ফসলি জমি
নড়াইলে লবণাক্ততায় তিন ফসলি জমি এক ফসলিতে পরিণত
নড়াইলের নদী-খালের পানিতে ক্রমেই লবণাক্ততা বাড়ছে। এই পানি সেচ কাজে ব্যবহার করতে পারছেন না কৃষকরা। বাধ্য হয়ে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে চাষাবাদ করতে হচ্ছে তাদের। এতে বোরো আবাদসহ বিভিন্ন ফসল উপাদনে সেচ খরচ বাড়ছে দ্বিগুণেরও বেশি। ফলে বেশিরভাগ তিন ফসলি জমি এখন আস্তে আস্তে এক ফসলিতে পরিণত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রান্তিক কৃষকরা।
যশোর মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইন্সিটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানি কর্মকর্তা ড. মো. মোতাসীম আহম্মেদ বলেন, নড়াইল জেলার মধুমতি নদীর লোহাগড়া উপজেলার কালনাঘাট, কালিয়া উপজেলার নবগঙ্গা নদীর বাড়ইপাড়া, নড়াইল সদর উপজেলার চিত্রা নদীর আউড়িয়া এবং আফরা নদীর তুলারামপুর পর্যন্ত এই নদীর পানি বছরের একটা সময়ে লবণাক্ত থাকে।
তিনি আরও বলেন, নড়াইল জেলায় ২০০০ সালে একটি জরিপ প্রতিবেদনে পানিতে প্রথম লবণাক্ততার বিষয়টি উঠে আসে। তখন এর এরিয়া ছিল ১৬ হাজার হেক্টর জমি। পরে ২০০৯ সালের জরিপে প্রায় ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে লবণাক্ততা ধরা পড়ে। এরপর গত বছর একটি জরিপ করা হলেও এর ফলাফল এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
তিনি মনে করেন, ফারাক্কা দিয়ে পানি প্রবাহ যত বেশি থাকবে এ অঞ্চলের নদ ও খালের পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ তত কম থাকবে। ফারাক্কার পানি প্রবাহ কম থাকলে নদী ও খালের পানিতে লবণের মাত্রা বেড়ে যাবে। এছাড়া বৃষ্টিপাত যত বেশি হবে পানিতে লবণের মাত্রা তত কম হবে। যে বছরে বৃষ্টি কম হয় সেই বছর লবণাক্ততার মাত্রা বেড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, সেচ উপযোগী পানিতে লবণের স্বাভাবিক মাত্রা ধরা হয় ০.৭৫ ডি/এস মিটার। পানিতে লবণের মাত্রার বেশি হলে সেচ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। জেলার বিভিন্ন নদী ও খালের পানিতে লবণের মাত্রা ১.৭৫ ডি/এস মিটার পর্যন্ত দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: সেচ সংকটে শান্তিগঞ্জের কয়েকশ হেক্টর জমি, হুমকিতে বোরো ফসল
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলার আয়তন ৯৬৮ বর্গ কিলোমিটার। আট লাখ মানুষ এই জেলায় বসবাস করেন। এখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে না ওঠায় এই জেলার ৮২ শতাংশ মানুষ কৃষি এবং মৎস শিকারের ওপর নির্ভরশীল। প্রতি বছর জেলার প্রান্তিক কৃষক বোরো আবাদ করেন।
এমন বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হয়। সদর উপজেলার বাশভিটা গ্রামের কৃষক পবিত্র মজুমদার বলেন, এ বছর তিনি দুই একর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। ১৫ বছর আগে নদী কিংবা খালের পানি দিয়ে জমিতে সেচ দিয়েছি। কিন্তু এখন আর দিতে পারছি না।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, নদী-খালের পানিতে লবণের মাত্রা বেশি। বাধ্য হয়ে স্যালোমেশিন দিয়ে মাটির নিচ থেকে পানি উত্তোলন করে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। এ বছর সেচ খরচ বাবদ তাকে গুণতে হচ্ছে ২২ হাজার টাকা। খাল কিংবা নদী থেকে পানি দিতে পারলে এই টাকাটা সাশ্রয় হতো।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু পবিত্র মজুমদারই নন। জেলার বিভিন্ন নদী-খাল-বিল ও জলাশয়ের পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেচ কাজে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছেন তার মতো কয়েক লাখ কৃষক।
কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের কৃষক পিকুল শেখ বলেন, আগে এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে সেচ দিতে খরচ হয়েছে দুই হাজার পাচশত টাকা। নদী-খালের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় স্যালোমেশিন দিয়ে মাটির নিচ থেকে পানি তুলে জমিতে সেচ দিতে খরচ পড়ছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা।
