শফিকুল আলম
অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: শফিকুল আলম
গত বছর থেকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দায়ী—এমন ইঙ্গিতকে তারা ‘দৃঢ় ও দ্ব্যর্থহীনভাবে’ প্রত্যাখান করে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, তারা(সরকার) স্বচ্ছতা, সুরক্ষা ও স্বাধীনতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সঙ্গে এই মৌলিক মূল্যবোধ সংরক্ষণ ও বৃদ্ধির জন্য সকল অংশীজনদের একসঙ্গে কাজ করার আমন্ত্রণ জানান তারা।
তবে তিনি বলেন, তারা সংবাদপত্র মালিক সমিতির (নোয়াব) সাম্প্রতিক বিবৃতিতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং তথ্যের সুবিধাপ্রাপ্তির অবস্থা সম্পর্কে উত্থাপিত উদ্বেগকে স্বীকার করেন।
আলম বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো গণমাধ্যম সংস্থার সম্পাদকীয়, পরিচালনাগত বা ব্যবসায়িক দিকগুলোতে হস্তক্ষেপ করেনি।
তিনি নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘রেসপন্স টু নোয়াব: সেটিং দ্য রেকর্ড স্ট্রেইট' শিরোনামে দেওয়া একটি পোস্টে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, আমরা ভুল তথ্য এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সম্প্রচারের মুখেও ব্যতিক্রমী সংযম ব্যবহার করেছি।’
প্রেস সচিব বলেন, টেলিভিশন টক শো এবং কলামগুলোতে প্রায়শই এই সরকার সম্পর্কে মিথ্যা এবং উসকানিমূলক দাবি প্রকাশিত হয়েছে।
আলম বলেন, ‘তবুও, আমরা সেন্সর করিনি বা প্রতিশোধও নেইনি। আমরা অভিযোগ করিনি, এমনকি উসকানি দেওয়ার পরেও লাইসেন্স স্থগিত করিনি, বরং অতীতের শাসনামলে জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়া কিছু গণমাধ্যমের পুনঃপ্রকাশ বা সম্প্রচারে ফিরে আসার পথ প্রশস্ত করেছি।’ আলম বলেন, এটি স্পষ্টতই বাকস্বাধীনতা এবং মুক্ত সংবাদমাধ্যমের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।
সরকারে প্রবেশাধিকার অবাধ রয়েছে
সীমিত প্রবেশাধিকারের অভিযোগের উত্তরে আলম বলেন, সাংবাদিকদের আমাদের উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীদের কাছে উন্মুক্ত ও সরাসরি পৌঁছানোর সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, কোনো সাংবাদিককে তাদের আউটলেট বা সম্পাদকীয় অবস্থানের কারণে সাক্ষাৎকার বা ব্রিফিং থেকে বঞ্চিত করা হয়নি। ‘আমরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি এবং আমাদের আচরণ তা প্রতিফলিত করে।’
সচিবালয় প্রবেশ প্রক্রিয়ার সংস্কার
সংশোধিত প্রবেশাধিকার ব্যবস্থার সমালোচনা কেবল ভুলভাবে উপস্থাপন করা নয় বরং ভুল তথ্যও, প্রেস সচিব বলেন।
তিনি বলেন, আগের ব্যবস্থাটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। যার ফলে প্রবেশাধিকারপত্রগুলো এমন ব্যক্তিদের হাতে চলে যায়, যাদের কোনো বৈধ সাংবাদিকতার কাজ নেই। তাদের মধ্যে কিছু রাজনীতিবিদ, লবিস্ট এবং সুবিধাবাদী ছিলেন—যারা বিশেষভাবে প্রাপ্ত প্রবেশাধিকার ব্যবহার করে নীতিকে অন্যায়ভাবে প্রভাবিত করেছিলেন।
আলম বলেন, ‘আমরা সেই ভাঙ্গুর কাঠামো ভেঙে দিয়েছি এবং এটিকে একটি অস্থায়ী পাস ব্যবস্থা দিয়ে প্রতিস্থাপন করেছি, যা প্রতিটি প্রকৃত সাংবাদিকের সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার অব্যাহত থাকা নিশ্চিত করবে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এই সংস্কার প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ করার জন্য নয়, বরং দুর্নীতিগ্রস্ত প্রক্রিয়ার স্থলে সততা স্থাপন করার জন্য ছিল।’
প্রেস সচিব বলেন, আগের প্রবেশাধিকার নীতিতে স্বীকৃত সাংবাদিকদের সরকারের সুরে গান গাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, আগের নীতিমালায় সাংবাদিকদের সাংবিধানিক অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু অপমানজনক ধারা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা অন্তর্বর্তী সরকার সংশোধন করেছে।
‘বর্ধিত নবায়ন সময়সীমার সঙ্গে নতুন স্বীকৃতিপত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে,’ উল্লেখ করেন আলম।
চাকরির নিরাপত্তা
আলম বলেন, ‘এটি স্পষ্টভাবে বলা উচিত, যেসব সাংবাদিককে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তারা সরকারি নির্দেশে নয়। বরং গণমাধ্যম মালিকদের নেওয়া সম্পাদকীয় এবং কৌশলগত করপোরেট পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্তের ফলে তা করেছেন।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘এগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো নির্দেশ বা চাপ নয়, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক হিসাব-নিকাশের প্রতিফলন ঘটায়।’
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা: একটি পারস্পরিক দায়িত্ব
আলম বলেন, তারা সাংবাদিকসহ সকল নাগরিকের শারীরিক নিরাপত্তা এবং মর্যাদার প্রতি সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা একটি অগ্রাধিকার। তবে এই দায়িত্ব গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং সরকার ও এর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে ভাগ করা হয়েছে।
নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশের প্রতি তাদের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে আলম বলেন, এই বছরের শুরুতে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন একটি নতুন ‘সাংবাদিক সুরক্ষা আইন’ সহ সংস্কারের প্রস্তাব করেছে, যাতে আইনি সুরক্ষা বৃদ্ধি করা যায় এবং সরকার বা নিরাপত্তা বাহিনীর ভয়ের কারণে সৃষ্ট স্ব-সেন্সরশিপ কমানো যায়।
প্রেস সচিব বলেন, ‘সরকার প্রস্তাবিত আইনটি জারি করার কথা বিবেচনা করছে।’
শিল্পের মধ্যে প্রতিফলনের আহ্বান
আলম বলেন, ‘যদিও আমরা গঠনমূলক সমালোচনার জন্য উন্মুক্ত, তবে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি নোয়াব দোষারোপ করার আগে নিজেরাই দেখুক।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘তাদের অবশ্যই তার নিজস্ব সদস্যদের কর্মকাণ্ড যাচাই করতে হবে এবং সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে। বিশেষ করে যখন মজুরি শোষণ, শ্রম অধিকার অস্বীকার, পর্যাপ্ত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম ছাড়া প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করা এবং অসহনীয় কর্মপরিবেশের অভিযোগের ক্ষেত্রে।’
পড়ুন: রাষ্ট্রীয় সংকটময় পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়েছিল: শফিকুল আলম
আলম বলেন, একটি সূক্ষ্ম সংকটকালীন সময় তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসন হিসেবে তারা গণমাধ্যম যাতে ভয় বা হস্তক্ষেপ ছাড়াই কাজ করতে পারে—তা নিশ্চিত করার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়ানো বজায় রেখেছে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা আমাদের কাছে কেবল একটি স্লোগান নয়; এটি এমন একটি নীতি, যা আমরা মেনে চলি।’
তিনি বলেন, নোয়াবের উদ্বেগগুলো যদি তথ্যের উপর ভিত্তি করে সঠিক পক্ষগুলোকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়, তাহলে তা আরও বেশি গুরুত্ব পাবে।
আলম বলেন, ‘ঘটনার ত্রুটিপূর্ণ ব্যাখ্যার ভিত্তিতে করা অভিযোগগুলো সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে এগিয়ে নেয় না, তারা কেবল বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলো থেকে মনোযোগ সরিয়ে দেয়।’
১১৮ দিন আগে
জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত, প্রকাশিত হবে মঙ্গলবার
গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাঁচিয়ে রাখতে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তিন দিন পরেই এটি জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। এ সময়ে গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষ উপস্থিত থাকবে। শনিবার (২ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এমন তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। আগামী মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৫টায় গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত অবিলম্বে ঘোষণা করা হবে।
এর আগে শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র এখন বাস্তবতা। ৫ আগস্টের মধ্যেই তা ঘোষিত হবে। ঘোষণাপত্র ইস্যুকে গণআকাঙ্ক্ষায় বাঁচিয়ে রেখে এটা বাস্তবায়নের পথ সুগম করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।’
আরও পড়ুন: জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের দাবিতে ‘জুলাই শহীদ পরিবার’র শাহবাগ অবরোধ
গত বছর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে, বিশেষ করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে সম্পৃক্ত দল ও সংগঠনগুলোর মাঝে অন্যতম আলোচিত বিষয় এই জুলাই ঘোষণাপত্র।
অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি সামনে রেখে সম্প্রতি জুলাই ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দলকে পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঐকমত্য কমিশন এ নিয়ে রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক ও মতবিনিময় করেছে।
