেন, চব্বিশে জীবনবাজি রাখা যুদ্ধটা যদি না হতো—তাহলে আজকে যারা বিভিন্ন ধরনের কথা ও দাবি দাওয়া পেশ করছেন, তারা তখন কোথায় যেত? তাদের ত্যাগকে অবজ্ঞা ও অবহেলা না করার আহ্বান জানান তিনি।
জামায়াত আমির বলেন, ত্যাগীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য যেন না করি। অহংকার করে অন্য দলকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করি। অরাজনৈতিক ভাষায় আমরা যেন কথা না বলি। যদি এগুলো আমরা পরিহার করতে না পারি—তাহলে বুঝতে হবে, যারা পারবেন না, ফ্যাসিবাদের রূপ তাদের মধ্যে নতুন করে বাসা বেঁধেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব, আমরা এগুলো করব না। কেউ এগুলো করবে না। জাতীয় ঐক্যের বীজতলাটা আমরা একসাথে তৈরি করব ইনশাআল্লাহ।’
জামায়াত আমির বক্তব্যের এই পর্যায়ে এসে দাঁড়ানো অবস্থা থেকে পড়ে যান। একটু পড়েই... মঞ্চে বসা অবস্থায় ‘আলহামদুলিল্লাহ শুকরান.. আলহামদুলিল্লাহ কাছিরান’ বলে আবার বক্তব্য শুরু করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি আল্লহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করি আবার আপনাদের সামনে দাঁড়াতে পেরেছি। আমি বলেছিলাম দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ সবাইকে নিয়ে আমরা গড়ব। আমরা কথা দিচ্ছি, জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর মেহেরবানি ও জনগণের ভালোবাসা নিয়ে সরকার গঠন করে....তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রায় আড়াই মিনিট পর তিনি মঞ্চে বসে আবারও বক্তব্য শুরু করেন।
ডা. শফিকুর বলেন, ‘আল্লাহ যত সময় হায়াত দিয়েছেন, তত সময় মানুষের জন্য লড়াই করব ইনশাল্লাহ। বাংলার মানুষের মুক্তি অর্জন হওয়া পর্যন্ত আমার লড়াই অব্যাহত থাকবে।’
পড়ুন: হাসপাতালে নেয়া হয়েছে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানকে
আগের বক্তব্যের সূত্র ধরে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর মেহেরবানি ও জনগণের ভালোবাসা নিয়ে মানুষের সেবা করার সুযোগ পায়—তাহলে মালিক হবে না সেবক হবে ইনশাআল্লাহ। আজ আমি ঘোষণা দিচ্ছি—লক্ষ জনতাকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে যদি সরকার গঠন করতে পারেন- তাহলে কোনো এমপি, কোনো মন্ত্রী সরকারের কাছ থেকে প্লট গ্রহণ করবে না। কোনো এমপি ও মন্ত্রী ট্যাক্সবিহীন কোনো গাড়িতে চড়বে না। কোনো এমপি ও মন্ত্রী নিজের হাতে কোনো টাকা চালাচালি করবে না। যদি কোনো এমপি ও মন্ত্রী তার নির্দিষ্ট কোনো কাজের বরাদ্দ পেয়ে থাকেন, কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে ১৮ কোটি মানুষের কাছে তারা তাদের প্রতিবেদন তুলে ধরতে বাধ্য থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘চাঁদা আমরা নেব না, দুর্নীতি আমরা করব না। চাঁদা আমরা নিতে দেবো না, দুর্নীতি আমরা সহ্য করব না। এই বাংলাদেশটাই আমরা দেখতে চাই।’
যুবকদের উদ্দেশে ডা. শফিক বলেন, ‘বন্ধুগণ, তোমাদের সাথে আমরা আছি। আমি জামায়াতের আমির হিসেবে আজকে এখানে কথা বলতে আসিনি, আমি এসেছি বাংলাদেশের মানুষের একজন হয়ে কথা বলতে। আমি শিশুদের বন্ধু, আমি যুবকদের ভাই, আমি বয়োষ্ঠদের সহযোদ্ধা, আমার বোনদের আমি ভাই, সুতরাং আমি তাদের মুক্তির জন্যই আমি দায়িত্ব নিয়েই এখানে দাঁড়িয়েছিলাম। আল্লাহর ইচ্ছা, শরীর আমাকে সাময়িক সহযোগিতা করে নাই। এখন আমাকে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছেন এটাও আল্লাহর ইচ্ছা।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণির মুক্তির জন্য আমাদের এই লড়াই নয়। রাস্তার একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী, চা বাগানের একজন শ্রমিক, রক্ত ও ঘাম ঝড়ানো রিকশাচালক আমার একজন ভাই ও কৃষক বন্ধুদের হয়ে এখানে কথা বলতে এসেছি। আমি কোনো অভিযাত শ্রেণির হয়ে এখানে কথা বলতে আসিনি।’
জামায়াতপ্রধান বলেন, সকল প্রকার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেছি, পরোয়া করি নাই। আমার আফসোস ২৪ সালে জাতিকে মুক্তি দিতে গিয়ে যারা জীবন দিয়ে শহীদ হলো আমি তাদের একজন হতে পারলাম না।
