গাজা
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনসহ গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসন এবং গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ চায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যুদ্ধ নয়, শান্তির পক্ষে এবং আমরা চাই, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনে যে সব রাষ্ট্রের ভূমিকা রাখার কথা, তারা কার্যকর ভূমিকা নিক এবং গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক।’
রবিবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিয়মকালে এ কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার বদলা হিসেবে শনিবার রাতে তেল আবিব, পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েল জুড়ে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মত জানতে চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: আশা করি পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ সময় ড. হাছান বলেন, ‘ইসরায়েল সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে হামলা করায় ইরান এ আক্রমণের সুযোগ পেয়েছে, অন্যথায় এটি হতো না, ইরান 'রিটালিয়েট' করেছে -ইরানের বক্তব্য তাই।’
তিনি আরও বলেন, যেসব রাষ্ট্রের ভূমিকা রাখার কথা, তারা ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনে এবং গাজায় যে নির্বিচারে মানুষ হত্যা হচ্ছে, অবিলম্বে সেই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ। ড. হাছান বলেন, ‘আমরা কখনোই যুদ্ধ-বিগ্রহের পক্ষে নই, আমরা শান্তির পক্ষে।’
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা মানব সভ্যতার কলঙ্কজনক অধ্যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অপহৃত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ উদ্ধার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক তৎপরতায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে জিম্মি নাবিক ও জাহাজ নিরাপদে উদ্ধার হয়েছে। জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকে ১০০ নটিক্যাল মাইল এগিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর সহযাত্রী হয়েছে।
সক্রিয় ভূমিকার জন্য জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরঅএম গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দক্ষিণ সীমান্তে মিয়ানমারের আরও ৯ বিজিপি সদস্যের দেশে প্রবেশ নিয়ে মন্ত্রী হাছান বলেন, পূর্বের ১৮০ জনসহ সবাইকে ফেরত পাঠানো নিয়ে কাজ চলছে।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বিএনপি বেশি ভয়ংকর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অবশেষে গাজা নিয়ে বিএনপির নীরবতা ভাঙলেন মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা সফর শেষে দেশে ফেরার পর প্রথম প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। এসময় গাজা সংঘাত নিয়েও কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'দেশ যখন চলমান ফ্যাসিবাদী সরকারের অভিশাপে' তখন আমরা এখানে ইফতারের জন্য সমবেত হয়েছি। ৭ জানুয়ারি বিশ্ব বাংলাদেশে একটি নির্বাচন নয়, বরং একটি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার জন্য অপমান দেখেছে।’
রবিবার(২৪ মার্চ) ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর গাজায় ইসরাইলের হামলা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যে সংঘাত চলছে তা নিয়ে বিএনপি প্রথমবারের মতো মত প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে আমরা সবাই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘকে এই গণহত্যা বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে এই সংকটের একমাত্র সমাধান বলে বিশ্বাস করি।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ মনে করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা শুধু রাজনৈতিক দল দিয়ে অর্জিত হয়েছে: বিএনপি নেতা হাফিজ
মির্জা ফখরুল বলেন, তারা বাংলাদেশের জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির সংগ্রামের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনকে মূল্য দেন, যা একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ না আমরা তা অর্জন করতে পারছি, ততক্ষণ হয়তো আমাদের শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন: পকেট ফাঁকা থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছে না জনগণ: মঈন খান
গাজায় ইসরাইলের তাণ্ডব ঠেকাতে বিশ্বের ব্যর্থতায় প্রধানমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ
বিশ্ববাসী গাজায় হত্যা বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ড দেখছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার (২৪ মার্চ) সফররত ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন দলের মহাসচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেব্রিল আলরজব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে একথা বলেন শেখ হাসিনা।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার দ্ব্যর্থহীন সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একই সঙ্গে গাজায় নারী ও শিশুসহ হাজার হাজার মানুষকে হত্যা এবং হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার নিন্দা জানান তিনি।
