������������-���-������������������
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ফের নিহত ২
যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে স্থানীয় সময় শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বন্দুকধারীর গুলিতে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
পুলিশের বরাতে স্থানীয় কেটিএনভি নিউজ চ্যানেল এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ৩৪ মিনিটে গুলি চালানো হয় এবং সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে পুলিশ গুলিবর্ষণের শিকার দুইজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে।
বাকি তিনজনের শারীরিক অবস্থাও গুরুতর বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাস ভেগাস মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের একজন মুখপাত্র নিহতদের ‘গৃহহীন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়ুন: নেদারল্যান্ডসের রটারডামে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৩
তিনি জানান, হামলাকারী এখনও পলাতক।
অন্যদিকে দেশটির এবিসি ৭ নিউজ চ্যানেল জানিয়েছে, লাস ভেগাসে ঘটা শুক্রবারের ঘটনা লস অ্যাঞ্জেলেসের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত না।
এই সপ্তাহে লস অ্যাঞ্জেলেসে সম্ভবত একজন সিরিয়াল কিলার তিনজন গৃহহীনকে গুলি করে হত্যা করেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, নিহত তিনজন ফুটপাতে বা গলিতে একা একা ঘুমাচ্ছিলেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে এক সপ্তাহে বন্দুক হামলায় ৮ জন নিহত
ক্যালিফোর্নিয়ার বাইকার বারে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৪
যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ৩ যুবককে গুলি
যুক্তরাষ্ট্রের বার্লিংটনে শনিবার ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত তিন যুবককে গুলি করা হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘৃণা থেকে হামলাটি করা হতে পারে। পুলিশ সন্দেহভাজনকে খুঁজছে।
রবিবার বার্লিংটন পুলিশ প্রধান জন মুরাদ বলেছেন, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ইউভিএম ক্যাম্পাসের কাছে হামলা হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা স্থিতিশীল এবং একজন ‘গুরুতর জখম’ হয়েছেন। ভুক্তভোগী তিনজন এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশে হাঁটছিলেন, তখন তারা হ্যান্ডগান হাতে একজন শ্বেতাঙ্গের মুখোমুখি হন।
মুরাদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, ‘কোনো কথা না বলে অভিযুক্ত পিস্তল থেকে কমপক্ষে চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে এবং পালিয়ে যায়।’
মুরাদ বলেন, তিনজনই ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত। এদের মধ্যে দুইজন মার্কিন নাগরিক এবং একজন যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের টেক ইউনিভার্সিটিতে ছুরিকাঘাতে আহত ৪, সন্দেহভাজন আটক
এর আগে রবিবার, আমেরিকান-আরব বৈষম্য বিরোধী কমিটি একটি বিবৃতিতে জানায়, নিহতরা ফিলিস্তিনি আমেরিকান কলেজছাত্র এবং ‘ধারণা করা হচ্ছে ভুক্তভোগীরা আরব ছিল বলেই তাদের উপর গুলি চালানো হয়েছে।’
এফবিআই বলেছে, তারা গুলির বিষয়ে অবগত।
নিউইয়র্কের আলবানিতে অবস্থিত এফবিআই মুখপাত্র সারাহ রুয়ান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যদি তদন্তে ফেডারেল আইন লঙ্ঘনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়, এফবিআই তদন্ত করার জন্য প্রস্তুত।’
হোয়াইট হাউস বলেছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গুলির ঘটনা সম্পর্কে জানেন। আইন প্রয়োগকারীরা আরও তথ্য সংগ্রহ করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে আপডেট জানানো হবে।
কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস এক বিবৃতিতে গুলি চালানোর জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার বা দোষী সাব্যস্ত করার ব্যাপারে কেউ কোনো তথ্য দিতে পারলে ১০ হাজার ডলার পুরস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের পক্ষ থেকে দ্য ইনস্টিটিউট ফর মিডল ইস্ট আন্ডারস্ট্যান্ডিং এক্সে (পূর্বে টুইটার) একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমরা আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা ও সুস্থতার বিষয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’
তারা আরও জানায়, ‘আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে এটিকে ঘৃণামূলক অপরাধ হিসেবে বিবেচনাসহ একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করার আহ্বান জানাই। গুলিকারীকে বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত আমরা স্বস্তিতে থাকব না।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের মেইন রাজ্যে গুলিতে নিহত ১৬
যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছর ৪৭০টি নির্বিচারে গুলির ঘটনা ঘটেছে
যুক্তরাষ্ট্রের টেক ইউনিভার্সিটিতে ছুরিকাঘাতে আহত ৪, সন্দেহভাজন আটক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় লুইসিয়ানা রাজ্যের রাস্টনে লুইসিয়ানা টেক ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ছুরিকাঘাতে চার নারী আহত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় পুলিশ জানায়, একজন ছাত্র এই আক্রমণ চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এটি তাৎক্ষণিক করা সহিংসতা বলে মনে হচ্ছে। তদন্ত চলছে।’
রাস্টনের মেয়র রনি ওয়াকার বলেছেন, চারজনের মধ্যে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং তাদের শ্রেভপোর্টের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্যাম্পাস পুলিশ ছুরিকাঘাতের কয়েক মিনিটের মধ্যে একজন সন্দেহভাজনকে (২৩) আটক করেছে।
রাস্টন পুলিশ প্রধান স্টিভ রজার্স বলেছেন, প্রাথমিক চিকিৎসার পর সোমবার বিকালে অভিযুক্তকে জেলে পাঠানো হয়েছে।
ওয়াকার বলেছেন, ছুরিকাঘাত করা চারজনের মধ্যে একজন স্নাতক শিক্ষার্থী, তাকে প্রথম শ্রেভপোর্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নিহত বাকি তিনজন শিক্ষার্থী নয়। দুজনকে প্রথমে রাস্টনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তারপর শ্রেভপোর্টে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
ওয়াকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে।’
টেকের ল্যামব্রাইট স্পোর্টস অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টারে সকাল ৯টার কিছু পরেই আক্রমণটি ঘটে।
যুক্তরাষ্ট্রের মেইন রাজ্যে গুলিতে নিহত ১৬
যুক্তরাষ্ট্রের মেইন রাজ্যে লিউইস্টনে একটি বোলিং অ্যালি ও পানশালায় বুধবার রাতে এক ব্যক্তি গুলি চালিয়ে কমপক্ষে ১৬ জনকে হত্যা করেছে। এতে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটি বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে।
কর্তৃপক্ষ বাসিন্দা, ব্যবসায়ীদের রাস্তায় ও বাইরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। কারণ সন্দেহভাজন পলাতক রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। কর্মকর্তারা চলমান তদন্তের বিশদ বিবরণ প্রকাশ্যে আলোচনা করার অনুমতি পাননি এবং নাম প্রকাশ না করার শর্তে এপির সঙ্গে তারা কথা বলেছেন।
এর আগে লিউইস্টন পুলিশ এক ফেসবুক পোস্টে জানায়, তারা প্রায় ৪ মাইল (৬ দশমিক ৪ কিলোমিটার) দূরে একটি বোলিং অ্যালি স্কিমঙ্গিস বার অ্যান্ড গ্রিল অ্যান্ড স্পেয়ারটাইম রিক্রিয়েশনে একটি সক্রিয় বন্দুকধারীর ঘটনা মোকাবিলা করছে। আন্দ্রোসকোগিন কাউন্টি শেরিফ অফিস তাদের ফেসবুক পেজে সন্দেহভাজনের দু’টি ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে- এক বন্দুকধারী কাঁধে অস্ত্র তুলে একটি স্থাপনায় প্রবেশ করছে।
আরও পড়ুন: হামাসকে 'ধ্বংস' করার অঙ্গীকার নেতানিয়াহুর : গাজা আক্রমণ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে
পুলিশ বলেছে, ‘দয়া করে সড়ক থেকে দূরে থাকুন যাতে জরুরি সাড়াদানকারীদের হাসপাতালে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যায়।’
সেন্ট্রাল মেইন মেডিকেল সেন্টারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কর্মীরা ব্যাপক হতাহতের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে এবং রোগীদের নিতে এলাকার হাসপাতালগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করছে। জরুরি বিভাগে ফোন রিসিভ করা এক নারী জানিয়েছেন, আর কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাবে না এবং হাসপাতালটি নিজেই লকডাউনে রয়েছে।