তিনি আরও বলেন, যে জমিতে লবণ পানি ঢোকে সেই জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায় এবং সারও বেশি লাগে। আগে একই জমিতে তিন ফসল ফলাতাম। এখন বেশি টাকা খরচ এবং লবণের পানিতে জমি নষ্ঠ হওয়ার ভয়ে এক ফসলও ফলাতে পারছি না।
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. রোকনুজ্জামান বলেন, যে এলাকায় লবণ পানি ঢুকছে সে সকল এলাকার কৃষকরা তাদের জমিতে বাধ্য হয়ে সার বেশি ব্যবহার করছেন। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। তিনি দাবি করেন, এ সকল এলাকার কৃষকদের লবণ সহিঞ্চু ফসল চাষাবাদের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফসলি জমির মাটিকাটায় ২ স্কেভেটর অকেজো ও ৪ ট্রাক জব্দ
নড়াইল কৃষি অধিদপ্তর খামার বাড়ি উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. জসিম উদ্দীন বলেন, বিভিন্ন বিল এলাকায় যে সমস্ত খাল ভরাট হয়ে জোয়ার-ভাটা কমে গেছে সেগুলো পুনঃখনন করতে হবে। জোয়ার-ভাটার মাধ্যমে মিষ্টি পানির প্রবাহ বাড়াতে হবে। কৃষকরা নদী ও খালের পানি ব্যবহার করতে পারলে তাদের আর্থিক সাশ্রয় হবে। তখন আবারো তিন ফসলি ফলাতে পারবে কৃষকরা। তিনি দাবি করেন ধানের পাশাপাশি গম, ভুট্টা,সূর্যমুখিসহ বিভিন্ন লবণ সহিঞ্চু ফসল চাষাবাদে উৎসাহিত করা হচ্ছে কৃষকদের। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা সে লক্ষ্যে কাজও করে যাচ্ছেন।
২২২ দিন আগে
অপরিকল্পিত খাল খননে ঝিনাইদহে হুমকির মুখে ফসলি জমি
ঝিনাইদহে হরিনাকুণ্ডু উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে খাল খননের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি। এর ফলে ইতোমধ্যে ধ্বসে গেছে সড়কের পাশ, বসতভিটাসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খাল খননে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও খাল খননের সেই মাটি বিক্রি করে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তাদের দাবি, অপরিকল্পিত খননের কারণে নয়, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণেই ভাঙছে খালের পাড়।
এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পাউবো।
মহাসড়কের পাশে খাল পাড়ে স্ত্রী-সন্তান, ভাই ও মাকে নিয়ে মাত্র ১ শতক জমিতে বাস করেন হরিনাকুণ্ডু উপজেলার মকিমপুরের কৃষক আলম মন্ডল।
কয়েকদিন আগে ভাঙন শুরু হলে তার বসতভিটা খালগর্ভে চলে যায়। তার পর থেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে হতদরিদ্র পরিবারটি।
আরও পড়ুন: ১৫টি খাল খনন করলেই দূর হবে ঢাকার ৮০ শতাংশ জলাবদ্ধতা
স্থানীয়রা জানান, মকিমপুর গ্রামের বাগমারা খাল পাড়ের অর্ধশত পরিবার এখন ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। খালের দুই পাশের বাসিন্দাদের গাছপালা, বসতঘর, শৌচাগার ভেঙে গেছে।
খাল পাড় দিয়ে বয়ে যাওয়া এলজিইডির সড়কেরও একই অবস্থা। কোনো কোনো স্থানে সড়কের অর্ধেক নেমে গেছে খালে। হুমকির মুখে রয়েছে অন্যান্য বসতভিটা ও ফসলি জমি।
মশিয়ার রহমান নামের এক কৃষক বলেন, যেকোনো সময় আমার জমি খালে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এখন আমি কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না। তাই দ্রুত খালের পাড় বাঁধার দাবি জানাচ্ছি।
ইউনুছ আলী নামের এক কৃষক বলেন, খাল খননের সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন খাল পাড়ের মাটি বিক্রি করে দেওয়ায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। যদি খালের মাটি বিক্রি না করত, তাহলে এ সমস্যা হতো না।
