ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
ফোরজির সর্বনিম্ন গতি হবে ১০ এমবিপিএস, সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর
বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ সেবার মান নিম্নমানের হওয়ায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে একটি নতুন কোয়ালিটি অব সার্ভিস বেঞ্চমার্ক তৈরি করা হয়েছে। গত সপ্তাহের বিটিআরসি কমিশন মিটিংয়ে মোবাইল অপারেটর, এনটিটিএন এবং আইএসপি সেবাদাতাদের জন্য এটি পাস হয়।
নতুন এই কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) নীতিমালায় ফোরজির সর্বনিম্ন গতি ১০ এমবিপিএস নির্ধারণ করা হয়েছে। তদারকি বাড়াতে বিটিআরসি প্রতি মাসে আগের মাসের নেটওয়ার্ক পারফরম্যান্স এবং হেলথ চেক করবে, যা সেপ্টেম্বর থেকেই কার্যকর হবে।
রোববার (৩১ আগস্ট) ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি-বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশে এই চর্চাটা নতুন। টেলিকম সেবার মান নিশ্চিত করতে কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) নীতিমালা একটা আন্তর্জাতিক চর্চা। এতে ড্রাইভ টেস্ট মানদণ্ডে অপারেটরদের ফোরজি সেবার সর্বনিম্ন গতি ১০ এমবিপিএস থাকতে হবে। কমানো হয়েছে কলড্রপের সর্বনিম্ন হার। এ ছাড়া বাড়ানো হয়েছে সেবার বিভিন্ন মানদণ্ড সূচক। এসব মানদণ্ডে অপারেটরদের বাধ্যতামূলকভাবে মাসিক প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
তার মতে, আগের কোয়ালিটি অব সার্ভিস বেঞ্চমার্ক খুব বাজে ছিল, যা সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত করা হয়েছে। শিগগির হালনাগাদ এ নির্দেশিকা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও লিখেছেন, বাংলাদেশের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ফোরজিতে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ করেনি। ফলে সেবার মান নিম্নমুখী। এর উত্তরণে নতুন লাইসেন্স পলিসিতেও ‘লাইসেন্স অব্লিগেশন’ এবং কোয়ালিটি অব সার্ভিসের কথা বলা হয়েছে। এই কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) বেঞ্চমার্ক টেলিযোগাযোগ খাতে নাগরিকদের মানসম্মত সেবা নিশ্চিতে সেবাদাতাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে সেবার মানোন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: স্টারলিংকের ইন্টারনেট নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন
সংশোধিত কিউওএসে কী আছে, তা উল্লেখ করে ফয়েজ আহমদ লিখেছেন, নেটওয়ার্ক পর্যায়ে কল সেটআপ সাকসেস রেটের হার অন্তত ৯৯ শতাংশ হতে হবে, আর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তা ৯৮ শতাংশ।
- কলড্রপের হার টুজি নেটওয়ার্কে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ এবং উপজেলা পর্যায়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ -এর মধ্যে সীমিত রাখতে হবে।
- ডেটা সেবায় ফোরজি সংযোগ সফলতার হার ৯৯ শতাংশ এবং জেলা পর্যায়ে ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ থাকতে হবে।
- গড় ব্যবহারকারী ডাউনলোড গতি নেটওয়ার্ক পর্যায়ে কমপক্ষে ৩ দশমিক ৫ এমবিপিএস এবং জেলা পর্যায়ে ২ দশমিক ৫ এমবিপিএস হতে হবে।
- ড্রাইভ টেস্টে ভয়েস সেবায় কল সেটআপ সাফল্যের হার ৯৮ শতাংশ বা তার বেশি, কলড্রপ (অটোমোড) ২ শতাংশের মধ্যে এবং ভোল্টির (ভয়েস ওভার এলটিই প্রযুক্তি) জন্য গড় ব্যবহারকারী মান সূচক ন্যূনতম ৩.৫ হতে হবে।
- ডেটা সেবায় ডাউনলোড স্পিড সর্বনিম্ন ১০ এমবিপিএস এবং আপলোড ২ এমবিপিএস নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেবার মান তদারকিতে মাসিক রিপোর্টিং
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী অপারেটরদের এখন থেকে প্রতি মাসে তাদের নেটওয়ার্কের মানসংক্রান্ত মূল সূচক (কেপিআই) জমা দিতে হবে। এসব সূচক মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে—অ্যাক্সেসিবিলিটি, রিটেইনেবিলিটি ও নেটওয়ার্ক ইনটিগ্রিটি।
