ডা. তাহের
জাতির কল্যাণে সংস্কার করতে আমরা একমত: ডা. তাহের
রাষ্ট্রের সংস্কারে প্রধান স্টেকহোল্ডার হিসেবে জাতির জন্য কল্যাণকর সংস্কার প্রস্তাবে জামায়াতে ইসলামী একমত বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়ে দুপুরের বিরতিতে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. তাহের বলেন, আজকে কমিশনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা শেষ নাও হতে পারে, তবে আমরা আলোচনা অব্যাহত রাখব। আলোচনা জাতীয় স্বার্থে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান স্টেকহোল্ডার হিসেবে জামায়াতে ইসলামী অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে, মনোযোগের সাথে সমস্ত সংস্কারকে বিবেচনা করছে। আমরা মনে করি, এটি দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর। আমরা সেব্যাপারে মত দিচ্ছি, ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি।’
আরও পড়ুন: যাতে মানুষ আর বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার না হন: আলী রীয়াজ
জামায়াত নেতা বলেন, ‘একাধিক ব্যক্তি বা দল আমাদের কাছে বিবেচ্য নয়। বাংলাদেশ, দেশের মানুষ, দেশের ভবিষ্যৎ ও সমৃদ্ধ শান্তিময় বাংলাদেশ-এটিই আমাদের অগ্রাধিকার।’
সংসদের মেয়াদের বিষয়ে চার বছর ও প্রেসিডেন্টের মেয়াদ এক বছর কমিশনের এমন প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর থাকবে। প্রেসিডেন্টের মেয়াদও পাঁচ বছর থাকবে।’
তিনি বলেন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। তবে এটির কাজ ও বৈশিষ্ট্য এসব বিষয়ে আমরা এখন আলোচনা করছি।
আলোচনা শেষে পূর্ণাঙ্গ ব্রিফিংয়ে আরও বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান তিনি।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন জামায়াতের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
আরও পড়ুন: কোনো পরিস্থিতিতেই সংস্কারের সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়: আলী রীয়াজ
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজকের আলোচনায় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ড. ইফতেখারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ ও এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। এছাড়া ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম খান মিলন, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত রাষ্ট্রীয় সংস্কার উদ্যোগের বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য তৈরির জন্য চলতি বছরের ২০ মার্চ থেকে ঐক্যমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা শুরু করে।
কমিশন ইতিমধ্যে বিএনপি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ ১৫ টি রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করেছে।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের উপর একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় অবস্থান তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক পর্যায়ে এটি পাঁচটি সংস্কার কমিশনের মূল সুপারিশগুলো প্রস্তুত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সাংবিধানিক, জনপ্রশাসন, নির্বাচনী, বিচার বিভাগীয় এবং দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারগুলো। মূল সুপারিশগুলোর ওপর মতামত চেয়ে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে এর স্প্রেডশিট পাঠানো হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৩৪টি দল তাদের মতামত জানিয়েছে।
কমিশন মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার প্রথম দফার আলোচনা সম্পন্ন করবে। একই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু
করার কথা এবং জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
২২৩ দিন আগে
১৯৭২ সালের সংবিধান অবৈধ, নতুন সংবিধান হতে হবে: ডা. তাহের
১৯৭২ সালে যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা অবৈধ সংবিধান বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। তিনি বলেছেন, ‘যারা এ সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন, তারা পাকিস্তান গণপরিষদের নির্বাচিত সদস্য। পাকিস্তানের সংবিধানের আওতায় নির্বাচিত গণপরিষদের সদস্যরা যে সংবিধান প্রণয়ন করেছেন, তা বৈধ হতে পারে না। যাত্রাই শুরু করেছি আমরা অবৈধভাবে।’
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে শরীয়তপুর পৌরসভা মাঠে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুর রব হাশেমীর সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাহের বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, ৭২-এর সংবিধান চলবে না, নতুন সংবিধান হতে হবে। দেশের মানুষের চিন্তা চেতনা ও ১৯৭১-এর যে চিন্তা থেকে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সেই চিন্তার আলোকে সংবিধান হবে। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ সংবিধান প্রণয়ন করা নয়।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম সংস্কার করতে হবে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে—এমন কিছু মৌলিক সংস্কার করে নির্বাচন করতে হবে।’