বিএনপি মহাসচিব
সরকারের ভেতরের একটি মহল গণতন্ত্রের শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে দিতে চায় না: ফখরুল
দেশের গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সরকারের ভেতর থেকে একটি মহল সচেতনভাবে সেই চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের অনেক বেশি সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। লক্ষ্য অর্জনের জন্য অনেক বেশি কাজ করতে হবে। আমরা যদি মনে করি, আমরা জিতে গেছি, সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে, তাহলে বড় ভুল হবে। সরকারের ভেতরের একটি মহল অত্যন্ত সচেতনভাবে চেষ্টা করছে যে যারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, তারা যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে। আজকে যখন দেখি, পত্রিকায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কর্মকর্তাকে, উপদেষ্টাকে আওয়ামী লীগের লোকজন হেনস্তা করছে, তখন কোথায় যাব আমরা? এটা আমাদের মধ্যে চরম হতাশা সৃষ্টি করেছে।’
বুধবার (২৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব জহুর হোসেন চৌধুরী হলে খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ কাজী জাফর আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম বিরাট করে খবর ছাপা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন ব্যক্তি যিনি দেশে ব্যাংক লুটের জন্য বিখ্যাত, তিনি দিল্লিতে বসে শেখ হাসিনাকে আড়াই হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন এবং পরিকল্পনা করেছেন, তারা কীভাবে ওই টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশের নির্বাচন বন্ধ করবে, হাসিনাকে আবার ফিরিয়ে আনবে।’
‘একটি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হয়ে গণতন্ত্রের যে ট্রানজিশন (রূপান্তর) সেখানে যেতে হবে, আমরা তার জন্য কাজ করছি। এরইমধ্যে অনেক কাজ হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য যে বিষয়গুলো এসেছে, তার অনেকগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, অনেকগুলোতে তারা একমত হতে পারেনি। নির্বাচনের একটি তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা ৩১ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করেছি যার মধ্যে সংস্কারের সবগুলোই আছে। আমরা প্রথম থেকেই সংস্কারের পক্ষে। আমরা তখন উপলব্ধি করেছিলাম, বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। সংস্কারের জন্য যত সহযোগিতা লাগে, আমরা তা অন্তর্বর্তী সরকারকে করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোথাও বাধা সৃষ্টি করিনি, কোনো বড় রকমের দাবি তুলে রাজপথে নেমে সরকারের বিরোধিতা করিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু রাজনৈতিক মহল পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল ও ব্যাহত করার জন্য নিত্যনতুন দাবি তুলে ধরছে। এমনসব দাবি তারা তুলে ধরছেন, যার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ আসলে পরিচিতই না। যেখানে সংস্কার শব্দটির সঙ্গেই সাধারণ মানুষ পরিচিত নয়।’
আরও পড়ুন: রাতারাতি বৈষম্যের অবসান হবে না: মির্জা ফখরুল
জ্যেষ্ঠ এই রাজনীতিক বলেন, ‘সংখ্যানুপাতিক ভোট বোঝাতে সময় লাগবে; এটা বোঝানো খুবই কঠিন। এরপর কাকে ভোট দিলেন, আপনি তা জানেন না। ভাবলেন, এলাকায় একজন জনপ্রিয় মানুষ আছেন, তাকে লক্ষ্য করে ভোটটা দিলেন, কিন্তু দেখা গেল হয়ে গেলেন অন্যজন। এ বিষয়গুলো এখন আমাদের কাছেও পরিষ্কার নয়, সাধারণ মানুষের কাছেও নয়। অথচ এগুলো নিয়ে তারা জোরেশোরে হুমকি দিচ্ছে।
কেন তারা এমন করছে— প্রশ্ন রেখে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তো ঘরপোড়া গরু। আমরা দেখেছি, যখনই কোনো পরিবর্তন হয়, তখনই সেই সুযোগ অন্যরা নিয়ে নেয়। নির্বাচন আয়োজনে যত দেরি হয়, তত তারা সুবিধা পেয়ে যায়। এক-এগারোর সরকার দুই বছর থাকল এবং ফ্যাসিস্টের হাতে ক্ষমতা তুলে দিল। গত ১৫ বছর ধরে সেই ভোগান্তি আমাদের পোহাতে হয়েছে। তারা বাংলাদেশের অর্থনীতি শেষ করে দিয়েছে। রাজনৈতিক কাঠামো শেষ করেছে। মানুষের মন-মানসিকতা সবকিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি রাজনীতিতে কোনোদিন হতাশ হইনি। সবাইকে সাহস দিয়েছি, অনুপ্রেরণা দিয়েছি। কিন্তু ইদানীং একটা হতাশার ছায়া ঘোরাঘুরি করছে। কেন? যেদিকে তাকাই, দেখি বেশিরভাগ মানুষ নষ্ট হয়ে গেছে। দুর্নীতি… আপনি কোনো অফিস-আদালতে যেতে পারবেন না। একজন ব্যবসায়ী বলেছেন, আগে এক লাখ টাকা দিতে হতো, এখন দিতে হয় পাঁচ লাখ টাকা।’
