আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)
ছেলের কবরের পাশে দিন কাটে আবু সাঈদের মায়ের, বিচার নিয়ে সংশয়
ছেলের কবরের পাশে বসে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগমের। চোখে জল নিয়ে একাকী বসে থাকেন সন্তান হারানো এই মা।
বুধবার (৯ জুলাই) রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুরে আবু সাঈদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে এমন বেদনাদায়ক দৃশ্যের দেখা মেলে।
বছর পেরোলেও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের হত্যার বিচারে কোনো অগ্রগতি নেই। এমন অভিযোগ করছেন তার পিতা মকবুল হোসেন ও মা মনোয়ারা বেগম। তাদের দাবি, আসামিরা বহাল তবিয়তে দিব্যি বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
আদৌ ছেলে হত্যার বিচার পাবেন কি না! এ কথা মনে পড়তেই অশ্রুস্নাত হন ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদের বাবা-মা।
‘আমার ছেলেকে যারা হত্যা করল, তারা এখনো বাইরে ঘুরে বেড়ায়, চাকরি করে! তাদের তো ধরে না। এখনো বিচারও হইল না, বিচার আর কোনো দিন হইবে?’, আক্ষেপ ও অভিমানের সুরে কথাগুলো বলে অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা মকবুল হোসেন।
শোক, ক্ষোভ, বেদনায় জর্জরিত হয়ে ছেলে হত্যার বিচারের অপেক্ষায় থাকা শোকাহত মা মনোয়ারাকে ছেলের ছবির দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করতে দেখা যায়, ‘আমার ছেলের দোষটা কী ছিল?’
‘আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ’ না থেকে সন্তান হত্যার বিচার করার দাবি জানান আবু সাঈদের বাবা-মা।
কে ছিলেন আবু সাঈদ?
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গেল বছরের ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্ক মোড় এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন তৈরির পাশাপাশি আন্দোলনে গতি আসে। কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই আবু সাঈদ ছিলেন অন্যতম সক্রিয় মুখ। পুলিশের গুলিতে তার জীবনপ্রদীপ নিভে যাওয়ার দিন থেকে আবু সাঈদের পরিবারের শোকযাত্রা আর বিচারের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা শুরু হয়।
সন্তান হারানো এই মা বলেন, ‘হামার ব্যাটাক মারি ফেলাইছে। আমার ছেলের কি দোষ আছিল! সে তো কোনো দোষ করে নাই। কিন্তু গুলি কইরা হামার ব্যাটাক মারি ফেলাইছে। এক বছর হইয়া গেইলেও এখনো বিচার হইল না! হামার কোনো চাওয়া নাই, যারা খুন করছে তাদের যেন শাস্তি হয়।’
কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় কণ্ঠরোধ হয় তার। তবে, পাশে বসা বাবা মকবুল হোসেন গর্ব ও কষ্টে মেশানো কণ্ঠে বলেন, ‘দুনিয়ার সব মানুষ আছে, কিন্তু আমার ছেলে নাই— এ দিক দিয়া খুব দুঃখ পাই। কিন্তু আমার ছেলের উছিলায় অনেক আলেম-ওলামা জেল থেইকা ছাড়া পাইছে— এইটা ভাবলে গর্ব হয়।’
আরও পড়ুন: আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে জীবন দিছে, আমার ছেলেক তো শেখ হাসিনার নির্দেশেই পুলিশ গুলি কইরা হত্যা করছে, আমি কি শেখ হাসিনাসহ সব আসামির বিচার পাইমু? তবে, সন্তানের আত্মত্যাগ যে বড় পরিবর্তনের সূচনা করছে, এইটায় গর্বিত আমি।’
মকবুল হোসেন বলেন, ‘সরকার সুনজর দিয়ে অপরাধীর বিচার করুক। আমি চাই সরকার কঠিনভাবে বিচার করুক। আমার ছেলের সঙ্গে আরও হাজার হাজার মানুষ শহীদ হইছে, অনেক বাপ-মার বুক খালি হইছে। আমি চাই, এমনটা যেন আর কোনো মায়ের সঙ্গে না হয়। যা হইছে আমার, তা যেন আর কারও না হয়।’
মকবুল হোসেন বলেন, ‘এক বছর হইয়া গেলেও সরকার মাত্র ৪ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারছে। আর সবাই এখনো বহাল তবিয়তে আছে। এই জনমে ছেলে হত্যার বিচার কি পাইমু?’