তিনি গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন এবং সেখানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।
আরও পড়ুন: সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিসরের মাধ্যমে দুইবার ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমি যখনই সুযোগ পাই তখনই ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে আমার কণ্ঠ তুলে ধরি।’
১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইয়াসির আরাফাতের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নীরব থাকার অবস্থানের কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'এটা এক ধরনের ভণ্ডামি।
শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা লাঘবের স্বার্থে এটা করা উচিত।’
এ প্রসঙ্গে তিনি পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে জাতিসংঘের প্রস্তাব বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন ও আন্তর্জাতিক ফোরামে তাদের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান ফাতেহ মুভমেন্টের নেতা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরিল আলরজব।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, 'অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এজন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।’
আরও পড়ুন: ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে চান প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘গাজায় খাদ্যের তীব্র সংকট বিরাজ করছে এবং জনগণ অনাহারে রয়েছে। সেখানে খাদ্য সহায়তা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়াই এই সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।
তিনি বলেন, আরব দেশগুলোতে ৪০ কোটি মানুষ বসবাস করলেও তারা ঐক্যবদ্ধ নয়।
তিনি বলেন, ‘তারা ঐক্যবদ্ধ হলে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন সহজেই বন্ধ হবে। আরব বিশ্বের ক্ষমতা ও সম্পদ রয়েছে এবং ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য তাদের মধ্যে কেবল ঐক্য প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধ না হলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক শান্তি কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবে না।
অধিকৃত গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে ইসরাইলের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনে সমর্থন জানানোর জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একটি চিঠিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বড় বাধার মুখে ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সংস্কারের পরিকল্পনা
জিম্মিদের ওপর যৌন সহিংসতা ইসরায়েলের হামলার বৈধতা দেয় না: জাতিসংঘ দূত
সংঘাতের সময় যৌন সহিংসতার বিষয় তুলে ধরে জাতিসংঘের দূত ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছেন, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার সময় অপহৃত হওয়া জিম্মিরা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন এমন ‘স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য’ পাওয়া গেলেও পরবর্তীকালে চালিয়ে যাওয়া হামলাকে এটি বৈধতা দেয় না।
সোমবার প্রমিলা প্যাটেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, গাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের অকথ্য দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে এবং সমস্ত জিম্মিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জন্য একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি নৈতিকভাবে অপরিহার্য।
এ সময় অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গাজা ও সুদানে রমজান মাসে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
প্রমিলা আরও বলেন, ‘হামলা চালিয়ে যাওয়া, কোনোভাবেই, তাদের রক্ষা করতে পারে না। এটি যৌন সহিংসতাসহ আরও বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঝুঁকির পথ তৈরি করে দেয়।’
ইসরায়েলের আহ্বানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের ডাকা এক কাউন্সিলের বৈঠকে প্যাটেন তার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন। যেখানে জানা যায়, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলাকালে হামাস ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং নারীদের বিরুদ্ধে অন্যান্য নিষ্ঠুর ও অমানবিক কাজ করেছে এমন প্রমাণ মিলেছে। এ সময় প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত ও ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
এখনও ১৩৪ জিম্মি বন্দি এবং গাজার ২ মিলিয়নেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক অসহায় অবস্থায় রয়েছে। তাদের স্বার্থে এখনই যুদ্ধবিরতি হওয়া উচিত।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান আক্রমণে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে যাওয়ায় গাজায় ত্রাণের জন্য আলোচনায় সমুদ্রপথ
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, ইসরায়েলি সমাজকে প্রতিরোধ ও ভয় দেখানোর জন্য হামাসের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে যতটা সম্ভব উচ্চস্বরে প্রতিবাদ জানাতে তিনি পরিষদে এসেছিলেন।
হামাসের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে ৭ অক্টোবর থেকে ৪০টিরও বেশি বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সবচেয়ে শক্তিশালী সংস্থার উচিত চরমপন্থী গোষ্ঠীটিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করা এবং অবিলম্বে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া।’
সোমবার মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে উল্লেখ করে কাটজ রমজানের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, ‘আমাকে আমাদের মুসলিম ভাইদের শুভেচ্ছা জানাতে সুযোগ দিন।’
কাটজ বলেন, হামাস মুসলিম বিশ্বের পক্ষে কথা বলছে না। মুসলিম ধর্মের নামে যে যৌন সহিংস অপরাধ তারা করেছে এর নিন্দা জানানো উচিত।
কাউন্সিলে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেন, ‘সারা বিশ্বের মুসলমানরা রমজান পালন করছে কিন্তু গাজার সর্বত্র মৃত্যু ও দুর্ভোগ। খাদ্য ও আশা কোথাও পাওয়া যাবে না।’
তিনি কাউন্সিলকে বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি চান না কারণ তার ‘রাজনৈতিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য আক্রমণ চালিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, গাজাকে বসবাসের অযোগ্য করে দিয়ে আমাদের জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করে রাখা ইসরায়েলের উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুন: কয়েক মাস ধরে দুর্ভিক্ষের সতর্কতার পর গাজায় বাড়তে শুরু করেছে শিশুদের মৃত্যু
প্যাটেনের প্রতিবেদনে এক সপ্তাহের মধ্যে সভা ডেকে নিরাপত্তা পরিষদ যে ‘নজিরবিহীন’ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষদের ওপর যৌন নিপীড়নের প্রতিবেদনেও সমানভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্যাটেনের মূল সুপারিশ হলো হামাসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান এবং স্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশনকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রবেশাধিকার দিতে ইসরায়েলকে উৎসাহিত করা।
ফিলিস্তিনিরা এই তদন্তকে স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে মনসুর ইসরাইলকেও তদন্তে স্বাগত জানানোর আহ্বান জানান। ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করতে প্যাটেনকে গাজা পরিদর্শন করতে আমন্ত্রণ জানান তিনি।
বৈঠকে প্যাটেন কাউন্সিলকে বলেন, পশ্চিম তীরে তিনি ধর্ষণের কোনো তথ্য না পেলেও ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ আটকের সময় যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছেন।
প্রতিবেদনগুলো ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপন করেছেন জানিয়ে প্যাটেন বলেন, এসব কাজ প্রতিরোধের জন্য যারা তথ্য দিয়েছিলেন তারা অন্যান্য অভিযোগ লঙ্ঘনের তদন্ত করতেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, কিছু ‘রাজনৈতিক অভিনেতা’র দেয়া প্রতিবেদনের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সেসব অভিযোগগুলোর তদন্তের অনুমতি ছিল না বরং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সরাসরি প্রত্যাখান জানিয়েছিলেন তারা।
আরও পড়ুন: উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানান জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক।
উত্তর গাজায় হামলার নিন্দা জানিয়ে দুজারিক বলেন, ‘গাজার উত্তরাঞ্চলের হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মহাসচিব, যেখানে জীবন রক্ষা করার জন্য সাহায্য চাইতে গিয়ে ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত বা আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গাজার আহত বেসামরিক নাগরিকদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন, যার মধ্যে অবরুদ্ধ উত্তরাঞ্চলের লোকজনও রয়েছে। সেখানে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ত্রাণ সরবরাহ করতে পারেনি জাতিসংঘ।’
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকার পশ্চিমে সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১০৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। আহত হয় ৭৬০ জনেরও বেশি।
আরও পড়ুন: উপহার-অনুগ্রহ নয়, রাষ্ট্রকে একটি আন্তর্জাতিক আইনি অধিকার মনে করে ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলি বাহিনীর এক মুখপাত্র দাবি করেন, ভোরে গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ট্রাকগুলোতে আক্রমণ করে লুটপাট চালায় গাজাবাসীরা। এ সময় আত্মরক্ষা করতে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
জাতিসংঘের কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না জানিয়ে দুজারিক বলেন, ঘটনার তদন্ত করে জবাবদিহির ব্যবস্থা করা হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি এবং সমস্ত জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, গুতেরেস আবারও জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যাতে গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তা গাজায় সবার কাছে পৌঁছাতে পারে।
