সালাহউদ্দিন আহমদ
কিছু দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করলেও নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: সালাহউদ্দিন
কিছু দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করলেও তা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমার জানা মতে, এনসিপি এবং চারটি বাম রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যেতে পারেনি। বলব না, স্বাক্ষর করেনি; স্বাক্ষর করার সুযোগ উন্মুক্ত আছে। আশা করি, তারা ভবিষ্যতে সনদে স্বাক্ষর করবেন। আগামী নির্বাচনের জন্য এটা বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, সহনশীলতা সবার মধ্যে আসবে। হয়তো তাদের কিছু দাবি দাওয়া আছে। সেটা সরকারের সঙ্গে আলাপ করবে। এক পর্যায়ে তারাও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। আর গণতন্ত্রের মধ্যে তো সবাই একমত হবে এমন তো নয়। সেটা উন্মুক্ত আছে। ভিন্ন মত থাকতেই পারে।’
এ সময় ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শক্তি’ এখনো নানা উপায়ে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগেও স্পষ্টভাবে দেখা গেছে বলে অভিযোগ করেন সালাহউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধা নামে একটি সংগঠন আমাদের ও ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের একটা যৌক্তিক দাবি ছিল। সেই যৌক্তিক দাবিটা পূরণের জন্য আমি নিজেও স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, কথা বলেছিলাম। এবং সেটা ঐক্যমত কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ সঠিকভাবে এড্রেস করেছেন, সেটা প্রেসে বলেছেন এবং সংশোধন করেছেন। এরপরও তাদের অসন্তোষ থাকার কথা নয়।
‘যে সমস্ত বিশৃঙ্খলা হয়েছে আমরা খোঁজ নিয়েছি। এটা তদন্তনাধীন আছে। দেখা গেছে, এখানে জুলাই যোদ্ধাদের নামে কিছু সংখ্যক ছাত্র নামধারী, কিছু সংখ্যক উশৃঙ্খল লোক ঢুকেছে। সেটা ফ্যাসিস্ট সরকারের ফ্যাসিস্ট বাহিনী বলে আমি মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বাহিনী যে এখনো সমস্ত জায়গায় এই বিভিন্ন ফাঁক-ফোকরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, তা দৃশ্যমান হয়েছে। আমার মনে হয়, এখানে এটির সঙ্গে কোনো সঠিক কোনো জুলাই যোদ্ধা বা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কোনো সংগঠন অথবা কোনো ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে না।’
এর আগে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
৪৭ দিন আগে
শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: সালাহউদ্দিন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, সেদিনই বিএনপির নির্বাচনের অর্ধেক প্রচারণা হয়ে যাবে।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান দ্রুতই দেশে ফিরবেন। তারেক রহমান যেদিন দেশে ফিরবেন সেদিন অবিস্মরণীয় ইতিহাস তৈরি হবে। সেদিনই বিএনপির নির্বাচনের অর্ধেক প্রচারণা হয়ে যাবে।
তিনি তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘জনাব তারেক রহমান মেধা, যোগ্যতা, শ্রম ও নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগ্রামে আমরা তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছি এবং তার রাজনৈতিক পরিপক্বতা দেখেছি। তার নেতৃত্বে এই জাতি অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
তিনি বলেন, শিগগিরই ‘নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে যার মাধ্যমে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি।”
‘২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রমজানের একসপ্তাহে আগে অথবা তারও আগে নির্বাচন হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এ পথে যারা কাঁটা বিছানোর চেষ্টা করছে, বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তাদের সবার প্রতি নসিহত, দেশ এখন নির্বাচনী আবহে আছে, সারাদেশে নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশকে অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী পরিচালিত করতে হবে। কোনো অতিরিক্ত সাংবিধানিক বা বিশেষ ব্যবস্থা প্রয়োগ করা উচিত নয়।
পড়ুন: আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশে গভীর চক্রান্ত চলছে: রুহুল কবির রিজভী
বিএনপি নেতা বলেন, অতিরিক্ত সাংবিধানিক ব্যবস্থা’, ‘সুপার-সাংবিধানিক ব্যবস্থা’ বা ‘বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ’— সব একই জিনিস বোঝায়। এগুলো তখনই দরকার যখন স্বাভাবিক সাংবিধানিক প্রক্রিয়া কার্যকর নয়।
তিনি বলেন, এখনও আমাদের সংবিধান বহাল আছে এবং রাষ্ট্র সেই অনুযায়ী চলছে। তাহলে এগুলো কেন করতে হচ্ছে, কাকে সন্তুষ্ট করার জন্য করা হচ্ছে, কী উদ্দেশ্যে এগুলো করা হচ্ছে, আমরা তো একটা স্ট্যাবল জাতি চাই।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার জন্য, ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে।
সালাহউদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাংবিধানিক ধারা মেনেই গঠিত হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টারা সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শপথ নিয়েছেন। সংবিধানিক ধারাবাহিকতায় কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি, তাই এখন সেটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করারও কোনো কারণ নেই।
প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে বলেছেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রদের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। তাহলে কি ছাত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ভেঙে গেছে? অবশ্যই না! তাই আমরা আশা করি, সবার মধ্যে সুস্থ বুদ্ধির উদয় হবে, তিনি বলেন।
সালাহউদ্দিন বিশেষজ্ঞ ও উপদেষ্টাসহ সবাইকে আহ্বান জানান যেন তারা গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক নীতির মধ্যে থেকেই কাজ করেন এবং মতামত দেন, যাতে দেশে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়।
বিএনপি ক্ষমতায় এলে গুমের রাজনীতি বন্ধ হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
৮৮ দিন আগে
নির্বাচনবিরোধীরা রাজনীতির মাঠ থেকে বাদ পড়বেন: সালাহউদ্দিন আহমদ
যারা নির্বাচনবিরোধী কথা বলবে, রাজনীতির মাঠ থেকে তারা বাদ পড়ে যাবেন কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, মাঠের আলোচনা মাঠেই জবাব দেওয়া হবে। নির্বাচনবিরোধী কথা যে-ই বলুক, তারা রাজনীতির মাঠ থেকে মাইনাস হয়ে যাবেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের আমলে যুগপৎ আন্দোলনে যারা বিএনপির সঙ্গী ছিলেন, তাদের সঙ্গে জোট গঠনের সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন আহমদ। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন কথা বলেন।
‘কোনো দল নির্বাচনে অংশ না নিলে তা তাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতার অংশ। তবে যারা অযৌক্তিকভাবে বয়কটের সুযোগ খুঁজবে, তারা ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে নিজেরাই পিছিয়ে যাবেন,’ বলেন বিএনপির এই নেতা।
সালাহউদ্দিন বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন সম্পর্কে কোনো শঙ্কা নেই। যদিও কিছু দল বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তবে এটি শুধুই তাদের রাজনৈতিক কৌশল।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বিঘ্নিত করার অসৎ প্রচেষ্টা দেশের জনগণ রুখে দেবে: সালাহউদ্দিন
ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই নির্বাচন রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক ঘটনা হবে। দেশে এরই মধ্যে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। যে-ই এর বিপক্ষে কথা বলবে, তারা নিজেদের রাজনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ সংবিধান ও রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে বলেন, জুলাই সনদের কিছু অঙ্গীকার অযৌক্তিক মনে হচ্ছে। তবে বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে কমিশনের আলোচনায় অংশগ্রহণ করা হবে। সংবিধানের ওপরে স্থান পাওয়া কোনো বিষয় গ্রহণযোগ্য নয়। আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো একটি ঐকমত্যপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছাবে।
তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ শুধু ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সম্ভব। সংসদ নির্বাচনের পর তা বাস্তবায়ন করা হবে। যা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি কোনো জটিলতা চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবার ঐকমত্য দিয়ে বর্তমান সরকার গঠিত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি পুনর্বহাল হওয়ার পর পরবর্তী নির্বাচনে তা কার্যকর হতে পারে। বর্তমান সরকারের ঘোষিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে।
জামায়াত ও অন্যান্য ইসলামী দলসমূহের সঙ্গে রাজনৈতিক জোট বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, নির্বাচনের আগে জামায়াতের সঙ্গে জোটের কোনো সুযোগ নেই।
‘তবে যুগপৎ আন্দোলনে যারা ছিলেন তাদের সঙ্গে জোট হতে পারে। পাশাপাশি কয়েকটি ইসলামী ঘরানার দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে; এটি চূড়ান্ত নয়,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, এ ছাড়া বিগত আন্দোলনে যারা ছিলেন তাদের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা আলোচনা শেষে স্পষ্ট হবে।
১০০ দিন আগে
নির্বাচন বিঘ্নিত করার অসৎ প্রচেষ্টা দেশের জনগণ রুখে দেবে: সালাহউদ্দিন
দেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের পথে কোনো অসৎ প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করতে বাংলাদেশের মানুষ একতাবদ্ধ ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে যুবদল।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম বক্তব্য দিয়ে নির্বাচনের বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে, তারা গণতন্ত্রের পক্ষে কোনো শক্তি নয়, তারা বাংলাদেশের মানুষের পক্ষেও নয়।’
তিনি বলেন, তারা হয়তো কোনো কারণে নিজের কথাগুলো ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছেন, যাতে নির্বাচন বিলম্বিত করা যায় অথবা বানচাল করা যায়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য ঐক্যবদ্ধ। যারা এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেবে, তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ রুখে দাঁড়াবে।
সালাহউদ্দিন সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের প্রতি একজোট থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক শক্তি ও রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব—যেভাবে আপনারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন, সেভাবেই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ঐক্যবদ্ধ থাকুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক শক্তি ও রাজনৈতিক দলকে আমি অনুরোধ করছি, যেভাবে আমরা স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, আবারও সেভাবে ঐক্য তৈরি করুন। আসুন একত্রিত হয়ে আলোচনা করি এবং সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করি, যাতে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের পথ সহজ হয়।’
সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশনায় গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে সরকার ও সব গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে অনেকবার আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে। তিনি নির্দেশনা দিয়েছিলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করতে হবে।
পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষমাণ। আমরা সেই গণতন্ত্রের জন্য অপেক্ষমাণ, যে গণতন্ত্রের জন্য আমাদের সন্তানরা শহীদ হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, অন্ধত্ব বরণ করেছেন। এই গণতন্ত্রের জন্য আমরা গত ১৫–১৬ বছর সংগ্রাম করেছি। এই গণতন্ত্রকে যদি আমরা বিনির্মাণ করতে চাই, একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
এর আগে গত ৯ আগস্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছিলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ লক্ষ্যে সারা দেশে নির্বাচন কমিশন জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সমতার ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা জরুরি। আমাদের জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে, সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আজীবন গণতন্ত্রের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সংগ্রাম থেকে শুরু করে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে নয় বছরের আন্দোলন, সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে তিনি দেশের গণতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে উল্লেখ করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘খালেদা জিয়া শুধু একটি নাম নন, তিনি একটি ইতিহাস। খালেদা জিয়ার মতো নেত্রী থাকলে জাতির পথ হারানোর সুযোগ নেই। তিনি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন এবং এখনো বাংলাদেশের মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ তার ৮১তম জন্মদিন। আমরা প্রার্থনা করি মহান আল্লাহ তাকে দীর্ঘায়ু দান করুন, যেন তিনি দেশের জনগণের জন্য আলোর দিশারি হয়ে থাকেন। গণতন্ত্রের রক্ষক ও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষক হিসেবে থাকেন।’
১১০ দিন আগে
নির্বাচন সামনে রেখে গুজব মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে: সালাহউদ্দিন আহমদ
আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে মিথ্যা তথ্য ও গুজব মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। শনিবার (১৯ জুলাই) বনানীতে এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে একটা অপপ্রচার রয়েছে। এটাকে গুজব বলব কিনা জানি না। বিষয়টা ঠিক উল্টো। আমরাই সবসময় ছাড় দিয়ে বিভিন্ন আইন সহায়তা করে, যেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো এক জায়গায় করে একটা সমাধান দিচ্ছি। আমরা সমাধানের কথাই বলছি।’
