নদী
নিখোঁজের ৩ দিন পর শ্রমিকের লাশ ভেসে উঠল নদীতে
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর পাথর কোয়ারিতে নৌকা ডুবে নিখোঁজের তিনদিন পর ভেসে উঠেছে পাথর শ্রমিকের লাশ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভোর ৬টার দিকে স্থানীয়রা লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দিলে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত জুয়েল আহমেদ দিলু (২৭) উপজেলার রূপচেং গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে।
আরও পড়ুন: জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
জানা যায়, তিনি নৌকায় বালু-পাথর লোড-আনলোডের কাজ করতেন। গত ২৫ এপ্রিল শ্রীপুর পাথর কোয়ারিতে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হন তিনি।
জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন ‘২৫ এপ্রিল শ্রীপুর কোয়ারিতে নৌকা ডুবে জুয়েল নিখোঁজ হয়েছিলেন। আজ (সোমবার) ভোরে ওই এলাকায়ই তার লাশ ভেসে উঠে। পরে আমরা গিয়ে লাশটি উদ্ধার করি।’
২২১ দিন আগে
মায়ের সঙ্গে নদীতে শাক ধুতে গিয়ে লাশ হলো শিশু
মায়ের সঙ্গে নড়াইলে লোহাগড়া উপজেলায় নবগঙ্গা নদীর পানিতে শাক ধুতে গিয়ে ফাতেমা খানম (৪) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে ওই গ্রামের রানা শিকদারের মেয়ে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ফাতেমা খানমের চাচা আব্দুল্লাহ শিকদার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, ফাতেমা তার মায়ের সঙ্গে বাড়ির পাশে নবগঙ্গা নদীতে শাক ধুতে যায়। এ সময় তার মায়ের অগোচরে সে নদীর পানিতে ডুবে যায়। পরে তাকে না পেয়ে স্থানীয়রা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলের কিছুটা দূর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: যশোরে ফুচকা খেয়ে অসুস্থ ২ শতাধিক, বিক্রেতা গ্রেপ্তার
লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল হাসনাত বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আগেই শিশুটি মারা গিয়েছিল।’
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘আইনগত প্রক্রিয়া শেষে শিশুটির লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
২২৬ দিন আগে
নদীতে নেমে নিখোঁজ দুই বন্ধুর লাশ উদ্ধার
নরসিংদীতে বন্ধুদের নিয়ে নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজের এক দিনের ব্যবধানে দুই যুবকেরই লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) আসাদুজ্জামান আসাদের লাশ এবং আজ (শনিবার) নিহাদ ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়।
গতকাল (শুক্রবার) উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজীরচর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে গোসল করতে নামেন চার বন্ধু। এরপর দুজন তীরে উঠে আসতে পারলেও অন্য দুজন তলিয়ে যান।
আসাদ সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার নাইমুড়ি এলাকার কামরুল হাসানের ছেলে এবং নিহাদ ভোলার সদর উপজেলার কোরালিয়া এলাকার শাহজাহানের ছেলে।
দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা দুজন হলেন— রেজাউল তানভীর ও সামির খান। তারা পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজীরচর এলাকার প্রাণ-আরএফএল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে চাকরি করেন।
সামির ও নিহাদ ঢাকা থেকে তাদের কাছে ঘুরতে এসেছিলেন। ছোটবেলায় তারা চারজন রাজধানীর পল্লবী এলাকায় একসঙ্গে ছিলেন বলে জানিয়েছেন।
রেজাউল ও সামির জানান, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চারজন শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে ইফতার করতে যান। ৪টার দিকে তারা নদীর পানিতে গোসল করতে নামেন। একপর্যায়ে স্রোতের টানে একজন তলিয়ে যাচ্ছে দেখে আরেক বন্ধু হাত বাড়িয়ে দেন। এ সময় দুজনই তলিয়ে যান। পরে অন্য দুজন সাঁতার না জানায় দ্রুত তীরে উঠে স্থানীয় লোকজনকে ঘটনাটি জানান। খবর পেয়ে বিকাল ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে সীমানাপ্রাচীর ধসে ২ শ্রমিক নিহত
