জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)
জুলাই অভ্যুত্থানে শিবিরের নির্দেশে কাজ করার তথ্য মিথ্যা: নাহিদ ইসলাম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা থেকে একক নেতৃত্ব দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এ সময়ে শিবিরের নেতৃত্বে কাজ করার তথ্যকেও ‘মিথ্যাচার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, শিবির নেতা সাদিক কায়েম সম্প্রতি একটি টকশোতে বলেছেন, ছাত্রশক্তির গঠনপ্রক্রিয়ায় শিবির যুক্ত ছিল। শিবিরের নির্দেশে আমরা কাজ করতাম— এটা মিথ্যাচার।
‘সাদিক কায়েম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক ছিলেন না। কিন্তু ৫ আগস্ট থেকে এই পরিচয় তিনি ব্যবহার করেছেন। অভ্যুত্থানে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে সাদিক কায়েমকে প্রেস ব্রিফিংয়ে বসার সুযোগ দেওয়া হয়।’
অভ্যুত্থান শিবিরের একক ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, ‘সাদিক কায়েমরা অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে ঢালাও প্রচারণা চালিয়েছে যে, এই অভ্যুত্থানে ঢাবি শিবিরই নেতৃত্ব দিয়েছে, আমরা শুধু সামনে পোস্টার ছিলাম। অভ্যুত্থানে শিবিরের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করেনি। কিন্তু এই অভ্যুত্থান শিবিরের একক ছিল না, শিবিরের নির্দেশ বা নেতৃত্বও ছিল না। আমরা সব পক্ষের সাথে যোগাযোগ করেই সিদ্ধান্ত নিতাম। আর কারা ক্ষমতার ভাগ–বাঁটোয়ারা করতে চাইছে, গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে— সে বিষয়ে অন্যদিন বলব।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘গুরুবার আড্ডা’ পাঠচক্রের সাথে জড়িত একটি অংশ এবং ঢাবি ছাত্র অধিকার থেকে পদত্যাগ করা একটি অংশ মিলে ছাত্রশক্তি গঠিত হয়। সঙ্গে জাবির একটি স্টাডি সার্কেলও যুক্ত হয়। একটি নতুন ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুবার আড্ডা পাঠচক্রে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা হয়েছে।
‘আমরা ক্যাম্পাসে আট বছর রাজনীতি করেছি। ফলে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব সংগঠন ও নেতৃত্বকে আমরা চিনতাম এবং সব পক্ষের সাথেই আমাদের যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে ঢাবি শিবিরের সাথেও যোগাযোগ ছিল। তবে যোগাযোগ, সম্পর্ক বা কখনো সহযোগিতা করা মানেই এই নয় যে তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল।’
আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি ইসলামী ছাত্রশিবির। তবে জামায়াতে ইসলামীর এ ছাত্র সংগঠন যে গোপনে সক্রিয় ছিল, তা প্রকাশ্যে আসে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিক কায়েম ২১ সেপ্টেম্বর এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি।
সমন্বয়কের তালিকায় নাম না থাকলেও জুলাই মাসে চলা ছাত্র আন্দোলনে সামনের কাতারেই ছিলেন সাদিক কায়েম। তালিকাভুক্ত সমন্বয়কদের সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতেও তাকে সে সময় দেখা যায়।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে সাদিক কায়েম বলেন, ২০১৭ সাল থেকে লম্বা সময় ধরে যখন তার যে পদ ছিল, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমরা তা জানতেন।
সাদিক কায়েম বলেন, পরিচয় জেনে কো-অর্ডিনেশন করে আমরা সবাই মিলে একসাথে কাজ করেছি। সুতরাং এখানে পরিচয় গোপন করার কিছু নেই। ওই সময়ে পরিচয় ঘোষণা দিয়ে কাজ করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। সে কারণে শিক্ষার্থীদের সব দাবির সঙ্গে ছিলাম, কিন্তু ঘোষণা দিয়ে কাজ করার মতো অবস্থা ছিল না। কারণ, আমাদের মেরে ফেলা বৈধ ছিল।
১২৬ দিন আগে
এতগুলো মাসেও হত্যা, নিপীড়ন ও গুমের বিচারে অগ্রগতি নেই: আখতার
জুলাই অভ্যুত্থানের পর এতগুলো মাস পেরিয়ে গেলেও শেখ হাসিনার আমলের হত্যা, নিপীড়ন ও গুম-খুনের বিচারে কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
শনিবার (১৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আখতার বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ছিল, বাংলাদেশের বিচার কাঠামো এমন হবে, যেখানে বিগত সময়ে দেশের মানুষের ওপর যে অত্যাচার, নিপীড়ন, গুম-খুন ও গণহত্যা হয়েছে, সেগুলোর পরিপূর্ণ বিচার হবে। কিন্তু এতগুলো মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা বিচারের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি খেয়াল করিনি।’
গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরে বাহাত্তরের সংবিধান পেয়েছিলাম, সেটা আমাদের কাঙ্ক্ষিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সুবিচারের দেশ আমাদের উপহার দিতে পারেনি। যে অর্থনৈতিক অধিকারগুলো আছে, সেগুলোর সাংবিধানিক স্বীকৃতি অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশের মানুষ। আমরা আমাদের অর্থনৈতিক অধিকারগুলোকে সাংবিধানিক স্বীকৃতির পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারিনি।’
এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘আমাদের যে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল, সেটি এক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রকাঠামোর মূলে রেখে হয়েছিল। যে কারণে গেল অর্ধশতাব্দিতে বাংলাদেশে কোনো ক্ষমতার ভারসাম্য আমরা দেখিনি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে।
