যুদ্ধবিরতি
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে, তবে চুক্তিতে পৌঁছাতে আরও কাজ বাকি: রুবিও
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের বৈঠক ফলপ্রসু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তবে যুদ্ধের অবসানে একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য আরও অনেক কাজ বাকি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ফ্লোরিডার হ্যাল্যারেন্ড বিচের শেল বে ক্লাবে স্থানীয় সময় রবিবার (৩০ নভেম্বর) ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলে ওই আলোচনা।
বৈঠক শেষে রুবিও বলেন, আমরা আজকে যে আলোচনা করেছি, তা শুধু যুদ্ধ বন্ধের জন্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে ইউক্রেনকে কীভাবে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়া যায় তাও ছিল এই বৈঠকের আলোচ্য।… আমি মনে করি, এর ওপর ভিত্তি করেই আজকে আমরা (আলোচনা) শুরু করেছি, কিন্তু আরও অনেক কাজ বাকি রয়েছে।’
রুবিও ছাড়াও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার এই বৈঠকে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন।
এদিকে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মস্কোয় পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।
অন্যদিকে, সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগের নিজ দেশে কিছুটা কোণঠাঁসা হয়ে পড়া ইউক্রেন সরকারকে নিয়ে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেছেন, ‘দুর্নীতি কেলেঙ্কারি নিয়ে ইউক্রেন সরকার কিছুটা সমস্যায় রয়েছে। তা সত্ত্বেও, চুক্তিতে পৌঁছানোর ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।’
সম্প্রতি জ্বালানি খাতে ঠিকাদারদের কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে ১০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয়েছে জেলেনস্কি সরকারের বিরুদ্ধে। এর ফলে নিজ দেশেই চাপের মধ্যে রয়েছে ক্ষমতাসীন নেতারা।
এরই মধ্যে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে তৈরিকৃত যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার পুনঃনিরীক্ষা করেছেন কিয়েভের কুটনীতিকরা। প্রস্তাবিত প্রাথমিক ওই পরিকল্পনায় রাশিয়ার স্বার্থকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে এর সমালোচনা করেন তারা। তবে, রবিবার বৈঠক শুরুর সময় রুবিও ইউক্রেনকে ওই প্রস্তাব পুনর্মূল্যায়নের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।
বৈঠকে রুবিও আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য শুধু শান্তি নয়, বরং যুদ্ধের এমন একটি অবসান নিশ্চিত করা যা ইউক্রেনকে ‘সার্বভৌম, স্বাধীন ও প্রকৃত সমৃদ্ধির পথে’ নিয়ে যাবে।
ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান রুস্তেম উমেরভ যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার জন্য রুবিওর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অথচ, এর আগে তিনিই দাবি করেছিলেন যে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার জন্য ইউক্রেন কৃতজ্ঞ নয়।
বৈঠক শুরুর আগে উমেরভ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কথা শুনছে, তারা আমাদের সমর্থন দিচ্ছে এবং আমাদের পাশে থেকে কাজ করছে।’ তবে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়েছে কি না, বৈঠকের পর সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।
রুবিও জানান, যুদ্ধ শেষ করার চুক্তি ছাড়াও আলোচনায় আরও অন্যান্য বিষয় উঠে আসে। ট্রাম্প বারবার বলেছেন, ইউক্রেন যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও গভীর বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলে, তবে তা ভবিষ্যতে রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে সহায়তা করবে। এ লক্ষ্যে এই বসন্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার মাধ্যমে ইউক্রেনের বিশাল খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্পের খসড়া শান্তি প্রস্তাবে ‘ইউক্রেন উন্নয়ন তহবিল’ তৈরির কথা রয়েছে। এই তহবিল থেকে প্রযুক্তি, ডেটা সেন্টার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ (এআই) দ্রুত বর্ধনশীল শিল্পে বিনিয়োগ করা হবে। প্রস্তাবে ইউক্রেনের প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইন ও মজুতসহ এর জন্য অবকাঠামো পুনঃনির্মাণ, উন্নয়ন, আধুনিকায়ন ও পরিচালনায় যৌথভাবে কাজ করার কথাও বলা হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছে রাশিয়া।
৩ দিন আগে
গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি
গাজায় ৬০ দিনের নতুন যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করতে আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে হামাস।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৭ আগস্ট) কাতার ও মিসর যে প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিল, সেটি গ্রহণ করেছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হামাস।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ সদস্য বাছেম নাইম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, মধ্যস্থতাকারীদের নতুন প্রস্তাব গ্রহণ করেছে হামাস। এর মধ্য দিয়ে গাজার মানুষ সহিংসতা থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়ছে, নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী, ৬০ দিনের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির মধ্যে ২০ জন জীবিত জিম্মির প্রায় অর্ধেককে দুই দফায় মুক্তি দেবে হামাস, বিনিময়ে কারাবন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেবে ইসরায়েল। একইসঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনাও চলবে বলে জানিয়েছে মিসরের একটি সূত্র।
