নড়াইলের কালিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার তিনদিন পর মামলা করা হয়েছে। রবিবার (২১ মে) রাতে কাদের গ্রুপের সমর্থক আকিদুল মোল্যা বাদি হয়ে ২৭ জনের নামে মামলাটি করেছেন।
কালিয়া উপজেলার চালিতাতলা গ্রামে গত শুক্রবারের (১৯ মে) এ ঘটনায় ছয় জন গুলিদ্ধিসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। মারাত্মক আহতরা খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় কাকা মোল্যার লাইসেন্সকৃত বন্দুকটি জব্দ করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: বিএনপি নেতার নামে মামলা
পুলিশ ও মামলার বিবরণে জানা যায়, কালিয়া উপজেলার এ গ্রামটিতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হমিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাকা মিয়া মোল্যা ও আওয়ামী লীগের সমর্থক কাদের মোল্যা গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চলে আসছে।
তারই ধারবাহিকতায় ঘটনার দিন খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার হরিদাশবাটি গ্রামের নেছার আলী মীরের ছেলে সেলিম মীর কাদেরের বাড়িতে একটি জমির ম্যাপ নিতে আসে। ম্যাপ নিয়ে ফেরার পথে কাকা মিয়ার সমর্থকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা সেলিমকে (৩৫) মারপিট করে আহত করলে কাদের গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পরে রাস্তায় পেয়ে কাদের সমর্থকরা জাকির মোল্যা (৪৫) ও আমিনুর শেখ (৩৮) নামে কাকা মোল্যার দেই সমথর্ককে মারধর করে। তখন উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
সংঘর্ষ চলাকালে কাকা মোল্যার ছেলে হোসেন মোল্যা লাইসেন্সকৃত বন্দুক দিয়ে গুলি ছুড়লে বেবী বেগম (৫০), মিকাইল মোল্যা (৪৫), সরোয়ার মোল্যা (৩৫), রমিম মোল্যা (২৫) ও রবি মোল্যা (৩০) গুলি বিদ্ধসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়।
আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় রবিবার রাতে কাদের গ্রুপের সমর্থক আকিদুল মোল্যা বাদি হয়ে কাকা মিয়া গ্রুপের ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।
এছাড়া কাকা গ্রুপের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
দলনেতা কাকা মোল্যা অসুস্থ থাকার কারণে দল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা তার ছেলে হোসেন মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিত তাদের ওপর হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুরের চেষ্টা চালালে তারা আত্মরক্ষার জন্য বন্দুক দিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে।
অপর দলপতি মো. কাদের মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, তার বাড়ি থেকে যাওয়ার পথে সেলিম মীরকে মারধর করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে কাকার বাড়িতে কেউ যায়নি। তার সমর্থকদের ঘায়েল করতে মিথ্যা অজুহাতে হোসেন গুলি করেছে।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পলাতক আসামিদের ধরতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ টহলে রয়েছে। কাকা মোল্যার লাইসেন্সকৃত বন্দুকটি জব্দ করা হয়েছে।