‘একটি গণপরিষদের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সংবিধান প্রণয়ন করে, সেটি যাতে একক কোনো দলের ইশারায় পরিবর্তিত হতে না পারে— এমন এক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল ও জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এটি গ্রহণ করা সম্ভব হবে।’
ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর এক থাকার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘নানা কারণে আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার জায়গা তৈরি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক চাওয়া–পাওয়ার হিসাব–নিকাশ থেকে পরস্পরের বিরুদ্ধাচরণের জায়গা তৈরি হয়েছে।’
কিন্তু এটা গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশার জায়গা ছিল না বলে উল্লেখ করে আখতার বলেন, ‘আমরা এমন এক বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, যেখানে প্রতিহিংসা, বিদ্বেষ ও পেশিশক্তির রাজনীতি উতরে গিয়ে আমরা মানুষের সমস্যা সমাধানে নাগরিক ও মানবিক মর্যাদার সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’
‘সেই পথে আমরা কতদূর অগ্রসর হতে পেরেছি, সেটা ইতিহাস বিবেচনা করবে। আমার কাছে এখনো মনে হয়, এক বছর পার হলেও আমাদের অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের আশা নিঃশ্বেষ হয়ে যায়নি।’
আখতার আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের হাত থেকে সরে গিয়ে গণঅভ্যুত্থান মুষ্টিমেয় কিছু রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর কাছে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ুক— আমরা সেটা চাই না। এই গণঅভ্যুত্থান আমাদের সবার। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান একক কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে বন্দি না রেখে ফ্যাসিবাদবিরোধী সবপক্ষ সমানভাবে ধারণ করে আমরা নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে সামনে অগ্রসর হতে পারব।
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন গণতন্ত্র মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম বাবলু। আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ১২–দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উল্লাহ কায়সার, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের আহ্বায়ক নাঈম জাহাঙ্গীর, নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত প্রমুখ।
১৩৮ দিন আগে
নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারে ছাড় দেওয়া হবে না: সারজিস
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, একটি দেশের সিস্টেম সংস্কার দু-চার বছরে সম্ভব নয়। তবে আসন্ন নির্বাচনের আগে স্বচ্ছ ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।
সোমবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় চেম্বার কনভেনশন হলে জাতীয় যুব শক্তির জেলা সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, "যারা জীবন দিয়ে নতুন বাংলাদেশ এনে দিয়েছেন, তাদের হত্যাকারীদের বিচারের প্রশ্নে আমরা বিন্দুমাত্র আপস করব না। একইভাবে জুলাই মাসে 'জুলাই সনদ' দেওয়ার ক্ষেত্রেও কোনো আপস হবে না।"
তিনি বলেন, 'আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুর্বল দেখতে চাই না। সরকার যদি নিজেদের দুর্বল প্রমাণ করে, তাহলে তা হবে জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।'
আরও পড়ুন: ফ্যাসিস্ট লুটেরাদের এদেশে ঠাঁই হবে না: ফয়জুল করীম
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে সারজিস বলেন, "আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগ যুবসমাজকে মাদক সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজি ও নিরপরাধ মানুষের ওপর হামলায় ব্যবহার করেছে। এ কারণেই আমরা রাজনীতিতে নেমেছি। দুঃখজনকভাবে, নতুন বাংলাদেশেও কিছু সংগঠন একই পথ অনুসরণ করছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলি, আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ আমাদের প্রতিপক্ষ নয়।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা সবাইকে সহযোগী মনে করি এবং জনগণের স্বার্থে প্রতিযোগিতায় নেমেছি। কিন্তু কেউ যদি পুরনো অপকর্মের পুনরাবৃত্তি করে, তাহলে আমাদের তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই হবে। জনগণের অভ্যুত্থানের পরবর্তীকালে যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা এখনো পূরণ হয়নি বলেই এনসিপির আত্মপ্রকাশ জরুরি হয়ে পড়েছে।"
সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় যুব শক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মো. নেসার উদ্দিন, এনসিপি নেতা তানভিরুল বারী নয়নসহ জেলার পাঁচ উপজেলার যুবশক্তি ও এনসিপি নেতৃবৃন্দ।
পরে নেতাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন সারজিস আলম ও অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম।
১৬৪ দিন আগে
নিবন্ধনের শেষ দিনে নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিড়
নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিনে এখন পর্যন্ত অন্তত দুই ডজন রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দিয়েছে। রবিবার (২২ জুন) সকাল থেকে দলগুলোর প্রধান ও নেতারা নিজেরাই নির্বাচন ভবনে এসে নিবন্ধনের আবেদনপত্র জমা দেন।
এরইমধ্যে আবেদন জমা দিয়েছে— জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জনতার পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি), গণদল, বাংলাদেশ জনজোট পার্টি (বাজপা), বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ সমতা পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজি আন্দোলন, বাংলাদেশ সিটিজেন পার্টি, ইসলামী ঐক্য জোট, নতুন বাংলাদেশ পার্টি (এনবিপি), বাংলাদেশ জাগ্রত জনতা পার্টি, বাংলাদেশ গণ বিপ্লবী পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), বাংলাদেশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ফেডারেশন, জনতার দল, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি (বিএনপি), জাতীয় ন্যায়বিচার পার্টি, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিডিপি) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)।
আরও পড়ুন: জীবদ্দশায় একজনের ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকা উচিত না: জামায়াত
‘হাতি’ প্রতীক চায় জেপিবি
জনতার পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি) নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদনপত্র জমা দিয়ে দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘হাতি’ চেয়েছে। নির্বাচন ভবনে আবেদনপত্র জমা দিয়ে জেপিবির মহাসচিব শওকত মাহমুদ বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন করেছি। বর্তমানে নিবন্ধনের যে নিয়ম রয়েছে তা কঠিন।’
‘যদিও নির্বাচন সংস্কার কমিশন এসব পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে, এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবুও আমরা প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করেছি এবং নিবন্ধনের আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’
তিনি বলেন, দলটি সংস্কারের পক্ষে এবং ভবিষ্যতে আইন পরিবর্তন হলে কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা করবে।
জনতার দল চায় ‘চাবি’ প্রতীক
অন্য আরেকটি দল জনতার দল দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘চাবি’ চেয়ে আবেদনপত্র জমা দেয়। দলের আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম কামাল ও সদস্যসচিব আজম খান নির্বাচন ভবনে এসে আবেদন জমা দেন। আবেদন জমা দেওয়ার পর শামীম কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করেছি এবং জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠন করেছি। এখন সিদ্ধান্ত কমিশনের।’
এদিকে, বিকেলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন ১০ মার্চ নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের জন্য ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়ে আবেদন আহ্বান করে। ওই সময়ের মধ্যে ৬৫টি দল আবেদন করে। পরে কমিশন সময়সীমা ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ায়।
রাষ্ট্রপতির আদেশ ১৯৭২-এর ৯০(ক) ধারা অনুযায়ী নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হয়। নিবন্ধিত দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজস্ব প্রতীকে অংশ নিতে পারে। বর্তমানে ইসির তালিকাভুক্ত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫০টি। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত এবং জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন আদালতের আদেশে পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে।
১৬৫ দিন আগে
ঐকমত্য কমিশন ‘পক্ষপাতদুষ্ট’, অভিযোগ এনসিপি ও গণ অধিকার পরিষদের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের অনকূলে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। পাশাপাশি, নামসর্বস্ব দলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আলোচনা প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে অভিযোগ তুলেছে গণঅধিকার পরিষদ।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফায় মঙ্গলবারের (১৭ জুন) আলোচনা প্রসঙ্গে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির প্রস্তাবের দিকেই ঝুঁকে গেছে কমিশন। একটি দলকে সুবিধা দিতে গিয়ে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে কমিশন।’
সংস্কার প্রশ্নে এতদিন অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মতো ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হলেও এখন নির্বাচন এবং নির্বাচন পরবর্তী সংস্কারের দিকেই জোর দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এ নেতা।
আদীব বলেন, ‘এমন অনেক দলকে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে তাদের সাংগঠনিক কাঠামো ও নিবন্ধন নেই। এসব দল আলোচনায় এসেছে নির্দিষ্ট একটি দলকে সুবিধা দিতে। একটি নির্দিষ্ট দল যা বলছে, তাতেই সায় দিচ্ছে এ দলগুলো। আবার ওই দলের বিপক্ষে কেউ কথা বললে রীতিমতো হট্টগোল করছে তারা।’
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান রাজনৈতিক দলের অবদানে সফল হয়নি, সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে হয়েছে উল্লেখ করে আদীব বলেন, ‘জুলাই সনদের জন্য শুধু রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করলে হবে না। পেশাজীবী সংগঠনের অংশগ্রহণ এবং সাধারণ মানুষের মতামতের ওপর ভিত্তি করে জুলাই সনদ করতে হবে।’
সংস্কার প্রক্রিয়ায় গণভোটের ওপর জোর দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘৯০ এর সময়েও অনেকেই অনেক সংস্কারে একমত হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। সংস্কার চাইলে গণভোটের বিকল্প নেই।’
ভূঁইফোঁড় রাজনৈতিক দলের আলোচনায় অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে নুর বলেন, ‘কোন প্রক্রিয়ায় কমিশন এদের ডাকছে আমার জানা নেই। অনেক নামসর্বস্ব দলকেও আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে। এতে করে আলোচনার পরিবেশ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’
এতদিন নির্বাচনের কথা বললেও এখন কেন সবার আগে সংস্কার চায় গণপরিষদ এমন প্রশ্নের জবাবে নুর বলেন, ‘৫ আগস্টের পর পেশিশক্তির কোনো পরিবর্তন হয়নি। নিজ এলাকায় গিয়ে বুঝেছি এখনো নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। এজন্য গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার চাচ্ছি।’
এনসিপির মতো গণপরিষদও জুলাই সনদে শুধু রাজনৈতিক দলের মতামত না, সবার অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় যোগ দেয়নি জামায়াত
১৭০ দিন আগে
ভুল স্বীকার করলেন এনসিপির হান্নান মাসউদ
রাজধানীর ধানমন্ডি থানা থেকে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে আটক তিন ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে আনার অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দেওয়া কারণ দর্শানোর অভিযোগে নিজের ভুল স্বীকার করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২১ মে হান্নানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল এনসিপি। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তিনি কারণ দর্শানো নোটিশের লিখিত ও মৌখিক জবাব ‘রাজনৈতিক পর্ষষের’ কাছে পেশ করেন।
নোটিশের জবাবে হান্নান ধানমন্ডির কর্মকাণ্ড ভুল ছিল বলে স্বীকার করেন এবং আগামীতে এই ধরনের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না মর্মে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
পাশাপাশি থানায় আটক হওয়া ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে হান্নানের সম্পৃক্ততা না থাকায় রাজনৈতিক পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার ওপর আরোপিত কারণ দর্শানো নোটিশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এনসিপি।
এর আগে হান্নানকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয় বলা হয়, ২০ মে ধানমন্ডি থানার আওতাভুক্ত একটি আবাসিক এলাকায় ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগে তিনজন ব্যক্তিকে আটক করে থানা-পুলিশ।
এই তিনজনের অন্যতম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিকে নৈতিকতা স্খলনের কারণে অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। তা সত্ত্বেও আবদুল হান্নান মাসউদ সংশ্লিষ্ট থানায় উপস্থিত হয়ে আটক তিনজনকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়েছেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আবদুল হান্নান মাসউদকে ব্যাখ্যা এবং তার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার লিখিত বিবরণ তিন দিনের মধ্যে এনসিপির শৃঙ্খলা কমিটির প্রধানের কাছে উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশনা দেয় দলটি।
১৮৯ দিন আগে
দলগুলোর সাথে ১৫ মের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষ করব: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ১৫ মের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষ করার চেষ্টা করছি। তারপর দলগুলোর সাথে দ্রুত দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করতে চায় কমিশন।
মঙ্গলবার (৬ মে) ঢাকায় সংসদ ভবনস্থ এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বর্ধিত আলোচনার সূচনায় অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আলোচনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন, দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসাইন।
এ সময় এনসিপির পক্ষ থেকে ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতা, বিকেন্দ্রীকরণ—এই তিনটি বিষয়ে মৌলিক সংস্কারের একটি রূপরেখা হস্তান্তর করা হয়।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবগুলোর পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে মৌলিক সংস্কারের যে রূপরেখা দেওয়া হয়েছে, তা আমরা গ্রহণ করলাম।আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দফায় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক
‘পর্যালোচনা সাপেক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় এই রূপরেখার একটি প্রতিফলন পাওয়া যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকসহ বিভিন্নভাবে কমিশনের আলোচনা অগ্রসর হচ্ছে। এই অব্যাহত আলোচনার মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা, যা গণতান্ত্রিক এবং জবাবদিহিমূলক ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের পথরেখা নির্দেশ করবে।’
গত ২৩ মার্চ জাতীয় নাগরিক পার্টি কমিশন বরাবর তাদের মতামত জমা দেয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দলটির সাথে গত ১৯ এপ্রিল প্রথম দিনের আলোচনায় বসে কমিশন। আজ ছিল দিনব্যাপী বর্ধিত আলোচনা।
২১২ দিন আগে