হামাসের সম্মতির বিষয়টি ইসরায়েলি সরকারও অবগত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির দুই কর্মকর্তা। তবে তারা সিএনএনকে বলেন, সব জিম্মির মুক্তি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, গাজার পূর্ণ সামরিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার শর্তেই কোনো চুক্তি যাবে তেল আবিব।
এমন একটি সময়ে এই প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি এল, যখন গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে জিম্মিদের মুক্তির জন্য রোববার সবচেয়ে বড় গণবিক্ষোভের মুখে পড়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এসব বিক্ষোভ হামাসের দর কষাকষির অবস্থানকে আরও শক্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: জেলেনস্কি চাইলে মুহূর্তেই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন: ট্রাম্প
কাতার ও মিসরের নতুন প্রস্তাবটি গতকাল সোমবার ইসরায়েলের কাছে উপস্থাপনের কথা ছিল। তবে ইসরায়েল আর কোনো আংশিক চুক্তিতে আগ্রহী নয় বলে জানান নেতানিয়াহু।
তিনি বলেছেন, যুদ্ধ কেবল তখনই শেষ হবে, যখন হামাস একসঙ্গে সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে, নিরস্ত্র হবে এবং গাজার সামরিকীকরণ শেষ করতে সম্মত হবে। হামাসের সম্মতির খবর প্রকাশ হওয়ার পর এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, ‘হামাস তীব্র চাপে রয়েছে।’
এদিকে, সম্প্রতি সম্পূর্ণ গাজা উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। গাজায় প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে এই অভিযান শুরুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম।
গত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল পুরো গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।
তবে দীর্ঘমেয়াদে দখলে রাখার পরিকল্পনা নেই জানিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা গাজাকে নিজেদের দখলে রাখতে চাই না। আমরা সেখানে একটি নিরাপত্তা বলয় চাই।’
তবে এই পরিকল্পনা দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তাছাড়া, ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য সংকট ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। অনাহারে একের পর এক মৃত্যু ঘটে চলেছে। এ পরিস্থিতি যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ জোরালো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধবিরতি আরও ৯০ দিন বাড়ালেন ট্রাম্প
গত জুলাই মাসে যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর নতুন করে আলোচনা শুরু করতে নতুন এই প্রস্তাব এনেছে কাতার ও মিসর।
সিএনএন বলছে, মিসর ও কাতারের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রস্তাবটি গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের দেওয়া দুই পর্যায়ের কর্মপরিকল্পনার ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে। তার প্রস্তাবের ৯৮ শতাংশই সর্বশেষ প্রস্তাবে বজায় রাখা হয়েছে। ইসরায়েল ওই প্রস্তাবে আগেই সম্মতি দিয়েছিল। মধ্যস্থতাকারীরা হামাসকে প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে চাপ দিয়েছেন।
হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, প্রস্তাবে ১০ জন জীবিত জিম্মি এবং ১৮ জনের মরদেহ হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে। এর বিনিময়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১৪০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি এবং ১৫ বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত ৬০ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। এ ছাড়া সব অপ্রাপ্তবয়স্ক ও নারী বন্দিকেও মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
আলোচনা সংশ্লিষ্ট এক কূটনীতিক বলেছেন, পরিস্থিতির উন্নয়ন বিবেচনায় উইটকফকে কায়রোয় আসার আমন্ত্রণ জানাবে মধ্যস্থতাকারীরা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় অভিযান শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত দুই দফা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি-মুক্তির চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
১০৭ দিন আগে
রাশিয়াকে ভুখণ্ড দিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত, ট্রাম্পের কূটনীতিতে পূর্ব ইউক্রেনে আতঙ্ক
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে যেকোনো চুক্তিতে যেতে উভয় পক্ষকেই কিছু ভূখণ্ড ছাড়তে হতে পারে ইঙ্গিত দিয়েছে ওয়াশিংটন। এতে করে এক অজানা ভয় জেঁকে বসেছে ইউক্রেনীয়দের মনে।
আগামী শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কা সম্মেলনে ইউক্রেন ভূখণ্ড নিয়ে সম্ভাব্য চুক্তির আলাপ কী পরিণতি নিয়ে আসবে, সেই শঙ্কায় দিন কাটছে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার বাসিন্দাদের।
তেমনই একটি স্থান স্লোভিয়ানস্ক। ছোট্ট লবণাক্ত হ্রদের তীরে অবস্থিত এই শহরটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক অঞ্চলে অবস্থিত।
স্লোভিয়ানস্ক থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরেই রাশিয়া-ইউক্রেনের সম্মুখ যুদ্ধ চলছে। তা সত্ত্বেও এই জায়গাটুকু যুদ্ধের ভয়াহতা থেকে কিছুটা শান্তি এনে দেয়। তবে আলাস্কায় আদৌ কোনো চুক্তি হবে কিনা, হলেওে তার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান স্থানীয় বাসিন্দারা।
লবণাক্ত হ্রদে নামতে নামতে স্থানীয় সাংবাদিক মিখাইলো সিএনএনকে বলেন, ‘মনে হয় আমি যেন এই বাস্তবতা থেকে ভেসে দূরে চলে যাচ্ছি!’