১. অ্যাক্সেসিবিলিটি (নেটওয়ার্কে প্রবেশ ও কল সেটআপ)
এই সূচকগুলোর মাধ্যমে বোঝা যাবে গ্রাহকেরা কতটা সফলভাবে নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারছেন এবং কল সেটআপ হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে কল সেটআপ সাকসেস রেট (টুজি ও ফোরজি-ভোল্টি), পেজিং সাকসেস রেট, আর ইআরএবি সেটআপ সাকসেস রেট। এ ছাড়া, যেখানে এই হার ৯০ শতাংশ বা ৭০ শতাংশের নিচে নেমে আসে, সেই সব খারাপ সেল আলাদা করে চিহ্নিত করতে হবে।
২. রিটেইনেবিলিটি (সংযোগ ধরে রাখার সক্ষমতা)
এই সূচকগুলোতে দেখা হবে কল বা ডেটা সেশন শুরু হওয়ার পর তা কতটা স্থিতিশীল থাকে। এর মধ্যে রয়েছে কলড্রপ রেট (২জি ও ৪ জি), ভোল্টি অস্বাভাবিক বিচ্ছিন্নতার হার, এলটিই নন-রিটেইনেবিলিটি, এসআরভিসিসি সাকসেস রেট এবং হ্যান্ডওভার সাকসেস রেট।
৩. নেটওয়ার্ক ইনটিগ্রিটি (নেটওয়ার্কের সার্বিক দক্ষতা-ক্ষমতা)
এখানে নেটওয়ার্ক অবকাঠামো কতটা কার্যকরভাবে কাজ করছে, তা দেখা হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতি বেস স্টেশনে এলটিই পিআরবি (ফোরজি রেডিও নেটওয়ার্ক রিসোর্স) ব্যবহার হার, ব্যবহারকারীর আপলিঙ্ক থ্রুপুট (এমবিপিএস) এবং সিকিউআই/আরএসআরকিউ মান অনুযায়ী ‘খারাপ স্যাম্পল’-এর শতকরা হার।
বিটিআরসি সব সূচকের ফলাফল মাসভিত্তিক গড় করে নেটওয়ার্ক, জেলা ও উপজেলা স্তরে আলাদা আলাদাভাবে জমা নেবে। পাশাপাশি, সবচেয়ে খারাপ পারফর্ম করা ৫০টি সেলের আলাদা তালিকা জমা দিতে হবে, যেখানে অ্যাক্সেসিবিলিটি ও রিটেইনেবিলিটি সূচক দুর্বল।
আরও পড়ুন: জুলাই থেকে ইন্টারনেটের দাম ২০ শতাংশ কমবে
বিশেষ সহকারীর মতে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে অপারেটরদের সেবার মান নিয়ে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। একই সঙ্গে দুর্বল এলাকাগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে। বাধ্যতামূলক মাসিক রিপোর্টিংয়ের ফলে অপারেটরদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে সেবার মান বজায় রাখতে, বিশেষ করে গ্রামীণ ও শহরতলির এলাকায় যেখানে এখনো দুর্বল নেটওয়ার্ক ও ঘনঘন কল ড্রপ নিয়ে অভিযোগ বেশি।
সংশোধিত এই কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) ফিক্সড ইন্টারনেট ও টেলিফোনি এবং এনটিটিএনদের জন্য করা হয়েছে। ফিক্সড ইন্টারনেট ও টেলিফোনিতে ফিক্সড টেলিফোন সেবায় কলড্রপ ১ শতাংশের মধ্যে, কল সেটআপ সাফল্যের হার ৯৯ শতাংশের বেশি এবং কল সংযোগ সময়) ৬ সেকেন্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।
এখানে ইন্টারনেট সেবায় লোকাল ট্র্যাফিকের সংযোগ সময় সর্বোচ্চ ২৫ এমএস, ডেটা হারানোর হার ১ শতাংশের মধ্যে এবং নেটওয়ার্কের প্রাপ্যতা ৯৯ শতাংশ বা তার বেশি হতে হবে। গ্রাহকের প্রান্তে ডাউনলোড-আপলোড স্পিড সাবস্ক্রাইব করা গতির অন্তত ৯৫ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে।
এনটিটিএন অপারেটরদের ক্ষেত্রে ডেটা হারানো সর্বোচ্চ ০.০১ শতাংশ, ল্যাটেন্সি ৫ এমএস এবং সংযোগের জিটার ৩ এমএসের মধ্যে রাখতে হবে। ফাইবার নেটওয়ার্কে সেবার সমস্যা মেট্রো (মহানগর) এলাকায় ৪ ঘণ্টা এবং গ্রামীণ এলাকায় ৬ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান করতে হবে।
ফয়েজ আহমদ জানান, কিইওএস অনুযায়ী গ্রাহক অভিযোগ সমাধানে কঠোর মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে বিটিআরসি। নেটওয়ার্ক-সম্পর্কিত নয় এমন অভিযোগ ২৮ দিনের মধ্যে শতভাগ সমাধান করতে হবে। এ ছাড়া গ্রাহকসেবা সেন্টারে আসা ৯০ শতাংশ কল ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে এবং সব কল ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে রিসিভ করতে হবে।
৯৫ দিন আগে
