যুদ্ধবিরতি ঘোষণা
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও দক্ষিণ সিরিয়ায় সংঘাতে সহস্রাধিক প্রাণহানি
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও দক্ষিণ সিরিয়ার সুয়েইদা অঞ্চলে সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়, বেদুইন গোষ্ঠী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাতে হাজারের অধিক প্রাণহানি হয়েছে। রবিবার (২০ জুলাই) যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের (এসওএইচআর) বরাতে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এই তথ্য জানিয়েছে।
যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, গত রবিবার (১৩ জুলাই) থেকে এ পর্যন্ত সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে ৩৩৬ জন দ্রুজ যোদ্ধা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়টির ২৯৮ জন বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ১৯৪ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে দেশটির প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদস্যরা বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে এসওএইচআর।
এ ছাড়া, সংস্থাটির তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে ৩৪২ জন সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং ৩ জন বেসামরিক নাগরিকসহ ২১ জন সুন্নি রয়েছেন। ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও ১৫ জন সরকারি বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে এসওএইচআর।
পড়ুন: ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে নির্বিচারে গুলি, ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ১৩ জুলাই দক্ষিণ সিরিয়ায় দ্রুজ সম্প্রদায়ের একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণ নিয়ে সিরিয়ায় নতুন করে অস্থিরতা শুরু হয়। অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়লে দ্রুজ মিলিশিয়া এবং সুন্নি বেদুইন যোদ্ধারা মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একই দিন, সংঘাত থামাতে এসে উল্টো দ্রুজদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় সিরীয় বাহিনী।
এরপর, বুধবার (১৬ জুলাই) দ্রুজদের ওপর ব্যাপকহারে সহিংসতার অভিযোগ তুলে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের কাছে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এরপর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা দিয়ে সুয়েইদা ত্যাগ করেন সিরীয় সেনারা।
পরে, সিরিয়ার সরকার জানায়, শান্তি বজায় রাখতে দক্ষিণাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে এবং লড়াই বন্ধ রাখার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।
তবে, বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পরদিন শুক্রবার (১৮ জুলাই) নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ বিষয়ে, গতকাল শনিবার (১৯ জুলাই) সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা জানান, দ্রুজ-অধ্যুষিত সুয়েইদা শহর থেকে বেদুইন যোদ্ধাদের সরানো হয়েছে এবং সেখানে সংঘর্ষ বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বেদুইন এবং দ্রুজ সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতির নির্দেশ দেওয়ার পর এই ঘোষণা আসে।
এমন পরিস্থিতিতেও সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও প্রাণহানি চলমান রয়েছে।
১৩৭ দিন আগে
ইউক্রেনে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা রাশিয়ার
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয় দিবস উপলক্ষে ইউক্রেনে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া। সোমবার (২৮ এপ্রিল) এই যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিন বছরের চলমান সংঘাতের অবসানের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলো।
দেশ দুটির মধ্যে চলমান যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই ঘোষণা দিয়েছেন। পুতিন মূলত এক তরফা ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। তবে কিয়েভ তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির উপর জোর দিয়ে আসছে।
এদিকে ক্রেমলিন বলেছে, মানবিক কারণে এই যুদ্ধবিরতি আগামী ৮ মে থেকে শুরু হয়ে ১০ মে পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ১৯৪৫ সালে নাৎসি জার্মানিকে পরাজিত করে মস্কো যে বিজয় অর্জন করেছিল—তা উদযাপন করতেই মূলত এই সময়টিতে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এই সময়টি রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ছুটির দিন।
গ্রিনিচ মান অনুযায়ী ৭ মে বিকাল ৫টা থেকে শুরু হয়ে ১০ মে বিকাল ৫টা পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপ: ম্যাঁখো
এর আগে ইউক্রেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৩০ দিনের পূর্ণ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হয়—যেটিকে বিভ্রান্তিকর বলে উড়িয়ে দিয়েছিল পুতিন।
মন্ত্রণালয়ের মতে, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেছেন, ‘রাশিয়া যদি সত্যিকার অর্থে শান্তি চায়, তাহলে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি করতে হবে।’ তিনি বলেছেন, কিয়েভ ‘স্থায়ী, নির্ভরযোগ্য ও অন্তত ৩০ দিনের স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত।’
মস্কোর যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে ইউক্রেন প্রস্তুত কিনা তা স্পষ্ট না করে তিনি বলেন, ‘কেন ৮ মে’র জন্য অপেক্ষা করতে হবে? আমরা যদি যুদ্ধবিরতি চাই, তাহলে তা যেকোন তারিখ থেকে ৩০ দিনের জন্য করতে পারি—যাতে এটি বাস্তব হয় এবং তা কেবল প্রদর্শনের জন্য নয়।’
২২০ দিন আগে