১২৪ দিন আগে
একটা দেশের কাছে পররাষ্ট্রনীতি বন্ধক দেওয়া হয়েছিল: শফিকুল আলম
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার নীতিতে আছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্র নীতি একটা দেশের কাছে বন্ধক দেওয়া হয়েছিল। এখন পররাষ্ট্রনীতি স্বাধীন।
তিনি বলেন, আমরা সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখছি। সেটা ভারত হোক, সেটা চীন হোক, যুক্তরাষ্ট্র হোক সবার সঙ্গে আমরা একটা সুসম্পর্ক রাখছি। আমি চাই আমার সঙ্গে তার সম্পর্ক হোক মর্যদার ও ন্যায্যতার এবং সেই জায়গায় আমরা গিয়েছি।বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কোনো কিছুই বাঁধা হবে না। বাংলাদেশের জনগণের যদি অংশগ্রহণ থাকে, কোনো কিছুই বাঁধা না। আগে তো জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়নি। তার আগেই রাতের বেলা ব্যালট পড়েছে। যখন ফ্রি অ্যান্ড সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তখন মানুষই রক্ষাকারী ঢাল হিসেবে কাজ করে।তিনি বলেন, ভালো নির্বাচনে একটা উৎসবের আমেজ হয়। কারণ আপনি যান, আমিও যাই। আমি আমার ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছি, উনি ওনার বৃদ্ধা বাবা-মাকে নিয়ে যাচ্ছেন। সবার অংশগ্রহণ থাকলে নির্বাচন সুন্দর হবে। আমরা আশাকরি এই নির্বচনটা খুবই উৎসবমুখর পরিবেশে, ভালো নির্বাচন হবে।তিনি আরও বলেন, প্রতি নির্বাচনে আমাদের কিছু না কিছু ভায়োলেন্স (সহিংসতা) হয়। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে ভায়োলেন্স জিরোতে নামিয়ে আনা। সেটার জন্য আমরা কয়েক দফা মিটিং করেছি। আমরা গত মিটিয়ে বলেছি- দেড় লাখ পুলিশ সদস্য নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন এবং তাদের ট্রেনিং শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনীর কথা বলেছি। আশা করা যায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।
পড়ুন: নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে, একদিনও দেরি হবে না: শফিকুল আলমআর এক প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল আলম বলেন, প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করা কষ্ট সাধ্য কাজ ছিলো। গত ১২ মাসে বর্তমান সরকার এখানে অনেক শ্রম দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি, আপনারা দেখেছেন এখন অনেকেই নিরপেক্ষ। আমরা আশাকরি আওয়ামী লীগের অপশাসন থেকে আমাদের সমাজের সকলেই এখান থেকে শিক্ষা নেবেন। সাংবাদিকদের জন্যও একটা বড় শিক্ষা।তিনি বলেন, আমি আসলে একটা পার্টির সঙ্গে নিজেকে কতোখানি জাড়িয়ে ফেলবো। আপনি একটা রাজনৈতিক দলকে সাপোর্ট করতেই পারেন। কিন্তু ওটা করতে গিয়ে যদি আপনি হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দেন, নির্বাচনহীনকে বৈধতা দেন, তখন তো আর আপনার নিরপেক্ষতা থাকে না।তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকটা সেক্টরে দোষর ছিল। হাসিনার মতো একটা মনস্টার তৈরি হয়েছে এদের দ্বারায়। আপা আপা বলতে বলতে তো ফেনা ফেলতো। ভবিষ্যতে আবার রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় আসবে, আমি আমাকে কতটুকু সংযত করব, সেটার শিক্ষা নিতে হবে। একটা দলকে আপনি সমর্থন করতেই পারেন, তাই বলে তার হত্যাযজ্ঞকে, ব্যাংক লুটকে বৈধতা দেওয়ার কাজগুলো সে সময় হয়েছে। এটা থেকে যদি আমরা সবাই শিক্ষা নেই—তাহলে আমাদের দেশে আর একটা মনস্টার তৈরি হবে না।চাঁদাবাজি এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে কিন্তু হাই প্রোফাইলের চাঁদাবাজ গ্রেপ্তার হয়েছে। চাঁদাবাজির বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। সরকার যথেষ্ট কাজ করছে, পুলিশ প্রশাসনকে বলে দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো ধরনের চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটলে আপনাদের কাছে প্রমাণ থাকলে দেবেন, আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব।জনশক্তি রপ্তানির ও ভিসা জটিলতার ক্ষেত্রে এই সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে কত লোক প্রতিমাসে বিদেশ যাচ্ছে সেই ডেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আছে। আমরা সে তথ্য লুকাচ্ছি না। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতি মাসে ডেটা দেয়, সেখানে কোনো মাসে বাড়ে, কোনো মাসে কমে, সেটা আপনারা দেখেছেন।তিনি আরও বরেন, এই সরকারের বড় সাফল্য হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে জনশক্তি নেওয়া বন্ধ ছিল ও ভিসা দেয়া বন্ধ ছিল, সে জায়গায় জট ছাড়াচ্ছি। মালয়েশিয়া ও জাপান নিয়ে কাজ করছি। এক লাখ লোক জাপান নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিটি জায়গায় আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি। কোরিয়াতেও আমাদের কাজ হচ্ছে আমাদের চেষ্টার কোনো অন্ত নেই।ভিসা জটিলতা নিয়ে প্রেস সচিব বলেন, এটা আগের সরকারের আমল থেকেই শুরু হয়েছে। ইউএই ভিসা বন্ধ হয়েছে কিন্তু আমাদের আমলে না, ২০১২-১৩ সাল থেকেই বন্ধ ছিল। আমরা চেষ্টা করছি সামনেও অব্যাহত থাকবে। আস্তে আস্তে যে ঝামেলাগুলো হচ্ছে সেটা কেটে যাবে।যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল আলম বলেন, ২৫টি বিমানতো এক দিনে কেনা হচ্ছে না, সময়টা দেখেন অনেক বছর ধরে কেনা হবে। ততোদিনে আমাদের এয়ার ট্রাফিকের উন্নয়ন হবে। প্রতি বছরই তো উন্নয়ন হচ্ছে। কোনো কোনো বছর তো দুই সংখ্যায় বাড়ে হয়। আমরা বোয়িং কেন দিচ্ছি, আমাদের পাইলটদের প্রশিক্ষণ হয় বোয়িংয়ে। পৃথিবীতে দুইটা এয়ারলাইন্স আছে কেউ এয়ারবাসকে নিচ্ছে, কেউ বোয়িংকে নিচ্ছে। আমরাও নিচ্ছি, ইন্দোনেশিয়াও নিচ্ছে। এখন দেওয়ার মানে হচ্ছে আমরা যাতে ঠিক মতো সাপ্লাই পাই। প্রথম সাপ্লাই কবে আসে সেটা দেখে নিয়েন। এটা যদি কালকে আনা হতো—তাহলে বলতে পারতেন কোথায় রাখব। কিন্তু আমাদের প্রতিমাসে একটা বৃদ্ধি আছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ সভাপতি মাসউদুল হক। সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদল। এ সময় প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামূল কবীর উপস্থিত ছিলেন।
১২৬ দিন আগে
নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে, একদিনও দেরি হবে না: শফিকুল আলম
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আগামী পাঁচ-ছয়টা দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে, একদিনও দেরি হবে না।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকালে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত বিএসআরএফ-সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘একটা বিষয়ে নিশ্চিত থাকেন ইলেকশন (নির্বাচন) দেরি হবে না। অধ্যাপক ইউনূস নির্বাচনের যে সময় বলেছেন, তার থেকে একটা দিনও দেরি হবে না।’
প্রেস সচিব বলেন, তিনি (ড. ইউনূস) প্রথমে বলেছিলেন এপ্রিলের প্রথমে। তারপর আমরা লন্ডনে বলেছি যদি অনেকগুলো সংস্কার হয়... কাজগুলো এগিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে এটা ফেব্রুয়ারিতে হবে। আমরা সেই জায়গায় এখনো আছি। এটা একটা দিনও দেরি হবে না
বিএসআরএফ-এর সভাপতি মাসউদুল হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা নিজামূল কবীর। সংলাপ সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদল।
পড়ুন: জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতাদের: আলী রীয়াজ
১২৬ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনায় ইতিবাচক ফল প্রত্যাশা করছে সরকার: শফিকুল আলম
বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত বাড়তি শুল্ক হ্রাসে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে তৃতীয় দফার আলোচনায় বাংলাদেশ সরকার ইতিবাচক ফল প্রত্যাশা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ কথা জানান।
শফিকুল আলম জানান, অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ শুল্ক আলোচনা, সন্ত্রাসবিরোধী উদ্যোগ, নির্বাচন প্রস্তুতি এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানান প্রেস সচিব।
তিনি জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তৃতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শুরু হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল আজ রাতেই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে।
পড়ুন: বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই: প্রধান উপদেষ্টা
শফিকুল জানান, আলোচনার ইতিবাচক ফলাফলের ব্যাপারে সরকার আশাবাদী।
তিনি বলেন, সরকারের এই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে একটি ব্যবসায়ী দলও যুক্ত থাকছে, যদিও তারা সরাসরি আলোচনায় অংশ নেবে না।বৈঠকে জঙ্গিবিরোধী লড়াইকে প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা।
