জাতীয় নির্বাচন
জামায়াতে ইসলামীকে অতীতের ভুলের জন্য ক্ষমা চাইতে বললেন বিএনপি নেতা
জামায়াতে ইসলামীকে অতীতের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবেদিন ফারুক।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জ্বল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষক পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ফারুক বলেন, আজকে দেখলাম একটা পত্রিকায় যে, জনগণ যদি না চায় পিআর (সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি) দরকার নাই। আল্লাহ মাবুদ, আজকে পবিত্র জুম্মার দিন, আল্লাহ তাদের হেদায়েত করুন।
তিনি বলেন, আমি তাদের (জামায়াতে ইসলামী) বলব, দয়া করে আস্তে আস্তে রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করেন। জনগণের কাছে ক্ষমা চান। অতীতের ইতিহাসে দোষত্রুটি থাকলে ক্ষমা চেয়ে নির্বাচনে আসেন।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, জামায়ত নির্বাচনের সময়সীমা বাড়ানোর বিভিন্ন দাবি করছে, কিন্তু একদিকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ধর্মীয় আবেগ ব্যবহার করে ভোটের প্রচারণা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, জামায়াত একদিকে বলছে পিআর না হলে নির্বাচনে যাব না, অন্যদিকে গণভোট ছাড়া নির্বাচনে যাব না। আবার তিনশত প্রার্থী ইতোমধ্যে ঘোষণা করে মসজিদে মসজিদে প্রচার শুরু করে দিছে। ঘরে ঘরে শুরু করে দিছে, বেহেস্তে নিয়া যাব যদি দাঁড়ি পাল্লাকে ভোট দাও।
ফারুক বলেন, জামায়তের নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে বিএনপি উদ্বিগ্ন নয়। ‘আমি আমার এলাকার মানুষকে বলেছি, কোনো কিছু করার দরকার নাই। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখো। জনগণ জানে, শহীদ জিয়ার দল, বেগম খালেদা জিয়ার দল, তারেক রহমানের দল যতবারই ক্ষমতায় ছিল, বিশ্বাস ঘাতকতা করেনি।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারে, বাংলাদেশে আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তি নাই জনগণকে হারাতে পারে। কারণ বিএনপিই হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের দল।
পড়ুন: মৌচাকে লড়ির ধাক্কায় শিশুসহ ৫ জন আহত
ফারুক বলেন, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারিক রহমান জুলাই-অগাস্টের ছাত্র আন্দোলনকে দেশের ১৮ কোটি মানুষের সর্বাত্মক সমর্থনে সফল করেছেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষক পরিষদ এর সভাপতি শেখ শামীম হাসান অনিক।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য নানা পদ্ধতি, নানা কায়দা, পিআর, মব সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এসব নির্বাচনের পথে বাধা দেওয়ার জন্য তৈরি করা একটি পরিকল্পনা।
ফারুক অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ আবারো দিল্লির প্ররোচণায় বাংলাদেশের কিছু লোক যদি আবার আওয়ামী লীগের সাথে আতাঁত করে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করেন, জনগণ প্রতিহত করবে।
ফারুক আরও বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার জন্য ১৬ বছর ধরে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। মানুষের হৃদয় থেকে শহীদ জিয়ার নাম মুছতে পারেনি। পাথর মেরে ছবি ভেঙে ফেলা যায়, কিন্তু হৃদয় থেকে নাম মুছে ফেলা যায় না।
৯০ দিন আগে
নির্বাচনে অন্য কোনো দেশকে থাবা মারার সুযোগ দেওয়া হবে না : প্রধান উপদেষ্টা
আগামী ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনুস বলেছেন, এই নির্বাচনে অন্য কোনো দেশকে থাবা মারার কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না এবং এই নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের আকাঙ্ক্ষা ও রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যত বাংলাদেশ গড়ার ইচ্ছা পূরণ করবে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাতটি রাজনৈতিক দল ও একটি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন। বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচন অনন্য। এটি কেবল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন নয়। এটি দেশের সব মানুষের, সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচন।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা হল ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নির্মাণের। এই নির্বাচন হবে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর, সাহস অর্জনের, নিজের ভঙ্গিতে দেশ পরিচালনার নির্বাচন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নিজের ভূমিতে দেশ পরিচালনার এই নির্বাচন। এই নির্বাচনে অন্য কোনো দেশের থাবা মারার কোনো সুযোগ যেন না থাকে।’
আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন, এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় গণফ্রন্ট এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
পড়ুন: নুরের সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
দুর্গাপূজার সময় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সারাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। অনেক গণ্ডগোল তৈরি করার চেষ্টা হবে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন হবে।’
