হাসিনা
হাসিনা অধ্যায় শেষ, আ. লীগ কখনো ফিরবে না: হাসনাত আব্দুল্লাহ
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, মধ্য এশিয়ার টেরোরিষ্ট হচ্ছে গুজরাটের কসাই নরেন্দ্র মোদি। আরেক টেরোরিষ্ট হাসিনাকে প্রশয় দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। হাসিনা নিজে টেরোরিষ্ট এবং ছাত্রলীগও টেরোরিষ্ট।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আকাশে আজ কালো মেঘের ঘনঘটা। দেশকে নিয়ে দেশে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ভারতে বসে হাসিনা জুলাই বিপ্লবীদের হত্যার ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আ’লীগের প্রেতাত্মরা ভারত ও লন্ডনে বসে যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, বাংলাদেশে হাসিনা চ্যাপ্টার ক্লোজড, আ’লীগ উইল নেভার কাম ব্যাক।
বুধবার(৯ জুলাই) রাতে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও দেশ গড়ার নতুন প্রত্যয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা শেষে এক সমাবেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেন।
সমাবেশে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, নাসির উদ্দীন পাটোয়ারি, ডা. তাসনীম জারা, সারজিস আলম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা, শহীদ রাকিবের মা হাফিজা খাতুন ও শহীদ সাব্বিরের পিতা আমোদ আলী বক্তব্য দেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বিচার ও সংস্কারের আগে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আমাদের যুদ্ধ বাংলাদেশ বির্নিমাণের যুদ্ধ। আগে বিচার ও সংস্কার শেষ হোক, তারপর নির্বাচন হবে। নির্বাচিত সরকার বিচার ও সংস্কার করবে কি করবে না এই অনিশ্চয়তার মধ্যে আমরা থাকতে চাই না। আমরা হাসিনার বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত হয়েই নির্বাচনে যেতে চাই। তাই গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যাতে কেউ বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সে দিকে সজাগ থাকতে হবে।
সাংবাদিকদের বেতন দেওয়া হয়না বলে হাসনাত আব্দুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, দেশের বেশির ভাগ সাংবাদিকদের হাতে বুম ও পরিচয়পত্র ধরিয়ে দিয়ে বলা হয় এলাকায় যেয়ে খেটে খাও।
সমাবেশে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফ পাখির মতো বাংলাদেশীদের হত্যা করছে। তিনি বিএসএফকে একটি খুনি বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করছে। এখনই তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। তিনি বলেন, সংস্কার, হাসিনা ও আ. লীগের বিচার, নতুন সংবিধান রচনা ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করেই ঘরে ফিরবো ইনশাল্লাহ।
১৪৮ দিন আগে
হাসিনা নিজেই বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মারণাস্ত্র ব্যবহারের হুকুম দিয়েছেন: বিবিসি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া একটি অডিও ক্লিপে শোনা গেছে জুলাইয়ে বিক্ষোভকারীদের দমনে মারণাস্ত্র ব্যবহারের হুকুম দিয়েছেন তিনি নিজেই। অডিও ক্লিপটির বিষয়ে তদন্ত করে সেটির সত্যতাও পেয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
বুধবার (৯ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি বিস্তর প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে।
বিবিসির যাচাই করা ওই রেকর্ডিং অনুসারে, শেখ হাসিনা তার নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার’ করার অনুমতি দিয়েছেন এবং তারা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবে, তারা গুলি করবে।
অজ্ঞাত একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ যে, তিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের গুলি করার জন্য সরাসরি অনুমতি দিয়েছিলেন।
ঘটনাটির সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র বিবিসিকে বলেছে, ফোনকলটি গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এটি স্পষ্ট নয় যে, আন্দোলনের সময়ের ওই ফোনকলের রেকর্ডটি কে ফাঁস করেছেন।
পড়ুন: একজন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তকে রক্ষা করতে পারবে না ভারত: শফিকুল আলম
