আখতার হোসেন
এতগুলো মাসেও হত্যা, নিপীড়ন ও গুমের বিচারে অগ্রগতি নেই: আখতার
জুলাই অভ্যুত্থানের পর এতগুলো মাস পেরিয়ে গেলেও শেখ হাসিনার আমলের হত্যা, নিপীড়ন ও গুম-খুনের বিচারে কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
শনিবার (১৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আখতার বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ছিল, বাংলাদেশের বিচার কাঠামো এমন হবে, যেখানে বিগত সময়ে দেশের মানুষের ওপর যে অত্যাচার, নিপীড়ন, গুম-খুন ও গণহত্যা হয়েছে, সেগুলোর পরিপূর্ণ বিচার হবে। কিন্তু এতগুলো মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা বিচারের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি খেয়াল করিনি।’
গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরে বাহাত্তরের সংবিধান পেয়েছিলাম, সেটা আমাদের কাঙ্ক্ষিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সুবিচারের দেশ আমাদের উপহার দিতে পারেনি। যে অর্থনৈতিক অধিকারগুলো আছে, সেগুলোর সাংবিধানিক স্বীকৃতি অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশের মানুষ। আমরা আমাদের অর্থনৈতিক অধিকারগুলোকে সাংবিধানিক স্বীকৃতির পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারিনি।’
এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘আমাদের যে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল, সেটি এক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রকাঠামোর মূলে রেখে হয়েছিল। যে কারণে গেল অর্ধশতাব্দিতে বাংলাদেশে কোনো ক্ষমতার ভারসাম্য আমরা দেখিনি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে।
‘একটি গণপরিষদের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সংবিধান প্রণয়ন করে, সেটি যাতে একক কোনো দলের ইশারায় পরিবর্তিত হতে না পারে— এমন এক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল ও জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এটি গ্রহণ করা সম্ভব হবে।’
ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর এক থাকার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘নানা কারণে আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার জায়গা তৈরি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক চাওয়া–পাওয়ার হিসাব–নিকাশ থেকে পরস্পরের বিরুদ্ধাচরণের জায়গা তৈরি হয়েছে।’
কিন্তু এটা গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশার জায়গা ছিল না বলে উল্লেখ করে আখতার বলেন, ‘আমরা এমন এক বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, যেখানে প্রতিহিংসা, বিদ্বেষ ও পেশিশক্তির রাজনীতি উতরে গিয়ে আমরা মানুষের সমস্যা সমাধানে নাগরিক ও মানবিক মর্যাদার সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’
‘সেই পথে আমরা কতদূর অগ্রসর হতে পেরেছি, সেটা ইতিহাস বিবেচনা করবে। আমার কাছে এখনো মনে হয়, এক বছর পার হলেও আমাদের অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের আশা নিঃশ্বেষ হয়ে যায়নি।’
আখতার আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের হাত থেকে সরে গিয়ে গণঅভ্যুত্থান মুষ্টিমেয় কিছু রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর কাছে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ুক— আমরা সেটা চাই না। এই গণঅভ্যুত্থান আমাদের সবার। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান একক কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে বন্দি না রেখে ফ্যাসিবাদবিরোধী সবপক্ষ সমানভাবে ধারণ করে আমরা নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে সামনে অগ্রসর হতে পারব।
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন গণতন্ত্র মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম বাবলু। আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ১২–দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উল্লাহ কায়সার, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের আহ্বায়ক নাঈম জাহাঙ্গীর, নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত প্রমুখ।
১৩৯ দিন আগে
হাসিনা পালিয়েছে, তার সিস্টেম রয়ে গেছে: আখতার হোসেন
জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব শেখ আখতার হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে হাসিনা পালিয়েছে কিন্তু তার সিস্টেম রয়ে গেছে। চাঁদার জন্য ঢাকায় একজনকে পাথর দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রামপালে এখন ঘের দখল চলে। পালিয়ে থাকা নেতারা ঘেরের দখল নিতে চায়।
শনিবার (১২ জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টির দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১২তম দিনে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লা বাজারে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আখতার আরও বলেন, বাংলাদেশে যদি কেউ ঘের দখল, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, কমিশনের রাজনীতি করতে চায়—তাহলে বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে হাসিনাকে বিদায় করেছে, সেভাবে তাদেরও বিদায় করবে।
তিনি বলেন, রামপালে কয়লা বিদ্যুতের নামে মানুষদের জলবায়ু সংকটে ফেলা হয়েছে। মোংলা বন্দর নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে।