তবে এই শান্ত সৈকতও তার মনে একটি আতঙ্ক জন্ম দিয়েছে। কারণ ডনবাসের যেসব এলাকা এখনো রাশিয়া নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি, সেসব এলাকার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে ক্রেমলিন। এতে স্লোভিয়ানস্কসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকা হুট করেই মস্কোর ভুখণ্ডে পরিণত হতে পারে।
মিখাইলো বলেন, ‘আমরা অনেক বন্ধুই এখানেই থাকতে চান, তবে আমাদের হয়তো এই জায়গাটি ছাড়তে হবে।’ তাই ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তড়িঘড়ি করে যে চুক্তি করতে চাইছেন ট্রাম্প, আপাত দৃষ্টিতে তা রাশিয়ার জন্য লাভজনক বলে মনে হলেও স্থানীয়দের মতামতের কারণে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যেতে পারে। এতে চুক্তিটির বাস্তবায়ন ব্যর্থ হতে পারে বলে মনে করেন মিখাইলো।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে পুতিনকে সময় বেঁধে দিলেন ট্রাম্প
ট্রাম্পের প্রতি হতাশা নিয়ে এই যুবক আরও বলেন, একের পর পর এক ইউক্রেনীয় যে প্রাণ হারাচ্ছেন তা নিয়ে ট্রাম্পের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। বরং তিনি কাঁদামাটি থেকে রুশ প্রেসিডেন্টকে টেনে তুলে বলছেন, ‘পুতিন আমি তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই। আমি তোমাকে পছন্দ করি।’
দুই বছর আগে ল্যান্ডমাইনে পা দেওয়ায় আহত ল্যুডমিলারের শারীরিক কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করে এই লবণাক্ত হ্রদ। তিনি বলেন, ‘তারা যে এসব কূটনীতির কথা বলে, সবই আসলে লোক দেখানো। তারা চিন্তা করে এক, বলে আরেক, আর করে অন্যকিছু। রাজনীতি সবসময়ই এমন।’
আলাস্কা সম্মেলনে দোনেৎস্ক অঞ্চল নিয়ে যে প্রস্তাব দেওয়া দেওয়া হয়েছে, তা পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই প্রত্যাখ্যান করেছে কিয়েভ। সেই সঙ্গে এই চুক্তির খবর যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের জীবনকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
১১৪ দিন আগে
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত অস্ত্র ত্যাগ করবে না হামাস
একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত অস্ত্র ত্যাগ না করার ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এ ঘোষণার মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান আলোচনায় ইসরায়েলের একটি প্রধান দাবি প্রত্যাখ্যান করল সংগঠনটি।
স্থানীয় সময় শনিবার (২ আগস্ট) এ ঘোষণা দেয় হামাস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হামাস এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
এর আগে উইটকফ বলেছিলেন, হামাস অস্ত্র ত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তবে তা সত্য নয় বলে দাবি হামাসের।
এদিকে, ঘোষণাটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন গাজা যুদ্ধ বন্ধ ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা স্থবির হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় চলমান ওই আলোচনায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা ছিল।
বিবিসি বলেছে, হামাস অস্ত্রত্যাগ না করলে কোনো চুক্তিতে আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েল। অন্যদিকে হামাস বলছে, জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন, পুরোপুরি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সশস্ত্র প্রতিরোধের অধিকার ত্যাগ করা হবে না।
গত কয়েকদিনে বেশ কিছু আরব সরকারও হামাসকে নিরস্ত্র হয়ে গাজার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে আহ্বান জানিয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়ায়াল জামির সতর্ক করে বলেন, দ্রুত জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে আলোচনা ব্যর্থ হলে গাজায় যুদ্ধের কোনো বিরতি থাকবে না।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক’ সাড়া দেওয়ার দাবি হামাসের
এদিকে, ফ্রান্স ও কানাডাসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ আগামী সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, ইসরায়েল সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ না করে, তবে তারাও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।
বর্তমানে গাজায় চলমান দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ পর্যন্ত গাজায় অনাহারে অন্তত ১৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে ৯৩টি শিশু।
এমন পরিস্থিতিতে তেল আবিব সফরে রয়েছেন উইটকফ। হামাসের হাতে জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
উইটকফ বলেন, সংঘাতের অবসান ও সব জিম্মিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনাকে কেন্দ্র করেই শান্তি প্রচেষ্টা হওয়া উচিত।
সফরের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার তিনি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন এবং শুক্রবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে এক বহুল সমালোচিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: অগ্রগতি ছাড়াই শেষ ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের আলোচনা
জাতিসংঘের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মে মাসের থেকে এ পর্যন্ত খাবার নিতে গিয়ে অন্তত ১ হাজার ৩৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
নিহতদের অধিকাংশই ইসরায়েলি ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি তাদের।
তবে ইসরায়েলে দাবি, এসব বিতরণকেন্দ্রের আশেপাশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে হামাস। ইসরায়েলি সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় না।
১২৩ দিন আগে
যুদ্ধবিরতি না হলে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য: কিয়ার স্টারমার
ইসরায়েল যদি দ্বিরাষ্ট্রীয় ভিত্তিতে সমাধান ও যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হয়, তবে আগামী সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ থেকে মন্ত্রিসভার সদস্যদের ডেকেও পাঠিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর যুক্তরাজ্যও এ সিদ্ধান্ত জানাল।
এর আগে স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্টারমার। যদিও বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তবু ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি নিজে এমন অবস্থান না নিলেও যুক্তরাজ্য এ বিষয়ে অবস্থান নিলে তার আপত্তি নেই।
দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, স্টারমার মন্ত্রিসভায় বলেছেন, গাজার পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে এবং দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের সম্ভাবনাও ম্লান হয়ে আসছে। তাই এখনই যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘শেষপর্যন্ত এই মানবিক সংকটের অবসান ঘটানোর একমাত্র উপায় হলো একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। আমাদের লক্ষ্য একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি কার্যকর ও সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু এই মুহূর্তে সেই লক্ষ্য অত্যন্ত চাপের মুখে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: অবশেষে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া
তিনি জানান, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর এই সমাধান এখন হুমকির মুখে থাকায় যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) মতে, গাজায় দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। ২২ মাসের যুদ্ধে কয়েক দফায় উপত্যকাটিতে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে ছয় সপ্তাহ এবং চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত গাজায় ত্রাণ প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ রেখেছিল ইসরায়েল। এতে গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। অনাহারে মৃত্যু ছাড়িয়েছে শতাধিক, যার বেশিরভাগই শিশু।
যদিও গাজায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির জন্য তাদের ভূমিকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গাজায় পুনরায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিলেও ইসরায়েল কেবল অর্ধেক সহায়তা প্রবেশ করতে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।
পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি হওয়ায় দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান নিয়ে পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে এসেছে যুক্তরাজ্য সরকার। তবে কিয়ার স্টারমারের এই সিদ্ধান্তকে ‘হামাসের দানবীয় সন্ত্রাসবাদের’ প্রতি পুরস্কার বলে আখ্যায়িত করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আজ ইসরায়েলের সীমান্তে একটি জিহাদি রাষ্ট্র গড়া হলে, কাল সেটি আপনাদের জন্যেই হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।’
অবশ্য ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি হামাস প্রসঙ্গেও নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে যুক্তরাজ্য। তারা বলেছে, হামাসকে অবশ্যই সব জিম্মিকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে এবং গাজার শাসনে তারা কোনো ভূমিকা রাখবে না— এই শর্তগুলো মানতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে আমরা মূল্যায়ন করব— পক্ষগুলো এই শর্তগুলো কতটা পূরণ করেছে। তবে আমাদের সিদ্ধান্তে কারও ভেটো থাকা উচিত নয়।’
আরও পড়ুন: ত্রাণ প্রবেশে সীমিত যুদ্ধবিরতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ফিলিস্তিনিরা
জাতিসংঘে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে গাজার পরিস্থিতিতে এর প্রভাব পড়বে বলে আশা করছে যুক্তরাজ্য।
তিনি আরও বলেন, ১৯১৭ সালে ফিলিস্তিনে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে প্রথম সমর্থন দেওয়া দেশ ছিল যুক্তরাজ্য। তাই একটি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে তাদের একটি বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে।
১২৭ দিন আগে
অবশেষে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া
সীমান্ত নিয়ে বিরোধের জেরে চলমান সংঘর্ষের পর নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। বিষয়টি জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়োর ইব্রাহিম। সংঘর্ষের পাঁচদিন পর অবশেষে সমাধানে এসেছে প্রতিবেশী দেশদুটি।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে প্রতিবেশী দেশদুটির ছয়টি সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি ও রকেট হামলার মধ্য দিয়ে এই সহিংসতা শুরু হয়। সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৩৫ জন নিহত এবং ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সংঘর্ষের পাঁচ দিন পর যুক্তরাষ্টের চলমান চাপের কারণে সোমবার পুত্রজায়ায় ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে যুদ্ধ থামাতে সম্মত হন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত ও থাইল্যান্ডের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী ফুমথম ওয়েচায়াচাই।
এর আগে, শনিবার (২৬ জুলাই) নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সরকারপ্রধানকে তিনি বলেছেন যে সংঘাত না থামালে তাদের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনায় এগোবে না ওয়াশিংটন। এরপর দুই দেশই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত সংঘর্ষের নেপথ্যে কী?
সোমবারের বৈঠকের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উভয় পক্ষই খোলামেলা আলোচনার পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে একটি অভিন্ন বোঝাপড়ায় পৌঁছেছে।’ উত্তেজনা প্রশমন এবং শান্তি ও নিরাপত্তা পুনর্প্রতিষ্ঠার পথে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম ধাপ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের জন্য একটি বিস্তারিত কার্যপদ্ধতি প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা যায়।
এ সময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শিগগিরই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন। তিনি বলেন, ‘থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা পুনর্গঠনের এখনই সময়।’
এ ছাড়া এই সিদ্ধান্ত শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য থাইল্যান্ডের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন ফুমথম।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি চাপের কারণেই এই যুদ্ধবিরতি হওয়ায় সোমবার এক্সে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি ও শান্তি স্বাপনে সম্মত হয়েছে। আমি শান্তির প্রেসিডেন্ট হয়ে গর্বিত।’
যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বৈঠক আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও-ও। তিনি বলেন, তৎক্ষণাৎ সংঘর্ষ বন্ধে তিনি ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড সরকার এই সংঘাত অবসানের জন্য তাদের অঙ্গীকার পূর্ণভাবে রক্ষা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এরপর হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট যুদ্ধবিরতির খবর এক্সে পোস্ট করে লেখেন, ‘এই শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দিন!’