তিনি বলেন, ‘মনমানসিকতার মধ্যে যে পরিবর্তন নিয়ে আসার কথা ছিল, সেই পরিবর্তনটা আনতে পারেননি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাজনৈতিক নেতারাও তাতে জড়িত হয়ে পড়েছেন। যেটা বাংলাদেশের আরও বেশি ক্ষতি করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে বাঁচানোর জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা দরকার। এ দেশটা আমাদের। ১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছি। আমাদের অনেককে গুলি খেতে হয়েছে। অনেকের ভাই-বোন-মা শহীদ হয়েছেন। বাড়িঘর পুড়ে গেছে। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে। সেই একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার অনেক চেষ্টা চলছে। কিন্তু সেটা ভোলা সম্ভব নয়। যারা সেদিন সহযোগিতা করেছেন, তারাই আজ অনেক বড় বড় কথা বলছেন।’
৯৯ দিন আগে
নির্বাচনের ঘোষণা গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে: বিএনপি মহাসচিব
আগামী বছরের ফ্রেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা বাংলাদেশের গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানায় বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের ঘোষণা গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পর নির্বাচনের সময় ২০২৬ এর ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারণের ঘোষণাকে স্বাগত জানাচ্ছে বিএনপি। এই ঐতিহাসিক ঘোষণা গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে। এই ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক দলগুলো যে অঙ্গীকার করেছে, তা পালনের মধ্যদিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তরের কাজ শুরু হবে।’
সরকার ও নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সর্বজনগ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে অংশ নেবে বিএনপি
একটি কার্যকর জাতীয় সংসদ গঠনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে সবাইকে এই নির্বাচন সফল করতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, বিগত এক বছরে অনেক প্রতিকূলতা সত্তেও গণতন্ত্রের পথকে সুগম করার উদ্যোগের ও প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ড. ইউনূস, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট সব সদস্য যারা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের আন্তকিরক ধন্যবাদ জানাচ্ছে বিএনপি এবং প্রত্যাশা করছে অতি দ্রুত রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারের বাকি কাজগুলো সম্পন্ন হবে।
অধ্যাপক ইউনূস মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা দিয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি এই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানায়। বিএনপি বিশ্বাস করে ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক দলগুলো যে অঙ্গীকার করেছে, তা পালনের মধ্য দিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তরের কাজ শুরু হবে। এর মাধ্যমে একটি সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে সত্যিকারের প্রগতিশীল সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
এ সময় নিহত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন ও আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সরকাররে প্রতি আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল তারেক রহমানকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তিনি দীর্ঘ আট বছর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এই সাফল্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকসহ সব স্তরের মানুষ এই সংগ্রামে অংশ নিয়েছে। তাদের অনেকে শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছেন। বিএনপি তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছে।
১২০ দিন আগে
জনগণের জীবনমান উন্নয়নে রাষ্ট্র সংস্কারের আহ্বান ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্রে সংস্কার ও কাঠামোগত পরিবর্তনের লক্ষ্য হওয়া উচিত জনজীবনে প্রকৃত উন্নয়ন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য।
তিনি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্র কাঠামোর পরিবর্তন চাই, আমরা সংস্কার চাই। কিন্তু এই সংস্কার ও পরিবর্তন যদি আমাদের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে সহায়তা না করে, যদি আমাদের শিশুদের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যৎ বা নিরাপদ জীবন নিশ্চিত না করে—তাহলে আমি মনে করি, এই সংস্কারের কোনো মূল্য থাকবে না।’