এনসিপির এই নেতা বলেন, সামনের বাংলাদেশ এ যেনো কোনো গুম খুন না হয়, সেজন্য সব ক্ষেত্রে সংষ্কার দরকার। একটি দল মনে করে শুধু নির্বাচন হলেই সব সংষ্কার হয়ে যাবে। হাসিনাও তাই মনে করত। যদি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংষ্কার করা না হয়, পুলিশকে যদি নিরপেক্ষ না করা যায়—তাহলে শুধুমাত্র নির্বাচন দিয়ে গনতন্ত্র সম্ভব নয়। সংষ্কার করে তারপরেই নির্বাচন দিতে হবে।
পড়ুন: দেশে নতুন করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম দেখা যাচ্ছে: নাহিদ ইসলাম
পথসভায় আরও বক্তব্য দেন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ।
এসময়, দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সচিব তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাহিদা সারওয়ার নিভা, সিনিয়র মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ড. মাহমুদা মিতু, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোল্যা রহমাতুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বয়ক তাজনুভা জাবিন, বাগেরহাটের প্রধান সমন্বয়কারী- সৈয়দ মোরশেদ আনোয়ার, যুগ্ম সমন্বয়কারী- মো. শফিউল্লাহ, আবিদ আহমেদ, জেলা সদস্য-লাবীব আহমেদ, আল আমিন খান সুমন, অ্যাডভোকেট আল আমিন, অ্যাডভোকেট জান্নাতুল বাকিসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
১৪৬ দিন আগে
সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক গ্রেপ্তার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলার আহ্বায়ক আখতার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।রবিবার (২৩ মার্চ) ভোরে সিলেট জালালাবাদ থানার আউশা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আখতার হোসেন ওই এলাকার আব্দুল মুনিরের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহপরান (রহ.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মেছো বিড়াল হত্যার দায়ে মামলা, গ্রেপ্তার ১
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সিলেট জেলা শাখা নগরীর একটি কনভেনশন হলে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মাহবুবুর রহমান শান্ত নামের সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহত হন। রাতে এই ঘটনায় শাহপরান (রহ.) থানায় শান্ত বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সিলেট জেলার আহ্বায়ক আখতার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাহপরান (রহ.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, এনসিপির ইফতার মাহফিলে হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী মাহবুবুর রহমান শান্ত নামের একজন মামলা দায়ের করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে আজ ভোরে আখতার নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই মামলার তিন নাম্বার আসামি। আক্তার ছাড়াও মামলায় আরও একাধিক এজাহারভুক্ত আসামি রয়েছেন। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
২৫৭ দিন আগে
হাসিনা যাবে, অন্য কেউ ক্ষমতায় আসবে বলে আন্দোলন করিনি: আখতার
হাসিনা যাবে, অন্য কেউ ক্ষমতায় আসবে—এ জন্য মানুষ আন্দোলন করেননি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। সোমবার (২০ জানুয়ারি) আসাদ দিবস উপলক্ষে ‘শহীদ আসাদ থেকে শহীদ আবু সাঈদ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এমন কথা বলেন তিনি।
আখতার বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান থেকে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের রাজনীতির রোডম্যাপ হবে পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে আর কোনোভাবে রাজনীতিতে প্রসঙ্গিক না করা।’
‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সূক্ষ্ম পার্থক্য হচ্ছে, ‘২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে কোনো রাজনৈতিক দল স্বনামে সক্রিয় ছিলেন না। জনগণ ছাত্রদের ডাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মাঠে নেমেছেন এবং আন্দোলন করেছেন।’
জনগণের প্রত্যাশার প্রসঙ্গে আখতার বলেন, ‘হাসিনা যাবে অন্য কেউ ক্ষমতায় আসবে এজন্য মানুষ আন্দোলন করেনি। মানুষ দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমূল সংস্কার চেয়েছে, তাই পথে নেমেছে।’
‘বিগত দিনের ফ্যাসিবাদী সরকার আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবেই জাতীয় নাগরিক কমিটি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং দেশের সাধারণ জনগণ আওয়ামী লীগকে আগামীতে রাজনীতি করতে দেবে না।’
এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার রক্ষাকবচ হিসেবে বাহাত্তরের সংবিধান সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে উল্লেখ করে আখতার বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন
বর্তমান সংবিধানে আওয়ামী লীগ এবং ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয় দাবি করে আখতার বলেন, ‘সাধারণ ছাত্ররা নতুন সংবিধানের রোডম্যাপ দিতে পারলেও রাজনৈতিক দলগুলো এখন পর্যন্ত এর কোনো রোডম্যাপ দিতে পারেনি।’
‘বাংলাদেশে বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাজনীতি করা যাবে না। রাজনীতি হবে নয়া এক বন্দোবস্তর মাধ্যমে।’
নতুন ব্যবস্থায় রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান আখতার।
৩১৯ দিন আগে