ওয়াকফ আইন
ভারতে মুসলিমদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদে শাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ
ভারতে ওয়াকফ আইন সংশোধনীর মাধ্যমে মুসলিমদের সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ ও এই আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) একদল শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গোলচত্বরে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা ‘ভারতীয় আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ভারতে মুসলিম নির্যাতন, বন্ধ কর করতে হবে’, ‘বিশ্বের মুসলিম এক হও, লড়াই কর’, ‘ওয়াকফ আইন বাতিল কর, করতে হবে’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা বলেন, ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ওয়াকফ সংশোধনী বিলের মাধ্যমে মুসলিমদের ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার হরণ করার ষড়যন্ত্র করছে। ওয়াকফ সম্পত্তি মুসলিম সমাজের ধর্মীয়, শিক্ষা ও জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়। সেটি দখল বা নিয়ন্ত্রণে নেওয়া মানে মুসলমানদের অস্তিত্বে আঘাত হানা। আমরা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। শান্তিপূর্ণ কিন্তু দৃঢ়ভাবে আমাদের প্রতিবাদ জানাব।
আরও পড়ুন: ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ হবে না: মমতা
তারা বলেন, বাংলাদেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা যেন কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের আর অনুসরণ না করেন। কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের সংস্কৃতিকে বাংলাদেশে আর প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। এই দেশে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ভারতের সাধারণ জনতা মুর্শিবাদের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনজন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে শহিদ হয়েছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তারা আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামেমাত্র পশ্চিমবঙ্গে এই বিল স্থগিত করেছেন। আমরা দেখেছি, ইসরায়েলের নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েও বারবার চুক্তি ভঙ্গ করেছে। ভারত এই উপমহাদেশের ইসরায়েল। তারা যে এই চুক্তি ভঙ্গ করবে না, আমরা তার কোনো নিশ্চয়তা পেতে পারি না।’
২৩০ দিন আগে
ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ হবে না: মমতা
ভারতের ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ করা হবে না বলে জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এই আইন রাজ্য সরকার সমর্থন করে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। মমতা বলেন, ‘বাংলায় তা বলবৎও হবে না। তা হলে হিংসা কেন? যারা এই হিংসায় উসকানি দিচ্ছেন, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইনে এমন খবর দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে বিএসএফের হত্যাকাণ্ডকে 'নির্মমতা' বললেন ইউনূস
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী বলেন, ‘সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে।’
রাজনৈতিক দলের চক্রান্তের কথাও উল্লেখ করে মমতা, ‘কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি।’ এ সময়ে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে দেশটির নানা প্রান্তে তীব্র বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের শীর্ষ আদালতেও আইনটি বাতিল করার দাবিতে একাধিক পিটিশন জমা পড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ আগামী সপ্তাহেই এই মামলাগুলো শুনবে।
অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ওই রাজ্যের হাজার হাজার বিতর্কিত ওয়াকফ সম্পত্তি চিহ্নিত করে তা বাজেয়াপ্ত করার জন্য উদ্যোগ শুরু করে দিয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। ভারতে সব চেয়ে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি আছে উত্তরপ্রদেশেই।
ওই একই রাজ্যের মুজফফরনগরে গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় হাতে কালো আর্মব্যান্ড পরে নতুন আইনটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তিন শতাধিক ব্যক্তিকে নোটিশ পাঠিয়ে মাথাপিছু ২ লাখ রুপি করে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে গুন্ডা ঢোকানো হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে, দাবি মমতার
পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়ও আইনপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে। গেল বৃহস্পতিবার কলকাতায় এক বিশাল সমাবেশ থেকে ওয়াকফ আইন বাতিল করার দাবিতে কম করে এক কোটি মানুষের স্বাক্ষর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে মুসলিম সংগঠন জমিয়ত-ই-উলেমা হিন্দ।
২৩৬ দিন আগে