বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
বেরোবিতে প্রভোস্ট ছাড়া হল, খাবারে বড় পোকা পাওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শহীদ মুখতার ইলাহী হলে ডাইনিংয়ের খাবারে বড় আকৃতির পোকা পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ করেছেন এক আবাসিক শিক্ষার্থী।
রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরের খাবারের সময় হলের ডাইনিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। খাবারের মধ্যে বড় আকৃতির একটি কেঁচোর মতো পোকা দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা।
আবাসিক শিক্ষার্থী রাশেদ হোসেন বলেন, ‘আমি খাবার নিয়ে খেতে বসার সময়ই দেখি বড় একটা পোকা। দেখতে অনেকটা কেঁচোর মতো। এরপর আর খেতে ইচ্ছা করেনি। এগুলো দেখার পর খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে গেছে। সব খাবার ফেলে দিয়ে রুমমেটের খাবার খেতে হয়েছে।’ আবাসিক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত এক মাস থেকে হলে প্রভোস্ট নেই। প্রভোস্ট ছাড়াই চলছে হল। কোনো কিছু দেখা শোনার কেউ নাই। অব্যবস্থাপনায় চলছে হল। আরেক শিক্ষার্থী মোকছেদুল মমিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আজ দেখলাম খাবারে ২-৩ ইঞ্চি লম্বা কেঁচো। এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে, কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘লাইভ স্ট্রিমিং কিংবা কলে কথা বলতেও মিনিটে মিনিটে নেট বাফারিং। ওয়াইফাই সমস্যা আর কাটছেই না। হলের ছোট একটা গেস্টরুম সেটা ঠিকঠাক করার দিকে কোনো নজর নাই। স্টুডেন্টদের রিডিং রুমে জায়গা সংকুলান, মাঝেমধ্যে এটা ওটা নষ্ট হচ্ছে এগুলো নিয়ে প্রশাসনের কোনো মাথাব্যথা নাই। বড় কথা হলের প্রভোস্টই নাই। আমরা আর কতদিন এভাবে চলবো নানান সমস্যার মধ্য দিয়ে। ডাইনিংয়ের উন্নয়নের বিষয়সহ অন্যান্য সব সমস্যার বিষয়ে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
আরও পড়ুন: বেরোবিতে ছাত্র সংসদের নামে ৪৫ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ
এ বিষয়ে ডাইনিং পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কাউসার আহমেদ বলেন, ‘শাকে এত বড় পোকা পাওয়া রীতিমতো অসম্ভব। শাক ধোয়া হয় তারপর হাত দিয়ে ভাগ করা হয়। এইটা তো হাতেও লাগার কথা। এটি পরিকল্পিত কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’
৯৫ দিন আগে
দাবি আদায়ে অনড় বেরোবি শিক্ষার্থীরা, ১০ কার্যদিবস সময় চাইলেন উপাচার্য
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা ধরে আমরণ অনশন করছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন ভাঙতে রাজি নন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও গেজেট প্রকাশ সংক্রান্ত কার্যক্রমের জন্য ১০ কার্যদিবস সময় চেয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী।
সোমবার (১৮ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের সহকারী পরিচালক এহতেরামুল হকের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে ১০ কার্যদিবস সময় চাওয়া হয়।
চলমান অনশনের কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে একাধিকবার চেষ্টা চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপাচার্য নিজে উপস্থিত হয়ে কয়েকবার তাদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যেতে নিজেদের অনড় অবস্থানের কথা জানান শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও গেজেট প্রকাশ সংক্রান্ত কার্যক্রম দুয়েক দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই কাজ সম্পন্ন করার জন্য ১০ কার্যদিবস সময় দিয়ে প্রক্রিয়াটিতে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেরোবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে চলমান অনশনে অসুস্থ ৪ শিক্ষার্থী
ছাত্র সংসদের গঠনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৯-এ ছাত্র সংসদ সংক্রান্ত কোনো বিধান না থাকায় প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পরই ১০৮ম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র সংসদ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রথমত, ছাত্র সংসদের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ সংরক্ষণের জন্য একটি আলাদা ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে এবং সেখানে জমা করা অর্থ রাখা হয়েছে। আগে এমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এই অর্থ শুধুমাত্র ছাত্র সংসদের কাজে ব্যবহার করা হবে। দ্বিতীয়ত, ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য উপাচার্য একটি কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটির সদস্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গঠনতন্ত্র সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও তিনটি আবাসিক হলের জন্য পৃথকভাবে একটি গঠনতন্ত্র খসড়া তৈরি করেন। গত ১৪ মে সেই খসড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে পাঠানো হয়।
বর্তমানে গঠনতন্ত্রটি ইউজিসির মাধ্যমে ৩০ জুলাই গঠিত ৭ সদস্যবিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটির যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সেখান থেকে এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির (বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর) কাছে পাঠানো হবে।
নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর গঠনতন্ত্রটি সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। এরপর এই গঠনতন্ত্রের আলোকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
প্রশাসন জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি দ্রুততর করতে ইউজিসি গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেছেন উপাচার্য। জরুরি ভিত্তিতে কাজ করে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যেই খসড়া নীতিমালা যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই ছাত্র সংসদ সংক্রান্ত সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়ছেন উপাচার্য শওকাত আলী। সেই সঙ্গে অনশন ভেঙে খাবার গ্রহণ করার জন্য শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
১০৮ দিন আগে
বেরোবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে চলমান অনশনে অসুস্থ ৪ শিক্ষার্থী
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নির্বাচনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেছেন। কর্মসূচির ২৩ ঘণ্টা পেরোলে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন চারজন শিক্ষার্থী।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে ওই চার শিক্ষার্থীর অসুস্থ হয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অনশনরত আরেক শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান।তিনি জানান, রোববার (১৭ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই চার শিক্ষার্থী।
অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হলেন— সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৬তম ব্যাচের জাহিদ হাসান জয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৪তম ব্যাচের মাহিদুল ইসলাম মাহিদ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪তম ব্যাচের রুম্মানুল ইসলাম রাজ এবং শিক্ষার্থী সুমন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অসুস্থ শিক্ষার্থীদের অ্যাম্বুলেন্স করে হাসপাতাল নিয়ে যেতে চাইলে তারা অস্বীকৃতি জানান। ফলে সেখানেই তাদের স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে রুম্মানুল ইসলাম রাজ বর্তমানে কিছুটা সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাদের অনশন চলবে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবি আদায়ে লাগাতার বরিশাল ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা
তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পার হলেও এখনো একবারও ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এতে শিক্ষার্থীরা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী এবং রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদও আজ (সোমবার) সকালে কোনো কিছু না খেয়ে অবস্থান করায় প্রেসার বেড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—জাহিদ হাসান জয়, শিবলী সাদিক, কায়সার, মাহীদ, আশিকুর রহমান, আরমান হোসেন, নয়ন মিয়া, আতিকুর রহমান এবং রুম্মানুল ইসলাম রাজ।
গতকাল (রোববার) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন। তাদের একমাত্র দাবি— ছাত্র সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা।
১০৯ দিন আগে
সাবেক বেরোবি ভিসি ড. কলিমউল্লাহ গ্রেপ্তার
দুদকের মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে, ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণা, জালিয়াতি করে সরকারের চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৮ জুন ড. কলিমউল্লাহসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ওই মামলার অন্য আসামিরা ছিলেন—বেরোবির সাবেক উপাচার্য ও প্রকল্প পরিচালক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আবদুস সালাম বাচ্চু ও এম এম হাবিবুর রহমান।
এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ওই বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপি উপেক্ষা করে নকশা পরিবর্তন, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া ৩০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের চুক্তি সম্পাদন, ঠিকাদারের রানিং বিল থেকে কেটে রাখা নিরাপত্তা জামানতকে এফডিআর হিসেবে ব্যাংকে জমা এবং ওই এফডিআর লিয়েনে রেখে ঠিকাদারকে লোন দেওয়ার জন্য ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ অনুমোদন তথা গ্যারান্টর হয়ে সরকারের ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। গতকাল দুদক মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মো. আক্তার হোসেন এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
আরও বলা হয়, ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিতে অগ্রিম অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা না থাকার পরও ঠিকাদারকে আর্থিক সহযোগিতার কারণ দেখিয়ে ব্যাংক গ্যারান্টি গ্রহণ করে অগ্রিম বিল প্রদান করা হয়েছে। অগ্রিম হিসেবে দেওয়া বিল সমন্বয়ের আগেই বিলের বিপরীতে প্রদত্ত ব্যাংক গ্যারান্টিগুলো অবমুক্ত করা হয়। প্রথম পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ড্রইং বা ডিজাইন না মেনে সরকারি খাতে ক্রয় পদ্ধতির বিধি বহির্ভূতভাবে দ্বিতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া, অস্বাভাবিক হারে মূল্য দাখিল বা ফ্রন্ট লোডিং থাকা সত্ত্বেও পিপিআর-২০০৮ এর বিধান অনুযায়ী দরপত্র মূল্যায়ন সম্পন্ন না করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
১২০ দিন আগে
বেরোবির দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, ‘একজন’ বরখাস্ত
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) যৌন হয়রানির অভিযোগে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রশীদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে একই অভিযোগে অভিযুক্ত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. তানজিউল ইসলাম জীবনের বিরুদ্ধে এখনও কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিচার বৈষম্যের অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উঠেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৪ জুলাই) রাতে শিক্ষার্থীরা ইউএনবিকে জানান, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা আন্দোলনে নামবেন।
শিক্ষার্থী সুমন, জুয়েল ও মেহেরা আফরোজের অভিযোগ, উপাচার্য বিমাতাসুলভ আচরণ করছেন এবং অভিযুক্ত তানজিউল ইসলামকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন, তবে আমরা তা কোনোদিনই হতে দেব না।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পরিসংখ্যান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১৩শ সভার সিদ্ধান্তক্রমে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী অধ্যাপক ড. মো. রশীদুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ৩ আগস্ট রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর রশিদের সই করা এক আদেশের মাধ্যমে তার বরখাস্তের বিষয়েটি জানানো হয়।
বেরোবি সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমে ওই শিক্ষককে ক্লাস ও পরীক্ষা থেকে এক বছরের জন্য বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়— এমন তথ্য জানাজানি হলে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে উপাচার্যের কাছে তার বহিষ্কার দাবি করেন। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ কয়েকবার সময় নিয়েও ব্যবস্থা না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ডাক দেন। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ওই শিক্ষককে বহিষ্কারের খবর জানানো হয়।
তবে প্রায় একই সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ড. তানজিউল ইসলামের বিরুদ্ধেও পরীক্ষায় নম্বর দেওয়া নিয়ে কারসাজি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপও ছড়িয়ে পড়ে। তাই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই সঙ্গে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তবে চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি শিক্ষক জীবনের বিরুদ্ধে তেমন কিছু খুঁজে পায়নি— এই মর্মে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কিন্তু এত তথ্যপ্রমাণ থাকার পরও তদন্ত কমিটির কোনো কিছু খুঁজে না পাওয়া সন্দেহজনক।
সূত্র বলছে, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষক জীবনকে তার অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে এবং আগামী যেকোনো সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত পাস করিয়ে নেওয়া হবে।
এ খবর জেনে ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষার্থীরা। অনেকেই বলছেন, এই শিক্ষক বিএনপিপন্থি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ভিসির সঙ্গে সখ্যকে কাজে লাগিয়ে তিনি তদন্তকাজ প্রভাবিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বেরোবি প্রশাসনকে ‘শাড়ি-চুড়ি’ দিল শিক্ষার্থীরা
এ ছাড়াও প্রভাবশালী পরিচয়, প্রশাসনের ঘনিষ্ঠতা কিংবা গোপন সমঝোতার জেরে তানজিউল ইসলাম রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন বলেও দাবি অনেকের। শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় নিষ্পত্তিমূলক তদন্ত ও সমান বিচার দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে ড. তানজিউল ইসলাম জীবনের বিপক্ষে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য অ্যাকাউন্টিং বিভাগের শিক্ষক আমির বলেন, ‘আমরা তদন্ত কমিটি গঠন হওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন কবে এটি প্রকাশ করবে তা উপাচার্য জানেন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো শওকত আলী বলেন, ‘আমরা একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছি। সিন্ডিকেট মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করেছি।’
একই অভিযোগ, একই তদন্ত কমিটি। তাহলে একটির ফল সাময়িক বহিষ্কার, অথচ অন্যজন এখনো বহাল— এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা সামনের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে এটা তুলব। তারপর সিদ্ধান্ত নেব। এসব বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স।’
১২১ দিন আগে
বেরোবি প্রশাসনকে ‘শাড়ি-চুড়ি’ দিল শিক্ষার্থীরা
নীতিমালা ভঙ্গ করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ছাত্র রাজনীতি করা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ার প্রতিবাদে প্রশাসনকে শাড়ি ও চুড়ি দিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
এরপর বেরোবির পরিচালক অধ্যাপক ইলিয়াস প্রামাণিক ও প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমানের অনুপস্থিতিতে তাদের চেয়ারে শাড়ি মুড়িয়ে এবং টেবিলে চুড়ি রেখে দেন শিক্ষার্থীরা।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বেরোবির শিক্ষার্থী সামসুর রহমান সুমন ও আশিকুর রহমান আশিক। বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান, রোবায়েদ হাসান, রুম্মানুল ইসলাম রাজসহ অন্যরা।
আরও পড়ুন: শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে বেরোবিতে আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন
‘লেজুড়বৃত্তিক’ ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, এই নোংরা ছাত্র রাজনীতির কারণে আমরা আবু সাঈদকে হারিয়েছি। নোংরা রাজনীতির কারণে এ ক্যাম্পাসে আর কোনো শিক্ষার্থীকে আমরা হারাতে চাই না। আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে আর কোনো রাজনীতির স্থান হবে না। প্রশাসন তাদের প্রশ্রয় দেয় বলেই তারা এ ধরনের কার্যক্রম করার সাহস পাচ্ছে।
বেরোবি প্রশাসনকে উদ্দেশ করে তারা বলেন, আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, আপনারা না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। যারা শিক্ষার্থীদের দাবি ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করতে পারবেন, তাদেরকেই আমরা প্রশাসনিক দায়িত্বে চাই। আমরা কোনোভাবেই আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে রাজনীতি থাকতে দেব না। এ সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা।
বেরোবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির কিছু বিচ্ছিন্ন প্রমাণ আমরা পেয়েছি, যা নিয়ে আমরা কাজও শুরু করে দিয়েছি। তার মধ্যেই আমরা জানতে পারি, শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের লক্ষ্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিকেল পাঁচটায় আলোচনার জন্য ডেকেছিলাম। কিন্তু তারা বিকেল সাড়ে চারটায় তাদের এ কর্মসূচি পালন করেছেন।’
এদিকে বেরোবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধে জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এরই মধ্যে শাড়ি-চুড়ি পড়ানো কর্মসূচির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত ও চলতি বছরের ১৫ এপ্রিলের অফিস আদেশ অনুযায়ী ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ১১১তম সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা হয়।
১৩৭ দিন আগে
শহিদ আবু সাঈদকে স্মরণে প্রস্তুত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় আবু সাঈদকে স্মরণের জন্য প্রস্তুত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। সারা বছরই নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শহিদদের স্মরণ করে আসছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। কিন্তু গত বছরের ১৬ জুলাই ছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের টার্নিং পয়েন্ট।
ওইদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে শহিদ হন। এই ঘটনার পরপরই সারা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। ফলে হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
১৬ জুলাই আবু সাঈদের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতে বেরোবির পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বেরোবিতে ১৬ জুলাই পালিত হবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহিদ আবু সাঈদের শাহাদাতবার্ষিকী ও ‘জুলাই শহিদ দিবস’। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চার উপদেষ্টা। দিনটি ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন থাকবেন প্রধান অতিথি। এই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে চার উপদেষ্টা উপস্থিত থাকবেন, তারা হলেন— আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ৃ পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সিদ্দিক জোবায়ের এবং ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. তানজীমউদ্দীন খান।
দিনটি উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে বেরোবি ক্যাম্পাসে ৬২ ঘণ্টার জন্য বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পড়ুন: জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে বুধবার রাষ্ট্রীয় শোক
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৬ জুলাই শহিদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘জুলাই শহিদ দিবস-২০২৫’ উদযাপনের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ১৩ জুলাই রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১৬ জুলাই বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বেরোবির সকল শিক্ষার্থীকে আইডি কার্ড সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রংপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও দিবসটি পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
বেরোবি প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, জুলাই শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের নিরাপত্তার স্বার্থে এটা করা হয়েছে, যাতে ক্যাম্পাসে কেউ কোনো ধরনের শৃঙ্খলা নষ্ট না করতে পারে। ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কার্ড থাকলে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।
বেরোবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের শাহাদাত বার্ষিকী পালনে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে চারজন উপদেষ্টা উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া আরও ২১ জন শহিদ পরিবারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
গত বছরের ১৬ জুলাই দুপুরে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টায় সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের পরদিন ১২টার মধ্যে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়, কিন্তু ছাত্ররা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে রংপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নামেন। এর ধারাবাহিকতায় ১৯ জুলাই পুলিশ নির্মামভাবে গুলি চালিয়ে ৬ জন সাধারণ পেশাজীবী মানুষকে হত্যা করে। আন্দোলনের চূড়ান্ত রুপ লাভ করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং শেখ হাসিনার পলায়নের মাধ্যমে।
বেরোবি উপাচার্য ড. শওকাত আলী বলেন, ১৬ জুলাই আবু সাঈদকে স্মরণের জন্য সকল প্রস্তুতির আয়োজন করা হয়েছে। শুধু এই দিনটি নয় বছরজুড়ে আমরা আবু সাঈদের স্মরণে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছি।
১৪২ দিন আগে
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
উত্তরের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। শহিদ আবু সাঈদের এই বিশ্ববিদ্যালয় জুলাই বিপ্লবের জন্য একটি ঐতিহাসিক নাম। আবু সাঈদ গুলিতে নিহত হওয়ার পর থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয় নানা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) আগামী ১৬ জুলাই পালিত হতে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহিদ আবু সাঈদের শাহাদাত বার্ষিকী ও ‘জুলাই শহিদ দিবস’। দিনটি উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে বেরোবি ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মোতায়ন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
শনিবার (১২ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী তিন দিন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বহিরাগত প্রবেশ করতে পারবে না। কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়।
এতে বলা হয়, ১৬ জুলাই ২০২৫ শহিদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ‘জুলাই শহিদ দিবস-২০২৫’ উদযাপনের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ১৩ জুলাই রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে আগামী ১৬ জুলাই বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এই সময়ে বেরোবির সকল শিক্ষার্থীকে আইডি কার্ড সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে বেরোবি প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘জুলাই শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের নিরাপত্তার স্বার্থে এটি করা হয়েছে, যাতে ক্যাম্পাসে কেউ কোনো ধরনের শৃঙ্খলা নষ্ট না হয়। ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কার্ড থাকলে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।’
তাহলে নবীন শিক্ষার্থী যারা এখনও স্টুডেন্ট আইডি কার্ড পায়নি তাদের কী হবে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সব বিভাগীয় প্রধানদের বলে দেব, শিক্ষার্থীরা যেন প্রক্টর অফিস থেকে কার্ড নিয়ে নেয়।’
আরও পড়ুন: শহিদ আবু সাঈদ স্মরণে বেরোবিতে আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন
এদিকে, আগামী ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চার উপদেষ্টা। দিনটি ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা। তারা হলেন— আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সিদ্দিক জোবায়ের এবং ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. তানজীমউদ্দীন খান।
সার্বিক বিষয়ে বেরোবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের শাহাদাৎবার্ষিকীতে থাকবেন চার উপদেষ্টা। এ ছাড়া আরও ২১ জন শহিদ পরিবারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে এবং শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী তিন দিন কোনো বহিরাগত প্রবেশ করতে পারবে না।
১৪৫ দিন আগে