নতুন ফরমেটের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম পর্বের শেষ রাউন্ডে এসে অবশেষে হারল লিভারপুল। ইংলিশ ক্লাবটির এই হারে তাদের টপকে শীর্ষে থেকে লিগ পর্ব শেষ করার সুযোগ ছিল বার্সেলোনার সামনে। তবে অসংখ্য গোলের সুযোগ নষ্ট করে কাতালান ক্লাবটির পক্ষে তা আর হয়ে ওঠেনি।

বুধবার রাতে ইউরোপের এলিট লিগে অপরাজিত লিভারপুলকে মাটিতে নামিয়েছে ডাচ লিগ চ্যাম্পিয়ন পিএসভি আইন্ডহোভেন। দুবার পিছিয়ে পড়েও ম্যাচটি ৩-২ গোলে জিতে নিয়েছে পিটার বশের শিষ্যরা।

ম্যাচের ২৮তম মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে তা থেকে লিভারপুলকে এগিয়ে নেন কোডি গাকপো। এর ৭ মিনিট পর ইয়োহান বাকায়োকোর গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।

এরপর পাঁচ মিনিট যেতে না যেতেই ফের লিভারপুলকে এগিয়ে নেন হার্ভি ইলিয়ট। তবে ৪৫তম মিনিটে আবারও পিএসভিকে সমতায় ফেরান ইসমায়েল সাইবারি।

তারপর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের একেবারে শেষ সময়ে আমেরিকান স্ট্রাইকার রিকার্ডো পেপির গোলে ম্যাচ প্রথমবার এগিয়ে গিয়ে বিরতিতে যায় আইন্ডহোভেন।

আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়ন্স লিগ: শেষ ষোলো ও প্লে-অফে উঠল যারা

দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে গোলে আর তেমনভাবে শটই নিতে পারেনি আর্নে স্লটের শিষ্যরা। অন্যদিকে, বলের দখল কিছুটা বেশি সময় ধরে রেখে কয়েকবার ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করলেও আর গোল করতে পারেননি ডাচ ক্লাবটির খেলোয়াড়রা। এর মাঝে আবার নির্ধার্তি সময়ের তিন মিনিট বাকি থাকতে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় লিভারপুলের জার্সিতে কয়েক মিনিট আগেই অভিষেক হওয়া ১৮ বছর বয়সী ইংলিশ ডিফেন্ডার আমারা নালোকে। ফলে ৩-২ গোলেই শেষ হয় ম্যাচটি।

এই ম্যাচ হেরে গেলে প্রথম পর্ব থেকেই ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা থাকলেও জিতে ভালোভাবে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে ডাচ ক্লাবটি। ৮ ম্যাচে ৪ জয় ও ২ ড্রয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ১৪তম স্থানে থেকে প্রথম পর্বের খেলা শেষ করেছে তারা।

তবে হেরে যাওয়ার পরও ৭ জয়ে ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে লিভারপুলের। অবশ্য নিজেদের ম্যাচে জয় পেলে সমান পয়েন্ট নিয়েও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শীর্ষে উঠতে পারত বার্সেলোনা। তবে ম্যাড়মেড়ে ফুটবল উপহার দিয়ে ঘরের মাঠ থেকে সেই সুযোগ হাতছাড়া করেছে কাতালানরা।

অলিম্পিক স্টেডিয়ামে আতালান্তার বিপক্ষে দুবার এগিয়ে গিয়েও তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে হান্সি ফ্লিকের দল।

ম্যাচের ৪টি গোলের সবগুলো হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। প্রথমার্ধে অবশ্য আতালান্তার দাভিদ সাপ্পাকোস্তার একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়।

তবে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই (৪৭তম মিনিটে) লামিন ইয়ামাল বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেওয়ার পর ৬৭তম মিনিটে এদেরসনের গোলে সমতায় ফেরে আতালান্তা। এর পাঁচ মিনিট পর কর্নার থেকে আসা ক্রসে চমৎকার হেডে গোল করে বার্সাকে ফের এগিয়ে নেন রোনালদ আরাউহো। তবে সেই ব্যবধান বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেননি তারা। ৭৯তম মিনিটে দুর্দান্ত এক আক্রমণে উঠে দ্বিতীয়বারের মতো আতালান্তার সমতাসূচক গোলটি করেন মারিও পাসালিচ।

শেষ সময়ে বেশ কয়েকটি ভীতি জাগানিয়া আক্রমণ শানায় বার্সেলোনা, তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে সেগুলো লক্ষ্য খুঁজে পায়নি। ফলে ২-২ সমতায় শেষ হয় ম্যাচ।

এতে ৬ জয় ও এক ড্রয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানেই থিতু হয়ে সরাসরি শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে ফ্লিকের দল।

আরও পড়ুন: জেতাও পর্যাপ্ত হলো না রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্নের

বার্সেলোনা পয়েন্ট হারালেও অবশ্য তাতে খুব বেশি লাভ হয়নি আতালান্তার। শেষ আটে থাকতে জয়ের বিকল্প ছিল না জিয়ান পিয়েরো গাস্পেরিনির শিষ্যদের। ড্র করে তাই শীর্ষ আটের ঠিক পরেই, অর্থাৎ নবম স্থানে থেকে আক্ষেপ নিয়ে প্রথম পর্ব শেষ করতে হয়েছে তাদের।

এছাড়া, স্ব স্ব ম্যাচে দারুণ জয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ হয়ে লিগপর্ব শেষ করেছে আর্সেনাল ও ইন্টার মিলান। আর্সেনাল জিরোনাকে ২-১ গোলে এবং মোনাকোকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ইন্টার। জিরোনা আগে থেকেই ছিটকে গেলেও ইন্টারের কাছে হেরে শেষ আট থেকে ছিটকে প্লে-অফে ঠাঁই হয়েছে মোনাকোর।

এছাড়া জাৎসবুর্গকে ৪-১ গোলে হারিয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। আর নিজ নিজ ম্যাচে জয় পেয়ে সমান ১৬ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানের তারতম্যে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম স্থান নিশ্চিত করেছে যথাক্রমে বায়ের লেভারকুজেন, লিল ও অ্যাস্টন ভিলা।

শেষ ম্যাচে স্পার্তা প্রাহাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে লেভারকুজেন, ফেয়েনুর্ডের বিপক্ষে ৬-১ গোলের বড় জয় পেয়েছে লিল এবং নাটকীয় প্রথমার্ধের পর ৪-২ গোলের দারুণ জয়ে সরাসরি শেষ ষোলো নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছে উনাই এমেরির অ্যাস্টন ভিলা।