চলছে বসন্ত; গ্রীষ্ম আসতে এখনও বাকি অন্তত দুই সপ্তাহ, এর মধ্যেই চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকাল ৩টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ। পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ১৮ শতাংশ থাকায় গরমের অনুভূতি আরও বেড়েছে।
রমজানের শেষ পর্যায়ে এসে এমন তীব্র গরমে নাকাল জেলার সাধারণ মানুষ। প্রচণ্ড রোদ আর গরমে রোজাদারদের কষ্ট বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। কেউ কেউ শরীরে দুর্বলতা অনুভব করছেন, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা ভুগছেন বেশি।
চুয়াডাঙ্গা শহরের বাসিন্দা নাসির উদ্দীন বলেন, ‘রোজা রেখে এই গরম সহ্য করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দুপুরের পর বাইরে বের হওয়া যায় না। গরমে মাথা ঘুরছে, শরীরও দুর্বল লাগছে।’
নিম্ন-আয়ের শ্রমজীবী মানুষদের কষ্ট আরও বেশি। চুয়াডাঙ্গা শহরের চৌরাস্তা মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা নাম না প্রকাশ করতে চাওয়া এক রিকশাচালক বলেন, ‘কাজ না করলে খাবার জুটবে না, কিন্তু এই গরমে রোজা রেখে রিকশা চালানো খুব কষ্টকর; গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে।’
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েকদিন ধরে জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে পারদ বেড়ে যাচ্ছে।’
জ্যেষ্ঠ আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা আরও কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে বলে জানান তিনি।
এদিকে, গরমের কারণে শহরের রাস্তাঘাট তুলনামূলক ফাঁকা। অধিকাংশ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না। তবে দিনমজুর, শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা রোদ-গরম উপেক্ষা করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
জেলার কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা হাসান আলী বলেন, ‘বাজারে ক্রেতা কম আসছে। প্রচণ্ড গরমে মানুষ বের হচ্ছে না। আমরা তো ঘরে বসে থাকতে পারি না, বিক্রি না করলে সংসার চলবে কীভাবে?’
প্রচণ্ড রোদের মধ্যে বাস ও রেল স্টেশনেও যাত্রীদের ভিড় তুলনামূলক কম দেখা গেছে।