এনসিপি
হাসিনা রায়ের পর আওয়ামী লীগের বিচারও হওয়া উচিত: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গণহত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে তারা সন্তুষ্ট, তবে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যেদিন আমাদের ভাই আবু সাঈদ শহীদ হয়েছিলেন, সেদিন আমরা শপথ নিয়েছিলাম যে, এই হত্যার বিচার আদায় করেই ছাড়ব। জুলাই বিপ্লবে যে হাজারো শহীদ এবং কয়েক হাজার আহতের ওপর যে জুলুম করা হয়েছিল, সেই জুলুমের রায় আমরা আজকে পেয়েছি।
‘বিগত ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এদেশের সাধারণ মানুষের ওপর যে জুলুম-নির্যাতন করেছিল, গুম-খুন ও মানবাধিকার হরণসহ পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা ও জুলাইয়ের গণহত্যা করেছিল—এসব কিছুর বিচারের রায় আমরা পেয়েছি। আমরা এই রায়কে স্বাগত জানাই। এ দেশের বিচারিক ইতিহাসে এই রায় একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।’
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা কেবল এই রায় পেয়েই সন্তুষ্ট নই। আমরা সেদিনই সন্তুষ্ট হব, যেদিন এই রায় কার্যকর করা হবে। আমরা যেদিন আমাদের জীবদ্দশায় শুনতে পাব যে, শেখ হাসিনাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকর করা হয়েছে, সেদিনই আমরা শান্তি পাব। সেদিনই জুলাই বিপ্লবের শহীদদের আত্মা শান্তি পাবেন, শহীদ পরিবার ও আহতরা শান্তি পাবেন।’ এ সময় তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় কার্যকর করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, বরং জুলাই-আগস্টের ভিক্টিম হিসেবে বিচারের রায় ও তা কার্যকর দেখতে চাই। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আজকের রায়ে ব্যক্তি হিসেবে শেখ হাসিনাকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে এই রায়ের মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, শেখ হাসিনা শুধু ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং দল ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এই গণহত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী ছিলেন। ফলে আওয়ামী লীগও দল হিসেবে এই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত।’
১৭ দিন আগে
বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগকে আর ফিরতে দেওয়া হবে না: আখতার
বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগকে কোনোভাবেই ফিরতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। এ লক্ষ্যে তার দলের সব নেতা-কর্মীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এনসিপির এই শীর্ষ নেতা।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নে নির্বাচনী উঠান বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আখতার হোসেন বলেন, যারা বাংলাদেশের মানুষের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে, সেই আওয়ামী লীগ আবারও নাশকতা চালাচ্ছে। বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগকে কোনোভাবেই ফিরতে দেওয়া হবে না।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপি ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা ও অবস্থান থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে জাতীয় স্বার্থে ও দেশের প্রয়োজনে বাংলাদেশকে নতুন পথে এগিয়ে নিতে হলে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়েও আমরা ওপেন (উন্মুক্ত) রয়েছি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে, যদিও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখিনি আমরা এককভাবেও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।
দলের প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে এনসিপির এই নেতা বলেন, সারা দেশ থেকে এমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে চাই যারা জনগণের কথা ভাববে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি টিম গঠন করা হয়েছে, তারা মনোনয়নপত্র বিতরণ করছে। সারা দেশের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ফরম সংগ্রহ করছেন। ইতোমধ্যে অনেক যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। যাচাই-বাছাই শেষে ১৫ নভেম্বরের পর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে।
গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ে দলের অবস্থান জানতে চাইলে আখতার হোসেন বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশটি সঠিকভাবে জারি করা। সরকার কীভাবে এই আদেশ জারি করবে, তাতে কী থাকবে আর কী থাকবে না—সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। যদি সরকার জুলাই সনদের আদেশ যথাযথভাবে জারি করে, তাহলে সংকটের সমাধান সম্ভব এবং এর মাধ্যমেই গণভোটের প্রশ্ন নির্ধারিত হবে।
তিনি আরও বলেন, গণভোট নির্বাচনের দিনই হোক বা আগে, তাতে তেমন প্রভাব পড়বে না, যদি জুলাই সনদের আদেশ সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়। কিন্তু আদেশটি সঠিকভাবে জারি না হলে গণভোটও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে টেকসই করতে পারবে না। আমরা আশা করি, সরকার দ্রুত জুলাই সনদের আদেশ জারি করবে এবং জনগণের পক্ষেই অবস্থান নেবে।
এর আগে উঠান বৈঠকে আখতার হোসেন বলেন, নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়াই বড় সংকট। নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে সুরাহা না হলে নির্বাচনের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। তাই এনসিপি নির্বাচনের আগে গণভোটের পক্ষে।
২২ দিন আগে
এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে এনসিপি: নাহিদ ইসলাম
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এককভাবে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এছাড়া, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া যেসব আসন থেকে লড়বেন, সেখানে এনসিপি কোনো প্রার্থী নাও দিতে পারে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (৫ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে মৃত্যুবরণকারী শহীদ গাজী সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব কথা বলেন তিনি।
৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা খুব স্পষ্টভাবেই এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আমাদের সংস্কার ও জুলাই সনদের দাবির সঙ্গে কোনো দল সংহতি প্রকাশ করলে জোটের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তিনটি আসন থেকে লড়বেন। এসব আসনে এনসিপি কোনো প্রার্থী নাও দিতে পারে। বিএনপির চেয়ারপারসনসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের সম্মানে আমরা প্রার্থী নাও দিতে পারি।”
এর আগে, মঙ্গলবার এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিপক্ষে এনসিপি কোনো প্রার্থী দেবে না।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা এবার বাংলাদেশের নির্বাচনের সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে চাই। আমরা দেখি, যাদের টাকা আছে, যারা এলাকার গডফাদারগিরি করেন, তারাই নির্বাচন করেন।”
তিনি আরও বলেন, “একজন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে এলাকার শিক্ষক রয়েছেন, ইমাম রয়েছেন, গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে—তাদের আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে দেখতে চাই।”
এ সময় শাপলা কলির বিজয়ের জন্য তিনি জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেন।
২৯ দিন আগে
এনসিপিসহ ৩ দলকে প্রতীক ও নিবন্ধন দিয়ে ইসির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-সহ তিনটি রাজনৈতিক দলকে প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, এনসিপিকে ‘শাপলা কলি’, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে ‘হ্যান্ডশেক’ এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-কে ‘কাঁচি’ প্রতীকে নিবন্ধন দিয়েছে কমিশন।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদের সই করা আলাদা তিনটি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এই তিন দলের নিবন্ধনের নিয়ে কারো কোনো আপত্তি থাকলে প্রয়োজনীয় দলিলাদিসহ কারণ উল্লেখপূর্বক ১২ নভেম্বরের মধ্যে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদের কাছে লিখিতভাবে জানানোর অনুরোধ করেছে ইসি। এরপর উত্থাপিত আপত্তি নিষ্পত্তি করে ১৪-১৫ নভেম্বরের মধ্যে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জুলাই অভ্যুত্থানের সামনের সারির নেতাদের নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এরপর জুলাই সনদসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলটি সরব রয়েছে। এনসিপির আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নাম বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন কারাগার থেকে বেরিয়ে গত ১৭ এপ্রিল ‘বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি’ নামে নতুন দলের সূচনা করেন। তবে কাছাকাছি নামের আরেকটি দল আপত্তি তোলায় দলটি নাম পাল্টিয়ে হয় ‘বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি’।