নির্বাচনের আগে ব্যাংকিং সেক্টরে সাইবার নিরাপত্তা বড় চ্যালেঞ্জ: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাংকিং সেক্টরে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তিনি বলেন, ‘দেশের মাত্র ১৭ থেকে ২০টি ব্যাংকের সাইবার স্পেস রেটিং সন্তোষজনক। জনগণের ডেটা অনেক ক্ষেত্রে অনিরাপদভাবে উন্মুক্ত থাকে এবং কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা সাইবার অপরাধের সঙ্গেও জড়িত।’
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ঢাকার হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ) এবং ইডিজিই প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে সাইবার সিকিউরিটি ইন ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর অব বাংলাদেশ: সিকিউরিং দ্য ডিজিটাল ফিউচার’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে আয়োজন করে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, আর্থিক অপরাধ, জুয়া, সফটওয়্যার আপডেটের ঘাটতি, ফাইল ট্রান্সফার প্রটোকলের দুর্বলতা, ডিডস আক্রমণ এবং ডেটা সেন্টারের ঝুঁকি এখন ব্যাংকিং সেক্টরের বড় হুমকি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিদ্যমান সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
পড়ুন: ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার হুমকি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতা
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোতে প্রশিক্ষণ জোরদার এবং আইটি ও ব্যবসায়িক ইউনিটের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ব্যাংকের সঙ্গে ডেটা বিনিময়ের মাধ্যমে কর আদায় সহজ করার প্রস্তাব করেন।
সিআইডি প্রধান মো. ছিবগাত উল্লাহ জানান, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ৮৮৪টি সাইবার অপরাধের অভিযোগ এসেছে এবং ব্যাংকগুলোর মামলা করতে অনীহা তদন্তে বাধা তৈরি করছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, সিটি ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিনিধিরা প্রযুক্তিগত জটিলতা সমাধানে করণীয় বিষয়ে মতামত উপস্থাপন করেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।
দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শুধু ডিজিটাল ভবিষ্যত সুরক্ষাই নয়, বরং জনগণের আস্থা ও আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে সেমিনারে বক্তারা মতামত দেন।
সেমিনারে আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন দপ্তর সংস্থা প্রধানসহ স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।
১০৭ দিন আগে
ডিজিটাল প্রশিক্ষণ দিয়ে জুলাই যোদ্ধাদের আত্মকর্মসংস্থানে সহায়তা করা হবে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
‘জুলাই শহীদ দিবস’ ও ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যে, আন্দোলনে আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার(১৬ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘ইয়থ পাওয়ার: ল্যাংগুয়েজ মুভমেন্ট ১৯৫২ টু কোটা রিফর্ম মুভমেন্ট ২০২৪’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ কথা বলেন।
সেমিনারের শুরুতে জুলাইয়ের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর আগে ফয়েজ আহমদ আইসিটি টাওয়ারের নিচতলায় নবনির্মিত ‘জুলাই কর্নার’র উদ্বোধন করেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আজ আমাদের জন্য একটি দুঃখের দিন। যে তরুণরা তাদের জীবন দিয়ে আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং নতুন দায়িত্ব দিয়েছেন আমরা কতটা শ্রদ্ধাশীল থেকে সেই দায়িত্ব পালন করেছি—আজ তা বুঝে নেওয়ার দিন। আমরা যে কাজগুলো শুরু করেছি অনেক ক্ষেত্রেই গত এক বছরে আমরা সফল হইনি। আগামী দিনে কিভাবে সফল হতে পারি সে পরিকল্পনা আমাদের করতে হবে। প্রতিদিন যখন বাসায় ফিরি আমার মনে হয়, অনেক কাজ বাকি। আমি ছাত্রদের সামনে দাঁড়াতে পারি না, লজ্জা লাগে বলে তিনি আবেগতাড়িত হয়ে যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইসিটি বিভাগ থেকে এখনো খুব বেশি কিছু করতে পারিনি। এই বিষয়টি আমাকে তাড়িত করে। তবে আগামী মাসগুলোতে আমরা চেষ্টা করব—জুলাইয়ের আহতদের তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক দক্ষতা দিয়ে একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ গড়ার পথ দেখাতে।
