বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কেউন তার দেশের কোম্পানির নির্মিত মাতারবাড়ি কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছেন।
এসময় তিনি ৭৫ জন কোরিয়ান প্রকৌশলীর কাজ পর্যবেক্ষণ করেন এবং তাদের উৎসাহিত করেন।
পরিচালকরা তাকে প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে ব্রিফ করেন।
তিনি এসময় বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্ম পসকো ইএনডসি-এর চ্যালেঞ্জগুলো শোনেন এবং সেগুলোর সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন।
সোমবার পরিদর্শনকালে রাষ্ট্রদূত লি বলেন যে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বড় অবকাঠামো প্রকল্পে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে। যার মধ্যে ভান্ডালজুরি পানি সরবরাহ প্রকল্পে তাইয়ং ইএন্ডসি-এর সম্পৃক্ততা এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩নং টার্মিনাল নির্মাণে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি-এর ভূমিকা রয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, এই প্রকল্পগুলো চালু করার সময় কোভিড-১৯ মহামারির প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও, কোরিয়ান কোম্পানিগুলো তাদের সময়ানুবর্তিতা এবং কর্মদক্ষতার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভূঁয়সী প্রশংসা পেয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বড় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম ২০২৬ সালে শুরু হবে: খালিদ মাহমুদ
মঙ্গলবার ঢাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস জানিয়েছে, মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি এই অঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহের উন্নতি করবে। এইভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণে সহায়তা করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান পসকো ইএন্ডসি -জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের ৯৫ দশমিক ৯ শতাংশ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা চালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পে জাইকার অর্থায়নে সাত বছরের মধ্যে ১২০০ মেগাওয়াট (মেগাওয়াট) বিদ্যুত এবং অনুমোদিত সুবিধা উৎপাদনের ক্ষমতাসহ একটি কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হবে।
জাপানের সুমিতোমো, তোশিবা, এবং আইএইচআই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য একটি কনসোর্টিয়াম হিসেবে সহযোগিতা করছে। পসকো ইএন্ডসি -এর সঙ্গে প্ল্যান্টের প্রধান অংশ নির্মাণের জন্য সাবকন্ট্রাক্ট করা হয়েছে।
এই অঞ্চলের অর্থনীতিকে সাহায্য করার অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে, পসকো ইএন্ডসি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ হাজার স্থানীয় কর্মী নিয়োগ করেছে।
করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ ২০২০ সালের মার্চ মাসে শুরু হয়েছিল এবং বিলম্ব ছাড়াই এগিয়ে চলেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস জানিয়েছে, সঠিক সময়ে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য, পসকো ইএন্ডসি প্রকল্প শুরুর পর থেকে দিন-রাত কাজ করেছে।
আশা করা হচ্ছে যে মাতারবাডড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এবং দ্বিতীয় ইউনিটটি একই বছরের জুলাই মাসে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করবে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ি চ্যানেলে টাগশীপ ডুবি, চীনা নাগরিকের লাশ উদ্ধার