ফেনীতে টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি পানিতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৫টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ৩০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে পানি কমতে শুরু করেছে ফেনী শহরের।
ফেনী বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানিয়েছে, প্লাবিত এলাকার অনেক বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার ও সাব-স্টেশন ডুবে যাওয়ায় নিরাপত্তার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এই ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা হতে পারে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, পরশুরামের মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ১২টায় নদীর পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ১৩.৯২ মিটার, যা বিপদসীমার চেয়ে ১.৫৭ মিটার বেশি। মাত্র ১৫ ঘণ্টার ব্যবধানে নদীর পানি বেড়েছে ৬.৯২ মিটার (২২ ফুট ১০ ইঞ্চি)।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ফেনীতে ৪৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, বুধবার ও বৃহস্পতিবারও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুহুরী নদীর বাঁধের পরশুরামের জঙ্গলঘোনায় দুটি, অলকায় তিনটি, শালধরে একটি এবং ফুলগাজীর উত্তর শ্রীপুরে একটি স্থানের বাঁধ ভেঙেছে। সিলোনিয়া নদীর পরশুরামের গদানগরে একটি ও ফুলগাজীর দেড়পড়ায় দুটি স্থানে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া কহুয়া নদীর পরশুরামের সাতকুচিয়ায় দুটি, বেড়াবাড়িয়ায় একটি এবং ফুলগাজীর দৌলতপুরে একটি স্থানে বাঁধ ভেঙে অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার।