ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ হুথি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় সন্দেহজনক বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। শুক্রবার (২৮ মার্চ) ভোরে এসব হামলা চালানো হয়।
এসব হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করা হয়নি। গত ১৫ মার্চ থেকে মার্কিন বাহিনীর শুরু করা অভিযানের হামলাগুলোর তুলনায় এটির তীব্রতা বেশি ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি বিমান হামলায় লেবাননে নিহত ৬, আহত ২৮
অ্যাসেসিয়েটেড প্রেসের (এপি) একটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টে জো বাইডেনের চেয়ে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলার পরিমাণ বাড়িয়েছেন। কারণ হিসেবে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ও পদস্থ কর্মকর্তাদের ওপর হামলার পাশাপাশি শহরগুলোতে বোমা হামলা চালাচ্ছে।
হুতিদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ইয়েমেনের রাজধানী সানায় শুক্রবারের হামলায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি সাদা, লোহিত সাগরের বন্দর নগরী হোদেইদা এবং ইয়েমেনের আল-জওফ, আমরান ও মারিব প্রদেশের আশপাশে হামলা চালানো হয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
তবে সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়া আর কোন স্থানটিকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি হুথি বিদ্রোহীরা। সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সামরিক ও বেসামরিক উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়। রাজধানীর আশেপাশের এলাকায় সামরিক, গোয়েন্দা পরিষেবার কার্যক্রম ও বেসামরিক নাগরিকরা থাকেন।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, একটি ভিডিওতে তারা দেখেছে যে, রাজধানী সানায় অনেক মানুষ শবে কদরের রাত জাগার সময় একটি বোমা ফেলা হচ্ছে, সেখান থেকে ব্যাপক ধোয়ার কুণ্ডলী উঠছে।
সানার উত্তরাঞ্চলে আমরানের পাহাড়ি এলাকার হামলার ঘটনা ঘটেছে। যেখানে হুথিদের সামরিক স্থাপনা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
হুথিদের আল মাসিরাহ স্যাটেলাইট নিউজ নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, হামলার পর যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়ে। সেখানে ১৯টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হোয়াইট হাউজের পূর্বানুমতি ছাড়া হামলা চালানোর ক্ষমতা থাকা মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ২০০
নতুন করে চালানো ধারাবাহিক বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৫৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। গাজা উপত্যকায় ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলি জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করলে মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনে বিমান হামলা শুরু করে।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক বাণিজ্যিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা। এর মধ্যে দুটি জাহাজকে ডুবিয়ে দিয়েছে এবং চারজন নাবিককে হত্যা করেছে। তারা মার্কিন জাহাজকে লক্ষ্য করেও হামলা চালিয়েছে, যদিও তাতে সফল হয়নি গোষ্ঠীটি।