লেজেন্ডস স্পোর্টস বার অ্যান্ড গ্রিলের মালিক মেলিন্ডা স্মল জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে এক চতুর্থাংশ মাইলেরও কম দূরত্বে বোলিং অ্যালিতে গোলাগুলির খবর পেয়ে তার কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের দরজা বন্ধ করে দেয় এবং ২৫ জন গ্রাহক ও কর্মচারীকে দরজা থেকে সরিয়ে দেয়। শিগগিরই, পুলিশ সড়কটি দখলে নেয় এবং পর্যায়ক্রমে ৪ বারে একজন পুলিশ কর্মকর্তা সবাইকে নিরাপদে নিয়ে আসেন। পানশালায় সবাই নিরাপদে আছেন।
আরও পড়ুন: হামাসের আকস্মিক হামলায় ২২ ইসরায়েলি সেনা নিহত
মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলে বাস দুর্ঘটনায় ১৬ অভিবাসী নিহত, আহত ২৯
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে মার্কিনিরা হামলার শিকার হলে জবাব দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র: ব্লিঙ্কেন-অস্টিনের হুঁশিয়ারি
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষা সেক্রেটারি লয়েড অস্টিন বলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধারণা করছে যে ইরানের প্রক্সি যোদ্ধাদের জড়িত হওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বিস্তৃত হবে। তারা জোর দেন যে যদি মার্কিন নাগরিক বা সামরিক বাহিনীকে শত্রু হিসেবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়, তাহলে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাইডেন প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
রবিবার (২২ অক্টোবর) ইসরায়েল-হামাসের চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মার্কিন শীর্ষ দুই কর্মকর্তা এই হুঁশিয়ারি দেন।
ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমরা যা চাই তা নয়, আমরা যা খুঁজছি তাও নয়। 'আমরা উত্তেজনা বাড়াতে চাই না।’ ‘আমরা চাই না আমাদের বাহিনী বা আমাদের কর্মীরা গোলাগুলির শিকার হোক। কিন্তু যদি তা হয়, আমরা তার জন্য প্রস্তুত।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েল ও হামাসের সংঘর্ষে ৯ মার্কিন নাগরিক নিহত: এনএসসি
ব্লিনকেনের সঙ্গে একমত পোষণ করে অস্টিন বলেন, 'আমরা যা দেখছি তা হলো পুরো অঞ্চল জুড়ে আমাদের সৈন্য ও জনগণের ওপর উল্লেখযোগ্য হারে হামলা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে এবং ‘আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করব না।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পর ইসরায়েলের সামরিক প্রতিক্রিয়া তৃতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার বিমানবন্দরে ইসরায়েলি হামলা ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’: জাতিসংঘের মুখপাত্র
ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো রাতে এবং রবিবার গাজা জুড়ে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, পাশাপাশি সিরিয়ার দুটি বিমানবন্দর এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি মসজিদ হামাস যোদ্ধারা ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কারণ যুদ্ধটি মধ্যপ্রাচ্যের আরও কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল লেবাননের হিজবুল্লাহ সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই গুলি বিনিময় করে আসছে এবং ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে উত্তেজনা বাড়ছে। যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী শরণার্থী শিবিরে সশস্ত্র শত্রুদের সঙ্গে লড়াই করেছে এবং সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দুটি বিমান হামলা চালিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের জন্য বাইডেন প্রশাসনের ‘অন্ধ সমর্থন’র প্রতিবাদে স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তার পদত্যাগ
ইসরায়েলের জন্য বাইডেন প্রশাসনের ‘অন্ধ সমর্থন’র প্রতিবাদে স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তার পদত্যাগ
হামাসের সঙ্গে চলমান সংঘর্ষে বাইডেন প্রশাসনের ইসরায়েলের প্রতি ‘অন্ধ সমর্থন’র প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা জোশ পল।
জোশ পল ১১ বছরেরও বেশি সময় ধরে অধিদপ্তরের রাজনৈতিক-সামরিকবিষয়ক ব্যুরোতে কাজ করেছেন। এই ব্যুরো অন্যান্য দেশগুলোতে মার্কিন অস্ত্র হস্তান্তর তত্ত্বাবধান করে।