নদীতে নেমে তারা নিহাদের লাশ উদ্ধার করেন। পরে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ আসাদুজ্জামানকে উদ্ধার করা যায়নি। এরপর শনিবার সকাল ৮টা থেকে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ফের নিখোঁজ আসাদুজ্জামানকে উদ্ধারের জন্য অভিযান শুরু করে। পরে বেলা ১১টার দিকে আসাদুজ্জামানের লাশ উদ্ধারে সক্ষম হয়।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
২৬৪ দিন আগে
রূপসা নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ
খুলনার রূপসা নদীতে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নগরীর ১ নম্বর কাস্টমস ঘাট থেকে খান জাহান আলী সেতু পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নৌকাবাইচ হয়।
প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় কয়রার সুন্দরবন টাইগার্স নামের একটি নৌকা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয় জয় মা কালী ও মোবাইল নামের নৌকাবাইচের দল।
প্রথম স্থান অর্জনকারীদের পুরস্কার হিসেবে ৭৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় ৫০ হাজার টাকা ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
খুলনা বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।
তিনি বলেন, ‘নৌকাবাইচ গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্য। উৎসবমুখর পরিবেশে খুলনাবাসীকে নির্মল বিনোদন উপভোগের সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন।’
আরও পড়ুন: নওগাঁর সাপাহারে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা
তিনি বলেন, ‘নৌকাবাইচ হচ্ছে তারুণ্যের উৎসবের অংশ। নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের সবার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে আমরা তারুণ্যের উৎসব উদ্যাপন করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নতুন করে দেশটাকে সাজাতে, যেখানে সহযোগিতার নীতি প্রচার করা হবে। একে অপরের কাজে আমরা সহযোগিতা করব। তারুণ্যের শক্তিকে প্রকাশ ঘটিয়ে নতুন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ করে প্রধান অতিথি বলেন, ‘আপনারা যারা নৌকাবাইচে অংশগ্রহণ করবেন, আপনাদের সুশৃঙ্খল অংশগ্রহণের মাধ্যমে আজকের এই উৎসবটি আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।’
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) সুরাইয়া আক্তার জাহান, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
৩০২ দিন আগে
সিরাজগঞ্জে নদীতে নিখোঁজ অপর দুই বন্ধুরও লাশ উদ্ধার
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ফুলজোর নদীতে শনিবার গোসল করতে নেমে তিন বন্ধু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে কলেজছাত্র রাফিমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) অপর ২ বন্ধুর লাশ উদ্ধার করেছে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস। এ নিয়ে তিনজনকেই নিহত অবস্থায় উদ্ধার করা হলো।
নিহতরা হলেন- সিরাজগঞ্জের বাহিরগোলা ঘোষপাড়া মহল্লার কৃষ্ণ নিয়োগী, সয়াধানগড়া নতুনপাড়া মহল্লার সারজিল ও ঝাঁটিবেলাই গ্রামের রাফিম।
এরা সিরাজগঞ্জ কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে নারীসহ দুইজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেসুর রহমান জানান, দুই বন্ধু সিরাজগঞ্জে রাফিমের বাড়িতে বেড়াতে আসে। শনিবার দুপুরে কামারখন্দে ফুলজোর নদীতে গোসল নেমে তারা তিনজন নিখোঁজ হয়।
উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্র রাফিমের লাশ রাতে ও অপর দুজনের লাশও উদ্ধারের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
৩০৫ দিন আগে
সিরাজগঞ্জে নদীতে ডুবে ৩ কলেজছাত্র নিখোঁজ, একজনের লাশ উদ্ধার
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ফুলজোর নদীতে গোসল করতে নেমে তিন কলেজছাত্র নিখোঁজ হওয়ার পর একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার ঝাটিবেলাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে কলেজছাত্র রাফিমের লাশ উদ্ধার করা হয়।
