গেল অর্থবছরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। এসময় ২২৯ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। যা আগের ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের চেয়ে ১ কোটি ৩১ লাখ মার্কিন ডলার বেশি। করোনাকালে বেশি পণ্য রপ্তানি হওয়ায় এটি একটি রেকর্ড বলে মনে করছেন বন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুনঃ হিলি বন্দরে পণ্য আমদানি রপ্তানি শুরু
বন্দরের কাস্টমস কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হিলি স্থলবন্দরের মাধ্যমে ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতে ৩ হাজার ৪০০ পিস পানির পাম্প, ২৮৫ টন কর্টন র্যাগস (বর্জ্য কাপড়), ২৬ হাজার ৪৬৫ টন রাইস ব্রান অয়েল রপ্তানি করা হয়েছে। এতে সরকারের আয় হয়েছে ২ কোটি কোটি ৭২ লাখ ৪১ হাজার মার্কিন ডলার। ভারতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় এসব পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬০০ পিস পানির পাম্প, ১১৯ টন কর্টন র্যাগস, ১৯ হাজার ৬৭০ টন রাইস ব্রান অয়েল ও ৪ টন পানির পাম্পের বিভিন্ন পার্টস রপ্তানি হয়েছিল। যা থেকে আয় হয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৯৪ হাজার মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুনঃ ভারতে চামড়া পাচাররোধে হিলি সীমান্তে সতর্কতা
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ জানান, দিনদিন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানির পরিমাণ বাড়ছে। তেমনিভাবে ভারতে রপ্তানির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সেইভাবে রপ্তানি হচ্ছে না। কিছু সমস্যার কারণে ভারতে পণ্য রপ্তানি করা যাচ্ছে না। যেমন ভারতের হিলি কাস্টমস কার্যালয়ে সুপারিনটেনডেন্ট এর ওপরে কোন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পদ নেই, উদ্ভিদ সংগনিরোধ কার্যালয় নেই, পণ্য রাখার কোন শেড নেই, রাস্তা-ঘাটের অবস্থা অতটা ভালো নয়।
তিনি জানান, তাদের অংশে বন্দরসহ অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকায় রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক ভারতে গিয়ে সময়মতো পণ্য খালাস করতে পারে না। এ কারণে আগে বন্দর দিয়ে বেশ কিছু পণ্য রপ্তানি হলেও বর্তমানে হ্রাস পেয়েছে। এখনো বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল বিশেষ করে কাঁচা মরিচ, আলু, বেগুন, কলাসহ শাক-সবজি রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। সমস্যাগুলো সমাধান করা গেলে এই বন্দর দিয়ে ব্যাপক পরিমাণ পণ্য রপ্তানি বাড়বে। এতে আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুনঃ হিলিতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম
বন্দরের বাংলাহিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান লিটন বলেন, দেশে যখন দাম বেড়ে যায় এবং চাহিদা থাকে তখন আমরা হিলি দিয়ে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি করি। অন্যদিকে আমাদের দেশে যখন পর্যাপ্ত কাঁচা মরিচের উৎপাদন হয় তখন ৫-১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ওই সময় ইচ্ছা ও চাহিদা থাকলেও ভারতে কাঁচা মরিচ রপ্তানি করতে পারি না।
এদিকে হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের উপ-কমিশনার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, করোনাকালীন সময়ের মধ্যেও গেল ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭২ লাখ মার্কিন ডলার। যেখানে আগের ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি মূল্য ছিল ১ কোটি ৫৮ লাখ মার্কিন ডলার। ফলে রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৮২.৮৭ ভাগ। বর্তমানে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে রাইস ব্রান, ওয়াটার পাম্প, কর্টন র্যাগস রপ্তানি হচ্ছে।
সুযোগ কাজে লাগানো গেলে ব্যাটারি, জুস ও কৃষিপণ্যও ভারতের রপ্তানি হতে পারে তিনি জানান।