সবুজ হোসেন নামের এক পথচারী বলেন, খালের ভাঙ্গনে সড়কটি প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। এখনই খালের পাড় বাঁধা না হলে এই সড়কটি দিয়ে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে যাবে। গ্রামের কৃষকরা মাঠ থেকে ফসল আনা-নেওয়ার জন্য আর সড়কটি ব্যবহার করতে পারবে না।
ঝিনাইদহ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রঞ্জন কুমার দাস বলেন, এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধানে কাজ করা হচ্ছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে এই খালটি খনন করে ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সাড়ে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালটি খননে ব্যায় হয়েছিল ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: বসিলায় ট্রাক টার্মিনাল উচ্ছেদের পর লাউতলা খাল খননে ডিএনসিসি
৩৪৮ দিন আগে
কালবৈশাখীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফসলি জমি-বাড়ি বিধ্বস্ত, ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক লাইন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কালবৈশাখীর আঘাতে অন্তত ৩০-৩৫টি ঘর-বাড়ি ভেঙে গেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বৈদ্যুতিক লাইন ও খেতের ফসল।
এছাড়া, উপড়ে পড়েছে গাছ-বৈদ্যুতিক খুঁটি, ঝড়ের কবলে পড়ে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
আরও পড়ুন: নীলফামারীতে কালবৈশাখী ঝড়: তিন উপজেলার দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত
রবিবার (৩১ মার্চ) সকাল দিকে সদর উপজেলা দিয়ে এ ঝড় বয়ে যায়।
সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ ওমর ফারুক বলেন, কালবৈশাখীর আঘাতে অন্তত ৩০-৩৫টি ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে৷
এছাড়া, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশে উড়শিউড়া এলাকায় সুলতানপুর পল্লী বিদ্যুতের উপকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের বেশ কয়েকটি খুঁটি ও অসংখ্য গাছ। বর্তমানে এই এলাকা বিদ্যুৎহীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: কচুয়ায় হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়, লন্ডভন্ড অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি
৬১৩ দিন আগে
ফসলি জমি রক্ষা এবং মজুতদারি রোধে জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা চান কৃষিমন্ত্রী
অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনা, ফসলি জমি রক্ষা ও মজুতদারি রোধে জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা চেয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ।
সোমবার (৪ মার্চ) সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে চলমান জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কৃষি মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সেশনে মন্ত্রী এ সহযোগিতা চান।
তিনি বলেন, আবাদি জমির পরিমাণ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। তাই অকৃষি কাজে কৃষি জমির ব্যবহার ন্যূনতম পরিমাণ নিশ্চিত করা এবং উর্বর কৃষি জমি যাতে অধিগ্রহণ না করা হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এছাড়া কৃষি কাজের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে তিন ফসলি জমি। কৃষি জমি সংরক্ষণের বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
আরও পড়ুন: টেকসই খাদ্য নিরাপত্তায় মূল চ্যালেঞ্জ জলবায়ু পরিবর্তন: কৃষিমন্ত্রী
মজুদদারি রোধে মনিটরিং জোরদারের আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষিপণ্য অবৈধভাবে মজুত করে অসাধু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান রমজানসহ সারা বছর যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে গঠিত কমিটিকে তৎপর থাকতে হবে।
এ বিষয় জেলা প্রশাসকরা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন।