এছাড়া, ২০১৩ সালে ১২ এপ্রিল বাসদের তৎকালীন সাধারণ খালেকুজ্জামানসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে দলের আদর্শচ্যুতির অভিযোগ এনে বেরিয়ে যান ওই সময়কার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ও শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী। ওই দিন এক সংবাদ সম্মেলনে মুবিনুল হায়দারকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয় বাসদ (মার্কসবাদী)।
তিনটি দলই ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ৯০ (খ) অনুচ্ছেদের আওতায় নিবন্ধিত হয়েছে।
৩০ দিন আগে
অবশেষে ‘শাপলা কলি’ নিতে রাজি এনসিপি
নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’র জন্য অনড় অবস্থান থেকে সরে এসে ‘শাপলা কলি’ নিতে রাজি হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী সাংবাদিকদের এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শাপলা কলি নেব। এখন এখানে আপনাদের একটা বিষয় থাকতে পারে, শাপলা নিয়ে কিন্তু আমরা এখনো ব্যাখ্যা পাইনি। নির্বাচন কমিশনের যে স্বেচ্ছাচারী আচরণ, কিন্তু এখন কি তাইলে আমরা প্রতীক নিয়ে পড়ে থাকব? আমরা কি ইলেকশন ফেজে (পর্যায়ে) ঢুকব না? তো সে জন্য আমরা বৃহত্তর স্বার্থটা চিন্তা করেই এই ডিসিশনটা (সিদ্ধান্ত) নিচ্ছি।’
নাসিরউদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘শাপলা, সাদা শাপলা ও শাপলা কলিকে দলের প্রতীক হিসেবে চেয়ে ইসিতে চিঠি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। শাপলা কলি দেওয়া হলে এনসিপি নেবে। তৃণমূল কলিকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে আমরা শাপলা কলি নিয়েও কিছু পজিটিভ সাড়া পেয়েছি। এটা শাপলার চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে শাপলা কলি হয়েছে। অর্থাৎ শাপলাও আছে, কলিও আছে। সে জায়গায় নির্বাচন কমিশন আমরা যতটুকু চিন্তা করেছি, তারা একধাপ একটু বাড়িয়ে চিন্তা করে সেখানে কলি ও শাপলা যুক্ত করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদেরকে (ইসি) আমরা আহ্বান জানিয়েছি যে দ্রুত গতিতে যাতে এনসিপির যে নিবন্ধন প্রক্রিয়া এটা সম্পূর্ণ করে। আমরা যাতে আমাদের মাঠে প্রতীক নিয়ে যেতে পারি, সে বিষয়ে সুরাহা বা সমাধান করার জন্য। আগামীতে ইনশাআল্লাহ ধানের শীষ এবং শাপলা কলির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’
৩২ দিন আগে
‘শাপলা কলি’ নয়, প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ই চায় এনসিপি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতীকের তালিকায় ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ধারণা করা হচ্ছে, এটিই হতে যাচ্ছে দলটির প্রতীক। তবে এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ইসির এ সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচন কোন পথে’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ বিষয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী।
নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “নির্বাচন কমিশন নতুন গেজেটে আমাদেরকে ‘শাপলা কলি’ প্রতীক দিয়েছে। কমিশন এটি কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করেছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে ‘শাপলা’ প্রশ্নে আমরা আপসহীন।”
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সমনে রেখে এনসিপিসহ দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে এনসিপিকে তফসিলে থাকা ৫০টি প্রতীকের মধ্যে থেকে মার্কা বেছে নিতে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় ইসি।
৩৫ দিন আগে
ইসির প্রতীক তালিকায় যুক্ত হলো ‘শাপলার কলি’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ‘শাপলার কলি’ প্রতীকটি অন্তর্ভুক্ত করে ১১৯টি নির্বাচনী প্রতীকের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। এতে সই করেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
সংশোধিত সূচি অনুযায়ী, নতুন করে ২০টি প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে এবং পুরোনো ১৬টি প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে।
নতুন যুক্ত হওয়া প্রতীকগুলো হলো— উট, চিরুনি, মশাল, টেবিল ল্যাম্প, ট্রাক্টর, ড্রেসিং টেবিল, তালা, দোতলা বাস, পাগড়ি, কলের পানি, পালকি, ফলের ঝুড়ি, বেবি ট্যাক্সি, বৈদ্যুতিক বাল্ব, মোটরসাইকেল, সিঁড়ি, সূর্যমুখী ফুল, রেলইঞ্জিন ও হ্যান্ডশেক।
অন্যদিকে, বাদ দেওয়া প্রতীকগুলো হলো— কলা, খাট, উটপাখি, চার্জার লাইট, টিফিন ক্যারিয়ার, ঢোল, তরমুজ, ফ্রিজ, বাঁশি, বেঞ্চ, বেগুন, বেলুন, লাউ, শঙ্খ, স্যুটকেস ও ফুলের টব।
এর আগে ইসি ১১৫টি প্রতীকের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল, যেখানে ‘শাপলার কলি’ অন্তর্ভুক্ত ছিল না। অথচ দলটি নিবন্ধনের আবেদন করার পর থেকেই ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দের জন্য বারবার দাবি জানিয়ে আসছিল।
৩৫ দিন আগে
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন হওয়ার সুযোগ নেই: নাহিদ
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন হওয়ার কোনো সুযোগই নেই মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং গণহত্যার বিচারের রোডম্যাপ দিয়ে তারপরে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।’
তিনি বলেছেন, ‘দেশের স্থিতিশীলতার জন্য দ্রুত নির্বাচন চাই। তবে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজ শেষ করতে হবে।’
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুর পর্যটন মোটেলে বিভাগের আট জেলা ও মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে পদপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশে নানামুখী সংকট তৈরি হয়েছে। পতিত স্বৈরাচার শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। নানামুখী সংকটের জন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। আমাদের দলগুলোর মধ্যে যে সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধান করে এক জায়গায় থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি মনে করে এককভাবে সব নেতৃত্ব দেবে, সরকার গঠন করে ফেলবে, এটি আসলে সম্ভব হবে না। দেশে সবগুলো পক্ষের মধ্যে ন্যূনতম ঐক্য না থাকলে এককভাবে সরকার গঠন ও সংসদ টিকিয়ে রাখা কারো পক্ষে সম্ভব হবে না। জনগণের ন্যূনতম আকাঙ্ক্ষা, সংস্কার, বিচারের দাবিকে উপেক্ষা করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া হলে সেটি টেকসই হবে না।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘টেকসই স্থিতিশীল পরিবর্তনের জন্য ন্যূনতম সংস্কার, অল্পকিছু জায়গায় সংবিধান সংস্কার করে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই। সেই জায়গায় বাধা এলে, কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে গড়িমসি করা হলে, সরকার ও বাধাদানকারীকে জনগণের মুখোমুখি হতে হবে।’
জোটের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘পুরোনো দলগুলোর প্রতি জনগণের অনীহা রয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট গ্রুপ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। গত ১৬ বছর অনেকে জনগণের পক্ষে সঠিকভাবে দাঁড়াতে পারেনি। বিভিন্ন দলের অতীত কলঙ্ক রয়েছে। বিএনপির শাসনামল নিয়ে দুর্নীতির অনেক সমালোচনা রয়েছে। ৫ আগস্টের পরও তাদের দল নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। জামায়াতের ঐতিহাসিকভাবে দায়ভার রয়েছে, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়েও তারা সমালোচিত। তাই কোনো ধরনের জোটে গেলে অবশ্যই ভাবতে হবে। জোটের বিষয়ে নীতিগত জায়গা থেকে যারা জুলাই সনদ, বিচার, সংস্কারের প্রশ্নে আমাদের কাছাকাছি ভূমিকায় রয়েছে, তাদের বিষয়ে চিন্তা করব।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে এক দফার ঘোষক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের দুটি প্রস্তাবনা দেওয়ার দরকার ছিল না। দ্বিতীয় প্রস্তাব একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম প্রস্তাবে আমরা সমর্থন দিচ্ছি কিছুটা সংশোধন সাপেক্ষে। আমাদের দাবি ছিল, জুলাই সনদের আদেশ প্রকাশ করা ও আদেশটিকে জারি করবে—এ বিষয়টি পরিষ্কার করা। সুপারিশে বলা হয়েছে, আদেশ জারি করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ ছাড়া গণভোটের কথা বলেছি। এটির মাধ্যমে পরবর্তী সংসদের হাতে সেই ক্ষমতা থাকবে, যারা সংস্কার সংবিধান ২০২৬ তৈরি করবে।’
ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে বিএনপি বড় সংস্কারের বিপক্ষে ছিল। স্বাভাবিকভাবে গোটা সংস্কার প্রক্রিয়া তারা চায় কিনা সেটি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বিএনপি ভেটো দিয়েছে। তবে অন্য দলগুলো একমত হওয়ায় জনগণের চাপের কারণে তারা সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে।’
এ সময় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানান নাহিদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. আতিক মুজাহিদ, জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল্লাহ গালিব, মহানগর সমন্বয়কারী সাদিয়া ফারজানা দিনা প্রমুখ।
৩৬ দিন আগে
কমিটমেন্টের ভিত্তিতে জোটবদ্ধ হতে পারে এনসিপি: সারজিস
কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবে কিনা, সে বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি জানিয়ে দলটির উত্তর অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, দেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগ ও ভারতের আধিপত্যবাদ-বিরোধী অবস্থানে যারা সুদৃঢ় থাকবে, তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে পারে এনসিপি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান। শহরের সিটি ড্রিম হোটেল মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে বিকেল ৫টার দিকে এনসিপির জেলা কমিটির নেতাদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন সারজিস আলম।
সারজিস আলম বলেন, ‘এনসিপি এখনও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি, কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবে কিনা। তবে যদি হয়, তাহলে এই কমিটমেন্টের ভিত্তিতে হবে— যারা আগামীর বাংলাদেশে জুলাই সনদের প্রত্যেকটি সংস্কার বাস্তবায়নে কাজ করবে; যারা আগামীর বাংলাদেশে বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করবে; যারা শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের জন্য কাজ করবে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগ এবং ভারতের আধিপত্যবাদ-বিরোধী যাদের অবস্থান, ওই অবস্থানে যারা সুদৃঢ় থাকবে তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতেও পারে এনসিপি।’
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দেখছেন কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সক্রিয়তা বজায় রেখে নিরপেক্ষ থাকবে— এইটুকু যদি তারা প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে এনসিপির কোনো সমস্যা নেই।’
৩৮ দিন আগে
‘কাউকে খুশি করার জন্য’ শাপলা প্রতীক দিচ্ছে না ইসি, দাবি সারজিসের
শাপলা প্রতীক দিতে কোনো আইনি বাধা নেই উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম দাবি করেছেন, নির্বাচন কমিশন কাউকে খুশী করার জন্য এ সিদ্বান্ত দিচ্ছেন।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমিতে এনসিপি দিনাজপুর জেলা শাখার সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দিতে কোনো আইনগত বাধা নেই। বিষয়টি নিয়ে আমরা আইনবিদদের সঙ্গে কথা বলেছি। নির্বাচন কমিশন কাউকে খুশি করার জন্য এ সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আমাদের দেখাক, কোন আইনে শাপলা প্রতীক এনসিপিকে দেওয়া যাবে না। যে নির্বাচন কমিশন একটি রাজনৈতিক দলকে শাপলা প্রতীক দিতে সৎ সাহস দেখাতে পারে না, তাদের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
আগামীতে এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়েই নির্বাচন করবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যদি আমাদের সঙ্গে অন্যায় করে তাহলে এনসিপি রাজনৈতিকভাবে তার মোকাবিলা করবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন বলেছেন যে জুলাই সনদে এনসিপি এবং চারটি রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর না করলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে না—এ বিষয়টিতে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সারজিস বলেন, ‘সাধারণ মানুষ ঠিক করবে, প্রভাব পড়বে কি পড়বে না। জুলাই অভ্যুত্থানের আগে রাজনৈতিক দলগুলো হাহাকার করত। কর্মসুচি দিয়ে রাস্তায় দাঁড়ানোর কোনো লোক ছিল না। বড় বড় রাজনৈতিক দলের অফিসগুলোতে ১০ জন কর্মী ছিল।’
ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলে সারজিস আলম বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি থাকতে হবে। নাম-কা-ওয়াস্তে জুলাই সনদ একটা কাগজ চান, সেটা জনগণ মেনে নেবে না।’
এ সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রধান সমন্বয়কারী ফয়সল করিম সোহেব। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিভাগীয় সাংগাঠনিক সম্পাদক ড. আতিক মুজাহিদ, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ডা. আব্দুর আহাদ। সমন্বয় সভায় দিনাজপুরের ১৩ উপজেলা থেকে এনসিপি নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
৪৬ দিন আগে