এনসিপির সমাবেশ
গোপালগঞ্জে সহিংসতা: আরেক মামলায় আসামি সাড়ে ৫ হাজার
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় আরও একটি মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ হাজার ৪৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক মো. মতিয়ার মোল্লা বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান।
ওসি সাজেদুর রহমান জানান, মামলায় ৪৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় পাঁচ হাজারজনকে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান, গোপালগঞ্জের সাবেক পৌর মেয়র শেখ রকিব হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী লিয়াকত আলী লেকু, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএম মাসুদ রানা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ, সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহিদ মাহামুদ বাপ্পি, সাবেক সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিতীশ রায়, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম কবির, সাধারণ সম্পাদক আলিমুজ্জামান বিটু, মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ আলী আশরাফ, শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নাঈম খান (জিমি), ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে সহিংসতা: আরও একটি মামলা, আসামির সংখ্যা ছাড়াল ১০ হাজার
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কের উন্মুক্ত মঞ্চে সমাবেশ করার জন্য স্থান নির্ধারণ করে এনসিপি। সমাবেশকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন এবং সাধারণ মানুষকে স্বাভাবিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখেন। আসামিরা রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠিত করে। সরকারি কাজে বাধাদান ও সরকারি কর্মচারীদের আক্রমণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে ককটেল নিক্ষেপ করে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের মারধর ও গুরুতর জখম করে।
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যার ঘটনায় মোট ১৩টি মামলা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো করা হয়েছে।
এই মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৩৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে, পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন এবং আহত হন অর্ধশতাধিক।
১২৮ দিন আগে
গোপালগঞ্জে সহিংসতা: আরও একটি মামলা, আসামির সংখ্যা ছাড়াল ১০ হাজার
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) গোপালগঞ্জের সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় কাশিয়ানী থানায় নতুন করে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১টিতে।
কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দীন বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে কাশিয়ানী থানায় এ মামলা করেন।
মামলায় কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম এবং কাশিয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী খোকনসহ ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, আরও ২০০-২৫০ জন অজ্ঞাত নেতাকর্মীকেও আসামি করা হয়।
মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা হয়েছে বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা বাসস্ট্যান্ড ও আশপাশ এলাকার রাস্তাঘাট অবরোধ করা হয়। এতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে নেতাকর্মীরা মিছিল করতে থাকেন। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে এবং এনসিপির সমাবেশকে নস্যাৎ করতে এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়। এতে সাধারণ জনগণের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এদিকে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়ানী থানার এই মামলা নিয়ে গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগ ও হত্যা ঘটনায় মোট ১১টি মামলা করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলার সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় দায়ের হওয়া ওই ১১টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬৮৭ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও প্রায় ৯ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
১৬ জুলাই থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মোট ৩৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক সমাবেশকে ঘিরে সহিংসতার তদন্তে কমিটি গঠন
উল্লেখ্য, ১৬ জুলাই এনসিপির একটি কর্মসূচি শেষে গোপালগঞ্জ থেকে মাদারীপুরে ফেরার পথে দলটির গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত এবং অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনার দিন বিকালে প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান। রাতেই জারি করা হয় কারফিউ। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হলেও রবিবার (২০ জুলাই) রাত ৮টা থেকে কারফিউ শিথিল করা হয়।
১৩২ দিন আগে
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষে নিহত ৩
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক দলের (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও আটজন।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকালের সংঘর্ষে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫) এবং কোটালীপাড়া উপজেলার রমজান কাজী (১৮)।
গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস জানান, তাদের মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।
সংঘর্ষের কারণে উত্তেজনা বাড়ায় জেলায় কারফিউ জারি করেছে সরকার।
পড়ুন: গোপালগঞ্জে রাত ৮টা থেকে কারফিউ জারি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে।
আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ এবং অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের সমর্থকরা লাঠি ও ইটপাটকেল নিয়ে বিভিন্ন রাস্তা ও গলিতে অবস্থান নেয়। এর ফলে র্যাব, সেনাবাহিনী এবং বিজিবি সদস্যরা শহরে তাদের টহল জোরদার করেছে।
এর আগে, গোপালগঞ্জ সদরে স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
১৪১ দিন আগে
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্ধারিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের (বিসিএল) সংঘর্ষ হয়েছে। উত্তেজনা বাড়ায় স্থানীয় প্রশাসন গোপালগঞ্জ সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান ১৪৪ ধারা জারি করেছেন। তবে এর জন্য কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করেননি।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, আরও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সদরে পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর চার প্লাটুন মোতায়েন করা হয়েছে।
ইউএনবির জেলা সংবাদদাতা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ এবং অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের সমর্থকরা লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে। এর ফলে র্যাব, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা শহরে তাদের টহল জোরদার করেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া অব্যাহত থাকায় শহরে চরম উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এর আগে ভোরে জেলায় এনসিপির কর্মসূচি বানচাল করতে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা চালালে পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা কেন্দ্র করে পুলিশের গাড়িতে হামলা
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম রকিবুল হাসান বলেন, ‘এনসিপির জুলাই মাসের পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জের পৌর পার্কে একটি নির্ধারিত পদযাত্রা ও সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাদের কর্মসূচি বানচাল করার জন্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রথমে পুলিশের উপর হামলা চালায় এবং পরে আমার গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।’
ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে, দুপুর ২টার দিকে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সরজিস আলম, ডা. তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা শহরের পৌর পার্ক এলাকায় সমাবেশস্থলে পৌঁছান।
দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়ে তাদের স্বাগত জানান।
১৪১ দিন আগে