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বনানীর কামাল আতাতুর্ক মাঠে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এবং ‘মায়ের ডাক’-এর যৌথ আয়োজনে ‘গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় শিশু’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এই অনুষ্ঠানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার এবং জুলাই গণ-আন্দোলনে নিহত শিশুদের স্মরণ করা হয়।
তিনি গভীর হতাশা প্রকাশ করে বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রিয়জন হারানো পরিবারগুলোকে সহায়তায় রাষ্ট্র খুব কম কিংবা কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।
বিএনপি মহাসচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, গুমের শিকার ও গণআন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত শিশু ও পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে সরকার জরুরি ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার—যদিও বিলম্বিতভাবে—তাদের পুনর্বাসনকে অগ্রাধিকার দেবে, যেসব পরিবার, তাদের পিতা, আত্মীয় বা ভাইদের খুঁজে বেড়িয়ে কষ্ট ও যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন: ভাড়াটে লোক দিয়ে দেশ চালানো যাবে না: ফখরুল
গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের কার্যকারিতা নিয়েও সমালোচনা করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘একটি তদন্ত কমিশন গঠিত হলেও তারা কেবল একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। আমি মনে করি না তারা খুব বেশি অগ্রগতি করেছে—না নিখোঁজদের খোঁজে, না ঘটনার সত্য উদঘাটনে।’
বিএনপি নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুম বা হত্যার শিকার পরিবারগুলো—এমনকি শিশুদেরও—মানুষের হারানো অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দীর্ঘ লড়াইয়ে বিপুল ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গত বছর ৫ আগস্ট দেশে যে পরিবর্তন ঘটেছিল, তাতে অনেকে ক্ষমতার চূড়ায় পৌঁছেছেন—কেউ হয়েছেন মন্ত্রী, কেউ শীর্ষ কর্মকর্তা, কেউ গড়ে তুলেছেন বিশাল ব্যবসা। কিন্তু আমাদের শিশুদের জন্য আমরা সেইভাবে এগোতে পারিনি।’
ফখরুল বলেন, তারা আশা করেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন হলেও বর্তমান সরকার গুমের শিকার শিশু ও পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্য একটি বিশেষ সেল গঠন করবে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, তা হয়নি।’
তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এলে গুম ও সহিংসতার শিকার শিশু ও পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তার বক্তব্যের শেষদিকে ফখরুল এক আবেগঘন আহ্বান জানান, ‘চলুন আমরা সবাই মিলে এগিয়ে আসি এবং এই শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে তুলি—সেই শিশুটি যে এখনও একটি প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে আছে, তার বাবার ফিরে আসার অপেক্ষায়। আমরা জানি না, সেই বাবা বেঁচে আছেন কি না, তাকে ফিরিয়ে আনতে পারব কি না—কিন্তু অন্তত আমরা তার একটি সুন্দর জীবন ও আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারি। এই ঋণ কখনোই শোধ করা সম্ভব নয়।’
১২৮ দিন আগে
ভাড়াটে লোক দিয়ে দেশ চালানো যাবে না: ফখরুল
জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিই সংস্কারের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ ও বিদেশ থেকে ভাড়াটে লোক এনে দেশ পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘দেশ-বিদেশ থেকে কিছু লোক ভাড়া করে কি একটা দেশ চালানো যায়? না, যায় না। এটিই সহজ সত্য, আমাদের তা বুঝতে হবে।’
শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জিয়া পরিষদের আয়োজনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচিটি পালন করা হয়, যা শেখ হাসিনার ‘ফ্যাসিবাদী শাসনের’ পতনের সূচনা বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ ভাবছেন, কয়েকটি বৈঠক করলেই সংস্কার হয়ে যাবে। এটা ঠিক নয়। সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, তা একদিনে হয় না।’
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে আগামীকাল থেকে পুলিশ ঘুষ খাওয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে তা হবে না। তাকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে, যেখানে ঘুষ খাওয়ার প্রবণতা নিরুৎসাহিত করা হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান আমলাতন্ত্র দেশের উন্নয়নের পথে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি নেতিবাচক একটি আমলাতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। এটি পরিবর্তন করে ইতিবাচক আমলাতন্ত্রে রূপান্তর করতে হবে। আর তা করতে হলে জনগণকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে ফেরা, তাদের চাহিদা জানা এবং সেই চাহিদার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করা।’
পড়ুন: নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবিকে কেন্দ্র করে সমালোচনার জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলা শুরু করলেই বলা হচ্ছে বিএনপি শুধু ভোট চায়। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছে, আমরা কেন নির্বাচন চাই?’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমেই প্রকৃত জন-প্রতিনিধি নির্বাচিত করা সম্ভব। আর যদি প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে তারা সংসদে যাবে কীভাবে? আর যদি নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে জনগণের শাসন কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে?’
আংশিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘এই পদ্ধতির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এই পদ্ধতির পক্ষে জোরালো সুরে কথা বলছে। কিন্তু পিআর নির্বাচন কী—সাধারণ মানুষ তা বোঝে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে এই পদ্ধতি নিয়ে একধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ যে পদ্ধতিতে অভ্যস্ত, সেটি হলো—রাজনৈতিক দল প্রার্থী মনোনয়ন দেবে, প্রতীক হবে ধানের শীষ, পাল্লা, হাতপাখা ইত্যাদি; আর ভোটাররা গিয়ে ভোট দেবে। এখন হঠাৎ করে বলা হচ্ছে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।’
পিআর পদ্ধতির ব্যাখ্যায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে জনগণ ব্যক্তিকে নয়, দলকে ভোট দেয়। এরপর দল যাকে ইচ্ছা তাকে সংসদ সদস্য মনোনয়ন দেয়। ফলে জনগণের পছন্দের, নিজেদের এলাকার কোনো নেতাকে তারা আর সংসদে পাঠাতে পারবে না।’
পড়ুন: পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না: নাহিদ ইসলাম
এই কারণেই বিএনপি জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে সমর্থন করে না বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক গভীর সংকটে রয়েছে। আমরা অপেক্ষা করছি, কখন গণতন্ত্রের পথে ফিরব। দেশ বর্তমানে রাজনৈতিক শূন্যতা এবং ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। আমাদের এখান থেকে বেরিয়ে একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা জনগণের কল্যাণে কাজ করবে।’
আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘তারা যে ক্ষতি করেছে তা পূরণ করা সহজ হবে না। তারা বিচার বিভাগ, প্রশাসন, স্বাস্থ্য খাত, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোকেও ধ্বংস করেছে।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু পত্রিকায় যেসব অপকর্মের খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি জিয়াউর রহমানের গড়া দল। এই দলের নেতৃত্ব ও কর্মীদের সততাই প্রধান ভিত্তি। সততা ছাড়া বিএনপি জনগণের সামনে দাঁড়াতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকাল পত্রপত্রিকায় যেসব খবর ছাপা হচ্ছে, সেগুলো বিএনপির আদর্শ বা জিয়াউর রহমানের মূল্যবোধের সঙ্গে মেলে না। তাই যারা বিএনপির রাজনীতি করছেন, তাদের জিয়াউর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে এবং অবশ্যই সৎ হতে হবে।’
১৩১ দিন আগে
খায়রুলের গ্রেপ্তারে মির্জা ফখরুলের শুকরিয়া, চান দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, দায়িত্বে থাকাকালীন এই বিচারপতি জাতির অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল বলেন, ভবিষ্যতে যেন কেউ রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে উচ্চপদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার না করে, সে জন্য খায়রুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘খায়রুল হক বাংলাদেশের বড় শত্রুদের একজন। তিনি দায়িত্বে থেকে দেশের বড় ক্ষতি করেছেন। আজ তিনি গ্রেপ্তার হওয়ায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধান বিচারপতির পদে থেকে তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করেছেন, কিন্তু তিনি সেখানে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন।
খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যে রায় দিয়েছেন, সেটির মাধ্যমে তিনি একইসঙ্গে জনগণ ও রাষ্ট্রকে প্রতারিত করেছেন বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যে সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনেক পার্থক্য ছিল। আমরা মনে করি, তার দেওয়া সংক্ষিপ্ত রায়টি রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিরোধী। আমরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ যে, তারা দেরিতে হলেও খায়রুল হকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে রায় পরবর্তী রাজনৈতিক সংকটের জন্য খায়রুল শতভাগ দায়ী।’’
পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে সরকার সঠিক পথেই এগোচ্ছে: ফখরুল
তাকে কী ধরনের শাস্তি দেয়া উচিত—এই প্রশ্নে ফখরুল বলেন, সেটি নির্ধারণের তিনি কেউ নন।
‘আমরা চাই, এসব বিষয়ে যথাযথ তদন্ত হোক এবং আইনি বিধান অনুযায়ী বিচার হোক। তবে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ওই পদে থেকে রাষ্ট্রের ক্ষতি করার সাহস না পায়,’ বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, বিচারব্যবস্থা জনগণের সবচেয়ে আস্থা জায়গা। কিন্তু খায়রুল হক তার রাজনৈতিক মানসিকতার কারণে সেই আস্থা ধ্বংস করেছেন, যা দেশের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়েছে।এ দিন সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজ বাসভবন থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।
দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০১০ সালে খায়রুল হক শপথ নেন। পরের বছর ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
২০১৩ সালে তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা একই পদে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয় সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
১৩৩ দিন আগে
রাজনীতিতে সমস্যা থাকবে, তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই: ফখরুল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্যের কারণে হতাশ হওয়ার কোনো যুক্তি নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাদের দল বহুত্ববাদকে ধারণ করে একটি রেইনবো স্টেট গঠনের স্বপ্ন দেখে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার (২০ জুলাই) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, এখানে একজন শহীদের পিতা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেছেন যে, আমরা আশা করেছিলাম গণঅভ্যুত্থানের পরে অতিদ্রুত রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত হবে, রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি হবে, আমরা একটা নতুন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারব।
‘বিষয়টা হচ্ছে যে, রাজনীতিটা অত সহজ পথ নয়, গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো থাকে না, এখানেও সমস্যা থাকবে, সেটাই রাজনীতি। কিন্তু এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’
রাজনীতিতে বিএনপির অবস্থান নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ভিন্নমত থাকবে, বহুমাত্রিক পথ থাকবে, কেউ গণতন্ত্রের বিশ্বাস করবে, কেউ সমাজতন্ত্রের বিশ্বাস করবে, কেউ আপনার ওয়েলফেয়ার স্টেটে বিশ্বাস করবে। সবগুলোকে মিলিয়ে সেই রকম একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করা হবে, অনেক আগেই আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ‘
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে বিএনপির দেওয়া অতীতের ৩১ দফা সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১দফা দিয়েছেন, সেই দফার মধ্যে আজকে যে সংস্কারের প্রশ্নটা উঠেছে, সংস্কারের যে প্রস্তাবগুলো আসছে তার প্রত্যেকটি প্রস্তাব আমরা ২০২২ সালে দিয়েছি।’
জুলাই আন্দোলন পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনীতি নিয়ে যে সংকট প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে ‘হতাশ হওয়ার কিছু নেই বলেও জানান বিএনপির এই নেতা। উদ্ভূত সমস্ত সংকট এড়াতে অন্তর্বতীকালীন সরকার ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তারিখ দেবে বলেও প্রত্যাশা রেখেছেন তিনি।
জুলাই আন্দোলনে শহিদের সংখ্যা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি সেই বিষয়গুলো নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করতে চাই না। আমার কতজন শহীদ হয়েছেন, আমার কতজন নিহত হয়েছেন, আমরা কত ত্যাগ স্বীকার করেছি, কারা কী কাজ করেছি এই বিতর্কে আমি যেতে চাই না।
‘কারণ ওটা আমার কাছে মনে হয় স্বার্থপরতার একটা ব্যাপার আছে। আমার দায়িত্ব হচ্ছে এই জাতিকে আমাকে উপরে তুলতে হবে।যে প্রাণগুলো গেছে, যারা জীবন দিয়েছে তারা কিন্তু জীবন দিয়েছে ঘোষণা করেই দিয়েছে যে, আমরা ফ্যাসিস্টকে সরাবো, জাতিকে একটা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই।’
সত্যিকার অর্থে একটি উদারপন্থি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে বিএনপি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষ যেন সুস্থভাবে স্বাধীনভাবে কমফোর্টেবল ওয়েতে স্বস্তির সঙ্গে যেন চলাফেরা করতে পারে সেই ধরণের একটা রাষ্ট্র চাই।
মির্জা ফখরুল আশা করেন, সরকার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা তারা রক্ষা করবে।
‘সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণের একটা সরকার তৈরি করতে পারব। যে সরকার আমার এই শহিদদের মূল্যায়ন করবেন, তাদের মর্যাদা দেবেন, একই সঙ্গে যেজন্য সংগ্রাম করেছেন বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবার সবরকম ব্যবস্থা গ্রহন করবে।’
এ সময়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলসহ চার শহিদের স্বজনরা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম শামসুল ইসলাম শামস, বাদলুর রহমান বাদল, সাইফ আলী খান, মোকছেদুল মোমিন মিথুন, জাহিদুল ইসলাম রনি, শফিকুল হক সাজু ও হাসনাইন নাহিয়ান সজীবসহ কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হাসিনা কখনোই ক্ষমা পাবে না: মির্জা ফখরুল
১৩৭ দিন আগে
গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রায় হামলার নিন্দা ফখরুলের
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্ধারিত ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় কঠোর নিন্দা জানিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ সময়ে হামলাকারী দুষ্কৃতকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এই উদ্বেগ জানান। এতে বলা হয়, আজ গোপালগঞ্জে এনসিপির পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিতে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সন্ত্রাসীদের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর দুষ্কৃতকারীরা আবারও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ নৈরাজ্যের মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। আজ গোপালগঞ্জে এনসিপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচির ওপর বর্বরোচিত হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, ইউএনওসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের সদস্যদের আহত করার বর্বর ঘটনা সেই অপতৎপরতারই বহিঃপ্রকাশ।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে আওয়ামী দোসরেরা মরণকামড় দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লুটতে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এসব দুষ্কৃতকারীকে কঠোর হস্তে দমন ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।
গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ দেশে যাতে আবার ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে না পারে, সে জন্য দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় দলমত-নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এর ব্যত্যয় হলে দেশ আবার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় হুমকির মুখে পড়বে।
বিএনপি মহাসচিব তার বিবৃতিতে গোপালগঞ্জে এনসিপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে হামলাকারী দুষ্কৃতকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহ্বান জানান। তিনি আহত পুলিশ সদস্যদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি
১৪১ দিন আগে
নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে: সিলেটে মির্জা ফখরুল
নির্বাচিত সরকারের চেয়ে কোনো সরকার শক্তিশালী হতে পারে না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এতে বিনিয়োগ থেমে যাবে, নারী-শিশুর নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে, বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরা চরম অবনতি ঘটবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার এখন দেশে প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (৭ জুলাই) বিকাল ৩টায় নগরীর একটি হোটেল মিলনায়তনে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ, তাদের পরিবার-পরিজনের প্রতি সম্মানে একটি বিশেষ স্মরণ ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এমনিতেই হাসিনা পালিয়ে যায়নি। বহু মানুষের আত্মত্যাগ, রক্ত, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যেখানে জনগণ মত প্রকাশে স্বাধীন থাকবে, নারীরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে, তরুণরা কর্মসংস্থান পাবে, জনগণ চিকিৎসার সুযোগ পাবে—এমন একটি কল্যাণমুখী বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে আমরা নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। আমাদের প্রিয় নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনও অসুস্থ অবস্থায় আমাদের প্রেরণা ও পরামর্শ দিয়ে চলেছেন। এখন আর কেবল কথার রাজনীতি নয়, এখন সময় কাজের। ত্যাগ ও রক্তের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসান ঘটিয়েছি। গত ১৫ বছরে এই শাসকগোষ্ঠী প্রায় বিশ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। শুধু গত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ৩৬ দিনের মধ্যে দুই হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন। শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব। তাদের পুনর্বাসন, সন্তানদের শিক্ষার নিশ্চয়তা ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের আশা মির্জা ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি নতুন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে। আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক, অর্থবহ নির্বাচন চাই—যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, এম. এ. মালিক ও ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউস, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম ও মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী প্রমুখ।
১৫০ দিন আগে
চোখের চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে বিএনপি মহাসচিব
চোখের জরুরি চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী রাহাত আরা বেগম।
সোমবার (১২ মে) দিবাগত রাত ২টা ৪৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়েছেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: দলীয় নেতাকর্মীদের কেউ অন্যায় করলে পুলিশে দিতে বললেন মির্জা ফখরুল
তিনি জানান, গতকাল (সোমবার) সকালের দিকে চোখে সমস্যা অনুভব করেন ফখরুল। এরপর চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে যান তিনি। পরীক্ষার পর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, তার এক চোখের রেটিনায় জরুরি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন।
চিকিৎসকদের পরামর্শে ব্যাংককের রুটনিন আই হাসপাতালে ফখরুলের অস্ত্রোপচার করানো হবে বলে জানান শায়রুল।
এর আগে, এ বছরের ৬ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তাঁর স্ত্রী রাহাত আরা বেগম।
২০৬ দিন আগে
সংস্কার সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে: বিএনপি মহাসচিব
সংস্কার সম্পর্কে বিএনপির বক্তব্যকে একটি মহল ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে প্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারে বিএনপির সমর্থন রয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার (২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংস্কার সম্পর্কে আমাদের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। কিছু মহল প্রচার করছে, বিএনপি আগে নির্বাচন, পরে সংস্কার চায়। এটি পুরোপুরি মিথ্যা। আমরা বরাবরই সংস্কারের পক্ষে কথা বলেছি।’
‘আমরা বলেছি, একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের জন্য মিনিমাম যে সংস্কারগুলো করা দরকার সেগুলো করতে হবে। আমরা কখনোই বলিনি আগে নির্বাচন, পরে সংস্কার। এটা ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ চায় বিএনপি: ফখরুল
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার সংস্কার এবং বিচার বিভাগের সংস্কারের ওপর বিএনপির জোর সমর্থন রয়েছে বলে অভিমত দেন দলটির এই মহাসচিব।
সংস্কার সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘তারা জ্ঞানী মানুষ, পণ্ডিত লোক, বিশাল ডিগ্রিধারী। তাদেরকে আমরা শ্রদ্ধা ও সম্মান করি। কিন্তু তারা যদি জনগণের বাইরে গিয়ে কিছু করে আমরা সেটিকে সমর্থন করতে পারব না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রই হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনার শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা। এখানে কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসার পরে স্বৈরাচারী হয়ে উঠলে জনগণই তাদের সরিয়ে দেবে। তাদের পরিস্থিতিও আওয়ামী সরকারের মতো হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব মতামত থাকবে। জনগণ বেছে নেবেন, কোনটি তাদের জন্য উপযোগী। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নিজস্ব নীতিমালা নিয়ে জনগণের কাছে যাবে এবং জনগণ যাদের সমর্থন দেবেন, তারাই সরকার ও পার্লামেন্ট গঠন করবে, এটাই গণতন্ত্র।’
এসময় জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
২৪৬ দিন আগে