প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোকে বলেছেন আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। যারা আগে কখনো ভোট দিতে পারেননি, তাদের জন্য এই নির্বাচনে ভালো অভিজ্ঞতা দিতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগে যারা ভোট দিতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন, তাঁদেরও ভালো অভিজ্ঞতা দিতে হবে। কেউ যেন বলতে না পারেন যে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে দিতে চায় না, তারা যতরকমে পারবে ততরকমভাবে বাধা দেয়ার চেষ্টা করবে। কিছু কিছু লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে। সামনে আরও আসবে। এজন্য আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। আমাদের চেষ্টা হবে নির্বাচন করার এবং নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত সরকারের হাতে আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করব।’
৯৩ দিন আগে
রমজানের আগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা ইসির
ত্রয়োদশ জাতীয় সয়সদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে কর্মপরিকল্পনায়।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ কর্মপরিকল্পনাটি তুলে ধরেন।
প্রকাশ করা কর্মপরিকল্পনায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভোটার তালিকা তৈরি, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের জন্য নির্দেশিকা হালনাগাদ, নির্বাচনী ম্যানুয়াল, নির্দেশিকা, পোস্টার ও পরিচয়পত্র মুদ্রণ, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও নির্বাচনী উপকরণ প্রস্তুত করা, নির্বাচনী বাজেট প্রস্তুত করা, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়। এছাড়াও নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার মতো বিভিন্ন নির্বাচনী প্রস্তুতিমূলক কাজের সময়সীমাও নির্ধারণ করা হয়েছে।
পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন: শিগগিরই নির্বাচনী এলাকার চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ করবে ইসি
ইসি সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো নির্দেশনা অনুসারে, কর্মপরিকল্পনায় আগামী রমজানের (ফেব্রুয়ারি ২০২৬) আগে কীভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যায়—তার রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আমাদের একটি চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, আগামী রমজানের (ফেব্রুয়ারি ২০২৬) আগে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে....। তাই, আজ আমরা আপনাদেরকে আমাদের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করছি। পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা আমাদের কর্মপরিকল্পনাগুলোকে মোট ২৪টি ভাগে ভাগ করে আমাদের কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করেছি।’
কিন্তু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কর্মপরিকল্পনায় কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা ছিল না।
কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, পর্যবেক্ষক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং জুলাই যোদ্ধাসহ অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুরু হবে এবং পরবর্তী দেড় মাসের মধ্যে আলোচনা সম্পন্ন হবে।
এছাড়াও, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংসদীয় আসনের চূড়ান্ত সীমানা নির্ধারণের গেজেট প্রকাশ করা হবে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন নির্বাচনী আইন, বিধি ও নির্দেশিকা সংশোধন করা এবং নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়া হবে। ৩০ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী ম্যানুয়াল, নির্দেশিকা, পোস্টার এবং পরিচয়পত্র মুদ্রণ, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং নির্বাচনী উপকরণ প্রস্তুত করা এবং ১০ সেপ্টেম্বর ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ করা হবে। ভোটগ্রহণের নির্ধারিত তারিখের ২৫ দিন আগে চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা গেজেট প্রকাশ করা হবে।
৯৯ দিন আগে
নির্বাচন আয়োজনে দেশ প্রস্তুত: প্রধান উপদেষ্টা
রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এক বছরে দেশ নির্বাচন আয়োজন করার মতো যথেষ্ট প্রস্তুত ও স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে।
তিনি বলেন, আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকারের জায়গায় নির্বাচিত একটি সরকার দায়িত্ব নেবে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কক্সবাজারে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগে’ যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আমি এখানে এসেছি আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে। এক বছর আগে আমরা দেশকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে ছাত্রদের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এক হত্যাযজ্ঞের ভেতর দিয়ে গিয়েছি। এখন আমরা আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি রূপান্তরের জন্য প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছি। ঠিক এক বছর আগে আমাদের অভ্যুত্থান হয়েছিল, আর দেশ এখন যথেষ্ট স্থিতিশীল এবং নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত।
এ সময় সরকারের প্রতিনিধি, জাতিসংঘ সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার উৎপত্তি মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও মিয়ানমারে। সবাইকে এই সংকট নিরসনে কোনো বিলম্ব ছাড়াই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আপনাদের সোচ্চার হওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার আশা জাগাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান শুধু বাংলাদেশের একার দায়িত্ব নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও এখানে এগিয়ে আসতে হবে। সংকটের সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে ভাবা এবং তা বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখা সবার যৌথ দায়িত্ব।
পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের রোডম্যাপ তৈরিতে প্রধান উপদেষ্টার ৭ দফা প্রস্তাব
যত দিন পর্যন্ত রোহিঙ্গারা নিজেদের আবাসভূমিতে ফিরে যেতে না পারেন, তত দিন পর্যন্ত তাদের বিষয়টি ও এর টেকসই সমাধানকে বৈশ্বিক এজেন্ডায় রাখার ওপর জোর দেন অধ্যাপক ইউনূস।
এর আগে, সোমবার সকালে এই সংলাপে যোগ দিতে কক্সবাজার পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। এদিন বেলা ১১টার দিকে তিন দিনের এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়। এতে মিয়ানমার ও আঞ্চলিক স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
১০২ দিন আগে
আসন্ন নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আইআরআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বেলা ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠকে দেশের পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচন এবং সংস্কার নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। অন্য দুই সদস্য ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাহদী আমিন।
আইআরআই প্রতিনিধিদলে ছিলেন এশিয়া-প্যাসিফিক ডিরেক্টর স্টিফেন চিমা, ডেপুটি ডিরেক্টর ম্যাথু কার্টার এবং সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অমিতাভ ঘোষ।
বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. মঈন খান। তিনি জানান, বৈঠকে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, চলমান সংস্কার উদ্যোগ এবং আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জামায়াতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আইআরআই’র প্রতিনিধি দল
তিনি আরও বলেন, তারা আইআরআই প্রতিনিধিদের বিএনপির কৌশলগত দৃষ্টি ও পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন।
ড. খান বলেন, ‘বৈঠক গঠনমূলক ছিল… আমরা ব্যাখ্যা করেছি কিভাবে আমরা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক রূপান্তর দেখছি এবং গণতান্ত্রিক সংস্কার ও আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের মতামত শেয়ার করেছি।’
আইআরআই প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করছে। গত ১৯ আগস্ট একই প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী’র শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় অফিসে বৈঠক করেছে।
আইআরআই হল একটি ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা, যা রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং সরকারি সংস্থার সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমর্থন করে।
১০৬ দিন আগে
নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ে প্রয়োজনে আন্দোলনে যেতে হবে: এটিএম মা’ছুম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেছেন, জনগণ এবার কোনো ভোট ডাকাত ও লুটেরাদের ভোট দেবে না। কোনো চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্রের কাছে মাথানত করা যাবে না।
বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আল হেরা কমপ্লেক্সে জেলা জামায়াতের নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ে প্রয়োজনে আন্দোলনে যেতে হবে। আগামী নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে জুলাই ঘোষণা ও জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। জামায়াতের ঘোষিত ৭ দফা মেনে নিতে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাকশালের বুলেটিনখ্যাত সংবিধান দিয়ে দেশ চলতে পারে না। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন করতে হলে নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে সংস্কার আনতে হবে। একই সঙ্গে অতীত স্বৈরাচার আমলে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে। কাউকে আনুকূল্য বা কাউকে পাশ কাটালে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা অঞ্চল টিম সদস্য আব্দুস সাত্তার এবং কুমিল্লা জেলা উত্তরের আমীর অধ্যাপক আব্দুল মতিন।
জেলা আমীর মাওলানা মোবারক হোসেন আকন্দের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক জোনায়েদ হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের প্রার্থী আতাউর রহমান সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাতেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক মো. নকিবুল হুদা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম।
দায়িত্বশীল সম্মেলনে জেলা আসন কমিটির সদস্য, উপজেলা ও পৌরসভা কমিটির নারী-পুরুষ সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফায়জুল করিম মনোয়ার, কাজী সিরাজুল ইসলাম, রাজিফুল হাসান বাপ্পী, আবুল বাশার ভূঁইয়া, মো. রোকন উদ্দিন প্রমুখ।
১০৭ দিন আগে
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে ৪ মিলিয়ন ইউরো দেওয়ার অঙ্গীকার ইইউর
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ৪ মিলিয়ন ইউরোর একটি সহায়তা প্যাকেজ প্রদান করবে বলে ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধি দলের প্রধান মাইকেল মিলার।
তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৪ মিলিয়ন ইউরোর বেশি একটি সহায়তা প্যাকেজ প্রদান করবে, যা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করবে।’
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে ছয় সদস্যের ইইউ প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
মাইকেল মিলার বলেন, একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দিকে এগিয়ে নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখানে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।
‘আমরা ২০২৬ সালের শুরুর একটি সময়সীমার দিকে এগোচ্ছি,’ তিনি যোগ করেন।
বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, এখন আলোচনার বিষয় হলো আগামী কয়েক সপ্তাহ ও মাসে নির্বাচনগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে যে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপগুলো অবিলম্বে নেওয়া প্রয়োজন।
‘এবং এ কারণেই আমরা এখন আমাদের দক্ষতা কাজে লাগাচ্ছি। কারণ আমরা চাই আপনাদের নির্বাচনগুলো অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য হোক, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে হোক এবং অবশ্যই অবাধ ও সুষ্ঠু হোক,’ তিনি বলেন।
মিলার আরও বলেন, তিনি শুধু ইইউ প্রতিনিধি দলের সহকর্মীদের সঙ্গেই আসেননি, বরং ইউরোপীয় পার্টনারশিপ ফর ডেমোক্রেসির প্রতিনিধিদের সঙ্গেও এসেছেন। তারা বাস্তবায়নকারী অংশীদার ও নির্বাচনী বিশেষজ্ঞ, যারা আসন্ন নির্বাচনে নাগরিক পর্যবেক্ষণে জোরালো মনোযোগ নিশ্চিত করতে এখানে থাকবেন।
আরও পড়ুন: ইইউবি নিয়ে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি: কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা
তিনি উল্লেখ করেন, সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে সরাসরি সহায়তা দেওয়া হবে—যার মধ্যে অপারেশনাল পরিকল্পনা ও বিরোধ নিষ্পত্তির মতো ক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশে আমাদের কাজের অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো নির্বাচনের ক্ষেত্রেও আমাদের লক্ষ্য থাকবে এখানকার প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।’
তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে সম্ভাব্য ইইউ নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ মিশনের জন্য অগ্রাধিকার দিচ্ছে। ‘এটি এমন একটি বিষয় যা আমরা আগামী মাসগুলোতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাব,’ তিনি উল্লেখ করেন।
আরেকটি প্রশ্নের জবাবে মাইকেল মিলার বলেন, আগামী মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে আসবে এ বিষয়টি বিবেচনা করতে যে এখানে নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ মিশন পাঠানোর মতো প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে কিনা।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং, আমরা সম্ভাব্যতা ও যৌক্তিকতা বিবেচনা করছি। তবে আমি আপনাদের যা বলতে পারি তা হলো রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে একটি অগ্রাধিকার, বিশেষ করে নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ মিশন মোতায়েনের ক্ষেত্রে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি মনে করেন বেশ কিছু বিষয় সমাধান করা প্রয়োজন, কারণ বাংলাদেশ এখন একটি গভীর রাজনৈতিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, অবশ্যই নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজনের অভিজ্ঞতা রাখে, তবে সাম্প্রতিক সময়ে সেই নির্বাচনগুলো পরিচালনা ও ফলাফলের দিক থেকে অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
১০৮ দিন আগে
ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন: আইন উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা একজন সর্বজনস্বীকৃত ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নন্দিত ব্যক্তি। তিনি নিজেই নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছেন। এই ঘোষণার পেছনে সরে যাওয়ার কোনো চিন্তাই আমাদের নেই।’
আরও পড়ুন: মানুষ নিরুপায় হয়ে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়: ড. আসিফ নজরুল
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার, কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। এতে নির্বাচন আয়োজনের সময় নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব সরকারের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আমরা নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই করব—এই লক্ষ্য মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের সময় বিভিন্ন কথা বলে। এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ারই অংশ। ফলে বাংলাদেশে ঐতিহ্যগতভাবে এসব রাজনৈতিক আলোচনা হয়ে এসেছে, এখনো ঠিক ওরকমভাবেই আলোচনা চলছে। এসব মন্তব্যে গুণগত পরিবর্তন খুব একটা হয়নি। ফলে নির্বাচনের সময় নিয়ে কে কী বলল, সেটাকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার স্বাভাবিক অংশ হিসেবেই দেখতে হবে।’
১০৮ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ নেই: ইসি সচিব
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে এখনই উদ্বেগের কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব মো. আখতার আহমেদ।
সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যৌক্তিক কারণ নেই।’
তিনি বলেন, কমিশন এখন নির্বাচনের প্রস্তুতিকে ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দিচ্ছে। এই মুহূর্তে সামগ্রিকভাবে উদ্বেগ প্রকাশের কোনো কারণ নেই। আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি পরে বিবেচনা করা হবে।
নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রসঙ্গে ইসি সচিব জানান, রোডম্যাপের খসড়া ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তা প্রকাশ করা হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, এ সপ্তাহেই কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। বর্তমানে সমন্বয়ের কাজ চলছে। কমিশন অনুমোদন দিলেই আমরা তা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে পারব।
পড়ুন: পুলিশ-প্রশাসনে আ. লীগের অনুগতদের রেখে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: রিজভী
ভোটকেন্দ্র সংক্রান্ত নির্দেশনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইসি সচিব বলেন, কমিশন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্র ৩ হাজার ভোটারের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। তবে প্রতিটি বুথে ভোটার সংখ্যা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ করা হবে।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে ১১ কোটি ৯৭ লাখ ভোটারের জন্য ৪২ হাজার ১৪৮টি ভোটকেন্দ্র ছিল।
ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা বেড়ে ১২ কোটি ৭৮ লাখে ঠেকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
১০৮ দিন আগে
নির্বাচন বিঘ্নিত করার অসৎ প্রচেষ্টা দেশের জনগণ রুখে দেবে: সালাহউদ্দিন
দেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের পথে কোনো অসৎ প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করতে বাংলাদেশের মানুষ একতাবদ্ধ ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে যুবদল।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম বক্তব্য দিয়ে নির্বাচনের বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে, তারা গণতন্ত্রের পক্ষে কোনো শক্তি নয়, তারা বাংলাদেশের মানুষের পক্ষেও নয়।’
তিনি বলেন, তারা হয়তো কোনো কারণে নিজের কথাগুলো ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছেন, যাতে নির্বাচন বিলম্বিত করা যায় অথবা বানচাল করা যায়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য ঐক্যবদ্ধ। যারা এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেবে, তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ রুখে দাঁড়াবে।
সালাহউদ্দিন সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের প্রতি একজোট থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক শক্তি ও রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব—যেভাবে আপনারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন, সেভাবেই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ঐক্যবদ্ধ থাকুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক শক্তি ও রাজনৈতিক দলকে আমি অনুরোধ করছি, যেভাবে আমরা স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, আবারও সেভাবে ঐক্য তৈরি করুন। আসুন একত্রিত হয়ে আলোচনা করি এবং সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করি, যাতে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের পথ সহজ হয়।’
সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশনায় গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে সরকার ও সব গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে অনেকবার আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে। তিনি নির্দেশনা দিয়েছিলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করতে হবে।
পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষমাণ। আমরা সেই গণতন্ত্রের জন্য অপেক্ষমাণ, যে গণতন্ত্রের জন্য আমাদের সন্তানরা শহীদ হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, অন্ধত্ব বরণ করেছেন। এই গণতন্ত্রের জন্য আমরা গত ১৫–১৬ বছর সংগ্রাম করেছি। এই গণতন্ত্রকে যদি আমরা বিনির্মাণ করতে চাই, একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
এর আগে গত ৯ আগস্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছিলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ লক্ষ্যে সারা দেশে নির্বাচন কমিশন জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সমতার ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা জরুরি। আমাদের জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে, সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আজীবন গণতন্ত্রের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সংগ্রাম থেকে শুরু করে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে নয় বছরের আন্দোলন, সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে তিনি দেশের গণতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে উল্লেখ করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘খালেদা জিয়া শুধু একটি নাম নন, তিনি একটি ইতিহাস। খালেদা জিয়ার মতো নেত্রী থাকলে জাতির পথ হারানোর সুযোগ নেই। তিনি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন এবং এখনো বাংলাদেশের মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ তার ৮১তম জন্মদিন। আমরা প্রার্থনা করি মহান আল্লাহ তাকে দীর্ঘায়ু দান করুন, যেন তিনি দেশের জনগণের জন্য আলোর দিশারি হয়ে থাকেন। গণতন্ত্রের রক্ষক ও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষক হিসেবে থাকেন।’
১১১ দিন আগে