গাজা সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারেরও বেশি মৃত্যু এবং ৭০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। মৃত্যুর এই মর্মান্তিক সংখ্যা দেখে গুতেরেস আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানান দুজারিক। এছাড়াও ধ্বংসস্তূপের নিচেও অনেকে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০
গাজায় মানবিকতা পরাজিত হচ্ছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
‘গাজায় যা ঘটছে তা ধর্ম, দেশ, জাতিসত্তার ঊর্ধ্বে’ উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘সেখানে মানবিকতা পরাজিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সেখানে (গাজা) অবিশ্বাস্যভাবে নারী-শিশু হত্যা করা হচ্ছে, বেসামরিক ব্যক্তিরা গণহত্যার শিকার হচ্ছে। গাজায় জনসাধারণের স্বাধীনতা নেই। এ বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বিবৃতিতে না গিয়ে, বিতর্ক না করে বিশ্বের কাছে সত্য তুলে ধরতে হবে।’
বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের পাশে আছে বলেও জানান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
আরও পড়ুন: ক্যাবল সেবা ডিজিটাইজেশনে শিগগিরই নির্দেশিকা তৈরি করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
সোমবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা অ্যারাবিক-এ গাজায় ইসরায়েলি দখলদারিত্ব, গণহত্যা ও ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ইসরায়েলের অপতথ্য প্রচার বিষয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি একথা জানান।
ফিলিস্তিন সংকটের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের সমর্থনে আছে। এ ব্যাপারে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান অত্যন্ত জোরালো ও সুস্পষ্ট। তিনি কিছুদিন আগে মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, গাজা উপত্যকায় যা ঘটছে তা গণহত্যা। এটাই আমাদের অবস্থান।’
আরাফাত বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ফিলিস্তিনের জনগণ নিপীড়িত হচ্ছে। এখানে সুস্পষ্টভাবে দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষ নির্যাতন করছে। অপর পক্ষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশ নির্যাতিত জনগণের পক্ষে এবং আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতার পক্ষে।’
তিনি আরও যোগ করেন, গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হত্যাকাণ্ড দখল করা ভূখণ্ডের জনগণকে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে এবং বিশ্বকে সত্য জানাতে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজায় মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা, অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধ করা ও যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ওআইসি সদস্য দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীদের ইসলামিক সম্মেলনে যোগ দিতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক গিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। তুরস্ক সফর শেষে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে তার।
আরও পড়ুন: অপতথ্য ও ভুল তথ্য প্রতিরোধে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ-তুরস্ক: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
সত্য তথ্য দিয়ে অপতথ্য ও ভুল তথ্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চাই: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
ফিলিস্তিনের গাজা শহরে গণহত্যা বন্ধে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার মিউনিখ সুরক্ষা সম্মেলন-২০২৪-এর ফাঁকে তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সব সময় গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। আমি মনে করি গাজায় যা ঘটছে, তা গণহত্যা। সুতরাং, আমরা কখনই এটি সমর্থন করি না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের বাঁচার অধিকার রয়েছে এবং তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র রয়েছে। ‘গাজার জনগণের বাঁচার অধিকার রয়েছে। সুতরাং আমাদের উচিত তাদের সহায়তা করা এবং এই আক্রমণ ও যুদ্ধ বন্ধ করা।’
আরও পড়ুন: মিউনিখে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
নির্যাতিত ফিলিস্তিনি শিশু, নারী ও জনগণের প্রতি সমর্থন ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে তাদের জন্য কিছু সহায়তা পাঠিয়েছে বলেও জানান তিনি।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় ইসরাইলের পরিকল্পিত অভিযানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কখনই এ ধরনের আক্রমণ সমর্থন করে না। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব রাষ্ট্রে থাকার অধিকার পাওয়া উচিত, এটা পরিষ্কার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৬৭ সালের জাতিসংঘ প্রস্তাবে দুই-রাষ্ট্র (টু-স্টেট) তত্ত্ব রয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করতে হবে।'