গত বুধবার তার দেওয়া পদত্যাগপত্রে তিনি বলেছেন, তার দেশের ইসরায়েলের জন্য প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবস্থা করার মতো ‘সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের’ সঙ্গে একমত হতে না পারায় তিনি চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
পল বলেন, তিনি সবার কাছে তার মতামত স্পষ্ট করতে চান। ইসরায়েলের উপর হামাসের আক্রমণ ‘একটি দানবের দানবীয়তা।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে ইসরায়েল যে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে এবং তার সঙ্গে আমেরিকা যে সমর্থন দিচ্ছে; তা দখলদারিত্ব টিকিয়ে রাখা এবং ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি উভয় দেশের জনগণের জন্য দুর্ভোগ আরও বাড়াবে।’
তিনি লিখেছেন, ‘এই প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া এবং কংগ্রেসের সুনিশ্চিত পক্ষপাতিত্ব মূলত রাজনৈতিক সুবিধা, বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াত্ব এবং আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর নির্মিত একটি আবেগপ্রবণ প্রতিক্রিয়া। অর্থাৎ বলা যায়, এটি অত্যন্ত হতাশাজনক ও সম্পূর্ণরূপে নজিরবিহীন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাস্তবতা হলো এক পক্ষের জন্য অন্ধ সমর্থন দীর্ঘমেয়াদে উভয় পক্ষের জনগণের স্বার্থের জন্য ধ্বংসাত্মক।’
আরও পড়ুন: গাজায় 'মানবিক বিরতির' আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবের ব্যর্থতায় ফ্রান্সের দুঃখ প্রকাশ
ভারত থেকে কানাডার ৪১ কূটনীতিককে প্রত্যাহার
ভারত সরকার তাদের কূটনৈতিক নিরাপত্তা (ডিপ্লোম্যাটিক ইমিউনিটি) প্রত্যাহারের পরে ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে প্রত্যাহার করেছে কানাডা। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত জুন মাসে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে দেশটির নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত থাকতে পারে বলে কানাডার অভিযোগের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিরোধের কারণে সর্বশেষ এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ভারত কানাডাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ‘সন্ত্রাসীদের’ আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করেছে। তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগটিকে ‘অযৌক্তিক’ বলে নাকচ করেছে এবং অভিযোগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বৃহস্পতিবার বলেছেন, ভারতে থাকা কানাডার ৬২ কূটনীতিকের মধ্যে ৪১ জনকে তাদের পরিবারসহ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জোলি বলেন, বাকি ২১ কানাডিয়ান কূটনীতিক ভারতে থাকবেন।
জোলি বলেন, ‘৪১ জন কানাডিয়ান কূটনীতিক এবং তাদের পরিবারের ৪২ জন সদস্য তাদের কূটনীতিক নিরাপত্তা প্রত্যাহারের ঝুঁকিতে ছিলেন। এটি প্রত্যাহারে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কূটনীতিক এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা ফিরে এসেছেন।’
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কানাডা: ট্রুডো
জোলি বলেন, কূটনৈতিক নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেওয়া বিষয়টি নতুন নয়, কিন্তু এটি আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। তবে এ কারণে কানাডা ভারতীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে একই জিনিস করার হুমকি দেবে না।
জোলি বলেন, ‘কূটনৈতিক বিশেষাধিকার ও মর্যাদার একতরফা প্রত্যাহার আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের জেনেভা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এটি করার হুমকি দেওয়া অযৌক্তিক ও উসকানিমূলক।’
জোলি বলেন, ভারতের সিদ্ধান্ত উভয় দেশের নাগরিকদের পরিষেবাপ্রাপ্তিকে প্রভাবিত করবে।
তিনি বলেন, চণ্ডিগড়, মুম্বাই ও ব্যাঙ্গালোরে ব্যক্তিগত পরিষেবা বন্ধ করে দিচ্ছে কানাডা।
কিছুদিন আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি ভারতে কানাডিয়ান কূটনীতিকদের সংখ্যা কমানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, কানাডায় ভারতের কর্মকর্তাদের চেয়ে ভারতে কানাডার কর্মকর্তাদের সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত মাসে বলেছিলেন, ভ্যাঙ্কুভারের বাইরে সারেতে জুন মাসে মুখোশধারী বন্দুকধারীদের হাতে নিহত ৪৫ বছর বয়সী শিখ নেতা নিজ্জার হত্যায় ভারতীয় জড়িত থাকার ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্য’ রয়েছে।