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির বলেন, ‘বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যেখানে কখনোই স্বাধীনতা পরিপূর্ণ হয়নি। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা পরিপূর্ণ হয়নি, ১৯৭১-এ সংগ্রাম করতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে পৃথিবীর বুকে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু দেখা গেল সেই স্বাধীনতাও পূর্ণতা অর্জন করেনি; ২০২৪ সালে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। এর কারণ, আমরা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অযোগ্য নেতৃত্ব পেয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের অংশ হিসেবে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, কিন্তু ভুল নেতৃত্বের কারণে আমরা দেখলাম, গণতন্ত্র হত্যা করে তারা বাকশাল কায়েম করল। বাকশালের পরিণতি ভিন্ন হয়েছিল, আপনারা দেখেছিলেন। শেখ মুজিবকে হত্যা, জিয়াউর রহমানকে হত্যা, আন্দোলনের মুখে এরশাদের পতন। বিগত ১৫ বছরে আমরা জুলুমের স্বীকার হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ যদি আস্থা রাখে, তবে জামায়াত ক্ষমতায় যাবে, মিরাকল হবে। কেননা, বাকশাল শেষ, ৬ দফা শেষ, ১৮ দফা পারে নাই, ১৯ দফা পারে নাই। সোনার বাংলা, সবুজ বাংলার স্লোগান বাংলার মানুষের কোনো ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে নাই। এবারের দফা এক দফা। সেই দফা হলো— একবার জামায়াতে ইসলামীকে দেখব।’
আরও পড়ুন: অনির্বাচিত সরকার কখনো নিরাপদ সরকার না: তাহের
ডা. তাহের বলেন, ‘বাংলাদেশের ভাইয়েরা ৫৪ বছর ধরে নির্যাতিত হয়েছেন, ঠকেছেন। আমাদের একবার সুযোগ দেন। যদি খুব খারাপ হয়, তবে আরেকবার ঠকবেন। তাতে না হয়, ৫৪-এর সঙ্গে আরও ৫ যোগ হবে, এই তো!’
‘দেখুন, যদি জামায়তে ইসলামী নৈতিকতা ও কল্যাণের ভিত্তিতে আদর্শ রাষ্ট্র করে নারীর অধিকার, পুরুষের অধিকার, শ্রমিক, মেহনতি, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম সবার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে, তাহলে আপনারই তো লাভ!’
কর্মী সম্মেলনে শরীয়তপুর জেলা শুরা সদস্য ও ডামুড্যা পৌরসভা আমির আতিকুর রহমান কবীর ও জেলা শুরা সদস্য মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম খান মিলন, ফরিদপুর টিম সদস্য মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন ও শামসুল ইসলাম আল বরাটি।
অন্যান্যদের মধ্যে ফরিদপুর টিম সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা খলিলুর রহমান, গোপালগঞ্জ জেলা আমির অধ্যাপক রেজাউল করিম, মাদারীপুর জেলা আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমান, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির কে এম মকবুল হোসাইন, শরীয়তপুর জেলা সেক্রেটারি (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা মাসুদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
৩০০ দিন আগে
যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচিত হলে চালের দাম ৩০ টাকায় নেমে আসবে: ডা. তাহের
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে কতিপয় সংস্কার জরুরি। সংস্কারবিহীন নির্বাচন যেমন অর্থবহ হবে না, তেমনি নির্বাচন না করে সংস্কারের জন্য সময়ক্ষেপণ এদেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। তাই প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী মডার্ন স্কুল অ্যান্ড মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের পাগড়ি প্রদান উপলক্ষে তাফসিরুল কুরান মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
নায়েবে আমির বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট আধিপত্যবাদের পরাজয়ের মাধ্যমে দেশের মানুষ নতুন করে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়িয়েছে। স্বৈরাচারের পতনের মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টে শুধু স্বৈরাচার সরকারের পতন নয়, আধিপত্যবাদী, ইসলামবিদ্বেষী ভারতেরও পরাজয় হয়েছে। ভারতের প্রভুত্বের রাজনীতি বাংলাদেশের আর চলতে দেবে না জনগণ। বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাক—এই প্রতিবেশী দেশ কখনও তা চায় না। এদেশের স্বাধীনতাকে নষ্ট করতে তারা ষড়যন্ত্র করছে, সেটি প্রতিহত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: যারা দেশ বিক্রি করে তাদের রাজনীতি করার অধিকার বাংলাদেশে থাকবে না: ডা. তাহের
ডা. তাহের বলেন, ‘দেশে লুটপাটের কারণেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। আগামী নির্বাচনে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিরা নির্বাচিত হলে ৭০ টাকার চাল ৩০ টাকায় নেমে আসবে। লুটপাট, চাঁদাবাজদের জনগণ ভোট দেবে না। যারা বিদেশি সহযোগিতায় ক্ষমতায় যেতে চায়, তাদের এ দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে।’
মাহফিলে প্রধান মুফাসসির হিসেবে আলোচনা করেন মুফতি আমির হামজা। প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হালিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমির মোহাম্মদ শাহজাহান, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াত আমির মাহফুজুর রহমান, মাওলানা ইয়াহিয়া তাকী প্রমুখ।
৩০৮ দিন আগে