শফিকুল বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, তার সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। কোনো অবস্থাতেই জঙ্গিবাদ বা উগ্রপন্থাকে বরদাস্ত করা হবে না।’
প্রেস সচিব আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রে এই তৃতীয় দফার আলোচনা ২৯ ও ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে এবং ১ আগস্টের আগে একটি ইতিবাচক সমঝোতায় পৌঁছানোর আশা করছে সরকার।
১২৯ দিন আগে
সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী তিন মাসে দেড় লাখ পুলিশকে প্রশিক্ষণ
আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে পরবর্তী তিন মাসে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে সরকার।
এ ছাড়া, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রস্তুতি মূল্যায়নে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শফিকুল আলম বলেন, বৈঠকে নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে আইজিপি জানিয়েছেন, আগামী মাস থেকে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনকেন্দ্রিক বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’
শফিকুল আলম আরও জানান, এই প্রশিক্ষণ সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসজুড়ে চলবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন করা হবে।
১২৯ দিন আগে
বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা কম দেখানোর কোনো কারণ নেই: প্রেস সচিব
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের দুর্ঘটনা নিয়ে হতাহতের সংখ্যা ঘিরে ছড়ানো ভুয়া তথ্যকে উড়িয়ে দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, হতাহতের সংখ্যা কম দেখানোর সরকারের কোনো কারণ নেই।
বুধবার (২৩ জুলাই) নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন হতাহতের সংখ্যা গোপন রাখা প্রায় অসম্ভব।
তিনি লিখেছেন, ‘২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমি বহু বড় ধরনের দুর্যোগ কভার করেছি। অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা গোপন রাখা কার্যত অসম্ভব। প্রথমদিকে পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জন নিখোঁজ হিসেবে জানায়, পরে হাসপাতাল বা কর্তৃপক্ষ থেকে তথ্য এলে তারা স্বজনদের অবস্থান জানতে পারে। এই ঘটনার ক্ষেত্রেও মাইলস্টোন কলেজ প্রতিদিনের হাজিরা খাতা যাচাই করে অনুপস্থিতদের শনাক্ত করতে পারবে।’
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের অবস্থা নিয়ে নিয়মিত তথ্য জানাচ্ছে, সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকেও সহযোগিতা করা হচ্ছে। ‘আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, হতাহতের সংখ্যা কম দেখানোর সরকারের কোনো প্রয়োজন নেই।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা নেই: প্রেস সচিব
তিনি লেখেন, ‘আমরা মাইলস্টোন কলেজে গিয়েছিলাম নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে, যারা এখনো এই শোক থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। চারদিকে ভারী শোকাবহ পরিবেশ ছিল। অনেকে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনে ক্ষোভ জানিয়েছে।’
ঘটনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রেস সচিব জানান, দুই উপদেষ্টা স্কুল কর্তৃপক্ষকে ক্যাম্পাসে একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়মিত আহত ও মৃতের তথ্য জানানো হবে, যা স্কুলের উপস্থিতির তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে প্রকাশ করা হবে।
প্রেস সচিব জানান, উপদেষ্টারা সুপারিশ করেছেন যাতে বর্তমান শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন ছাত্ররা কন্ট্রোল রুমের কাজে যুক্ত থাকে। ‘আমরা আশা করছি, এটি আজ থেকেই সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হবে।’
‘আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) নয় ঘণ্টা স্কুলে ছিলাম। চাইলে আগে বেরিয়ে আসতে পারতাম, কিন্তু উপদেষ্টারা শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে ছিলেন। প্রয়োজন হলে আরও দীর্ঘ সময় থাকতেন, আমরা তখনই বেরিয়েছি যখন সেটি যথাযথ মনে হয়েছে,’ বলেন প্রেস সচিব।
শফিকুল আলম বলেন, যেসব শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা। এই বিমান দুর্ঘটনাকে তিনি জাতীয় শোক হিসেবে অভিহিত করে নিহতদের শহীদ হিসেবে বর্ণনা করেন।