তার অপর ২ বন্ধুর সন্ধানে এখনও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেসুর রহমান জানান, দুই বন্ধু সিরাজগঞ্জে রাফিমের বাড়িতে বেড়াতে আসে। শনিবার দুপুরে কামারখন্দে ফুলজোর নদীতে গোসল নেমে তারা তিনজন নিখোঁজ হয়।
আরও পড়ুন: দুই বছর পর ২ ভারতীয়র লাশ সৎকার, সরকারের ব্যয় ২৪ লাখ টাকা
তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। অভিযানে সন্ধ্যায় একজনের লাশ উদ্ধার করা হলেও অপর দুজনের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি।’
৩০৬ দিন আগে
ঘন কুয়াশায় ২ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ, মাঝ নদীতে ৪ ফেরি
ঘন কুয়াশায় মানিকগঞ্জের আরিচা-কাজিরহাট ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। মাঝ নদীতে আটকে আছে চারটি ফেরি। চার ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে পাঁচ শতাধিক যানবাহন।
আরিচা সেক্টরের ডিজিএম নাসির চৌধুরী জানান, মধ্য রাত থেকে পদ্মা ও যমুনা নদীর অববাহিকায় ঘণ কুয়াশার প্রকোপ বাড়তে থাকায় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে রাত দেড়টা থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় মাঝ নদীতে আটকে পড়ে বরকত ও কপোতী নামে দুইটি ফেরি। এছাড়া ঘন কুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটেও রাত দেড়টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এ সময় মাঝ নদীতে যানবাহন নিয়ে নোঙর করে রাখা হয় খান জাহান আলী ও চিত্রা নামে দুইটি ফেরি।
ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, পাটুরিয়ায় ৬টি ও দৌলতদিয়া ৪টি এবং আরিচাঘাটে ৩টি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন বোঝাই করে আটকে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি চলাচল স্বাভাবিক
৩১৫ দিন আগে
বরগুনায় খননের পরেও প্রাণ ফিরছে না খাকদোন নদীর
বরগুনা থেকে ঢাকা যাওয়ার একমাত্র নৌপথ খাকদোন নদী। এই পথ দিয়েই ঢাকার উদ্দেশে চলাচল করে সব ধরনের নৌযান। বর্তমানে খাকদোন নদীর বিভিন্ন জায়গায় চর পড়ে নৌপথটি প্রায় বন্ধের পথে।
বর্ষা মৌসুমে এ নদীতে লঞ্চ চলাচলে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থকলেও শীত মৌসুমে পানি কমে যায়। ফলে নাব্যতা না থাকায়, বিশেষ করে ভাটার সময় লঞ্চগুলো বরগুনা পৌরসভার নদীবন্দর ঘাট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। এতে স্বাভাবিকভাবে লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন ঘটে, ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। তবে খাকদোন নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে সমস্যা সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বরগুনা নদীবন্দর কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসন।
বরগুনার খাকদোন নদীর এ নৌরুটকে সচল রাখতে প্রায় প্রতি বছরই বিভিন্ন স্থানে ড্রেজিং বা খনন কাজ করা হয়। এমনকি সারাবছর ধরেই নদীতে ভাসমান অবস্থায় বাধা থাকে ড্রেজিং মেশিন। তবে বিভিন্ন সময়ে নদীতে ড্রেজিং করা হলেও ফিরছে না নদীর নাব্যতা। এতে শীত মৌসুম শুরু হলে ভাটার সময় পানি কমে গেলে লঞ্চসহ বড় নৌযান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলো বরগুনার নদীবন্দর পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারায় পৌরশহর থেকে প্রায় দুই-তিন কিলোমিটার দূরে নোঙর করতে হয়। আবার বরগুনা থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময়ও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়।
খাকদোন নদীতে এমন ড্রেজিং নিয়ে বরগুনাগামী লঞ্চগুলোর বিভিন্ন স্টাফ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
নৌযান শ্রমিকরা বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার অভাবে ড্রেজিং করার পরও তেমন কোনো সুফল মিলছে না। স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের দাবি, শুধু লোক দেখানো ড্রেজিং করা হয়। ফলে খাকদোন নদীর নাব্যতা ফিরে না।
