জেলেনস্কি
রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে: জেলেনস্কি
রাশিয়া পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে গত দুই বছরে ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
রবিবার(২৬ ফেব্রুয়ারি) কিয়েভ ফোরামে ‘ইউক্রেন ইয়ার-২০২৪’ -এ এই তথ্য জানান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি বলেন, এই সংখ্যা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের দেওয়া অনুমানের চেয়ে অনেক কম।
তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধে ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে। তিন লাখ বা দেড় লাখ নয়, বরং পুতিন ও তার প্রতারক চক্র যা বলছে তা মিথ্যা। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের এই প্রতিটি ক্ষতি একটি মহান ত্যাগ।’আরও পড়ুন: রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের বাজারে গোলাবর্ষণে নিহত ১৩
ইউক্রেনের এই নেতা বলেন, কতজন সেনা আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন তা তিনি প্রকাশ করবেন না। তিনি আরও বলেছিলেন যে ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে ‘কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক’ নিহত হয়েছে, তবে যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক কোনও পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না তারা আমাদের কতজন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। আমরা জানি না।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমর্থন দিতে ইউক্রেনে ৮০০টিরও বেশি ড্রোন পাঠাবে কানাডা
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কিয়েভ ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা নিশ্চিত করল।
তবে হতাহতের আনুষ্ঠানিক কয়েকটি পরিসংখ্যান জানিয়েছে রাশিয়া। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিকতম তথ্যে ৬ হাজারের বেশি মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের প্রতিবেদনে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছিল যে ইউক্রেনে ৩ লাখ ১৫ হাজার রুশ সেনা নিহত বা আহত হয়েছে। যদি এই সংখ্যা সঠিক হয়, তাহলে যুদ্ধের আগে রাশিয়ার কাছে থাকা ৩ লাখ ৬০ হাজার সেনার ৮৭ শতাংশই হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাশিয়ার স্বাধীন সংবাদমাধ্যম মিডিয়াজোনা শনিবার জানিয়েছে, ২০২২ ও ২০২৩ সালে যুদ্ধে প্রায় ৭৫ হাজার রুশ পুরুষ নিহত হয়েছেন।
রাশিয়ার আরেক স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম মিডিয়াজোনা ও মেদুজা প্রকাশিত এক যৌথ তদন্তে দেখা গেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতির হার কমছে না এবং মস্কো দৈনিক প্রায় ১২০ জন করে সেনাকে হারাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী আজ রাতে ঢাকায় যাত্রাবিরতি করবেন
মিউনিখে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে হোটেল বায়েরিসচার হোফের সম্মেলনস্থলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে দুই নেতা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শনিবার একই স্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জার্মান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী সভেঞ্জা শুলজে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত তহবিল যোগানের বিকল্প নেই: মিউনিখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন-২০২৪ এ যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মিউনিখ পৌঁছান।
গত মাসে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই তার প্রথম সরকারি বিদেশ সফর।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র বানচাল করতে হবে: মিউনিখে সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী সপ্তাহে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পৃথকভাবে দেখা করবেন। শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, গুতেরেস মঙ্গলবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন।
পরে জাতিসংঘ জানায়, গুতেরেস ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবারের সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে যাবেন।
আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে কিয়েভে দূতাবাস খুলবে যুক্তরাজ্য
