নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় অনলাইনে ডলার বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) তাদের গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার মামলা করা হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে ‘ট্রেজার এনএফটি’ নামে একটি অনলাইন ভিত্তিক স্কিম চালু করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছেন। তাদের প্রতারণার জাল কতদূর বিস্তৃত, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানান ওসি।
এর আগে, এ ঘটনায় থানায় করা মামলা ও নেত্রকোনা জেলা এনএসআইয়ের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার (১৫ জুন) রাত ৯টার দিকে আশুজিয়া ইউনিয়নের চান্দপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন— মৃত আব্দুল জাহেদের দুই ছেলে আরিফুল হক (৪৩) ও শরিফুল হক (৩২)।
তাদের বিরুদ্ধে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বড় পরিসরে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। অভিযানে তাদের মোবাইল ফোনসহ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়েছে। তবে প্রধান অভিযুক্ত মঞ্জুরুল হকের ছেলে মাসুদুল হাসান সৈকত (৩০) পালিয়ে যান বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় কেন্দুয়া থানায় ভবানীপুর গ্রামের মো. নাহিদুল ইসলাম (২০) নামের এক যুবক বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ‘সন্ত্রাসী’ তূর্য গ্রেপ্তার
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ট্রেজার এনএফটি প্ল্যাটফর্মে প্রতিদিন ১ দশমিক ৮ শতাংশ হারে লভ্যাংশ ও রেফারেন্স ইনকামের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে মোট ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা বিনিয়োগে বাধ্য করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোনো লাভ বা মূলধন ফেরত না পেয়ে তিনি প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা বাইন্যান্স (Binance), বাইবিট (Bybit), বিটগেট (Bitget), ট্রাস্ট ওয়ালেট (Trust Wallet), মেটামাস্কের (MetaMask) মতো আন্তর্জাতিক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কেন্দুয়ার আশুজিয়া ও দলপা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় দুই-তিন হাজার মানুষের কাছ থেকে কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্য ও গোপন নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।