কৃষি উৎপাদনের সাফল্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব ও বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও ২০২২-২৩ অর্থবছরে চাল উৎপাদন হয়েছে ৩৯১ দশমিক ০২ লাখ মেট্রিক টন।
এছাড়া অন্যান্য প্রধান প্রধান ফসলের মধ্যে ১১ দশমিক ৭০ লাখ মেট্রিক টন গম, ৬৪ দশমিক ৩১ লাখ মেট্রিক টন ভুট্টা ১১০ দশমিক ৮৫ লাখ মেট্রিক টন আলু ও ২২৫ দশমিক ৪১ লাখ মেট্রিক টন শাক-সবজি উৎপাদন হয়েছে।
এছাড়া সরিষা উৎপাদন হয়েছে ১১ দশমিক ৬৩ লাখ মেট্রিক টন ও পেঁয়াজ ৩৪ দশমিক ৫৬ লাখ মেট্রিক টন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে মন্ত্রী বলেন, কৃষকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহ করতে হবে। বীজ থেকে চারা না গজালে বা অঙ্কুরোদগম না হলে, দায়ী ব্যক্তিদের চরম শাস্তি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: এফএওর আঞ্চলিক সম্মেলনে যোগ দিতে কলম্বো গেলেন কৃষিমন্ত্রী
৬৪০ দিন আগে
তিন ফসলি জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান কৃষকরা
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় প্রতিনিয়ত তিন ফসলি জমির মাটি কাটা, কৃষি জমি ভাঙন ও জমিতে ফসল উৎপাদন করতে না পেরে তিন ফসলি জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কৃষকরা।
শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের প্রধান ফটকের সামনে অবৈধধভাবে ফসলি জমির মাটি কাটা ও বালু উত্তোলন এবং পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় প্রতিরোধে এক মানববন্ধনে এ হস্তক্ষেপ চান কৃষকরা।
মানববন্ধনের পাশাপাশি এ বিষয়ে দিনব্যাপী ফটো সাংবাদিক ফোজিত শেখ বাবুর আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘কৃষক বাঁচাও’ও প্রদশিত করা হয়। দুপুর ১১টা থেকে এই প্রদর্শনী চলে বিকাল ৬টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে ২ কৃষকের আত্মহত্যা: তদন্তে সরকারি প্যানেল গঠিত
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ভুক্তভোগী এলাকা সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক। এছাড়াও ভুক্তভোগী সাধারণ কৃষক, জনগণ ও মুন্সিগঞ্জের ১৪টি সংগঠনের কর্মীরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তিন ফসলি জমি কেটে নিয়ে যাচ্ছে একটি মহল। যারা এই অবৈধ ব্যবসা করছেন তারা প্রতিদিন অর্থের বিনিময়ে প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে নেন। অভিযানের বিষয়টি আসলে এসব কর্মকর্তারা আগেই ভূমিখেকোদের জানিয়ে দেন। ফলে আগে থেকেই তারা সাবধান হয়ে যান।
বক্তারা বলেন, মুন্সিগঞ্জের বাসাইল, লতব্দী ও বালুরচরে এ যাবৎ প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমির মাটি কেটে সমুদ্রের মতো করা হয়েছে। বর্তমানে আরও প্রায় ১০০-১৫০ বিঘা জমির মাটি কাটার মহাপরিকল্পনা চলছে। লতব্দী ইউনিয়নের উত্তর পাশে ধলেশ্বরী নদীর পাড় ঘেষে ১২ থেকে ১৫টি অবৈধ ইটের ভাটা প্রভাবশালী ও তাদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে। যা গ্রামের মাত্র ২শ গজের মধ্যে।
তারা আরও বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীরা জমির মাটি ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীর করে কেটে নিয়ে ভাটায় সরবরাহ করছে। ফলে বিক্রমপুরের আলু বলে খ্যাত জেলার যে লক্ষমাত্রা তা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। সরিষা, ডাল, ধানসহ কোনো শস্যই চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না।
বক্তারা বলেন, স্থানীয় প্রশাসন কোন এক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে। এজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং হস্তক্ষেপ কামনা করছি যাতে এই সমস্যা সমাধান হয়।
আরও পড়ুন: জমিতে পানি না পেয়ে বিষপানে সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যা!
