রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা
সরকার পতনের পর চাপে বিআইডব্লিউটিএ, প্রকল্পে ধীরগতি
গত বছর সরকার পতনের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে। একদিকে মূল প্রকল্পগুলোতে অগ্রগতি কমে গেছে, অন্যদিকে নানা অভিযোগ ও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযানের কারণে মনোবল হারাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে বিআইডব্লিউটিএ নতুন কোনো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়নি। বর্তমানে চলমান ১২টি প্রকল্পের কাজ খুবই ধীরগতিতে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে নদীপথের নাব্য রক্ষা ও অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রকল্পও রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাদের অভিযোগ, একটি স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে কর্মকর্তাদের আওয়ামী লীগ-সম্পৃক্ত বলে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। তাদের ভাষ্যে, ওই মহলটি অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দাবি করছে। সেটি না পেলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, গোয়েন্দা সংস্থা ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দিচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, এসব অভিযোগ প্রায়ই গণমাধ্যমে যাচাই-বাছাই ছাড়াই সত্য হিসেবে প্রকাশিত হচ্ছে, যার ফলে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভয় ও অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমানে যেসব গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চলমান রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে নদীর নাব্যত রক্ষা ও পুনরুদ্ধারে বড় পরিসরের ড্রেজিং কার্যক্রম। এর আওতায় রয়েছে— জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র ও ঝিনাই নদী, কুড়িগ্রামে ধরলা নদী, দিনাজপুরে টোলাই ও পুনর্ভবা নদী, টাঙ্গাইলে বংশী নদী, গাইবান্ধায় ঘাঘট নদী, গাজীপুরে নাগদা নদী এবং কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় কয়েকটি নদী।
আরও পড়ুন: সরকারি ক্রয় পদ্ধতি ডিজিটাল করতে নতুন প্রকল্প নিচ্ছে সরকার
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ঢাকাকে ঘিরে একটি বৃত্তাকার ওয়াকওয়ে নির্মাণ, নদীর সীমানা নির্ধারণে পিলার স্থাপন এবং ৩৫টি নতুন ড্রেজার সংগ্রহ। যদিও ড্রেজার সংগ্রহ কার্যক্রমও বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, চলমান প্রকল্পগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন ও সময়মতো সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তারা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছেন।
তার দাবি, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে এবং অবৈধ সুবিধা আদায়ে কর্মকর্তাদের আওয়ামী লীগপন্থি হিসেবে চিহ্নিত করে ভয় দেখাচ্ছে। এতে তাদের কাজের গতি ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ সময় তথ্য যাচাই করে গণমাধ্যমকে সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম যদি আগে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাহলে আমরা সঠিক তথ্য দিতে পারব। এতে বিভ্রান্তি কমবে এবং কর্মকর্তাদের মনোবলেও আঘাত আসবে না।’
বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক একেএম আরিফ উদ্দিনও একই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘সঠিক ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা প্রয়োজন, যাতে কর্মীদের মনোবল অটুট থাকে এবং সরকারি প্রকল্পগুলো সময়মতো বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।’
১২৭ দিন আগে