আরও পড়ুন: মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে মনোযোগের প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে প্রধানমন্ত্রী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গাজার রাফায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়াল
ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, সোমবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহ ও গাজা উপত্যকার আশপাশের এলাকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ব্যাপক হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। এতে নারী ও শিশু সহ আহত হয়েছেন আরও শতাধিক ফিলিস্তিনি।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার ভোরে রাফাহ এলাকায় প্রায় ৪০টি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এছাড়া স্থল বাহিনী ব্যাপক গোলাবর্ষণও করেছে ওই এলাকায়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা সোমবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে 'সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে ধারাবাহিক হামলা’ চালিয়েছে। তবে এর বেশিকিছু বলা হয়নি ওই বিবৃতিতে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১৩ জনের মৃত্যু; রাফাহ অভিযান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
গাজাভিত্তিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রবিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ১৭৬ জনে এবং আহত হয়েছেন ৬৭ হাজার ৭৮৪ জন।
গাজায় ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানকার প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা নিরাপত্তার সন্ধানে মিশর সংলগ্ন রাফাহ এলাকায় পালিয়ে গেছে।
সীমান্তবর্তী শহরটি রাফাহ ক্রসিংয়ের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর কাছ থেকে খাদ্য ও ওষুধ সহায়তা পেয়ে থাকেন ফিলিস্তিনিরা। বর্তমানে ওই এলাকার খালি কৃষিজমিতে, স্কুলে এবং রাস্তার পাশে তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন ফিলিস্তিনের বাস্তুচ্যুত নাগরিকরা।
আরও পড়ুন: রাফাহতে ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১৩ জনের মৃত্যু; রাফাহ অভিযান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
গাজা উপত্যকার দক্ষিণ সীমান্তের রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন নারী ও ৫ জন শিশু বলে জানিয়েছে গাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার কয়েক ঘণ্টা পরেই রাতভর বিমান হামলা শুরু হয় এবং রাফাহতে এই হামলা আরও বাড়বে বলেও জানান নেতানিয়াহু।
অন্যদিকে দুই ঘনিষ্ঠ মিত্রের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েল ত্যাগ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
অব্যাহত সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মিশর সীমান্তের দিকে স্থানান্তর করেছে। ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড ত্যাগ করতে না পেরে অনেকে অস্থায়ী তাবু গেড়ে বা জাতিসংঘের শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে গাজায় যুদ্ধবিরতি চান অ্যানি লেনক্স
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২৭ হাজার ৮৪০ জন ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়াও গাজার অধিবাসীদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ অনাহারে জীবনযাপন করছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এই যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। এই হামলায় ১২০০ ইসরায়েলির মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক ছিল। আর ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়। হামাস এখনও ১৩০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে জিম্মি করে রেখেছে যাদের মধ্যে প্রায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইয়েমেনে মার্কিন-ব্রিটিশ বিমান হামলার নিন্দা হামাসের
গাজায় ২৪ ঘণ্টায় ১৫০ জন নিহত: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ওই অঞ্চলে ১৫০ জন নিহত হয়েছে এবং আরও ৩১৩ জন আহত হয়েছে। কারণ ইসরায়েলি বাহিনী সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে, এমনকি ভূখণ্ডের উত্তর অংশেও।
অক্টোবরের শেষের দিকে ইসরায়েলের স্থল অভিযানের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল উত্তরাঞ্চল।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বুধবার জানিয়েছে, তাদের বাহিনী গত একদিনে গাজার উত্তরাঞ্চলে ১৫ জনেরও বেশি হামাস জঙ্গিকে হত্যা করেছে এবং একটি স্কুলে জঙ্গি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলাসহ ইসরায়েলি অভিযানে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ২৬ হাজার ৯০০ জনে দাঁড়িয়েছে। বেসামরিক ও যোদ্ধা নিহতের মধ্যে পার্থক্য না করলেও নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
আরও পড়ুন: গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার ছুঁইছুঁই
গাজায় মানবিক যুদ্ধ বিরতির জাতিসংঘের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো