নিমক-হারাম
মাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ: সাংবাদিককে ‘নিমক-হারাম’ বললেন ইউএনও
চুয়াডাঙ্গায় জীবননগরে মাদক নিয়ে সংবাদ প্রচার করার জেরে এক সাংবাদিককে ডেকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-আমীনের বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে তিনি ওই সাংবাদিককে ‘নিমক-হারাম’ বলেও অভিহিত করেন। বুধবার (১২ মার্চ) এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
এর আগে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) বাসভবনের পিছনে মাদকের আখড়া’ শিরোনামে স্থানীয় দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ওই সংবাদের জেরেই পত্রিকাটির জীবননগর প্রতিনিধি মিঠুন মাহমুদকে ডেকে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে ইউএনও আল-আমীনের বিরুদ্ধে।
এরপর বুধবার ইউএনও অফিসে ডেকে ওই সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ওই সময়ের কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অডিওতে সাংবাদিকের সঙ্গে রূঢ় ভাষায় কথা বলতে শোনা যায় ইউএনওকে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ইনু কারাগারে
অডিওতে শোনা যায়, মিঠুন মাহমুদ হলুদ সাংবাদিকতা করেন বলে অভিযোগ করেন ইউএনও। যেদিন এই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, একই দিনে তিনি ওই পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন ইউএনও। তা সত্ত্বেও ওই পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে সংবাদ করায় তিনি ‘নিমক-হারাম’ বলে অভিহিত করেন সাংবাদিককে। অডিওতে আরও শোনা যায়, মাদক সম্পর্কিত যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে, তাতে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন ইউএনও। অন্যায়ভাবে তার বিরুদ্ধে সংবাদ করা হয়েছে উল্লেখ করে সাংবাদিককে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন তিনি। অডিওতে মিঠুনকে কোনো কথা বলার সুযোগ না-দিয়েই একটানা ইউএনওকে কথা বলতে শোনা গেছে।
এ বিষয়ে মিঠুন মাহমুদ বলেন, ‘গত মঙ্গলবার সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রথম পেজে জীবননগর আম বাজারে মাদক বিক্রি হচ্ছে, এমন একটি বিষয়ে নিউজ হয়েছিল। সেই নিউজকে কেন্দ্র করে ইউএনও সাহেব আমাকে ফোন করে ডাকেন।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ জরুরি: কাদের গনি চৌধুরী
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের রুমে গেলেই ইউএনও তার সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। মিঠুন মাহমুদ বলেন, ‘তার বাজে ও অশালীন আচরণের মাত্রা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তিনি আমাকে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।’
মিঠুন মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমি ইউএনও মহোদয়কে বলেছিলাম, এই সংবাদ আমি করিনি। তবুও তিনি আমাকেই দোষারোপ করেন।’
সংবাদটির বিষয়ে কিছুই জানেন না উল্লেখ করে মিঠুন মাহমুদ বলেন, তিনি কেবল সমীকরণ পত্রিকার উপজেলার সহকারী ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
মিঠুন মাহমুদ অভিযোগ করেন, এ বিষয়ে ইউএনও মহোদয় তার পত্রিকার প্রধান সম্পাদক বা সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে, উল্টো তাকে লাঞ্ছিত করেছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আল-আমীনের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি কল রিসিভ না করে কেটে দেন। পরবর্তীতে তিনি কলও করেননি। যার কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে এই বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তবে বিস্তারিত জানেন না। তিনি রেকর্ডটি শুনে ইউএনওর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান।
২৬৭ দিন আগে