‘আসুন, আমরা একসঙ্গে কাজ করি যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে। বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আকাশপথে শূন্য দুর্ঘটনার লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে,’ যোগ করেন তিনি।
১৩৫ দিন আগে
নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা নেই: প্রেস সচিব
নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া সময়সূচি অনুযায়ী যথাসময়েই নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।
শনিবার (১৯ জুলাই) কুমিল্লায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) ময়নামতি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘টেডএক্স কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
শফিকুল আলম বলেন, ‘নির্বাচন ঠিক যে সময়ে বলা হয়েছে, সেই সময়েই হবে। সুন্দর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটি হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা নির্বাচন।’
‘অধ্যাপক ইউনূস এটি বারবার বলছেন, আমরা আবারও বলি— নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা নেই। নির্বাচনের জন্য যে পরিবেশ সেটি ঠিক করা হবে এবং সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে। কোনো প্রার্থীই বলতে পারবে না যে তার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে বা তিনি পরিবেশ পাচ্ছেন না। আমরা পরিবেশ নিশ্চিত করব।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পেছানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। নির্বাচন হবে এবং খুব ভালোভাবে হবে।’
পিআর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচন বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সকল রাজনৈতিক দল ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কথা হচ্ছে। অন্যান্য অনেক দেশে এসব বিষয়ে আলোচনা করতেই ২ থেকে ৪ বছর সময় লেগে যায়। সেখানে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো মত প্রকাশ করছে। এতে করে খুব দ্রুত সময়ে মধ্যে অনেক বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এরপর আমরা আশা করছি, জুলাই সনদও সবাই সই করবে। তারপরই আমরা সবাই নির্বাচনের পরিবেশে ঢুকব। বৃষ্টির এই মৌসুম শেষ হলেই দেখবেন যে বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে, আনাচে কানাচে নির্বাচনের হাওয়া বইছে। অনেক বছর ধরে বাংলাদেশের যুবকরা ভোট দিতে পারেননি।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা ফলও পাচ্ছি। অপ্রীতিকর যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলো জড়িত প্রত্যেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে আইনও সংশোধন করে— যেমন: ধর্ষণের ক্ষেত্রে— আমরা দ্রুত বিচার করছি।’
গোপালগঞ্জ ইস্যুতে একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা সেদিন আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন, যারা সহিংসতায় জড়িত ছিলেন, আমরা সবাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। অনেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই বলছেন এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। তবে সাংবাদিকদের আমি বলব, আপনারা দেখুন, আমরা সবকিছু আইনানুগভাবে করছি।’
‘দ্য নেক্সট ওয়েভ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কুবিতে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত ‘টেডএক্স কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি’ অনুষ্ঠানে স্পিকার হিসেবে ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হায়দার আলী, অ্যাসট্রো ফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন, চরকির সিইও রেদওয়ান রনি, লেখক ডেল এইচ খান, গায়ক আসিফ আকবর, সংবাদ উপস্থাপক ফারাবি হাফিজ প্রমুখ।
১৩৮ দিন আগে
একজন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তকে রক্ষা করতে পারবে না ভারত: শফিকুল আলম
ভারত যেন বিবেক ও নৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করে—এ আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে বিশ্বাসযোগ্যভাবে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তিকে আর রক্ষা করার সুযোগ ভারতের নেই।
বুধবার (৯ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ভারতের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন বিবেক ও নৈতিক স্পষ্টতা নিয়ে কাজ করে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণের যে আইনগত অনুরোধ জানিয়ে আসছে, তা মেনে নিতে ভারত অস্বীকার করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এই অবস্থান আর গ্রহণযোগ্য নয়। আঞ্চলিক বন্ধুত্ব, কৌশলগত হিসাব কিংবা কোনো রাজনৈতিক উত্তরাধিকার—কোনো কিছুই বেসামরিক নাগরিকদের পরিকল্পিত হত্যার অজুহাত হতে পারে না।’
