লালমরিনহাট
লালমনিরহাট জামায়াতের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীর বিএনপিতে যোগদান
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মামলায় জর্জরিত এসব নেতাকর্মী দলের দুঃসময়ে পাশে থাকলেও ৫ আগস্টের পর অবমূল্যায়নের অভিযোগ এনে দলত্যাগ করেন।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বিএনপিতে যোগ দেন। এ সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান নবাগতদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া ছাত্রশিবির কর্মী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রশিবিরের কর্মী ছিলাম। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমার নামে ৪টি মামলা হয়। গত ৫ আগস্টের পর সরকার পরিবর্তন হলে জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী আর আমাকে চেনে না। দেখা হলেও কথা বলে না।
তিনি বলেন, আমার সকল মামলার জামিন করিয়েছেন লালমনিরহাট-১ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার হাসান রাজিব প্রধান। তাই আমি বিএনপিতে যোগদান করেছি।
আরেক জামায়াত নেতা মনিরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার ছেলে ছাত্রশিবিরের কলেজ শাখার সেক্রেটারি ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমার ছেলের নামে ১৬টি মামলা হয়। কিন্তু সরকার পতনের পর ত্যাগী নেতাকর্মীদের কোনো মূল্যায়ন করেনি জামায়াতের নেতারা। জামায়াতের রাজনীতি করে আমি এখন সর্বশান্ত, তবুও এই সুদিনে কোনো মূল্যায়ন পাইনি। তাই বিএনপিতে যোগদান করেছি।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান বলেন, আমরা দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার আদর্শে বিশ্বাসী। আজকে যারা জামায়াত থেকে বিএনপির আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের দলে যোগদান করেছে, তাদের স্বাগত জানাই। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাতীবান্ধা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, সদস্য সচিব আফজাল হোসেন মিয়া, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রুবেল ইসলাম ও সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল নোমান প্রমুখ।
৪ দিন আগে
ফুঁসছে তিস্তা, উত্তরাঞ্চলের কৃষকের মনে ফের বন্যা আতঙ্ক
উত্তরাঞ্চলে আবারও ফুঁসে উঠেছে তিস্তা নদী। টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে আজ রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা ডালিয়া পয়েন্টে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টায় পানির উচ্চতা বেড়েছে ১৩ সেন্টিমিটার। পানি বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকায় যেকোনো সময় তা বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এ কারণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইস গেট খুলে দেওয়া হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি আরও বাড়বে। এতে লালমনিরহাটসহ রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
৮১ দিন আগে
লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলপথে অবরোধ, ৫ দিন ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ
লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলপথে প্রতিদিন চারটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। তবে বুড়িমারী-ঢাকা রুটে আন্তনগর ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ ট্রেন সরাসরি চালুর দাবিতে রেলপথ অবরোধ শুরু করলে এ রুটে গত পাঁচ দিন ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।
গত সোমবার থেকে পাটগ্রাম স্টেশনে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন স্থানীয়রা। এতে করে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
অবরোধকারীরা বলেন, ২০২৪ সালের ১২ মার্চ আন্তনগর ট্রেনটি সরাসরি বুড়িমারী থেকে যাত্রা করে। একদিন পর ১৩ মার্চ থেকে আবার লালমনিরহাট থেকে চলাচল শুরু করে। ফলে বুড়িমারীর যাত্রীদের একটি শাটল ট্রেনে লালমনিরহাটে গিয়ে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠতে হয়। এতে আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
পাটগ্রাম সংগ্রাম উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি এ টি জে সিদ্দিকী বলেন, ‘এর আগেও কয়েকবার রেল ও সড়কপথ অবরোধ করে সরাসরি আন্তনগর ট্রেন চালুর দাবি করা হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অন্তত পাঁচবার দিন-তারিখ উল্লেখ করে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালুর প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু ট্রেনটি চালু না হওয়ায় আবার অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
জানতে চাইলে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিএম) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আন্তনগর ট্রেনটি বুড়িমারী-ঢাকা রুটে সরাসরি চালুর প্রস্তুতি আছে। তবে এজন্য অনেক কিছুর অ্যারেঞ্জমেন্ট থাকতে হবে। সবকিছুর কাজ চলছে।’
বুড়িমারী রেলস্টেশনে ট্রেনযাত্রী সাইফল ইসলাম (৫০) জানান, লালমনিরহাট-বুড়িমারী ৮৪ কিলোমিটার রেলপথে স্টেশন আছে ১৩টি। এ রুটে প্রতিদিন চারটি ট্রেন চলাচল করে। তারা সবসময় ট্রেনে যাতায়াত করেন। কম খরচে নিরাপদভাবে তারা ট্রেনে যাতায়াত করছেন। কিন্তু টেন চলাচল বন্ধ থাকায় সড়কপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে, সময়ও লাগছে বেশি। এখন ট্রেন ভাড়ার চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি টাকা খরচ করে যাতায়াত করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পাটগ্রাম রেলস্টেশনের মাস্টার নুর আলম বলেন, ‘সোমবার থেকে রেলপথ অবরোধ চলায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এই রুটে সকাল, দুপুর, বিকাল ও রাতে চারটি ট্রেন নিয়মিত চলাচল করে।’
‘বুড়িমারী-ঢাকা রুটে আন্তনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস সরাসরি চালুর দাবিতে স্থানীয়রা সোমবার থেকে লাগাতার রেলপথ অবরোধ করছেন। আন্তনগর ট্রেনটি কবে থেকে সরাসরি চালু হবে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।’
২২৩ দিন আগে