পাবনার চাটমোহর থেকে নাটোরের বড়াইগ্রামের এক প্রবাসীর ৭ বছরের শিশুকন্যার বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় লাশের মুখমণ্ডল অ্যাসিডে ঝলসানো ছিল। শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে অ্যাসিডে মুখ ঝলসে লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ প্রকাশ করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চাটমোহর উপজেলার কাটাখালী ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের একটি ভুট্টাখেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুটি বড়াইগ্রাম উপজেলার গারফা উত্তরপাড়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহেরুল ইসলামের মেয়ে। স্থানীয় মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল সে।
আরও পড়ুন: কিশোরীকে ‘ধর্ষণের পর হত্যা, নানা-নানীকে কুপিয়ে জখম
পুলিশ জানায়, পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে গতকাল (সোমবার) শিশুটি বেড়াতে বের হয়। পাশেই দাদিবাড়ি গিয়ে তার সেমাই খাওয়ার কথা ছিল বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু বিকাল হয়ে গেলেও দুই বাড়ির কোথাও সে না গেলে স্বজনরা খোঁজাখুজি শুরু করেন। তবে কাল তাকে খুঁজে পায়নি কেউ। এরপর আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১০টার দিকে বাড়ি থেকে কয়েক শ’ গজ দূরে চাটমোহর উপজেলার কাটাখালী ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের একটি ভুট্টাখেতে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। প্রথমে তারা শিশুটির পরিবারে খবর দেন, এরপর পুলিশকে অবহিত করেন।
খবর পেয়ে নাটোর ও পাবনা জেলা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় শিশুটির মুখমণ্ডল অ্যাসিডে ঝলসানো এবং শরীর বিবস্ত্র ছিল। পরে পুলিশ আলামত সংগ্রহ করে লাশটি পাবনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
প্রতক্ষ্যদর্শী ও শিশুটির প্রতিবেশী এমদাদুল হক বলেন, এলাকার কৃষকরা খেতে কাজ করতে গিয়ে প্রথম তার লাশ দেখতে পায়। পরে পরিবারে খবর দিলে আমরা সেখানে যাই। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, তার মুখের পুরোটাই পোড়া ছিল। গায়ে কোনো কাপড় ছিল না। আমাদেরও ধারণা, তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে পাষণ্ড দুর্বৃত্তরা। লাশের মুখ যাতে চেনা না যায়, তার জন্য অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে শিশু ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহনাজ পারভীন বলেন, ‘শিশুটিকে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শিশুটির বাড়ি বড়াইগ্রাম উপজেলায় (নাটোর) হলেও লাশটি উপজেলার সীমান্তবর্তী পাবনার চাটমোহর এলাকায় পাওয়া গেছে। ফলে সংঘটিত অপরাধটির মামলা চাটমোহর থানায় লিপিবদ্ধ হবে। তবে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে দুর্বৃত্তদের অনুসন্ধানে পুলিশের তদন্ত দল মাঠে নেমেছে। প্রাথমিকভাবে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে প্রকৃত কারণ লাশের ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।’