‘যারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে দূষিত করে, অপমানিত করে, বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে—সেটার শেষ ফল হচ্ছে, আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের ইতিহাসকে অপমানিত করছি। আর আমরা যদি এমনটা করি, তাহলে জয়ী হয় ফ্যাসিবাদের সময়টা ও তাদের ভূমিকা। সেটা আমাদের জাতির কেউ চায় বলে মনে হয় না।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যারা এসব কনটেন্ট বানায়, তাদের কয়েকজন ইউটিউবার আছেন। কিছু কিছু ভিডিওতে দেখি, আমার ছবি আছে কিন্তু ভেতরে আমার কথা নেই। মির্জা ফখরুল, আমার ও আরও একজন মির্জা সাহেবের ছবি দিয়ে তারা ভিডিও বানায়। কিন্তু ভেতরে আমাদের কারও কথা নেই।’
‘আবার নিচে এমন একটা লাইন দিচ্ছে, যেটাকে বলে থাম্বনেইল। সেটার সঙ্গে বক্তৃতার মিল নেই। এভাবে করে একটি জাতিকে নিয়ে তারা যেন খেলা করছে। তাদের সাবস্ক্রাইবার কারা? তারা তো একটি শ্রেণি। তারা একটি ওই রকম শ্রেণি, তারা যা বলবে, তা তারা বিশ্বাস করবে। মানে, তুমি যাহা লিখিবে, তাহাই সত্য—এমন একটা কথা প্রচলিত আছে।’
পড়ুন: দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি তত জটিল হচ্ছে: ফখরুল
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এখন হচ্ছে ভিডিওর জমানা। তারা এটি এমনভাবে বানায়, মানুষ ওটাই বিশ্বাস করে। নির্বাচন যত কাছে আসবে, তত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এমন ভুয়া খবর বা ইচ্ছাকৃত মিথ্যা তথ্য ও গুজব এমনভাবে ছড়াবে, যেগুলো মোকাবিলা করা চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি, পাঁচই আগস্টের আগে আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। এরপর সব ভাই আলাদা হয়ে গেছে। এখন নিজেদের মধ্যে লড়াই করো, আরামে আছে দিল্লিওয়ালা।’
১৩৮ দিন আগে
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন: সংবিধান কোনো ‘সাহিত্য’ নয়
জুলাই ঘোষণাপত্র সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘সংবিধান কোনো সাহিত্য নয়; যেখানে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পর্যন্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, সেখানে জুলাই ঘোষণাপত্র অন্তর্ভুক্তির কোনো কারণ নেই।’
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে বিএনপি আন্তরিক। তবে একটি পুরো ঘোষণাপত্রকে সংবিধানে যোগ না করে জুলাইয়ের চেতনা এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে যোগ করা যেতে পারে।’
‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ১০ এপ্রিলের ঘোষণাপত্রের ওপর ভিত্তি করে ১৭ এপ্রিল প্রবাসী সরকার গঠন হয়েছিল। যুদ্ধ শেষে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর নতুন সংবিধান প্রণয়ন হলে সেখানে এই ঘোষণাপত্র পুরোটা যুক্ত না করে এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছিল। এখন জুলাই ঘোষণাপত্র যোগ করতে গেলে প্রশ্ন উঠবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এবং ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থান কেন সংবিধানে যোগ করা হবে না।’
আরও পড়ুন: শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে অন্তর্বতী সরকারকে আহ্বান ফখরুলের
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিএনপির আগ্রহ নেই—এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘১২ ফেব্রুয়ারি সরকারের দুই উপদেষ্টার কাছে এই ঘোষণাপত্রে বিএনপির অবস্থান নিয়ে খসড়া প্রেরণ করা হলেও এ কয় মাসে এর কোনো উত্তর আসেনি। গত কয়েকদিন আগে সরকারের পক্ষ থেকে এক উপদেষ্টা যোগাযোগ করলে একদিনের মাথায় বিএনপি প্রতিউত্তর দিয়েছে। জুলাই প্রসঙ্গে বিএনপি বরাবরই আন্তরিক।’
ঐকমত্য কমিশনে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই আপিল বিভাগের সর্বজ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতির মধ্য থেকে একজনকে বেছে নিতে পারবেন রাষ্ট্রপতি। এই প্রস্তাবে বিএনপি একমত হলেও বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতানৈক্য দেখা গেছে। তাই এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৃহস্পতিবারের আলোচনায় বিএনপি ছাড়াও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
১৪৭ দিন আগে
ট্রাইব্যুনালে হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ সালাহউদ্দিনের
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে গুমের অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। মঙ্গলবার (৩ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তিন এই অভিযোগ দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য যাদের নাম অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসান, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম। এ ছাড়া আরও অজ্ঞাতনামা অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আজ বেলা ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন সালাহউদ্দিন। এ সময়ে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ আইনজীবীরা সাথে ছিলেন। পরে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে অভিযোগ তুলে দেন তিনি।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহউদ্দিনকে তুলে নেওয়া হয় বলে তখন অভিযোগ করেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। অন্যদিকে তখন বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সালাহউদ্দিনকে উঠিয়ে নিয়ে গেছেন।