জাতিসংঘের মুখপাত্র এরি কানেকো বলেছেন, দুই সফরেই গুতেরেস যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং মানুষকে নিরাপদে নিয়ে যেতে সহায়তা করার জন্য ‘এখনই নেয়া যেতে পারে এমন পদক্ষেপ’ নিয়ে আলোচনা করা লক্ষ্য স্থির করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গুতেরেস ইউক্রেনে শান্তি আনতে জরুরিভাবে কী করা যেতে পারে সে বিষয়ে কথা বলার আশা করছেন।’
দুই মাস আগে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর থেকেই যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য পুরস্কার পেলেন জেলেনস্কি
গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য পুরস্কার পেলেন জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য ‘জন এফ কেনেডি প্রোফাইল ইন কারেজ অ্যাওয়ার্ড’-এর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার এ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত পাঁচজনের মধ্যে জেলেনস্কির নাম ঘোষণা করা হয়।
জন এফ কেনেডি লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন জেলেনস্কিকে নির্বাচিত করার বিষয়ে জানায়, তাকে নির্বাচিত করার কারণ হলো তিনি ‘তাদের দেশের জন্য জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে ইউক্রেনের জনগণের চেতনা, দেশপ্রেম ও অক্লান্ত আত্মত্যাগকে সংগঠিত করেছেন।’
পুরস্কারের জন্য মনোনীত অন্য চারজন হলেন-ওয়াইমিং-এর রিপাবলিকান ইউএস রিপাবলিকান লিজ চেনি, মিশিগান সেক্রেটারি অফ স্টেট জোসেলিন বেনসন, অ্যারিজোনা হাউসের স্পিকার রাস্টি বোয়ার্স ও জর্জিয়ার ফুলটন কাউন্টির নির্বাচনী কর্মী ওয়ান্ড্রিয়া ‘শায়ে’ মস। ফাউন্ডেশন বলছে, এ চার মার্কিন কর্মকর্তাকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডনবাসে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া: জেলেনস্কি
ক্যারোলিন কেনেডি ও তার ছেলে জ্যাক শ্লোসবার্গ ২২ মে বোস্টনের জন এফ কেনেডি প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরিতে পুরস্কার বিতরণ করবেন। পুরস্কারটি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিবারে পক্ষ থেকে প্রবর্তন করা হয় এবং কেনেডির ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী বই ‘প্রোফাইলস ইন কারেজ’ এর নামানুসারে এই পুরস্কারের নামকরণ করা হয়।
ক্যারোলিন কেনেডি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের দেশ এবং বিশ্বের সামনে আজ গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো সমস্যা নেই। ইউক্রেনের যুদ্ধ বিশ্বকে দেখিয়েছে যে আমরা স্বাধীনতাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের সাহস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা করা এবং আমাদের ভোট দেয়ার মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করা।’
আরও পড়ুন: লাভিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৭ জন নিহত: ইউক্রেন
মারিউপোলে আত্মসমর্পণের আল্টিমেটাম প্রত্যাখান ইউক্রেনীয় সেনাদের
পরবর্তী কয়েক দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: জেলেনস্কি
আগামী সপ্তাহ যুদ্ধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে ইউক্রেনীয়দের সতর্ক করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনেস্কি।
রবিবার রাতের ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, আমাদের দেশের পূর্বাঞ্চলে আরও বড় অভিযানে যাবে রাশিয়ান সেনারা।
এসময় রাশিয়া যুদ্ধাপরাধের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন জেলেনেস্কি।
তিনি বলেন, ‘মানুষ যখন তাদের ভুল স্বীকার করার, ক্ষমা চাওয়ার, বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নেয়ার এবং শেখার সাহসের অভাব বোধ করে, তখন তারা দানব হয়ে যায়। এবং যখন বিশ্ব এটিকে উপেক্ষা করে, তখন দানবরা সিদ্ধান্ত নেয় যে এই বিশ্বকে তাদের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। ইউক্রেন এই সব বন্ধ করবে।’
ইউক্রেনীয় নেতা বলেন, ‘সেদিন আসবে যখন তাদের সবকিছু স্বীকার করতে হবে। সত্যকে স্বীকার করুন।’
এদিকে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজের সাথে বৈঠক করেছেনে প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি। এসময় তিনি জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে ইউক্রেনে আরও সহায়তা দেয়ার আহ্বান জানান।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি এটা জেনে আনন্দিত যে সম্প্রতি জার্মান অবস্থান ইউক্রেনের পক্ষে পরিবর্তিত হয়েছে। এটিকে যৌক্তিক বলে মনে করি।’
পড়ুন: রেলস্টেশনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: কড়া জবাব চায় ইউক্রেন
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ইমরান খানের
রাশিয়ান সৈন্যরা পিছু হটছে: জেলেনস্কি
ইউক্রেনীয় সেনারা কিয়েভ ও চেরনিহিভের আশেপাশের অঞ্চলগুলো রুশ বাহিনী থেকে পুনরুদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, তার সেনারা রাশিয়ানদের বিনা লড়াইয়ে পিছু হটতে দিচ্ছে না। বরং তাদের গোলাবর্ষণ করছে।
জেলেনস্কি শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশে তার ভিডিও ভাষণে বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল দখল করতে চায়।
আরও পড়ুন: পিছু হটা রুশ সেনারা অসংখ্য মাইন রেখে গেছে: জেলেনস্কি
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ান সৈন্যদের লক্ষ্য কি? তারা ডনবাস এবং ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চল দখল করতে চায়, আমাদের লক্ষ্য কি? আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের ভূমি এবং আমাদের জনগণকে রক্ষা করতে হবে।’
রুশ সামরিক বাহিনীর হামলার পরও ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলকে রক্ষা করায় ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রশংসা করেন জেলেনস্কি। রুশ সেনাদের হাতে অবরুদ্ধ এই শহরটি কয়েক সপ্তাহের ভারী রাশিয়ান বোমা হামলায় কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ২ শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করলেন জেলেনস্কি
জেলেনস্কি রাশিয়ান হামলার পরও দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলকে রক্ষা করার তার দেশের সেনাদের প্রশংসা করেন।
ভাষণে ইউক্রেনীয় নেতা পশ্চিমাদের কাছে আরও আধুনিক অস্ত্র সরবরাহের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
পিছু হটা রুশ সেনারা অসংখ্য মাইন রেখে গেছে: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের জনগণকে সতর্ক করে বলেছেন, রুশ বাহিনী পিছু হটার সময় রাজধানী কিয়েভের বাইরে ‘সম্পূর্ণ বিপর্যয়ের’ ফাঁদ তৈরি করে রেখে গেছে। তারা আশেপাশের পুরো অঞ্চল জুড়ে; এমনকি বাড়িঘর ও লাশের নিচেও মাইন রেখে গেছে।
শনিবার ভোরে এমন সময় জেলেনস্কি এই সতর্কবার্তা দিলেন যখন মারিউপোলে মানবিক করিডোর খুলে দেয়া হয়েছে। বেসামরিক নাগরিকরা শহর ছাড়ার চেষ্টা করছেন। যদিও রুশ সেনারা এই প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেন।
জেলেনস্কি জাতির উদ্দেশ্যে তার রাতের ভিডিও ভাষণেও বলেন, তারা পুরো এলাকায় মাইন রেখে গেছে। তারা বাড়ি-ঘর, যন্ত্রপাতি, এমনকি নিহত ব্যক্তিদের লাশের নিচেও মাইন ফেলে গেছে।
তিনি বাসিন্দাদের তাদের স্বাভাবিক জীবন শুরু করার জন্য অপেক্ষা করার আহ্বান জানান। যতক্ষণ না তারা আশ্বস্ত হয় যে মাইনগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে এবং গোলাগুলির বিপদ কেটে গেছে।
এদিকে ক্রেমলিন ইউক্রেনীয়দের রাশিয়ার মাটিতে একটি জ্বালানি ডিপোতে হেলিকপ্টার হামলা চালানোর জন্য অভিযুক্ত করে। যদিও ইউক্রেন এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধে ইউক্রেনের ৫৩ ঐতিহাসিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত: ইউনেস্কো
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, নিশ্চয়ই এ ধরনের ঘটনা আলোচনা অব্যাহত রাখার জন্য আরামদায়কপরিস্থিতি তৈরি করবে না।
এই সপ্তাহের শুরুতে ইউক্রেনের রাজধানী এবং উত্তরের শহর চেরনিহিভের কাছে সামরিক তৎপরতা কমিয়ে দেয়ার কথা বলে, রাশিয়া কিয়েভের আশেপাশের এলাকা থেকে তার কিছু স্থল বাহিনী প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।
রাশিয়া কিয়েভ ও চেরনিহিভের চারপাশে তাদের বোমাবর্ষণ অব্যাহত রাখলেও, ইউক্রেনীয় সেনারা পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে।
ইউক্রেন ও তার মিত্ররা সতর্ক করে বলেছে, ক্রেমলিন দর কষাকষির টেবিলে যেভাবে সময়ক্ষেপণ করছে, তা মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ সেনাদের পুনরায় মোতায়েন ও স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে। রাশিয়া এখন পূর্বের ডনবাস অঞ্চলে (অধিকাংশ রুশ ভাষাভাষী) একটি তীব্র আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে; যার মধ্যে মারিউপোলও রয়েছে।
রাশিয়া তার সেনাদের পুনরায় মোতায়েন করা দেখে জেলেনস্কি সামনে কঠিন যুদ্ধের বিষয়ে তার দেশের মানুষকে সতর্ক করে বলেন, আমরা আরও সক্রিয় প্রতিরক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে শুক্রবার ভিডিওর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সংলাপের বিষয়ে জেলেনস্কি কিছু বলেননি।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার তেল ডিপোতে ইউক্রেনের হামলা: রুশ গভর্নর
চেরনোবিল ছেড়েছে রুশ সেনারা
ইউক্রেনের ২ শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করলেন জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশটির দুজন জ্যৈষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়ে বরখাস্ত করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে দেয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘আজকে অ্যান্টি-হিরোদের বিষয়ে আরেকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। সব বিশ্বাসঘাতের মোকাবিলা করার সময় আমার নেই। তবে ধীরে ধীরে তাদের সবাইকে শাস্তি দেয়া হবে।’
আরও পড়ুন: মারিউপোল থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নিতে যাচ্ছে বাসের বহর
তিনি দুই শীর্ষ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে বলেন, যারা ইউক্রেনীয় জনগণের প্রতি আনুগত্যের সামরিক শপথ ভঙ্গ করবে... তারা অবশ্যই উচ্চ সামরিক পদ থেকে বঞ্চিত হবে।
দোহা ফোরামে জেলেনস্কির ভিডিও বার্তা
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কাতারের দোহা ফোরামে এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।
শনিবার জেলেনস্কি তার ভিডিও ভাষণে দেশটির প্রতি রাশিয়ার চলমান যুদ্ধের সমালোচনা করেন।
তিনি জাতিসংঘ ও বিশ্বশক্তিকে দেশটির সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি বলেছেন, তারা আমাদের বন্দর ধ্বংস করছে। ইউক্রেন থেকে রপ্তানি পণ্যের অনুপস্থিতি বিশ্বব্যাপী দেশগুলোকে একটি ধাক্কা দিবে।
আরও পড়ুন: রাশিয়াকে থামাতে বিলম্ব করেছে ইউরোপ: জেলেনস্কি
তিনি বলেন, ইউরোপের ভবিষ্যৎ আপনাদের প্রচেষ্টার ওপর নির্ভর করে। তিনি দেশগুলোকে তাদের জ্বলানি সরবরাহ বাড়ানোর আহ্বান জানান। কেননা কাতার প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানিতে বিশ্ব নেতৃত্ব দিচ্ছে।
পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে বিশ্বকে হুমকি দেখানোয় তিনি রাশিয়ার সমালোচনা করেন।
জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে আস্ফালন করেছে যে তারা পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে শুধু একটি নির্দিষ্ট দেশ নয়, পুরো গ্রহকে ধ্বংস করতে পারে।
তিনি আরও বলেন,ইউক্রেনের মুসলমানদের আসন্ন পবিত্র রোজার মাসেও লড়াই করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে এই পবিত্র রমজান মাসে যেন ইউক্রেনের মানুষের ওপর দুর্দশার ছায়া না পড়ে।’
আরও পড়ুন: কিয়েভে গোলার আঘাতে রুশ সাংবাদিক নিহত
জাপানের পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন জেলেনস্কি
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা হিসেবে বুধবার জাপানের পার্লামেন্টে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে ভাষণ দেবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
জাপানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের এক মিটিং রুমে প্রায় ১০ মিনিট এই ভাষন দেবেন তিনি।
ইউক্রেনে রাশিয়ান হামলা শুরুর পর জেলেনস্কি ইতোমধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইসরায়েলের পার্লামেন্টে ভাষণ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত ইউক্রেন: জেলেনস্কি
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট গ্লোরিয়া ম্যাকাপাগাল অ্যারোয়োসহ বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে জাপান সফরের সময় ব্যক্তিগতভাবে তাদের ভাষণ দিয়েছেন। তবে একজন বিদেশি নেতার অনলাইন বক্তব্য এবারই প্রথম।
এদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে টোকিওর নিষেধাজ্ঞার কারণে বিতর্কিত কুরিল দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে জাপানের সঙ্গে শান্তি চুক্তি আলোচনা বন্ধ এবং যৌথ অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলো প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে রাশিয়া।
আরও পড়ুন: চীনে বিমান বিধ্বস্ত: বেঁচে যাওয়া কাউকে পাওয়া যায়নি