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে প্রেস সচিব বলেন, ‘যখন বিবিসির মতো একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধ উদ্ঘাটনে তাদের পূর্ণ তদন্ত সক্ষমতা কাজে লাগায়, তখন বিশ্বকে তা আমলে নিতেই হয়।’
তিনি জানান, বিবিসির ইনভেস্টিগেশন ইউনিট বিবিসি আই এরইমধ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত অনুসন্ধানে যে অডিও প্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, তা ২০২৪ সালের ছাত্র বিক্ষোভ দমন অভিযানে শেখ হাসিনার ভূমিকার ‘চূড়ান্ত সত্য’ প্রকাশ করেছে বলে উল্লেখ করেন শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে—এটি এক বিষয়; কিন্তু বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত, সম্পদসমৃদ্ধ এবং ফরেনসিক দক্ষতায় পারদর্শী বিবিসির মতো একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যখন স্বাধীনভাবে তদন্ত করে এসব অভিযোগ অকাট্যভাবে তুলে ধরে, তখন তা ভিন্ন মাত্রা পায়।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং, যা বিশ্বমানের অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা যাচাই করেছেন, তা প্রমাণ করে যে এ সহিংসতা ছিল না তাৎক্ষণিক বা দুর্ঘটনাবশত। এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত, অনুমোদিত হত্যাকাণ্ড।’
তিনি বলেন, ‘এখন আর প্রমাণ শুধু গল্পনির্ভর বা পক্ষপাতদুষ্ট নয়। এটি ফরেনসিক, যাচাইযোগ্য এবং উপেক্ষা করার মতো নয়।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘যুক্তরাজ্য—যাদের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এসব বর্বরতা উন্মোচন করেছে—বাংলাদেশ ও ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমরা চাই, ভারত এই মুহূর্তটির গুরুত্ব অনুধাবন করুক এবং ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সম্মান দেখাক।’
‘বাংলাদেশের মানুষ ন্যায়বিচার দাবি করে, আর ভুক্তভোগীরা প্রত্যাশা করে বিচারিক সমাপ্তি। বিশ্বকে এখন দেখাতে হবে, কোনো নেতা—তিনি যতই ক্ষমতাশালী হোন না কেন—আইনের ঊর্ধ্বে নন,’ বলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
১৪৮ দিন আগে
ঢাকা-ওয়াশিংটন দ্বিতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শুরু হচ্ছে আজ
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক বিষয়ক দ্বিতীয় দফার আলোচনা আজ বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে শুরু হতে যাচ্ছে। প্রথম দফার ফলপ্রসূ আলোচনার ভিত্তিতে আরও অগ্রগতি অর্জনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
২৭ জুনের প্রথম দফার আলোচনায় অর্জিত অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করে দ্রুত একটি চুক্তি সম্পন্ন করার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিস (ইউএসটিআর) আয়োজিত এ আলোচনা ৯ থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দিন, যিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে উপস্থিত থেকে সরাসরি আলোচনায় অংশ নেবেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করবেন।
এছাড়া বাণিজ্য সচিব এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবসহ সিনিয়র কর্মকর্তারা আলোচনায় অংশ নিতে এরইমধ্যে ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছেছেন। শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ আশা করছে, গত ২৭ জুন অনুষ্ঠিত প্রথম দফার ফলপ্রসূ আলোচনার অগ্রগতির ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক চুক্তিটি দ্রুত সম্পন্ন করা যাবে।
গত ৭ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেন মার্কিন পেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প জানান, ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করবে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, শুল্ক হার সংশোধনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ভারসাম্য স্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি যেসব দেশ আমেরিকার রপ্তানি ও শ্রম বাজারে বাধা সৃষ্টি করছে, তাদের জন্য কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে।
১৪৮ দিন আগে