আন্দোলনের সময় থেকে হাসিনার অনেক অডিও ক্লিপ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে, তবে কে বা কারা এসব ছড়িয়েছেন তা যাছাই করা যায়নি।
তবে ১৮ জুলাইয়ের ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।
বিবিসি আলাদাভাবে ইয়ারশটের অডিও ফরেনসিক এক্সপার্টদের দিয়ে এই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেছে এবং তারা এটিতে এডিট করার বা কোনো রকম পরিবর্তন করার কোনো প্রমাণ পায়নি। অডিওটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে এমন সম্ভাবনাও খুবই কম বলে তারা জানিয়েছে।
মানবাধিকার বা পরিবেশ রক্ষার ইস্যুতে অডিও সংক্রান্ত তদন্তের কাজ করে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট। তারা বলছে, ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংটি সম্ভবত এমন একটি ঘরে ধারণ করা হয়েছিল যেখানে ফোন কলটি স্পিকারে বাজানো হয়েছিল। কারণ এতে স্বতন্ত্র টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু শব্দ ছিল।
ইয়ারশটের বিশেষজ্ঞরা রেকর্ডিংজুড়ে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি বা ইএনএফ শনাক্ত করেছে, যে ফ্রিকোয়েন্সি অন্য একটি ডিভাইস থেকে অডিও রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রায়ই উপস্থিত থাকে। এটি এমন এক সূচক যার মানে হলো অডিওটিতে হেরফের করা হয়নি।
তারা শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছন্দ, স্বর এবং শ্বাসের শব্দ বিশ্লেষণ করেছে এবং ধারাবাহিক নয়েজের স্তরও শনাক্ত করেছে। অডিওতে কৃত্রিম কোনো পরিবর্তন আনার প্রমাণও খুঁজে পায়নি।
ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেছেন, ‘রেকর্ডিংগুলো তার (শেখ হাসিনার) ভূমিকা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এগুলো স্পষ্ট এবং সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত।’
তিনি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন যেখানে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘বিবিসির উল্লেখ করা টেপ রেকর্ডিংটি সত্য কিনা তা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না।’
আইসিটি মোট ২০৩ জনকে অভিযুক্ত করেছে যার মধ্যে ৭৩ জন গ্রেপ্তার রয়েছে।
পড়ুন: শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ অব্যাহত থাকবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
১৪৯ দিন আগে
হাসিনার পরিবারের সাত সদস্যসহ ২৩ জনকে হাজিরে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক ৫ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ ২৩ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১ জুলাই) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২০ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ৬টি মামলার আজ ধার্য তারিখ ছিল। এক মামলায় গত ১৭ জুন গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে গেজেট প্রকাশিত হয়নি। অপর ৫ মামলার ২৩ আসামি পলাতক অবস্থায় রয়েছেন মর্মে প্রতিবেদন এসেছে। আমরা আসামিদের আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের আবেদন করি। আদালত বিজি প্রেসের মাধ্যমে আসামিদের আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। ৬ মামলারই পরবর্তী তারিখ ২০ জুলাই ধার্য করা হয়েছে।
আরও যাদের বিরুদ্ধে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
পড়ুন: নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির আগের আদেশ স্থগিত
গত ১০ এপ্রিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা মামলায় শেখ হাসিনা, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অপর আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং শরীফ আহমেদ।
এর আগে গত ১২ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানায় ঢাকা শহরে রাজউকের এখতিয়ারাধীন এলাকায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও সেটি গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত আইন, বিধি ও নীতিমালা ও আইনানুগ পদ্ধতি লঙ্ঘন করে মা শেখ হাসিনার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকা অবস্থায় তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গণকর্মচারীদের প্রভাবিত করেছেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইনসম্মত পারিশ্রমিক না হওয়া সত্ত্বেও, আইনমতে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয়ে ও অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ১৭ নম্বর প্লট সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন। সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্লটের বাস্তব দখলসহ রেজিস্ট্রি মূলে প্লট গ্রহণ করেন।
পড়ুন: খুলনায় শেখ হাসিনাসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মামলাটি তদন্ত করে গত ১০ মার্চ তদন্তে আরও দুই আসামিসহ শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন আফনান জান্নাত কেয়া।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউক থেকে ৩০ কাঠা প্লট গ্রহণের পৃথক তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিকসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে ১৩ এপ্রিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
তিন মামলার মধ্যে একটিতে শেখ রেহানাকে, আরেকটিতে তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও অপর মামলায় মেয়ে আজমিনা সিদ্দিককে প্রধান আসামি করা হয়েছে। টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক এবং শেখ হাসিনাকে সহযোগী আসামি করা হয়। তিন মামলায় মোট আসামি ৫৩ জন। এক আসামি অন্য মামলারও আসামি। সে হিসেবে তিন মামলায় মোট ২২ জন আসামির নাম রয়েছে।
এক মামলার আসামি হলেন- শেখ রেহেনা, শেখ হাসিনা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পাওয়া আসামি শেখ হাসিনার একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
আরেক মামলার আসামিরা হলেন- শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, শেখ হাসিনা, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল।
১৫৭ দিন আগে
হেলিকপ্টার দিয়ে ছাত্রজনতার ওপর গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন হাসিনা: এ্যানি
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, হেলিকপ্টার দিয়ে ছাত্রজনতার ওপর গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন হাসিনা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) লালমনিরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিভাগের আয়োজনে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
কর্মশালায় বিকাল ৪টায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এ্যানি বলেন, খালেদা জিয়াকে জেলে বন্দী রেখে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো আওয়ামীলীগ। তিনি অসুস্থ ছিলেন, অনেক অনুনয় বিনয় করেও তার সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে পারি নাই।
বিএনপি নেতা বলেন, তারা দিনের ভোট রাতে করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসেছিল। আর এই অবৈধ কাজে কালো টাকার লোভে সহায়তা করেছিল প্রশাসনের লোকজন।
তিনি আরও বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। ন্যূনতম যে সংস্কার করা দরকার ৩১ দফার মধ্যে সে কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে এর আগে হাসিনা সরকারের খুনিদের বিচার হতে হবে। হেলিকপ্টার দিয়ে নিরস্ত্র ছাত্রজনতার উপর গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। নির্বাচনের আগে এর বিচার দৃশ্যমান হতে হবে।
এ্যানি বলেন, নতজানু স্বভাবের কারণ আওয়ামী লীগ ১৫ বছরেও তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পায়নি। বাস্তবায়ন করতে পারেনি তিস্তা মহা পরিকল্পনা। তারেক রহমান ছাড়া এটি বাস্তবায়নও সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর দেশের সকল খাতকে ধ্বংস করে গেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে দেশের সকল শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা প্রণয়ন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে এই ৩১ দফার সঙ্গে সম্পৃক্ত করাই আমাদের উদ্দেশ্য।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল আত্মসামাজিক প্রেক্ষাপটে দেশকে স্বনির্ভর হওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল এবং একজন আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি হিসাবে মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আন্দোলন এবং দেশকে ভবিষ্যতে উজ্জ্বল হবে ওই দৃষ্টিকোণ থেকেই শহীদ জিয়াউর রহমান দেশ পরিচালনা করেছেন। খুব অল্প সময় তিনি দেশের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