মামলার বর্তমান অবস্থা
এদিকে, আবু সাঈদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এ মামলার ৩০ আসামির মধ্যে পলাতক ২৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল-২ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তাদের মধ্যে আছেন বেরোবির সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদ।
ট্রাইব্যুনাল-২-এ এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে ৩০ জনকে আসামি করা হয়। যাদের মধ্যে মাত্র চারজন গ্রেপ্তার আছেন। গ্রেপ্তাররা হলেন— বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।
এর আগে, গত ২৬ জুন আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা থেকে প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে অসন্তোষ
তবে এ প্রতিবেদন নিয়ে সন্দেহ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। তারা এ হত্যা মামলার প্রতিবেদন জমার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে গণশুনানির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।
আরও পড়ুন: আবু সাঈদ হত্যা মামলা: তদন্তে অভিযুক্ত ৩০ জন
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তারা জানান, তদন্ত প্রতিবেদন জমার আগে ২৩ জুন রংপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি গণশুনানি আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সন্দেহ ও অনাস্থা তৈরি হয়েছে।
আবু সাঈদ হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে তারা এ ঘটনার সঙ্গে ৩০ জনের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করেন। তবে এবারও অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে তারা পুলিশের সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।
‘ট্রাইব্যুনাল একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে প্রশাসনিক দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করলেও পুরো বক্তব্যে পুলিশের কোনো সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করেননি। অথচ জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড ছিল একটি পরিকল্পিত পুলিশি হত্যাকাণ্ড।’
শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, ‘দুটি বিষয় নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। প্রথমত, একটি পরিকল্পিত পুলিশি হত্যাকাণ্ডকে সচেতনভাবে ‘প্রশাসনিক হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, যেসব ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এ ঘটনার জন্য দায়ী, তাদের তদন্ত থেকে সূক্ষ্মভাবে পাশ কাটিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
তবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ওপর আস্থার কথা জানিয়েছেন সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন। তিনি বলেন, ‘অভিযোগ দাখিল পিছিয়ে গেছে— এটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তবে আমার একটা বিশ্বাস আছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) থেকে যেটা প্রতিবেদন আসবে, সেটা সঠিক ও সত্যনিষ্ঠ হবে।’
তার পরিবার ন্যায়বিচার চায় উল্লেখ করে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আবু হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনটা কতটা যুক্তিসংগত, আমি জানি না। আবু সাঈদের যারা সহযোদ্ধা ছিলেন, যারা এখনো আন্দোলনে আছেন, তাদের সঙ্গে বসে, তাদের কথা শুনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা উচিত। আমরা চাই ন্যায়বিচার— না কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি ফাঁসুক, না কোনো প্রকৃত অপরাধী ছাড় পেয়ে যাক।’
আরও পড়ুন: শহীদ আবু সাঈদকে 'বীরশ্রেষ্ঠ' বললেন এনবিআর চেয়ারম্যান
বেরোবির ভিসি ড. শওকাত হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব শহীদ আবু সাঈদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার অবশ্যই হবে, সব আসামি গ্রেপ্তার হবে। কোনো আসামি ছাড় পাবে না।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী ও রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম বলেন, হত্যার বিচার অবশ্যই হবে, এ নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। যেসব আসামি দেশে আছে, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
১৪৮ দিন আগে
আদালত অবমাননার দায়ে হাসিনার ছয় মাসের কারাদণ্ড
আদালত অবমাননার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার অপসারণের পর এটাই প্রথম কোনো আদালতের রায়, যাতে তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) আইসিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একই মামলায় গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই ধরনের মামলায় পলাতক আসামির জন্য আইনজীবী নিয়োগের পূর্ব নজির না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ২৫ অক্টোবর শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আলিফ হত্যা মামলা: চিন্ময় দাসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল
সেই অডিও ক্লিপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘২২৬ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—যা বিচারব্যবস্থার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে আদালত। পরে এই ঘটনায় আইসিটিতে মামলা করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৩০ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত শুনানিতে দুই আসামিকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ধার্য তারিখে তারা হাজির হননি। কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। সেদিন ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেন।
পরদিন দুটি সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে গত ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। সেদিনও তারা হাজির হননি। পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১৯ জুন তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
১৯ জুন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয় ২৫ জুন।
২৫ জুন মামলায় প্রস্তুতি নিতে অ্যামিকাস কিউরি মশিউজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এক সপ্তাহ সময় দেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয় ২ জুলাই। আজ দুই আসামিকে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দিলেন ট্রাইব্যুনাল।
১৫৫ দিন আগে
সংবাদপত্রে শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে হাজির হতে দুটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। এছাড়া, আগামী ২৪ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আইসিটির চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, নোটিশ একটি বাংলা ও আরেকটি ইংরেজি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার জন্য আদালত আদেশ দিয়েছেন।
গত ১ জুন জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন— সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী মামুন। একইসঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়।
মামলার বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন নিহত হন।
গত বছরের ৫ আগস্ট তীব্র প্রতিবাদের মধ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করেন এবং ভারতের আশ্রয় নেন।
এরপর নোবেলজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনুস পরে ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং গণহত্যার অভিযুক্তদের বিচার নিশ্চিতের জন্য ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করেন। সেখানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা দায়ের করা হয়। ছয় মাসের তদন্ত শেষে ট্রাইব্যুনালের সংস্থা গত ১২ মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে এবং রবিবার তা আনুষ্ঠানিকভাবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
আরও পড়ুন: ট্রাইব্যুনালে হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ সালাহউদ্দিনের
১৭১ দিন আগে