আরও পড়ুন: মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই করতে যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন মোদি
থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বহু দশক ধরেই বিরোধপূর্ণ। এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ছোট একটি সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির মধ্য দিয়ে সংঘাতের সূত্রপাত হয়।
সে সময় এক কম্বোডিয়ান সেনা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। শুরুতে দুপক্ষই দাবি করে যে তারা আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে। এ নিয়ে তখন উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপর একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর এই সামরিক উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
পরে দুই দেশ উত্তেজনা হ্রাসে একমত হয়। তবে সীমান্তে কড়াকড়ি, নিষেধাজ্ঞা ও বাকযুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
১২৯ দিন আগে
‘গাজায় বোমার চেয়ে বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে ক্ষুধা’
ইসরায়েলি আগ্রাসনে ক্ষুধার রাজ্যে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকায় খাবার না পেয়ে আরও অন্তত ১০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে মধ্য গাজা থেকে সাংবাদিক তারেক আবু আজ্জুম বলেছেন, ‘এখানে ক্ষুধা বোমার চেয়ে বিধ্বংসী হয়ে দাড়িঁয়েছে। বাসিন্দারা এখন পর্যাপ্ত খাবারের আশা করেন না। তারা যেকোনো খাদ্যবস্তুর জন্যই আশায় বুক বাঁধছেন।’
কাতারভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এই প্রতিবেদক বলেন, ‘ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সৃষ্ট দুর্ভিক্ষের ফলে এখানকার মানুষ ধীরে ধীরে যন্ত্রণাদায়ক পাশবিক মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়ছে।’
২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১১১ জন ফিলিস্তিনি খাদ্য সংকটে মারা গেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে বলে জানিয়েছেন গাজার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
বুধবার (২৩ জুলাই) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ ত্রাণপ্রত্যাশীসহ অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য মতে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২১টি শিশু অপুষ্টিতে ভুগে মারা গেছে। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত প্রায় ৮০ দিন তারা ত্রাণ সরবরাহ করতে পারেনি। এর ফলেই অপুষ্টিতে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে। সংস্থাটি জানায়, গাজায় খাদ্য সরবরাহ পুনরায় চালু হলেও তা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়।
মার্সি কর্পস, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল, রিফিউজি ইন্টারন্যাশনালসহ ১১১টি মানবিক সংস্থা এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘ক্ষুধাস্ত্র’ ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে বলা হয়, উপত্যকায় ‘গণঅনাহার’ ছড়িয়ে পড়ছে। অথচ হাজার হাজার টন খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসাসামগ্রী গাজা সীমান্তের কাছেই ফেলে রাখা হয়েছে। সেখানে সাহায্য সংস্থাগুলোর কার্যক্রমকেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।
পড়ুন: ‘ফিলিস্তিনপন্থি’ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
গত মার্চে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ২৬ মে থেকে ইসরায়েলের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচটি) নামে নতুন ত্রাণ বিতরণ কাঠামো চালু হয়েছে।
গাজায় চলমান চরম মানবিক সংকটের মধ্যে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজায় খাদ্য সরবরাহ কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে, যেখানে সীমান্তে ত্রাণবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকলেও তা বিতরণের সুযোগ নেই।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক রস স্মিথ বলেন, ‘মে মাস থেকে ত্রাণ সাহায্য বিতরণকেন্দ্রে গুলিতে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ডব্লিউএইচওর ফিলিস্তিন প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন বলেন, ‘ত্রাণ নিতে আসা ব্যক্তিদের ওপর বারবার হামলার ফলে গাজায় অবশিষ্ট কয়েকটি হাসপাতাল ‘বৃহৎ ট্রমা ওয়ার্ডে’ পরিণত হয়েছে।
তিনি জানান, খাদ্যাভাব এতটাই প্রকট যে শিক্ষক, সাংবাদিক, এমনকি স্বাস্থ্যকর্মীরাও স্বাভাবিক কাজ করতে পারছেন না।
গাজার আল-শিফা হাসপাতালের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী চিকিৎসক নূর শরাফ বলেন, ‘মানুষ কয়েকদিন ধরে কিছু খেতে পায়নি। অনেক সময় ডাক্তাররাও না খেয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।’
এদিকে গাজা সিটিসহ বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র হামলা অব্যাহত। সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় আরও দুই ফিলিস্তিনি সাংবাদিক— ফটোজার্নালিস্ট তামের আল-জা’আনিন ও সম্পাদক ওয়ালা আল-জাবারিকে হত্যা করা হয়েছে।
এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে ২৩১-এ দাঁড়িয়েছে।
এর মধ্যে আল-জা’আনিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফটোজার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করতেন এবং ওয়ালা আল-জাবারি বিভিন্ন সংবাদপত্রে সম্পাদকীয়র দায়িত্বে ছিলেন।
পড়ুন: খাবার নিতে গিয়ে নিহত আরও ৯৩ ফিলিস্তিনি, ‘বর্বরতা’ বন্ধের আহ্বান পোপের
এমন পরিস্থিতিতে, গাজা যুদ্ধবিরতি ও বন্দিমুক্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ইউরোপের পথে রওনা হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ও বন্দিমুক্তি আলোচনার বিষয়ে আলোচনা করবেন।
কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি ও অন্তত ৫০ বন্দির মুক্তি নিয়ে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিচ্ছে। তবে মার্চে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভেঙে দেওয়ার পর থেকে এ নিয়ে কোনো কার্যকর অগ্রগতি হয়নি।
১৩৩ দিন আগে
গাজায় সেনা রাখতে অনড় ইসরায়েল, ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কায় যুদ্ধবিরতি
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অগ্রগতির মধ্যেই গাজা উপত্যকার দক্ষিণ করিডরে সৈন্য রাখার শর্ত দিয়েছে ইসরায়েল। এই প্রস্তাব যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌছানোর পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ জুলাই) মার্কিন, ইসরায়েলি ও কাতারি শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি আলোচনায় এই সেনা মোতায়েনের প্রসঙ্গটি উঠে আসে।
সম্প্রতি প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ৬০ দিন যুদ্ধ স্থগিত রাখার কথা রয়েছে। এই সময়ে কিছু জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং গাজায় আরও ত্রাণ প্রবেশ করবে।
তবে এরই মধ্যে ইসরায়েল নতুন শর্ত জুড়ে দেওয়ায় এই চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলোচনা-সংশ্লিষ্ট এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, ৬০ দিনের সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির সময় ইসরায়েল তাদের সেনা মোতায়েন রাখবে। বিশেষত ইসরায়েলের কাছে ‘মোরাগ করিডর’ হিসেবে পরিচিত পূর্ব-পশ্চিম করিডরে সেনা মোতায়েনের কথা জানিয়েছেন তিনি।
মূলত, মোরাগ করিডরে উপস্থিতি বজায় রাখার মাধ্যমে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনিকে গাজার দক্ষিণে সীমান্তঘেঁষা একটি সংকীর্ণ এলাকায় ঠেলে নিয়ে যেতে চায় ইসরায়েল, যেটিকে তারা ‘মানবিক শহর’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তাছাড়া অনেকে মনে করছেন, এই পদক্ষেপ আসলে গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার পূর্বাভাস, যেটি এই ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনারই অংশ।
বুধবার (৯ জুলাই) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এখনও আলোচনার প্রধান অন্তরায়। তবে তারা মোরাগ করিডরের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেনি। অবশ্য গাজা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার না করলে কোনো চুক্তি না করার কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে হামাস।
আরও পড়ুন: অগ্রগতি ছাড়াই শেষ ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের আলোচনা
এর আগেও ইসরায়েল ভিন্ন আরেকটি করিডরে সৈন্য রাখার শর্ত দেওয়ায় কয়েক মাস ধরে যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি আটকে ছিল। তবে মোরাগ করিডরের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়।
চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরে যান নেতানিয়াহু। সেখানে যুদ্ধবিরতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। হামাস ও ইসরায়েল উভয় পক্ষকে গাজায় যুদ্ধ থামাতে চাপ দিয়ে আসছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার মার্কিন, ইসরায়েলি ও কাতারি শীর্ষ কর্মকর্তাদের আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয় ছিল গাজায় সেনা রাখা।
পরে বুধবার এই আলোচনা-সংশ্লিষ্ট এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। আমরা জিম্মিদের ফিরে পেতে চাই। আর আমার মনে হচ্ছে, আমরা সেই লক্ষ্য থেকে খুব একটা দূরে নেই।’
গাজা ভাগ করা তিন করিডরের একটি মোরাগ
চলমান আগ্রাসনে গাজার বেশিরভাগ ভূমি দখলে নিয়েছে ইসরায়েল। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি পূর্ব-পশ্চিম করিডর, যেগুলো গাজা উপত্যকাকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মোরাগ করিডরের দখল নেয় ইসরায়েল। ২০০৫ সালে গাজা ছেড়ে যাওয়ার সময়কার বসতি ‘মোরাগের’ নামে এটির নামকরণ করা হয়েছে।
গাজার দক্ষিণে রাফাহ শহর ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খান ইউনিসের মাঝখানে অবস্থিত এই করিডরটি প্রায় ১২ কিলোমিটার বা ৭ মাইল দীর্ঘ, যা ইসরায়েল সীমান্ত থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এবং প্রস্থে প্রায় ১ কিলোমিটার বা অর্ধ মাইল।
নেতানিয়াহু মোরাগ করিডরকে ‘দ্বিতীয় ফিলাডেলফি’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। ফিলাডেলফি গাজার সঙ্গে মিসরের সীমান্ত বরাবর আরেকটি করিডর।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও গাজায় ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েল বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছে, সীমান্তপারের অস্ত্র চোরাচালান ঠেকাতে ফিলাডেলফি করিডরে তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার। কিন্তু তাদের সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র গাজায় প্রবেশ করার বিষয়টি বরাবর অস্বীকার করেছে মিসর।
গত মার্চে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার পর ইসরায়েল ফের নেতজারিম করিডরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। গাজার উত্তরের এক-তৃতীয়াংশ এলাকাকে বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে ওই করিডরটি। এই স্থান দিয়ে এর আগেও উত্তর গাজায় ফিলিস্তিনিদের ফিরে যাওয়া ঠেকিয়েছিল ইসরায়েল।
তবে নেতজারিম ও ফিলাডেলফি করিডরে ইসরায়েলি সেনা উপস্থিতির বিষয়টি বর্তমানে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কতটা প্রভাব ফেলছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি।
রাফাহকে ‘মানবিক শহর’ বানানোর পরিকল্পনা
মোরাগ করিডরে ইসরায়েলি সেনারা অবস্থান নেওয়ার ফলে রাফাহ শহর গাজার বাকি অংশ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলের আগ্রাসনে কয়েক হাজার মানুষের শহর রাফাহ এখন প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত। শহরটি এরই মধ্যে ইসরায়েলি উচ্ছেদ আদেশে জনশূন্য হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই রাফাহকে হামাসমুক্ত ‘নিরাপদ অঞ্চল’ বা ‘নিরস্ত্র এলাকা’ বানানোর দাবি তুলেছে ইসরায়েলে। সেখানে তারা লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে নিতে চায়, যার নাম দিয়েছে মানবিক শহর।
গাজার বেশিরভাগ মানুষ যুদ্ধের সময় বারবার নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। ছোট ছোট এলাকায় ঠাসাঠাসি করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, দক্ষিণে সরানোর এই নতুন পরিকল্পনা মূলত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতিরই আরেকটি ধাপ।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা–সম্পর্কিত দুটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ গবেষক কোবি মাইকেল জানান, মোরাগ করিডরটিকে ব্যবহার করা হবে এক ধরনের ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষার এলাকা’ হিসেবে। যাদের দক্ষিণে সরানো হবে, তাদের মধ্যে হামাস যোদ্ধারা আছে কি না—তা শনাক্তের জন্য এটি ব্যবহার করা হবে। এতে ইসরায়েলি বাহিনী আরও উত্তরে অভিযানে সুবিধা পাবে এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষদের সেখানে সংঘর্ষের মুখে পড়তে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: খাবারের অভাবে হাড্ডি-চর্মসার হয়ে গেছে গাজার শিশুরা: চিকিৎসক
মাইকেল আরও বলেন, ‘এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ইসরায়েল হামাসের ওপর চাপ আরও বাড়াতে পারবে এবং সম্ভব হলে উত্তর গাজায় হামাসকে পরাজিতও করতে পারবে, যেখানে গেরিলা যুদ্ধ এখনও ইসরায়েলি সেনাদের ভোগাচ্ছে।’
এর মাধ্যমে যুদ্ধ শেষের পথ তৈরি হতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। যদিও ইসরায়েল বলছে, হামাস ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ থামবে না।
তবে ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণে সরানোর এই পরিকল্পনা আসলে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার পথ প্রশস্ত করছে বলে মনে করেছেন এই প্রস্তাবের সমালোচকরা। তাদের আশঙ্কা, এর মাধ্যমে গাজায় ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি দখল প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হবে—যেটি নেতানিয়াহুর ডানপন্থী জোটের প্রধান এজেন্ডাগুলোর একটি।
অবশ্য এই স্থানান্তর জোরপূর্বক হবে না বলে দাবি করেছেন নেতিনিয়াহু। তবে যে এলাকায় যুদ্ধের ভয়াবহতা চরমে, সেখানে এত মানুষকে জড়ো করলে অবকাঠামোহীন দুর্বিষহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করছেন ফিলিস্তিনিরা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তাছাড়া, এতে ফিলিস্তিনিরা গাজা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হবেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের ফিলিস্তিন-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মাইকেল মিলস্টেইন মোরাগ করিডর ব্যবহার করে দক্ষিণে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের পরিকল্পনাকে একটি ‘উদ্ভট কল্পনা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এই ইসরায়েলি শর্তে বর্তমান আলোচনাও ভেঙে পড়তে পারে। কারণ এতে হামাস নিশ্চিত হবে যে, যুদ্ধবিরতি শেষ হলেও ইসরায়েল সেনা সরাবে না, যা হামাস কোনোভাবেই মেনে নেবে না।’
তিনি বলেন, ‘হামাসের জন্য এটি একেবারেই অসম্ভব শর্ত। যদি এটাই শর্ত হয়, তাহলে আমি হামাসের পক্ষ থেকে সম্মতি দেখতে পাচ্ছি না।’
১৪৭ দিন আগে
অগ্রগতি ছাড়াই শেষ ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের আলোচনা
কোনো অগ্রগতি ছাড়াই ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার সর্বশেষ পরোক্ষ যুদ্ধবিরতি আলোচনা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলোচনা সংশ্লিষ্ট এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা। স্থানীয় সময় রবিবার (৬ জুলাই) কাতারের দোহায় দুটি আলাদা ভবনে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা জানান, আলোচনা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে দুপক্ষের মধ্যে বার্তা ও ব্যাখ্যা বিনিময় হয়, তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, আলোচনার পরবর্তী ধাপ সোমবার (৭ জুলাই) আবার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। দুপক্ষের মধ্যকার বাধাগুলো দূর করে সমঝোতার পথ খুঁজতে মধ্যস্থতাকারীরা উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করবেন।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে দুই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বক্তব্য জানিয়েছে বিবিসি। এতে বলা হয়, ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন—হামাসের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল ‘যথেষ্ট ক্ষমতাসম্পন্ন’ ছিল না, কারণ তাদের কাছে ‘বাস্তবিক কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা’ ছিল না।
এমন এক সময় এ আলোচনা চলছে, যখন ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও গাজায় ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার বৈঠকটি যুদ্ধবিরতি ও গাজায় আটক অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে অগ্রগতির ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি আরও জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অর্জনের জন্য তিনি তার আলোচকদের ‘পরিষ্কার নির্দেশনা’ দিয়েছেন, যা ইসরায়েলের পক্ষে গ্রহণযোগ্য।
এদিকে, সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক মনোভাব’ দেখানোর দাবি করেছে হামাস। তবে এখনও দুপক্ষের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, যা দূর না হলে চুক্তি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে তারা।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য হামাসের অন্যতম প্রধান শর্ত হলো—যেকোনো সমঝোতার শেষে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা। এ অবস্থানে তারা এখনও অনড়।
তবে নেতানিয়াহুর সরকার এর আগেও এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এখনও ইসরায়েলি অবস্থানে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রে রওনা হওয়ার আগে নেতানিয়াহু বলেন, তিনি এখনো তিনটি লক্ষ্যেই অটল—‘সব জিম্মি, জীবিত ও মৃতদের মুক্তি ও প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা; হামাসের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করে গাজা থেকে উৎখাত করা; এবং গাজা যেন আর কখনোই ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয়, তা নিশ্চিত করা।’
কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের জন্য এই পরোক্ষ আলোচনা সহজ হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত মার্চের আগের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে এ ধরনের নানা উদ্যোগ একই জায়গায় এসে আটকে গেছে।
সেই সময় থেকে ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র সামরিক অভিযান শুরু করেছে। পাশাপাশি গাজায় ত্রাণ প্রবেশের ওপর ১১ সপ্তাহের অবরোধও আরোপ করে, যা কয়েক সপ্তাহ আগে আংশিকভাবে শিথিল করা হয়।
ইসরায়েলি সরকার বলছে, এসব পদক্ষেপ হামাসকে আরও দুর্বল করা এবং তাদেরকে আলোচনায় বসতে ও জিম্মিদের মুক্তি দিতে বাধ্য করতেই নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক’ সাড়া দেওয়ার দাবি হামাসের
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা হামাসের ১৩০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে এবং বেশ কয়েকজন হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।
তবে গাজায় বেসামরিক প্রাণহানির সংখ্যা দ্রুতই বাড়ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় রবিবার অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হলো— কাতারে চলমান এই আলোচনা কি সত্যিই দুপক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে? আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কি নেতানিয়াহুকে রাজি করাতে পারবেন যে, এই যুদ্ধের ইতি টানতে হবে?
ইসরায়েলের অনেকেই মনে করছেন, অবশিষ্ট জিম্মিদের বাঁচাতে যুদ্ধ বন্ধের মূল্য দেওয়ার এখনই সময়।
শনিবার রাতেও তারা জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছিল। এ সময় দ্রুত চুক্তি করে জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানান তারা।
১৫০ দিন আগে
যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও গাজায় ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলমান রয়েছে। শুক্রবার (৬ জুলাই) গাজার স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি বিষয়ে আলোচনা করতে শিগগিরই হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই পরিস্থিতিতে এসব হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
গাজার শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সেলমিয়া জানান, শহরের দুটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২০ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের মুওয়াসি এলাকায় বিমান হামলায় আরও ১৮ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এসব নির্দিষ্ট হামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা গাজাজুড়ে মোট ১৩০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
তাদের দাবি, হামাসের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, অস্ত্র ভাণ্ডার, রকেট লাঞ্চার ও অন্যান্য সামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করে এসব হামলা চালানো হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত করেছে, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: টেক্সাসে বন্যায় নিহত বেড়ে অর্ধশত, ২৭ কিশোরীসহ নিখোঁজ বহু
যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অগ্রগতি
গাজায় ক্রমবর্ধমান হতাহতের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা জোরালো হচ্ছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, রবিবার (৭ জুলাই) কাতারে প্রতিনিধিদল পাঠাবে তারা। সেখানে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে, এর মধ্যেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, চুক্তিতে হামাসের পরিবর্তনের প্রস্তাবগুলো মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
কাতারে আলোচনা শুরুর আগেই সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন নেতানিয়াহু। এর আগেই কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে, হামাস জানিয়েছে, প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির পর পুরোপুরি যুদ্ধ বন্ধ ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা সরে যাওয়ার নিশ্চয়তা ছাড়া চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না।
আরও পড়ুন: সংঘাতের পর প্রথমবার প্রকাশ্যে খামেনি
এর আগের আলোচনাগুলো যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে হামাস ও ইসরায়েলের মতবিরোধে ভেস্তে গেয়েছিল। নেতানিয়াহু যুদ্ধের প্রথম থেকেই বলে আসছে, ‘হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস না করে যুদ্ধ থামানো হবে না।’
১৫১ দিন আগে