কয়েক বছর ধরে ভারত অভিযোগ করে আসছে, ভারতে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ান নাগরিক নিজ্জার সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত।
তবে নিজ্জার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: ভারতের বিশাল কৌশলগত গুরুত্বের তুলনায় কানাডার স্বার্থ ফিকে: বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি
ভারত কানাডিয়ানদের ভিসাও বাতিল করেছে, তবে কানাডা এজন্য প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
এর আগে কানাডা একজন সিনিয়র ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করার পরে, ভারতও কানাডার একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিল।
তবে ট্রুডোকে কূটনৈতিক বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, কানাডা ‘উসকানি বা উত্তেজনা বাড়াতে চাইছে না।’
একজন কানাডিয়ান কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছিলেন, কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের নজরদারির মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের জড়িত থাকার তথ্য জানা গেছে।
এছাড়া, তাদের প্রধান মিত্রদের নিয়ে গঠিত একটি গোয়েন্দা বাহিনীও একই তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘ফাইভ আই’ গোয়েন্দা-শেয়ারিং জোট এ বিষয়ে কিছু গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছিল। ‘ফাইভ আই’ গোয়েন্দা শেয়ারিং জোটে কানাডা ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড রয়েছে।
ভারতের সর্বশেষ কূটনৈতিক বহিষ্কারের পদক্ষেপ এই দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
নয়াদিল্লিতে সাম্প্রতিক গ্রুপ অব ২০ বৈঠকের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রুডোর হিমশীতল কথোপকথন হয়।
এর কয়েকদিন পরে, ভারতে একটি বাণিজ্য মিশন বাতিল করে কানাডা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন উত্তপ্ত দ্বন্দ্বের মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, অভিযোগের বিষয়টি ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
নিজ্জার খালিস্তান নামে পরিচিত একটি স্বাধীন শিখ আবাসভূমি তৈরির আন্দোলনের এক সময়ের শক্তিশালী একজন নেতা ছিলেন।
১৯৭০ থেকে ১৯৮০’র দশকে একটি রক্তাক্ত শিখ বিদ্রোহ উত্তর ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। সেসময় দেশটিতে শিখ নেতাসহ হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল।
খালিস্তান আন্দোলন তার রাজনৈতিক শক্তি হারিয়েছে। কিন্তু এখনও ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে এ আন্দোলনের সমর্থক শিখ রয়েছে।
কয়েক বছর আগে সক্রিয় বিদ্রোহ শেষ হওয়ার সময় ভারত সরকার বারবার সতর্ক করেছে যে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ফিরে আসার চেষ্টা করছে।
কানাডার অভিবাসন মন্ত্রী মার্ক মিলার উল্লেখ করেছেন, ২০২২ সালে ভারত কানাডায় স্থায়ী বাসিন্দা, অস্থায়ী বিদেশি কর্মী এবং আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য শীর্ষ দেশ ছিল।
আরও পড়ুন: 'ফাইভ আইজ' দেশগুলোর গোয়েন্দা তথ্য কানাডাকে শিখ হত্যার সঙ্গে ভারতকে যুক্ত করতে সাহায্য করেছে: মার্কিন কূটনীতিক
মিলার বলেন, কূটনীতিকদের মর্যাদা অপসারণের ভারতের সিদ্ধান্তের ফলে কানাডার অভিবাসন বিভাগ ভারতে কানাডিয়ান কর্মীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে।
মিলার আরও বলেন, শ্রমিকদের ভিসা ও পারমিট প্রদানেও বাধা সৃষ্টি করবে।
ঊর্ধ্বতন কানাডিয়ান কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারত কানাডিয়ান কূটনীতিকদের সংখ্যা এবং কূটনৈতিক মর্যাদা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় ছিল।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারত আরও ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা বিভিন্ন পারমিট বাতিল করবে। যেমন- কূটনীতিকদের স্বামী/স্ত্রীকে ভারতে কাজ করার অনুমতি দেওয়া এবং গাড়িতে কূটনৈতিক প্লেট ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া।
টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নেলসন ওয়াইজম্যান বলেছেন, কানাডার উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ভারত সর্বশেষ যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অর্থহীন।
ওয়াইজম্যান বলেছেন, ‘কানাডিয়ান কূটনীতিকদের বহিষ্কার ভারতীয়দের বিচলিত মানসিকতা প্রকাশ করে; এতে বোঝা যায় যে তারা জানে যে তারা কানাডায় একজন কানাডিয়ান হত্যার সঙ্গে জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা হত্যার তদন্তে কানাডার সঙ্গে তাদের সহযোগিতার অভাব থেকে মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করছে।’
বোমা-হত্যার হুমকিতে ভার্জিনিয়ার ভোজসভা বাতিল করল মার্কিন মুসলিম নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী
বোমা ও প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ায় ভার্জিনিয়ার একটি হোটেল থেকে জাতীয় মুসলিম নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী বার্ষিক ভোজসভা সরিয়ে নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে আটকা পড়া ফিলিস্তিনিদের জন্য মুসলিম এই গোষ্ঠীটির উদ্বেগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে মুসলিমদের নাগরিক অধিকার সংস্থাটি।
কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) ওয়াশিংটন ডিসি থেকে পোটোম্যাক নদীর ঠিক ওপারে আর্লিংটনের ম্যারিয়ট ক্রিস্টাল গেটওয়েতে শনিবার তাদের ২৯তম বার্ষিক ভোজসভার পরিকল্পনা বাতিল করেছে।
এক দশক ধরে হোটেলটি ব্যবহার করে আসা এই গোষ্ঠীটি কঠোর নিরাপত্তাসহ একটি অজ্ঞাত স্থানে ভোজসভা সরিয়ে নেবে বলে গ্রুপের বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ম্যারিয়টের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা হোটেলের পার্কিং গ্যারেজে বোমা স্থাপন, হোটেলের নির্দিষ্ট কর্মীদের তাদের বাড়িতে হত্যা এবং ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর হুমকি দিয়েছে।’
আর্লিংটন পুলিশ এক ই-মেইলে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে হোটেল থেকে সিএআইআর ইভেন্টে ‘কিছু বোমা হামলার হুমকির’ বিষয়ে বেনামী ফোন কল পাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
এফবিআইয়ের কাছ থেকে মন্তব্য চেয়ে ইমেলগুলো সিএআইআরও তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে, এবং ম্যারিয়ট হোটেল চেইনকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাৎক্ষণিকভাবে উত্তর দেওয়া হয়নি।
আগামী ২৮ অক্টোবর মেরিল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় একটি পৃথক ভোজসভাও বাতিল করা হয়েছে এবং শনিবারের অনুষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত করা হবে বলে জানিয়েছে সিএআইআর।
ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার ইস্যুতে ফোকাস করার জন্য সিএআইআর ভোজের প্রোগ্রামিং আপডেট করার পরে এই হুমকি এসেছে। গ্রুপটি গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রচারের জন্য কংগ্রেসের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি অনলাইন প্রচারণা শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: গাজায় 'মানবিক বিরতির' আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবের ব্যর্থতায় ফ্রান্সের দুঃখ প্রকাশ
এক বিবৃতিতে সিএআইআর-এর ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ফিলিস্তিনি আমেরিকান নিহাদ আওয়াদ বলেন, ‘আমরা আমাদের সংস্থা, ম্যারিয়ট হোটেল এবং এর কর্মীদের বিরুদ্ধে চরম ও ঘৃণ্য হুমকির তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা ফিলিস্তিন বিরোধী বর্ণবাদী ও মুসলিম বিদ্বেষীদের হুমকি মেনে নেব না, যারা ফিলিস্তিনি জনগণকে অমানবিক করতে চায় এবং সবার জন্য ন্যায়বিচার পেতে বাধা দিতে আমেরিকান মুসলমানদের চুপ করিয়ে দিতে চায়।’
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে হামাস গত ৭ অক্টোবর নিকটবর্তী ইসরায়েলি শহরগুলোতে অভিযান চালায়। এতে শত শত সামরিক-বেসামরিক লোক নিহত হয়। এরপর থেকে ইসরায়েল গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে পুরো এলাকা ধ্বংস করে দিয়েছে এবং শত শত ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে।
এই যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতাকে অনুপ্রাণিত করবে বলে উদ্বেগ রয়েছে। গত সপ্তাহে বড় বড় শহরগুলোতে পুলিশ টহল বৃদ্ধি করেছে। কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলের চারপাশে বেড়া স্থাপন করে এবং কিছু স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে। তবে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনও বিশ্বাসযোগ্য হুমকি নেই।
