ভূমিকম্প কিংবা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ বা লোকবল কোনোটিই আর মার্কিন প্রশাসনের নেই বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএইড) সাবেক প্রধান সারাহ চার্লস।
ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সহায়তার আশ্বাস দিলে এই মন্তব্য করেন সারাহ। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ মার্চ) ওয়াশিংটনে ভূমিকম্প সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সহায়তা দেওয়ার কথা বলেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন: খাটের নিচে লুকিয়ে থাকা ‘দানব’ ধরিয়ে দিল শিশু
তবে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরেই যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএইড) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেওয়া বৈদেশিক সহায়তায় ব্যাপক কাঁটছাট করেন ট্রাম্প।
এ কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দুটি দেশে সংঘটিত এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসন কতটুকু কার্যকর হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের পরিস্থিতি ট্রাম্পের জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা বলে অভিমত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার দিনের মাঝামাঝিতে হওয়া এই ভূমিকম্পে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজারের বেশি। এখনো ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে।
এ দুর্ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা তাদের সহায়তা করতে চলেছি। সংশ্লিষ্টদের এরইমধ্যে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। যা হয়েছে, তা সত্যিই খুব খারাপ হয়েছে।’
এই বক্তব্যের পরে বৈদেশিক সহায়তা কাঁটছাট ও কর্মীদের ব্যাপকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করায় ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করে সারাহ বলেন, ‘প্রশাসন এখন ধুঁকে ধুঁকে চলছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত মানুষকে উদ্ধারের জন্য তাৎক্ষণিক সহায়তা দিতে হলে যে সম্পদ বা লোকবল প্রয়োজন, তা কোনোটিই এখন নেই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের।’
অবশ্য সারাহর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউএসএইডের বর্তমান মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস। তিনি জানান, যেকোনো দুর্যোগে তাৎক্ষণিকভাবে খাবার ও নিরাপদ পানিসহ অন্যান্য সহায়তায় বিশেষজ্ঞ টিম প্রস্তুত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে মিয়ানমারে সহস্রাধিক প্রাণহানি, ব্যাপক মানবিক সংকট
কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে সংস্থাটির কর্মদক্ষতার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানান তিনি।
সারাহ বলেন, ভূমিকম্পের মতো ঘটনাগুলোতে সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংস্থাটির একটি উদ্ধারকারী দল পৌঁছে যায়। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে ওই দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ছাড়াও বৈদেশিক সহায়তা বন্ধ ও কাঁটছাট করার কারণে জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোর জরুরি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে অভিমত দেন সারাহ।