বরগুনা থেকে ঢাকাগামী পূবালী-১ লঞ্চের মাস্টার মো. হারুন অর রশীদ বলেন, শীত মৌসুমে খাকদোন নদীর নাব্যতা হারায়। এ সময় পানির সংকট দেখা দিলে লঞ্চ নিয়ে ঘাটে যেতে পারি না। নদীতে ড্রেজিং করা হলেও আশপাশের কিছু কিছু খাল রয়েছে যেগুলোতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। যার কারণে ওই খালগুলোর পানি খাকদোন নদীতে নামতে পারে না। এ কারণে স্রোত কমে গিয়ে নদী ভরাট হয়ে যায়। লঞ্চ চলাচল করতে স্বাভাবিকভাবে নদীতে দেড় মিটার পানি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু মাঝেমধ্যে খাকদোন নদীতে এক মিটার পানি থাকে। এ সময় লঞ্চ ঘাট পর্যন্ত পৌঁছাতে না পেরে দূরে নোঙর করে রাখতে হয়। এতে যাত্রীদের ওঠা-নামায় ভোগান্তির সৃষ্টি হওয়ায় অনেকেই লঞ্চ যাত্রা বাদ দিয়ে ভিন্ন উপায়ে সড়ক পথে যাতায়াত করেন। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনেও সমস্যায় পরতে হয়। লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং নদীর নাব্যতা ফেরাতে দীর্ঘ মেয়াদি ড্রেজিং পরিকল্পনা করতে হবে বলে জানান তিনি।
একই লঞ্চের আরেক মাস্টার মো. আবুল হোসেন বলেন, বড় নদীতে যে গতিতে আমরা লঞ্চ চালিয়ে আসি, খাকদোন নদীর নাব্যতা না থাকায় সেই গতিতে চালাতে পারি না। লঞ্চের গতি কম থাকায় বরগুনা নদীবন্দরে পৌঁছাতে আমাদের দেরি হয়। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ে আমাদেরও লঞ্চ চালাতে কষ্ট হয়। তবে খাকদোন নদীতে যদি সুন্দরভাবে উপযোগী করে ড্রেজিং করা হয় তাহলে আমাদের এ সমস্যা দূর হবে এবং লঞ্চে যাত্রী সংখ্যাও বাড়বে।
লঞ্চের স্টাফ মো. রিপন বলেন, ভাটার সময় যখন নদীর পানি শুকিয়ে যায় তখন লঞ্চ চালিয়ে আমরা ঘাট পর্যন্ত আসতে পারি না। এছাড়া যখন একেবারে পানি শুকিয়ে যায় তখন ঘাট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ঢলুয়া নামক এলাকায় যাত্রী নামাতে হয়। তবে বছরের পর বছর নদীতে ড্রেজিং মেশিন বাধা থাকতে দেখি, কিন্তু কোনো কাজের কাজ হয় না। যদি খাকদোন নদীর ড্রেজিং সঠিকভাবে করা হয়, তাহলে আমরা ঘাট পর্যন্তই যাত্রী নিয়ে আসতে পারব।
বরগুনার স্থানীয় সচেতন নাগরিক মুরাদুজ্জামান টিপন বলেন, খাকদোন নদীতে নামমাত্র ড্রেজিং করা হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী ড্রেজিং করা হয় না। ঘাট থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে লঞ্চ থেকে যাত্রীদের নামতে হয়। অথচ ড্রেজার মেশিন নদীতে থাকলেও তারা নদী খনন করে না। মাঝেমধ্যে যে খনন করা হয় তা কেবল লোক দেখানো।
আরও পড়ুন: মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তিতে চলছে মাদক ও অস্ত্রের রমরমা ব্যবসা
বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিটির বরগুনা জেলা শাখার সদস্য আরিফুর রহমান বলেন, খাকদোন নদীতে প্রতিবছর অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করা হচ্ছে। আমরা এই ড্রেজিংয়ের কোনো সুফল পাচ্ছি না। শীত মৌসুমে লঞ্চঘাট পর্যন্ত লঞ্চ আসতে না পারায় ঘাট থেকে অনেক দূরে নোঙর করে রাখতে হয় এবং সেখানেই যাত্রীদেরকে নামানো এবং ওঠানো হয়। ভবিষ্যতে খাকদোন নদীতে ড্রেজিংয়ের সুফল যদি না পাই তাহলে আমরা পরিবেশকর্মীরা খাকদোন নদীর নাব্যতা ফেরাতে বৃহৎ আন্দোলন করব। আমরা সরকারের সু-নজরের মাধ্যমে খাকদোন নদীর অপরিকল্পিত ড্রেজিং বন্ধ করে পরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করতে আহ্বান জানাই।
বরগুনা নদীবন্দরের সহকারী বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা সৈয়দ মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, শীত মৌসুমে নদীতে যখন জোয়ার থাকে তখন তেমন একটা সমস্যা হয় না। তবে ভাটার সময় বড় নৌযানগুলোর গতি কমিয়ে চালাতে হয়। এ মৌসুমে খাকদোন নদীর যে নাব্যতা সংকট দেখা দেয় তা সমাধানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই বিআইডব্লিউটিএয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নদীর গভীরতা এবং নদী পরিদর্শন করেছেন। এর পাশাপাশি নদীর নাব্যতা সংকট দূর করতে বন্দর কর্মকর্তা হিসেবে আমাদের ড্রেজিং বিভাগকেও এ বিষয়ে অবগত করেছি।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, খাকদোন নদীই বরগুনা থেকে ঢাকা যাওয়ার একমাত্র নৌপথ। এ পথ হয়েই লঞ্চগুলো ঢাকার উদ্দেশে চলাচল করে। বর্তমানে খাকদোন নদীর বিভিন্ন জায়গায় চর পড়ে এ নৌপথটি প্রায় বন্ধের পথে। যদিও এখন পর্যন্ত জোয়ারের সময় লঞ্চ ঘাট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তবে ভাটার সময় পৌঁছানো একটু কঠিন হয়। আমাদের এই নৌপথটি সচল রাখতে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড, নাশকতার আশঙ্কা
৩৪৩ দিন আগে
নদী বাঁচাতে আবরার ফাহাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের পথ নির্দেশ করবে: নাহিদ ইসলাম
তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আবরার ফাহাদ নদী নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ফ্যাসিস্টদের হাতে শহীদ হয়েছেন। নদী বাঁচাতে আবরার ফাহাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের পথ নির্দেশ করবে।
তিনি বলেন, ‘আবরার ফাহাদ নদীর কথা বলতে গিয়ে শহীদ হন। ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে বিগত ১৬ বছরে নদীর যে বিপর্যস্ত অবস্থা তার সমাধান কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে ভাবতে হবে। নদী, কৃষি এবং পরিবেশ নিয়ে জাতীয় নীতি গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার: নাহিদ ইসলাম
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) অডিটোরিয়ামে ‘ফ্যাসিবাদের কবলে নদী’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে নদীর সম্পর্ক। স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের স্লোগান ছিল পদ্মা মেঘনা যমুনা তোমার আমার ঠিকানা। ঢাকার চারদিকে চারটা নদী রয়েছে এই নদীগুলোকে মাথায় রেখে নগর পরিকল্পনা করতে পারলে তা জনবান্ধব হত। বিভিন্ন মাফিয়ারা নদী দখল এবং পরিবেশ ধ্বংস করে গোষ্ঠীস্বার্থ হাসিল করেছে। দখলদারদের প্রতিহত করতে রুপরেখা প্রণয়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি এবং স্বল্পমেয়াদি রূপরেখা প্রণয়নে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখি হাওরের রাস্তায় আলপনা আঁকা হয় পরবর্তীতে সেই রং গিয়ে পানিতে পড়ে এতে অনেক মাছ মারা যায়, পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে বিষয়ে কথা বলা লোকের সংখ্যা বর্তমান সমাজে একেবারেই কম। তাই নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে নতুন করে আইন করা যায় কিনা সেটা ভেবে দেখা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসবে: উপদেষ্টা নাহিদ
৪০১ দিন আগে
ঢাকার নদী ও খালগুলোকে বাঁচাতে হলে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান
পানিসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আমরা যদি ঢাকার খাল ও নদী নিয়ে না ভাবি তাহলে ঢাকাকে বাঁচাতে পারব না। ঢাকার নদী ও খালগুলোকে বাঁচাতে হলে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রত্যেকটা খালের বাস্তব চিত্র খুঁজে বের করতে হবে। ঢাকার নদী ও খালগুলোকে রক্ষা করতে আমাদের তাৎক্ষণিক, মধ্যমেয়াদি ও তিন বছরের রোডম্যাপ এবং সমন্বিত অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে সেনাবাহিনী জড়ো হয়নি, গুজব ছড়ানো হয়েছে
ঢাকায় পানি ভবনে বুধবার (৯ অক্টোবর) এক সেমিনারে সভাপতির বক্তৃতায় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এসময় উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান প্রাথমিকভাবে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খাল দূষণমুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ঢাকার বর্তমান প্রজন্ম কোনো পরিষ্কার খাল দেখেনি।
তিনি তার বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে যুক্ত করে দ্রুত ঢাকার খাল ও নদী দূষণ এবং দখলমুক্ত করার কর্মসূচি গ্রহণ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া তিনি ঢাকার খালগুলো দূষণ এবং দখলমুক্ত করার প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ার তাগিদ দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে অটোমেশন চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে: উপদেষ্টা
কৃষির উন্নতি নিয়ে সরকার কাজ করছে: কৃষি উপদেষ্টা
৪২২ দিন আগে