এ্যানি বলেন, আমরা লড়াই সংগ্রাম করেছি দেশের জন্য, দেশের গণতন্ত্রের জন্য, এতে আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, অত্যাচারিত ছিলাম এবং আমাদের পাশ থেকে অনেক ভাইকে হারিয়েছি।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা, নেওয়াজ হালিমা আরলি প্রমুখ উপস্থিত রয়েছেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করছেন, সাবেককেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন শ্যামল।
২২৭ দিন আগে
মোদি-ইউনূস বৈঠক: হাসিনাকে বিষোদগারের সুযোগ না দেওয়ার অনুরোধ
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যাতে ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করার সুযোগ না দেওয়া হয়, দেশটির কাছে সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উচ্চপ্রতিনিধি খলিলুর রহমান।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। গেল ৩ থেকে ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনের উল্লেখযোগ্য বৈঠক ও সফলতা নিয়ে কথা বলতে এই সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। এ সময়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেসসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের সময় শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছেন। জবাবে তারা কী বলেছেন, জানতে চাইলে খলিলুর রহমান বলেন, ‘বালাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। বলেছি যে প্রত্যার্পণ সাপেক্ষে তিনি (হাসিনা) দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে যে বিষোদগার করেছেন, সেটার সুযোগ যাতে ভারত সরকার তাকে না দেয়।’
শেখ হাসিনাকে প্রত্যার্পণের বিষয়ে মোদির জবাব কী ছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা অনুরোধ করেছি। এ বিষয়ে দুপক্ষ কাজ করবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেছেন যে বাংলাদেশের সাথে যে সম্পর্ক সেটা কোনো ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে না, এটা রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে। আমরাও তা মনে করি। সেই ভিত্তিতে আমরা দুটি রাষ্ট্রের সম্পর্ক এগিয়ে নেব।’
গেল ৪ এপ্রিল ব্যাংককের সাংরিলা হোটেলে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের।
সংখ্যালঘুদের দাবিয়ে রাখা ক্ষতিকর
সংখ্যালঘুদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা একটি দেশের জন্য ক্ষতিকারক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার এই উচ্চপ্রতিনিধি। তিনি বলেন, একপক্ষকে আরেকটি পক্ষের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেওয়া ব্রিটিশদের কাজ।
যখনই ভারতের সঙ্গে আলাপ হয়, তখন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন তারা। কিন্তু মোদির সঙ্গে বৈঠকে ভারতের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি তুলছেন কিনা; প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘুর প্রশ্নটি ব্রিটিশ আমল থেকেই আছে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, ব্রিটিশরা চলে গেছেন, কিন্তু সমস্যাটা আমাদের দেশে রয়ে গেছে। এক সম্প্রদায়কে আরেক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেওয়া ব্রিটিশদের কাজ। আমরা দুপক্ষই ভুক্তভোগী। আমাদের কোনো লাভ নেই, আমাদের বুঝতে হবে।’
‘কোনো দেশের সংখ্যালঘুদের দাবিয়ে রাখার মানে হচ্ছে, একটি জনগোষ্ঠী মূলস্রোতে আসতে পারছেন না। এটা ক্ষতি। যে দেশে এটা ঘটছে, সেটা তাদের ক্ষতি,’ যোগ করেন তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নানা রকমের ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা স্বীকার করছি, ৫ আগস্টের পর পাঁচ-সাতদিন সরকার ছিল না। সে সময়ে নানা ঘটনা ঘটেছে। যে দলের পতন ঘটেছে, তাদের হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবার ওপর নানা রকম হামলা হয়েছে। যেটা খুব দুঃখজনক। কারণ আইন হাতে নিয়ে নেওয়া উচিত না।’