আরও পড়ুন: ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলা: ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি বিচারের আহ্বান আইন প্রণেতাদের
সিরিয়ার বিমানবন্দরে ইসরায়েলি হামলা ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’: জাতিসংঘের মুখপাত্র
ইসরায়েলি হামলায় সিরিয়ার দুটি বিমানবন্দরকে বিকল করে দিয়েছে। ইসরায়েলের এ ধরনের হামলাকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের একজন মুখপাত্র।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক বলেছেন, আলেপ্পো ও দামেস্ক বিমানবন্দরে ইসরায়েলি হামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
বিশেষ করে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সতর্কতা ও উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন তিনি।
মুখপাত্র বলেছেন, গুতেরেস সিরিয়ায় সমস্ত সহিংসতার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে বেসামরিক নাগরিক এবং বেসামরিক অবকাঠামোকে অবশ্যই সুরক্ষা দিতে হবে। তা স্মরণ করে সব পক্ষকে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তাদের বাধ্যবাধকতাকে সম্মান করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গাজার উত্তরাঞ্চলের ১ মিলিয়ন মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ ইসরায়েলের
তিনি প্রাত্যাহিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা এমন একটি সময়ে আছি যেখানে এই উত্তেজনাগুলো আরও বেড়েছে। সেখানে একটা ভুল পদক্ষেপও এরই মধ্যে অস্থিতিশীল হওয়া অঞ্চলকে ব্যাপক সহিংসতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।’
তিনি বলেন, যে দুটি বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলোতে জাতিসংঘের মানবিক বিমান পরিষেবা সাময়িক স্থগিত থাকবে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে দামেস্ক ও আলেপ্পোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোর উদ্দেশে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে ইসরায়েল
ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৩ জিম্মি নিহত: আল-কাসাম ব্রিগেড
ইসরায়েল ও হামাসের সংঘর্ষে ৯ মার্কিন নাগরিক নিহত: এনএসসি
হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে ৯ জন মার্কিন নাগরিকও রয়েছেন।
সোমবার (৯ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান মার্কিন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) প্রতিনিধি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনকে দেওয়া বক্তব্যে ওই মুখপাত্র বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা ৯ জন মার্কিন নাগরিকের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করতে পারি। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের এবং ক্ষতিগ্রস্ত সবার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। একই সঙ্গে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’
আরও পড়ুন: হামাসের আকস্মিক হামলা-ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়ায় নিহত ১০০০ ছাড়িয়েছে
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং সেখানে রয়েছি। আমাদের ইসরায়েলি অংশীদারদের সঙ্গে, বিশেষ করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’
স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমরা ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ করছি, কারণ তারা নিখোঁজ মার্কিন নাগরিকদের খুঁজে বের করার জন্য নিরাপত্তা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে… এবং আমরা অবশ্যই নিহত এই ৯ জন আমেরিকানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করছি এবং তাদের প্রয়োজনীয় যেকোনো কনস্যুলার সহায়তা দিচ্ছি।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখনও সংঘর্ষে জড়িত মার্কিন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করছে।
আরও পড়ুন: হামাসের আকস্মিক হামলায় ২২ ইসরায়েলি সেনা নিহত
গাজায় হামাসের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলা