রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি ফ্ল্যাটে মা ও মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যার কারণ উদঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। টাকা চুরি নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরেই প্রথমে গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজ এবং পরে তার মেয়েকে ছুরিকাঘাত করে গৃহকর্মী আয়েশা।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এসএম নজরুল ইসলাম এ কথা জানান।
গতকাল (বুধবার) ঝালকাঠি থেকে অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের যা জানা গেছে, তা নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ডিএমপি।
গত ৮ ডিসেম্বর সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলার বাসায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়াকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গৃহকর্মী বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আয়েশাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি নলছিটি এলাকায় তার দাদা শ্বশুর বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।
এসএম নজরুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকেই আয়েশা ও তার স্বামী পলাতক ছিলেন। তবে মোহাম্মদপুর থানায় গৃহকর্মীদের যেসব তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষিত থাকে, সেগুলোর বিস্তারিত পর্যালোচনার ভিত্তিতেই তাদের অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
তিনি বলেন, মোহাম্মদপুর থানায় সংরক্ষিত একটি পুরোনো নথিতে থাকা আয়েশার ছবিতে গলায় পোড়া দাগ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। ওই সূত্র ধরে তদন্তকারী দল জেনেভা ক্যাম্পে যায়, যেখানে আগের চুরির কারণে তিনি পরিচিত ছিলেন।
তার ভাষ্যে, ‘আয়েশা আগেও এক বাসায় চুরি করেছিল। গত ২৫ জুলাই আরেক বাসা থেকে ৮ হাজার টাকা চুরি করে ধরা পড়েছিলেন। সেটা নিয়ে জিডিও হয়েছে। এটা একটা ক্লু হিসেবে কাজ করেছে। তিনি তার নিজের বোনের বাসা থেকেও চুরি করেছেন।
‘আয়েশার শরীরের পোড়া দাগ নিয়ে আমরা দুই ধরনের তথ্য পেয়েছি। একবার বলেছেন যে তিনি মায়ের সঙ্গে কোনো এক সময় রাগারাগি করে নিজের গায়ে আগুন দিয়েছিলেন। অন্য এক জায়গা থেকে জেনেছি যে, কোনো এক বাসায় কাজ করার সময় চুলা থেকে আগুন লেগে তার গলা পুড়ে গেছে। আমরা দুটো তথ্যই ভেরিফাই করছি।’