সে সময় সালাহউদ্দিন বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন। একই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
সালাহউদ্দিনকে আটক করার পর বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে দেশটির ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। ২০১৫ সালের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে ২০১৮ সালে সালাহউদ্দিন খালাস পান। ভারত সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে সেখানেই থাকতে হয়।আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের পর জাতীয় নির্বাচন পেছানোর যৌক্তিকতা নেই: সালাহউদ্দিন
২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিলেও খালাস পান সালাহউদ্দিন। আদালত তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই বছরের ৮ মে সালাহউদ্দিন ভ্রমণ অনুমোদনের জন্য আসাম রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে তিনি ভারতে আটকে আছেন। দেশটিতে তার বিরুদ্ধে যে অনুপ্রবেশের মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
ভারতে থাকার কারণে তিনি নিজের পাসপোর্ট নবায়নের সুযোগ পাননি। ভ্রমণ অনুমোদন দেওয়া হলে তিনি নিজের দেশে ফিরতে চান। দেশবাসী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হতে চান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৬ আগস্ট সালাহউদ্দিন দেশে ফেরার জন্য ভ্রমণ অনুমোদন বা ট্রাভেল পাস পান। ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন।
১৮৫ দিন আগে
বিএনপি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার: সালাহউদ্দিন আহমদ
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৮৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে দেশের একনায়কতন্ত্রিক সংবিধান বাকশালকে বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সংবিধানে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম সংযুক্ত করে মহান আল্লাহ তায়ার উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘তিনি(জিয়াউর রহমান) দেশের সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। সংবিধানে ধর্মের ভিত্তিতে সকলের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করে সব মানুষের ধর্মীয় চর্চার স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন এদেশে ধর্ম-বর্ণ, ভাষা ও জাতির ভিত্তিতে বিভক্তি হবে না, সবাই বাংলাদেশি।’
আরও পড়ুন: বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ঢাকায় ওয়ার্ডভিত্তিক খেলার মাঠ তৈরি করবে: তারেক রহমান
সালাহউদ্দিন বলেন, দেশকে নতুন করে গড়ার মুহূর্তেই তিনি কুচক্রী মহলের হাতে শাহাদাত বরণ করলেন। কিন্তু তিনি বেঁচে রইলেন দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।
বিএনপিকে জনগণের দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি থাকলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব থাকবে। বিএনপি দুর্বল হলে বাংলাদেশ দুর্বল হবে।
স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘বিএনপির জন্ম না হলে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন হত না। বিএনপি সুসংগঠিত না থাকলে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতো না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি চালু হতো না। তাই বিএনপি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার।’
সোমবার (১৯ মে) বিকালে সিলেট নগরীর শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে সিলেট বিভাগে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, যেই মানুষ বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, যিনি নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দেবেন, তিনিই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সদস্য হতে পারবেন। এই দেশের প্রতিটি ধুলি কনাকে বিএনপি ধারণ করে, লালন করে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় হাসনাত আব্দুল্লাহর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহরের দাবি বিএনপির
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরকারিভাবে ১৮ কোটি জনগণ বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা, এখন ১৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বিএনপির কি এতো আকাল পড়েছে যে আওয়ামী লীগ থেকে সদস্য আমদানি করতে হবে? যেই আওয়ামী লীগের ডিএনএতে গণতন্ত্র নাই, তাদের কেন আহ্বান করতে হবে বিএনপির সদস্য হওয়ার জন্য?
বিএনপি নেতা বলেন, গত বছরের ৫ আগষ্ট বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যাকারী। তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। আজ পর্যন্ত তারা নিজেদের অপকর্মের জন্য কোনো অনুশোচনা করেনি বা ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। উল্টো তারা গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দুষ্কৃতকারী বলে আখ্যায়িত করছে। তারা কীভাবে বাংলাদেশ রাজনীতি করতে পরবে?
সালাহউদ্দিন বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২৩ সালেই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা জানতাম, একদিন নিষ্টুরভাবে ফ্যাসিবদের পতন হবে। যারা দেশের জনগণকে হত্যা করেছে, পঙ্গু করেছে, গুম, অপহরণ করেছে তাদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। বাংলাদেশ যেন কোনোদিন আর স্বৈরশাসকের বা ফ্যাসিবাদের উৎপাদন না হয়—সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) আলহাজ্ব জি কে গউছের সভাপতিত্বে ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম. রাসেদুজ্জামান মিল্লাত। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী ও এম.এ মালিক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার।
উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল হক, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম, জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ আরাফুল কবির খোকন প্রমুখ।
১৯৯ দিন আগে
বিদেশি নাগরিকত্ব থাকার দাবি প্রত্যাখ্যান খলিলুরের
বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজের সব অধিকার ভোগ করার প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। এ সময়ে তার বিদেশি নাগরিকত্ব আছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে যে দাবি করা হয়েছে, তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রবিবার (১৮ মে) বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে তিনি এমন কথা বলেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমার পূর্ণাঙ্গ অধিকার ভোগ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’
‘এই অভিযোগ যিনি করেছেন, তাকে সেটি প্রমাণ করতে হবে। প্রয়োজনে আাদলতের মাধ্যমে এটি প্রমাণ করতে হবে’, যোগ করেন তিনি।
এরআগে খুলনার সার্কিট হাউস মাঠে এক সমাবেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আপনার সরকারে একজন বিদেশি নাগরিককে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করেছেন। আপনার কি সেই আক্কেলজ্ঞান নেই—একজন বিদেশি নাগরিকের কাছে এই দেশের সেনাবাহিনী কীভাবে নিরাপত্তাসংক্রান্ত রিপোর্ট প্রদান করবে।’
আরও পড়ুন: আমাদের ঘাড়ের ওপর একটি গাজা বসে আছে: খলিলুর রহমান
‘তিনি রোহিঙ্গা করিডোরের নামে, মানবিক করিডোরের নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে চান। সেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বিদায় করুন,’ যোগ করেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘এই দেশে বন্দর, করিডোর—সব কিছু নাকি ইউনূস সরকারের অধিকারের মধ্যে পড়ে। বিদেশে আপনি কী কন্ট্রাক্ট করে এসেছেন জানি না। আপনি অবলীলাক্রমে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর, নদীবন্দর, করিডোর সব বিদেশিদের কাছেন হস্তান্তর করবেন—কী চুক্তি করে এসেছেন? কী এখতিয়ার আছে আপনার? কী ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছেন।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহামান ১৯৭৭ সালে প্রথম নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে ১৯৭৯ সালে কূটনৈতিক জীবন শুরু করেন। একই বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ফরেন সার্ভিসে যোগদানের আগে আমেরিকান এক্সপ্রেস ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকে অল্প সময়ের জন্য কাজ করেন।
আরও পড়ুন: আরাকানের যুদ্ধাবস্থা নিরসন করেই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন: খলিলুর রহমান
তিনি ফ্লেচার স্কুল অফ ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি, টাফটস বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্ট, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ও কূটনীতিতে এমএ এবং অর্থনীতিতে পিএইচডি অর্জন করেন।
তার কূটনৈতিক মেয়াদে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘে স্থায়ী মিশন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও আর্থিক কমিটির স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মুখপাত্র ছিলেন।
২০১ দিন আগে