এ সময় তিনি জানান, ‘নাগরিক সেবা’ নামে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ হয়রানিমুক্ত সেবা পাবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কগুলোতে এখনো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়নি। ভবিষ্যতে এসব স্থাপনায় স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালুর লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘বাঙালি মরতে জানে, কিন্তু হারতে জানে না। জুলাই আন্দোলনে দুই হাজারের বেশি প্রাণ বিসর্জনের পর আমরা জগদ্দল পাথর সরিয়েছি।’
৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন ফ্যাসিবাদবিরোধী দলের মধ্যে বিভাজন ঘটাতে ষড়যন্ত্র চলছে। বিগত ১৫ বছরে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে এ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। কিন্তু আমরা তা সফল হতে দেব না।
আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, ‘জাতির ক্রান্তিলগ্নে তরুণরাই আলোর পথ দেখায়। জুলাই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ স্লোগান ছিল যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাড়াও তুমিই বাংলাদেশ। আমরা প্রবীণরা রুখে দাঁড়াতে পারিনি, তরুণরাই রক্ত দিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে।’
জুলাই আন্দোলনের নেতা ও ছাত্র প্রতিনিধি মো. আবু বকর সিদ্দীক বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে জুলাই আন্দোলন হয়েছে। তিনি বিচার এবং যথাযথ সংস্কারের পর নির্বাচন আয়োজনের জন্য অর্ন্তবর্তী সরকারকে অনুরোধ করেন।’
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আহসান ইয়াসির শারার বলেন, ‘আমরা এখনও খুনিদের বিচার দেখছি না। পুলিশরা এখনও কার্যকর (ফাংশনাল) না। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও তাদের উপর ১০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে, তিনি তা প্রত্যাহার চান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির অধ্যাপক ড. এম মেজবাহ উদ্দিন সরকার।
বিসিসির নির্বাহী পরিচালক ড. মো. মেহেদী হাসানসহ আইসিটি ডিভিশনের অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং আন্দোলনে আহত ছাত্র-ছাত্রীরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
১৪১ দিন আগে
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আরও দুজন
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন শেখ মইনউদ্দিন ও ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
বুধবার (৫ মার্চ) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এতে বলা হয়, বিশেষ সহকারী পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তারা প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা, বেতন-ভাতাদি ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
এরমধ্যে শেখ মইনউদ্দিনকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে ও ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে একই পদমর্যাদায় তিনজন বিশেষ সহকারীকে তিনটি দপ্তরের দায়িত্ব দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। নতুন দুজনকে নিয়ে বিশেষ সহকারী হলেন মোট পাঁচজন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসকে জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি, সংহতি প্রকাশ
এছাড়া সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল (সিআর) আবরারকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আর শিক্ষা এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
২৭৪ দিন আগে