তবে এখন সবাই বুঝতে পেরেছেন, সেই আগের অবস্থা নেই। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ওই স্কেলে তো ঘটেনি। তবুও আমরা বলবো, আমরা কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অভাব দেখতে চাই না। সরকার সবকিছু করতে পারবে না। আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধেরও একটা বিষয় আছে। আমাদের সবাইকে মিলেই কাজটি করতে হবে। আপনি বলছেন, ভারতে হচ্ছে, ভারতে হচ্ছে বলে আমাদের দেশেও হবে নাকি? আমরা তো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা উদহারণ বলে নিজেদেরকে অভিহিত করি। সেই কাজটা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়নে আলোচনা
গঙ্গার পানি চুক্তি ২০২৬ সালে শেষ হচ্ছে। সেটা নবায়নে কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যাতে করে আলোচনাগুলো মসৃণভাবে শুরু হয়, সে জন্য আমরা দুপক্ষই যোগাযোগ রাখছি। আমাদের ধারণা, ভারতের কাছ থেকে আমরা এ বিষয়ে ভালো সহযোগিতা পাবো। তিস্তার বিষয়ে তাদের জানিয়েছি। আমাদের দেশের ১৪ শতাংশ তিস্তা অববাহিকায় বসবাস করেন।’
আরও পড়ুন: আরাকানের যুদ্ধাবস্থা নিরসন করেই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন: খলিলুর রহমান
‘তাদের জীবন-জীবিকা, ভবিষ্যত, ওই অঞ্চলের ইকোলজি সবকিছু নির্ভর করছে পানির সহজলভ্যতার ওপর। পানি নেই, পুরো জায়গাটিই নেই।’
খলিলুর রহমান বলেন, ‘এই তিস্তা অববাহিকায় ন্যূনতম পরিমাণ পানি নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সরকারের একটি বিশাল অগ্রাধিকার। ১৪ শতাংশ লোককে একেবারে এ ধরনের পরিস্থিতিতে ঠেলে দিতে পারেন না। সে জন্য আমরা সবার সাথে কথা বলেছি। ভারতকে বলেছি, চুক্তিটি করেন। পাশাপাশি, অন্য বিকল্পগুলোও হাতে রাখতে হবে।’
স্মৃতিকথায় থাকবে অজিত দোভালের সঙ্গে কথোপকথন
৩ এপ্রিল রাতে বিমসটেকের অফিশিয়াল নৈশভোজে ছিলেন আপনারা। সেখানে আপনাকে দেখেছি, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে মগ্ন হয়ে কথা বলতে। সেখানে আপনাদের মধ্যে কী কথা হয়েছে, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অজিত দোভালের সঙ্গে যেদিন কথা বলি, তার দুদিন আগে আমেরিকান ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার অ্যালেক্স এন ওয়ংয়ের সঙ্গে আমার আলাপ হয়। তিনি ফোন করেছিলেন।’
‘সেখানে বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে কথা হয়েছে। অ্যালেক্স এন কিন্তু চাকরিতে আছেন। কেউ কেউ বলছেন তার চাকরি গেছে। কিন্তু তিনি চাকরিতে আছেন, তিনি ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার এবং তিনি হোয়াইট হাউসে বসেন।’
প্রধান উপদেষ্টার উচ্চপ্রতিনিধি বলেন, ‘দোভালের সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে আলাপ হয়েছে। ঘড়ি ধরে তো আলাপ করিনি। আমরা আলাপে মগ্নই ছিলাম। আমি সব জানাব, আমার স্মৃতিকথায়।’
২৪০ দিন আগে
স্যাডিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া গণতান্ত্রিক দেশের কাছে কাম্য নয়: গোলাম পরওয়ার
দুই শতাধিক মামলার আসামি স্যাডিস্ট শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া কোনো গণতান্ত্রিক দেশের কাছে কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে আমাদের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠিক থাকলেও রাজনৈতিক বিভিন্ন কারণে সম্পর্কের টানাপোড়ন ছিল। একটা দেশের সঙ্গে আরেকটা দেশের সম্পর্ক হবে সাম্য ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে। কিন্তু, বিগত সময়ে ভারত আমাদের উপর প্রভুত্বসুলভ আচরণ করেছে।
আরও পড়ুন: রাজনীতিবিদদের কাঁদা ছোড়াছুড়ি জনগণ পছন্দ করে না: মিয়া গোলাম পরওয়ার
শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকালে খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা ঈদগাহ ময়দানে থানা জামায়াতে ইসলামী কর্মী সম্মেলন-২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার বলেন, সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পানি চুক্তি, সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারত সবসময় আমাদের সাথে নানা টালবাহানা করে আসছে। ভারত ও তার জনগণ আমাদের শত্রু নয়; কিন্তু ভারতের শাসকদল ক্ষমতাসীন বিজেপি চরম সাম্প্রদায়িক একটা দল।
সম্প্রতি ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক আমাদের রাজনীতির জন্য ইতিবাচক বলেও উল্লেখ করেন জামায়াতের এই নেতা।
গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা যখন তাদের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছিল, তখন এদেশের ফ্যাসিস্ট ও স্যাডিস্ট শেখ হাসিনা তাদের উপর জুলুম নির্যাতন করে ২ হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও ৩০ হাজারের অধিক জনগণকে আহত করেছে। খুন, গুম, অর্থ পাচারসহ দুই শতাধিক মামলার আসামি স্যাডিস্ট শেখ হাসিনার বিচার আর্ন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইবুনালে শুরু হয়েছে। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। এমন একজন অপরাধীকে আশ্রয় দেওয়া কোনো অবস্থাতেই গণতান্ত্রিক দেশের কাছে কাম্য নয়।
বিগত ১৬ বছরকে জুলুম নির্যাতনের এক কালো অধ্যায় উল্লেখ করে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জামায়াত নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের বন্ধু। মানুষের দুঃখ, দুর্দশা লাঘবে জামায়াত সংগ্রাম করে যাচ্ছে। ইসলামী রাষ্ট্রের যে ধারণা মহান রব কুরআনে উল্লেখ করেছেন জামায়াত সেই আলোকেই বাংলাদেশকে গড়তে চায়। একটি শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র গড়বে যা ২৪’র আন্দোলনের ছাত্র-জনতা বুকে ধারণ করে জুলুম নির্যাতন সয়েছে তবুও পিছপা হয়নি। ছাত্ররা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে স্বপ্ন দেখছে— জামায়াত তার সাথে একমত পোষণ করে। অতীতের জুলুম-নির্যাতন দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ যদি নির্মাণ করা না যায়— তাহলে আমাদের নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন বৃথা যাবে।
আরও পড়ুন: কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ছাত্র-জনতার ঋণ পরিশোধ করতে হবে: মিয়া গোলাম পরওয়ার
আগামী বছরের জুনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণায় জামায়াতের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের তিনটি স্তম্ভ- সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ও সামাজিক সুবিচার। জামায়াতে ইসলামী এই তিনটিকে ধারণ করে আগামীর বাংলাদেশ গড়বে।
থানা আমির মাওলানা মুনাওয়ার আনসারীর সভাপতিত্বে ও মুহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম এবং মাওলানা মাহদী আল-হাদীর পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, খুলনা মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন ও অন্যান্য নেতারা।
২৪৩ দিন আগে
শাপলা চত্বর গণহত্যা: হাসিনাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
২০১৩ সালে রাজধানীর শাপলা চত্বরে গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (১২ মার্চ) গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোল্যা নজরুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর জন্য পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।
আরও পড়ুন: রামপুরায় গণহত্যা: ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
মামলার অভিযোগে বলা হয়, হেফাজতে ইসলাম কয়েকজন ব্লগারের 'ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর অবমাননার প্রতিবাদে' ১৩ দফা দাবি পেশ করেছিল।
দাবি আদায়ে সরকার ব্যর্থ হলে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে জড়ো হন হেফাজতে ইসলামের সমর্থকরা।
ওইদিন রাত ১১টা থেকে পরদিন ভোর ৪টা পর্যন্ত শেখ হাসিনার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই এলাকায় রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ মাদরাসা ছাত্র ও পথচারীদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
মামলার এজাহারে দাবি করা হয়, নিহতদের লাশ সিটি করপোরেশনের যানবাহন ব্যবহার করে গুম করা হয়।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিম, তারেক আহমেদ সিদ্দিকী ও মাহবুব খন্দকারের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।
এদিকে সাভারের আশুলিয়ায় লাশের স্তূপীকরণের মামলায় নায়েক মো. সোহেল মিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন: এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না
২৬৮ দিন আগে