১৩৪৩ দিন আগে
ফরিদপুরে পদ্মার ভাঙন, বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি
গত কয়েকদিন ধরে ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে পদ্মা নদীর ওপারে ইউসুফ আলী মাতুব্বরের ডাঙ্গী, ইমান মাতুব্বরের ডাঙ্গী, আলেক খার ডাঙ্গী ও শুকুর আলী মৃধার ডাঙ্গী এলাকায় ভাঙন চলছে।
শুকুর আলী মৃধার ডাঙ্গী এলাকায় ভাঙনের ফলে এর আগে ১১টি বসত ভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে তীব্র আকারে ভাঙন দেখা দিয়েছে ইউসুফ আলী মাতুব্বরের ডাঙ্গী, ইমান আলি মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও আলেক কার এলাকার ফসলি জমিতে ভাঙন চলছে। নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে কয়েক হাজার বসত বাড়ি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক ও ৩টি মসজিদ।
সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, গত এক মাসে পদ্মা নদীর ভাঙনের ফলে অন্তত একশ হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
পড়ুন: আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য সহায়তা
শুক্রবার দুপুর থেকে ওই এলাকার ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শুক্রবার থেকে এ ভাঙন রোধে কাজ শুরু করছে পাউবো। ওই এলাকায় প্রতিটি ২৫০ কেজি ওজনের পাঁচ হাজার ১০৮টি বালিভর্তি বস্তা ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে যাতে ওই এলাকাকে বাঁচানো যায় তার জন্য সব কিছু করা হবে।
এ সময় ফরিদপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুল আলম, উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, সদরের নর্থ চ্যানেলের ভাঙনকবলিত এলাকায় ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে পাউবো।
নির্দিষ্ট ওজনের বালুর বস্তা যাতে ফেলা হয় তা নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি জানান।
পড়ুন: সিলেটে নদী ভাঙনে হুমকির মুখে বিশ্বনাথের গোবিন্দনগর গ্রাম
গোয়ালন্দে পদ্মার ভাঙনে মসজিদসহ ৫ পরিবারের বসতভিটা বিলীন
১৫২৫ দিন আগে
অবৈধ বালু উত্তোলন না থামায় সিরাজগঞ্জে যমুনায় অসময়ে ভাঙন
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেই চলেছে বালু দস্যুরা।
১৮১৯ দিন আগে
মধুমতি নদীগর্ভে রাতারাতি বিলীন ১৫ একর ফসলি জমি
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় প্রায় ১৫ একর ফসলি জমি বৃহস্পতিবার রাতে মধুমতি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
১৯১১ দিন আগে
সাতক্ষীরায় কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে ৩ গ্রাম প্লাবিত
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে প্রবল জোয়ারের চাপে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে তিনটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
২০৬৭ দিন আগে
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইটভাটায় ব্যবহার হচ্ছে ফসলি জমির মাটি
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় ফসলি জমির মাটি বিক্রির হিড়িক পড়েছে। ফসলি জমির মাটি দিয়ে ইট তৈরিতে সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভাটার মালিকরা এর কোন তোয়াক্কাই করছে না।
২১১২ দিন আগে