ইনসাফের ভিত্তিতে একটি দেশ গড়ে তোলার জন্য আগামীতে যে লড়াই হবে, সেই লড়াইয়ে নিজের অংশগ্রহণের সামর্থের জন্য দোয়া চান ডা. শফিকুর।
দলের সাবেক নেতাদের হত্যা, ২০০৬ সাল থেকে সকল গণহত্যা, পল্টন গণহত্যা, শাপলা গণহত্যাসহ সারা দেশের গণহত্যা, পিলখানার গণহত্যা, চব্বিশের গণহত্যা যারা করেছে- তাদের সকলের বিচার বাংলাদেশের মাটিতে নিশ্চিত করতে হবে। এদের দৃশ্যমাণ বিচার শুরু না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো ব্যবস্থাপত্রে বাংলাদেশ আর চলবে না।
পড়ুন: কেউ চাঁদাবাজি করলে তা মুখের ওপর বলব: সারজিস
তিনি বলেন, এতগুলো মানুষ এমনি এমনি জীবন দেয় নাই। জীবন দিয়েছেন জাতির মুক্তির জন্যে। স্পষ্ট কথা, পুরোনো সব যদি টিকে থাকে তাহলে কেন তারা জীবন দিল? যারা ওই বস্তাপচা ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে আবার গড়তে চায়—তাদেরকে আমরা বলি জুলাই যুদ্ধ করে যারা জীবন দিয়েছেন, আগে তাদের জীবনটা ফেরত এনে দেন—আপনারা পারবেন না। কাজেই নতুন ব্যবস্থাপনায় নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, শিশু, কিশোর, যুবক, শ্রমিক জনতা সবাইকে যে দেশ ও সংবিধান, রাষ্ট্র নিরাপত্তা দিতে পারবে সেই নতুন বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই।
অসুস্থাবস্থায় বক্তব্য দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মওত আমার আল্লাহ নির্ধারিত সময় থেকে এক সেকেন্ড আগে হবে না।... এবং হায়াত যা দিয়েছেন তার এক সেকেন্ড আগেও আমি যাব না।
ফ্যাসিবাদের পতনের পর অনুকূল পরিবেশে সমাবেশ করতে পারায় শুকরিয়াও আদায় করেন জামায়াত আমির।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি শহীদ আবু সাঈদসহ অন্যান্য শহীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। সমাবেশে এসে অসুস্থতাজনিত কারণে শাহ আলম নামে এক কর্মীর মৃত্যু হয়। এছাড়া সমাবেশে আসার সময় ফরিদপুরের ভাঙায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান খুলনার দাকোপ উপজেলা আমির মাওলানা আবু সাঈদ ও কর্মী মোস্তাফিজুর রহমান।
সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের নির্বাহী পরিষদের সদস্য, নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলরা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল ও উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, শহীদ পরিবারের সদস্য, ২৪’র জুলাই যোদ্ধা, শহীদ আবরারের পিতাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা
১৩৮ দিন আগে
সংস্কারের পথে বাধা দেওয়া কোনো দলের রাজনৈতিক সদিচ্ছা হতে পারে না: জামায়াত আমির
সংস্কারের পথে বাঁধা দেওয়া কোনো দলের রাজনৈতিক সদিচ্ছা হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘কোনো ফ্যাসিবাদ বাংলার জমিনে থাকতে পারবে না। লড়াই করেছি অধিকারের জন্য—যা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ সুষ্ঠু নির্বাচন। সেই নির্বাচনের জন্য কিছু জরুরি ও মৌলিক সংস্কারের কথা আমরা পরিষ্কার বলেছি। ‘সংস্কার কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা সবাইকে অনুরোধ করব,’ বলেন ডা. শফিকুর।
শনিবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ফেনী শহরের কিং অব কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াত আমির বলেন, মৌলিক সংস্কার শেষ হলে যার যার রাজনীতি সকলে করতে পারবে। দুর্গন্ধযুক্ত অতীতের প্রথা পরিষ্কারের আগে আবারও যদি নির্বাচন হয় সেটি হবে নির্বাচনকে গণহত্যা করার শামিল।
২৪-এর শহীদদের স্মরণ করে তিনি বলেন, আমাদের সন্তানদের সঙ্গে আমরা বেঈমানি করব না, কাউকে বেঈমানি করতে দেওয়া হবে না। এ সন্তানদের পবিত্র রক্তের মূল্য, তাদের কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমরা প্রস্তুত।
পড়ুন: যেকোনো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে: ডা. শফিক
তিনি বলেন, আমরা বলেছি আগামী নির্বাচনে কোনো ধরনের প্রশাসনিক ট্যু-শব্দ শুনতে চাই না। তাই যদি হবে—এতো এতো মানুষ জীবন দিয়েছে কেন?
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে ডা. শফিকুর বলেন, আমরা ন্যায় ও জনগণের অধিকারের পক্ষে আছি। যতক্ষণ পর্যন্ত না ফ্যাসিবাদের চিহ্ন শেষ না হবে—ততক্ষণে লড়াই অব্যাহত থাকবে। প্রত্যেকের জায়গা থেকে দেশপ্রেম অন্তরে লালন করে, আল্লাহর প্রতি ঈমান এনে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মুফতি আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি এটিএম মা’ছুম প্রমুখ। এ সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুরে একই স্থানে রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের আমির। এ সময় ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিজম তৈরির পথ বন্ধ করতে হলে পিআর পদ্ধতিকে বেছে নিতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন এবং পরবর্তী নির্বাচনগুলোও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আয়োজনের ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।
পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার আদায় করে ছাড়ব: রংপুরে ডা. শফিকুর রহমান
১৫২ দিন আগে
মৌলিক সংস্কার ছাড়া ভালো নির্বাচন সম্ভব নয়: জামায়াত আমির
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, মৌলিক সংস্কার ছাড়া দেশে ভালো নির্বাচন সম্ভব নয়। শুক্রবার (৪ জুলাই) রংপুরে জনসভায় যোগদানের আগে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমান বন্দরে নেমে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন,‘দীর্ঘদিন ধরেই দেশে মব কালচার চলছে। কিন্তু এসব সহিংসতায় জামায়াতের কোনো কর্মী জড়িত নয়। ১৯৭২ সাল থেকেই এই পরিস্থিতি চলছে। জামায়াত সবসময় মব রাজনীতির বিরুদ্ধে।’
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে ডা. শফিকুর বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এজন্য আগে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে, আর সেই পরিবেশ তৈরির জন্যই আমরা মৌলিক সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’
যারা সহিংসতায় জড়িত, তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নিজেদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে আনা, এরপর রাষ্ট্রের দায়িত্ব পরিস্থিতি মোকাবিলা করা।’
রংপুরে প্রায় ১৭ বছর পর জামায়াতের কোনো বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে উপস্থিত হয় হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক। মাঠ ছাড়িয়ে লোকসমাগম ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের সড়কজুড়ে। ‘আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই’ এই স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে জনসভাস্থল।
দলটির ডাকে সাড়া দিয়ে রংপুরসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা সরব উপস্থিতিত হয়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য রংপুরের ৩৩টি আসনে দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। জনসভা থেকে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।
পড়ুন: তরুণ ও প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে: ডা. শফিকুর রহমান
প্রার্থীরা হলেন রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী এবং লালমনিরহাট জেলার সবগুলো আসনের।
সমাবেশে অংশ নিতে সকাল থেকেই রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত কর্মী-সমর্থক রিকশা, অটোরিকশা, ট্রাকে করে শহরে জড়ো হন।
জনসভা ঘিরে শহরজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় নেতাদের মতে, রংপুর অঞ্চলের ৩৩টি আসনে জামায়াতের শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতেই এ আয়োজন।
‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব খুনির বিচার’, ‘প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন’সহ ৪ দফা দাবিতে রংপুর মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।
জামায়াত নেতারা বলছেন, এই জনসভার মাধ্যমে তারা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’র চেতনায় জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে চান এবং জনগণের কাঙ্ক্ষিত একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে বৃহত্তর আন্দোলনের সূচনা করাই তাদের লক্ষ্য।
জনসভায় ৩৩ জন প্রার্থীকে পরিচওয় করিয়ে দেওয়া হয়।
পড়ুন: নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে মহাদুর্যোগ দেখা দেবে: গোলাম পরওয়ার
১৫৩ দিন আগে
ইসির সক্ষমতা যাছাইয়ে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিকল্প নেই: জামায়াত আমির
জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা যাছাইয়ের জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি কার্যকর উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে অন্তর্বর্তীকালিন সরকার প্রধান ঘোষিত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের সমর্থন রয়েছে।
শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে সিলেট মহানগর জামায়াত আয়োজিত দিনব্যাপী রুকন শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি না থাকায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠাগুলোতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশাসক দিয়ে দায়িত্ব পালন করায় সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানে নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে। তাই জনদুর্ভোগ লাঘব ও নিবাচন কমিশনের সক্ষমতা যাছাইয়ে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিকল্প নেই। এব্যাপারে বাস্তবতার আলোকে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে হবে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতাদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়ে ও কারাগারে আটকে রেখে শহীদ করা হয়েছে। নিবন্ধন ও প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি শেষ পর্যন্ত দলকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল ছিলাম। যারা ন্যায় ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে তারাই বিজয় লাভ করে। ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার কারণেই আমরা বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
পড়ুন: অচিরেই দেশের সব ইসলামী দলের মধ্যে সমঝোতা হতে যাচ্ছে: গোলাম পরওয়ার
তিনি বলেন, জুলাই ও আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণাকে কোনোভাবেই মুছে দেওয়া যাবে না। অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের তরুণ প্রজন্ম যে সাহস ও ত্যাগের ইতিহাস রচনা করেছে সেটাকে ভুলে গেলে চলবে না। জুলাই গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কার ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আমাদের স্বোচ্ছার থাকতে হবে। দেশপ্রেমিক জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে এগিয়ে যেতে হবে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের এবং সিলেট-১ আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান।
১৫৯ দিন আগে
জামায়াত আমিরের সঙ্গে বিদায়ী জার্মান রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
ঢাকাস্থ জার্মান দূতাবাসের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মগবাজারের জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিনি এই বৈঠক করেন।
সাক্ষাৎকালে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান দেশে অর্থবহ গণতন্ত্র, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও প্রশাসন গঠন, ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান, শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তনের মাধ্যমে ভবিষ্যত নাগরিক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলের কার্যকর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
পড়ুন: ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে আজ যোগ দিয়েছে জামায়াত
তিনি জার্মানি এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও সমৃদ্ধ ও গতিশীল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে অর্থবহ গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, জলবায়ু উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, মানুষ হত্যা করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না। গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন সহানুভূতিশীল মানসিকতা।
বৈঠকে সংগঠনের জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য সদ্য কারামুক্ত এটিএম আজহারুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ এবং জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
১৬৮ দিন আগে
সংস্কার-নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় সংশয় তৈরি হয়েছে: জামায়াত আমির
সংস্কার ও আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় জনগণের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করেছিলাম। সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় জনগণের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সরকারের প্রতি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করছি।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছিলাম। এ বিচার প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘ। তবে জাতির কাছে বিশ্বাসযোগ্য বিচারকার্য অনতিবিলম্বে দৃশ্যমান হতে হবে।’
শনিবার (২৪ মে) সকালে রাজধানীর মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে দলের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার ষান্মাসিক অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া টাইম ফ্রেমেই নির্বাচন হতে হবে: সেলিম উদ্দিন
জামায়াত আমির বলেন, প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বলেছেন জাতীয় নির্বাচন তিনি এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন করতে চান। এতে আমাদের আস্থা রয়েছে। এব্যাপারে আমরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে চাই।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের এই দীর্ঘ পরিক্রমায় জাতির মূল প্রত্যাশার অনেকগুলো আজও অপূর্ণ থেকে গেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হয়নি। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের মর্যাদাপূর্ণ হেফাযত সংরক্ষণ করতে পারেননি।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের শাসকগোষ্ঠী দেশকে দুঃশাসন উপহার দিয়েছে। তাদের পুরোটা সময় মানুষ দুঃস্বপ্নে বসবাস করেছে। জেল-জুলুমের স্টিমরোলার জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কাউকে বিচারের নামে প্রহসন করে আবার কাউকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে। আয়নাঘর বানিয়ে গুমের সংস্কৃতি চালু করা হয়েছে। একটি স্বাধীন দেশে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে দেশে যা ঘটেছে—তার সাক্ষী দেশের আপামর জনগণসহ গোটা বিশ্ববাসী।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি ও মানবাধিকার সংগঠন ঐ সময়ের সরকারকে স্পষ্টভাবে দায়ী করে জুলাই-আগস্টের ঘটনার একটি রিপোর্ট পেশ করেছে।
জামায়াতপ্রধান বলেন, বর্তমানে আমরা জাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে অবস্থান করছি। এই বাঁক সফলভাবে উত্তরণ করতে হবে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনের ঘটনা প্রবাসীসহ দেশবাসীকে বিচলিত করেছে। এ ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামী একটি দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। আমরা বলেছি সংঘাত-সংঘর্ষ এবং কাদা ছোড়াছুড়ি করে জাতিকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেওয়া একেবারেই সমীচীন হবে না।
তিনি বলেন, জামায়াতের রাজনীতি দেশ ও জনগণের কল্যাণে। জামায়াত সবসময় জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে দলীয় পরিকল্পনা-কর্মসূচি রচনা ও পরিচালনা করে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে কতিপয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এই অনিশ্চয়তা উত্তরণে আমরা অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক করার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি সকলের সন্তোষজনক আলোচনার মাধ্যমে জাতির আতঙ্ক ও আশঙ্কা দূর হবে এবং এ সংকটের উত্তরণ ঘটবে ইনশাআল্লাহ।
অতীতের নির্বাচনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২০১৪ তে ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, ২০১৮ সালের নিশি রাতের ভোট এবং ২০২৪ এ ডামি আর আমি’র প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির সঙ্গে চরম তামাশা করা হয়েছে। এ অবস্থায় জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে হবে। যার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটবে ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি দুটি স্পর্শকাতর বিষয় জাতির সামনে এসেছে। মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ব্যবস্থাপনা। এ ব্যাপারে সিকিউরিটি এক্সপার্ট এবং দেশের সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অথবা নির্বাচিত পার্লামেন্টের জন্য রেখে দেওয়া যেতে পারে।
সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী আমাদের গর্বের বিষয়। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে তাদের মর্যাদাপূর্ণ অবদান রয়েছে। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা উচিত নয়। জাতির প্রত্যাশা সেনাবাহিনী স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার মাধ্যমে দেশ ও জাতির সেবা করবে এবং দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ও সেনাবাহিনী যার যার অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের দিকে নজর দিবে।
ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে শান্তিকামী বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জামায়াত আমির বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ দশকের পর দশক ধরে নির্যাতিত এবং নিষ্পেষিত হচ্ছে। গাজা ও ফিলিস্তিনে মানবতাবিরোধী যুদ্ধ চলছে। আমরা জাতিসংঘসহ শান্তিকামী ও মানবতাবাদী বিশ্বসম্প্রাদয়কে যুদ্ধ বিরতি নয়, স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। সিরিয়াকে সে দেশের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী চলতে দেওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আরাকান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আরাকানের রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে সম্মান ও নিরাপত্তার সঙ্গে পুনর্বাসিত করতে হবে। এব্যাপারে জাতিসংঘকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে।
আরও পড়ুন: জামায়াত নির্বাচনমুখী দল, আর্ত-মানবতার মুক্তি চায়: ডা. শফিকুর রহমান
আমীরে জামায়াত নিজ দলের দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সকল ক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। সকল ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিতে হবে।
ইতিবাচক ভূমিকায় সমাজকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে এবং কালোকে কালো ও সাদাকে সাদা বলতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান জামায়াত আমির। একটি শান্তিপূর্ণ, দুর্নীতিমুক্ত মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এসময় জামায়াতের নায়েবে আমির, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলসহ কেন্দ্রীয় নেতা ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার (পুরুষ ও মহিলা) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৪ দিন আগে