হাসিনার নৃশংসতার দলিল সংরক্ষণ করা দরকার: প্রধান উপদেষ্টা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে করা নৃশংসতার দলিল সংরক্ষণ করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার (২ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ের অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খানের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভে পুলিশি নৃশংসতা, মতিঝিলের শাপলা চত্বরে বিক্ষোভকারীদের ওপর ধরপাকড় ও বিভিন্ন সময়ে বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো নৃশংস ঘটনাবলীর দলিল সংরক্ষণে জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা।
‘দেশের নাগরিকদের ওপর যেসব নৃশংসতা চালানো হয়েছে, তার প্রমাণ রাখা জরুরি। যদি এটা করা না হয়, তাহলে সত্য জানা যেমন কঠিন হয়ে যাবে, তেমন ন্যায়বিচারও নিশ্চিত করা যাবে না,’ বলেন ড. ইউনূস।
গোয়েন লুইস বলেন, জাতিসংঘ এই বিষয়ে কারিগরি সহায়তা দিতে ও বাংলাদেশের জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এটি হলো সুস্থতা ও সত্য প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুন: রমজান উপলক্ষে জীবনের সর্বস্তরে সংযমের বার্তা প্রধান উপদেষ্টার
আগামী ১৩ থেকে ১৬ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলে প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য সংস্থাটিকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত যে জাতিসংঘ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে; এটি যথাসময়ে এসেছে। এটি সহজ কাজ ছিল না।
প্রধান উপদেষ্টাকে লুইস বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টার্ক ৫ মার্চ জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে এই প্রতিবেদন তুলে ধরবেন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের আসন্ন বাংলাদেশ সফর রোহিঙ্গা সংকটকে আবারও বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরবে, যখন ত্রাণ সহায়তা ক্রমাগত কমছে। আমরা অর্থায়ন পরিস্থিতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। প্রতি মাসে শুধু খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতেই দেড় কোটি ডলার প্রয়োজন। সঙ্গে যোগ হয় অন্যান্য মৌলিক চাহিদা ব্যয়।
২৭৭ দিন আগে
গণহত্যা: ২০ এপ্রিলের মধ্যে হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনা ও আরেক মামলায় তার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আসামিদের মধ্যে ১৬ জনকে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হাজির করা হয় ট্রাইব্যুনালে। এরা হলেন— সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী ও সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনায়েদ আহমেদ পলক, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
অন্য যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়না জারি করা হয় তারা হলেন— শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, মোজাম্মেল হক, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, জুনাইদ আহমেদ পলক, শেখ সেলিম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে শামস পরশ, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ মামুন, ডিবি হারুন, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার, প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, সাবেক ডিএমপি হাবিবুর রহমান, সাবেক র্যাব ডিজি হারুন অর রশিদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা তারেক আনাম সিদ্দিকী, সাবেক বিচারপতি মানিক, ড. জাফর ইকবাল, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামসহ ৪৬ জন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর মিজানুর রহমান। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার ও গাজী এমএইচ তামিমসহ অন্যান্য প্রসিকিউটর। আদালতে আসামির পক্ষে ওকালতনামা জমা দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় শেখ হাসিনার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আরও দুই মাস বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২০ এপ্রিল নির্ধারণ করেছেন অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া গণহত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার আরও ১৬ জনের বিষয়েও তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে।’
শেখ হাসিনার তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান স্ট্যাটাস যে কোনো পর্যায়ে তদন্তটা আছে, সেটা আদালতে বলেছি। আমরা আশা করি আগামী মাসের মধ্যে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেটা, সেটার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা সম্ভব হতে পারে। এটা কোনো ফাইনাল টাইমলাইন নয় বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পৈতৃক সম্পত্তিতে ভাঙচুর ও লুটপাট
‘আমাদের তদন্ত রিপোর্টের মধ্যে জাতিসংঘের রিপোর্ট ন্যাচারালি অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করছি। জাতিসংঘের প্রতিবেদনের উপাদানগুলো চেয়েছি। সেগুলো সংগ্রহের একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। যতটুকু পাওয়া যাবে, সেটাকে তদন্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত করব। এটা মামলা প্রমাণের জন্য বড় এভিডেন্স (প্রমাণ) হিসেবে কাজ করবে। এ জন্য দুই মাসের সময় চেয়েছিলাম। আদালত ২০ এপ্রিল পরবর্তী তারিখ রেখেছেন। আমরা আশা করছি এর আগে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে পারব। আমরা তদন্তের একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি।’
স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিচারে করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩। সে আইনে অপরাধীদের বিচারও চলে আসছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর সে আইন নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্টে গণহত্যার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে।
বিচারের জন্য উল্লেখযোগ্য সংশোধনী আনা হয়েছে আইনে। শুধু আইনেই নয়, মেরামত করে দৃষ্টিনন্দন তথা ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন। সংশোধিত আইনে বিচার হবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা চালানোর অপরাধে অভিযুক্তদের।
গণ-অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ একশর বেশি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে। এসব মামলার মধ্যে গত ১৭ অক্টোবরে একটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। মামলায় আরও ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
২৮৯ দিন আগে
আল্লাহ কি হাসিনাকে নূন্যতম অপরাধবোধ দেননি: প্রশ্ন আসিফ নজরুলের
আগের মতো আত্মবিশ্বাস নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ সুরে কথা বলায় অবাক আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আল্লাহ কি এই মানুষটার মাঝে নূন্যতম অপরাধবোধ দেননি?’
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় যেভাবে আত্নবিশ্বাস নিয়ে মানুষের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ সুরে কথা বলেছেন, তার শেষ সংবাদ সম্মেলনেও তিনি একদম একই সুরে কথা বলেছেন। তিনি তার বক্তব্যে আমাদের যে যন্ত্রণার স্মৃতি সেটা নিতে পরিহাস করেছেন। তিনি বলেছেন আবু সাঈদের হত্যার দৃশ্য (আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স) এআই দিয়ে বানানো হয়েছে। মুগ্ধকে নাকি ছাত্ররাই গুলি করে মেরেছে। বলুন এগুলো কি সহ্য করা যায়?’
আরও পড়ুন: অক্টোবরের মধ্যে জুলাই হত্যাকাণ্ডের ৩-৪টি মামলার রায় পাওয়া যাবে: আসিফ নজরুল
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘মিথ্যাচারের পাশাপাশি তিনি সবাইকে উসকে দিয়েছেন; কার বাড়িতে আগুন দিতে হবে এবং কাকে তিনি ছাড়বেন না এসব নিয়ে। আশ্বর্য! আমার কাছে অবাক লাগে! আল্লাহ কি এই মানুষটার মাঝে নূন্যতম অপরাধবোধ দেননি?’
‘যার মধ্যে নূন্যতম অপরাধবোধ থাকে না তিনি তো সবই করতে পারেন। তার বাহিনীর এক অংশ শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ বিশ্বাস থেকেই তার মতো মিথ্যাচার করেছে। তারাও একই টোনে কথা বলেছে। তারা বিভিন্ন উসকানিমূলক, আক্রমণাত্বক এবং ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জানতে পেরেছে তারা (আওয়ামী লীগের কর্মীরা) আরও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। এ কারণেই অপারেশন (অপারেশন ডেভিল হান্ট) চালানো হচ্ছে।’
২৯৬ দিন আগে