���������������-���������������
খেলাধুলার পোশাক ক্যালোর জ্যাকেটের জন্য আইএসপিও অ্যাওয়ার্ড পেল ফকির অ্যাপারেলস
নারীদের উদ্ভাবনী পোশাকের জন্য 'ক্যালর জ্যাকেট'-এর জন্য আইএসপিও অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ পেয়েছে পোশাক শিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ফকির অ্যাপারেলস।
এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক প্রথম বাংলাদেশি প্রস্তুতকারক হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর প্রফেশনাল অ্যাপারেল অ্যান্ড টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি (আইএসপিও) পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছে।
আউটডোর পোশাকে পারফরমেন্স, স্থায়িত্ব ও উদ্ভাবনের প্রতি তাদের অঙ্গীকারের স্বীকৃতি স্বরূপ ফকির অ্যাপারেলসকে এই সম্মানজনক পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে আইএসপিও।
ফকির অ্যাপারেলস প্রথম বাংলাদেশি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইএসপিও অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীর খেতাব অর্জন করেছে।
হাই-অ্যান্ড টেকনিক্যাল পোশাক উৎপাদন সুদূর প্রাচ্যের জন্য একচেটিয়া বলে যে ধারণা করা হয়, তা দূর করতে গিয়ে ফকির অ্যাপারেলস বাংলাদেশের বিস্তৃত প্রবণতার প্রতিফলন ঘটায়।আরও পড়ুন: নতুন মজুরি ডিসেম্বর থেকেই বাস্তবায়ন করবে পোশাক শিল্প
দেশের নির্মাতারা এই বাজারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করছে, তরুণ প্রতিভা, অভিজ্ঞ দক্ষতা এবং উদ্যোক্তা মনোভাবের সম্পদকে কাজে লাগাচ্ছে।
ফকির অ্যাপারেলস ঐতিহ্যগতভাবে সুতি কাপড়ের পোশাকের জন্য পরিচিত। তার ক্লায়েন্ট বেস বজায় রেখে তাদের পণ্যগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সিন্থেটিক এবং সিন্থেটিক মিশ্রণ ঘটিয়েছে।
২০১৮ সালে তারা খেলাধুলার শিল্পে সাফল্যের পাঁচ বছর চিহ্নিত করে একটি বিশেষ প্রযুক্তিগত পোশাক উৎপাদন সুবিধা চালু করেছে।
ফকির অ্যাপারেলস লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির নাফিজুজ্জামান জোর দিয়ে বলেন, ফকির অ্যাপারেলসের যাত্রা এই শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, ক্যালোর জ্যাকেটের মতো সাহসী পদক্ষেপ টেকসইয়ের প্রতি কোম্পানির প্রতিশ্রুতি।
আরও পড়ুন: ভাঙচুর বন্ধ না হলে জীবন ও সম্পদের সুরক্ষায় মালিকেরা কারখানা বন্ধ রাখতে পারবে: বিজিএমইএ
এই বৈপ্লবিক নিবন্ধটি কেবল অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং একটি বৃত্তাকার দর্শনকে সংহত করে না বরং পোশাকের বর্জ্যকে উল্লেখযোগ্য ৯৭ শতাংশ হ্রাস করে।
শিল্পের বিস্তৃত পরিবর্তনের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, হাই-এন্ড টেকনিক্যাল পোশাক উৎপাদন ক্ষমতা দূর প্রাচ্যের নির্মাতাদের জন্য একচেটিয়া বলে যে ধারণা রয়েছে তা এখন আর বিদ্যমান নেই।
ফকির অ্যাপারেলসসহ দেশীয় নির্মাতারা ঐতিহ্যবাহী তুলাভিত্তিক পোশাক থেকে সিন্থেটিক ফাইবার-তৈরি হাই-এন্ড টেকনিক্যাল পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন, যা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত।
ফকির অ্যাপারেলসের যাত্রা এই শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যা প্রযুক্তিগত পোশাক উৎপাদনে বাংলাদেশের দক্ষতা এবং একটি টেকসই ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে।
তিনি আরও বলেন, এর উদ্ভাবনী নকশা এবং গবেষণা ও উন্নয়ন শাখা ফ্যাশন এবং স্পোর্টসওয়্যার শিল্পে টেকসই পরিবর্তন আনতে সক্রিয়ভাবে নিযুক্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: দায়িত্বশীল ক্রয় পদ্ধতিতে মার্কিন অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতা চাইলেন বিজিএমইএ সভাপতি
বাংলাদেশে এখন আরএমজি সেক্টরে ২০৪টি 'সবুজ' কারখানা
'সবুজ' অর্থাৎ পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানায় বিশ্বনেতা হিসেবে নিজের অবস্থান আরও শক্তিশালী করেছে বাংলাদেশ।
দেশের ২০৪টি কারখানা এখন ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) লিড সার্টিফিকেশন (সবুজ কারখানার জন্য প্রশংসাপত্র) পেয়েছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্য অনুসারে, ডিসেম্বরে গোল্ড ক্যাটাগরিতে ইউএসজিবিসি থেকে গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন পেয়েছে আরও একটি বাংলাদেশি পোশাক কারখানা।
১১০ পয়েন্টের মধ্যে ৯৯ পয়েন্ট পাওয়া গাজীপুরের গ্রিন সার্টিফাইড কারখানাটি হলো ‘ইন্টিগ্রা ড্রেসেস লিমিটেড’।
বাংলাদেশ ২০২২ সালে ২৭টি গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে, যার মধ্যে ১৩টি প্লাটিনাম ক্যাটাগরিতে রয়েছে; যা এক বছরে সর্বোচ্চ।
মোট ২০৪টি সবুজ সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত কারখানার মধ্যে ৭৪টি প্লাটিনাম-রেটেড, ১১৬টি গোল্ড-রেটেড এবং বাকিগুলো অন্যান্য-রেটেড।
আরও পড়ুন: দায়িত্বশীল ক্রয় পদ্ধতিতে মার্কিন অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতা চাইলেন বিজিএমইএ সভাপতি
ইউএসজিবিসি’র লিড সার্টিফিকেশন পেতে আরও ৫০০টি কারখানা পাইপলাইনে রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০০টি সর্বোচ্চ মানের লিড গ্রিন কারখানার মধ্যে ৫৪টি বাংলাদেশে রয়েছে।
শুধু তাই নয়, বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০টির মধ্যে ৯টি এবং বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ২০টি লিড সার্টিফিকেশন কারখানার মধ্যে ১৮টি বাংলাদেশে রয়েছে।
এটি সত্যিই গর্বের বিষয় বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০৪ স্কোর পাওয়া কারখানাটি বাংলাদেশেই অবস্থিত।
ইউএসজিবিসি বিভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে কারখানাগুলোকে সম্মানিত করে। যেমন- রূপান্তর কার্যক্ষমতা, জ্বালানি, পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। সেরা পারফর্মারদের প্ল্যাটিনাম দিয়ে রেট দেওয়া হয়, এরপরে গোল্ড ও সিলভার।
আরও পড়ুন: নতুন মজুরি ডিসেম্বর থেকেই বাস্তবায়ন করবে পোশাক শিল্প
নতুন মজুরি ডিসেম্বর থেকেই বাস্তবায়ন করবে পোশাক শিল্প
দায়িত্বশীল ক্রয় পদ্ধতিতে মার্কিন অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতা চাইলেন বিজিএমইএ সভাপতি
আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সিইও স্টিফেন লামারকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)।
চিঠিতে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, 'শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন ও মসৃণ কার্যক্রম নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে যেসব পণ্য পাঠানো হবে, সেগুলোর মূল্য যথাযথভাবে সমন্বয় বা মজুরির হার বৃদ্ধি করা জরুরি।’
বিশ্ববাজারের প্রতিযোগী বাণিজ্য সংস্থা আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) পোশাক, জুতা ও অন্যান্য সেলাই পণ্য সংস্থা এবং তাদের সরবরাহকারীদের প্রতিনিধিত্ব করে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এখন থেকে নতুন ন্যূনতম মজুরি নীতিমালা মেনে সব ধরনের ব্যবসায়িক সমঝোতা ও চুক্তি করতে হবে।
চিঠিতে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আমি বিনীতভাবে এএএফএ সদস্যদের তাদের বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের সঙ্গে যথাযথ সহানুভূতি ও বিবেচনাসহ সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করছি।’
ফারুক বলেন, ‘আমাদের নেওয়া প্রতিটি প্রচেষ্টা ও পদক্ষেপের মাধ্যমে, আমরা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের পরিপূরক হতে চাই, যা পারস্পরিক ও টেকসইভাবে বৃদ্ধি করা। ব্যবসার জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা সরকারের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, 'পরিকল্পিত প্রবৃদ্ধি ও দক্ষতাকে সমর্থন করে উন্নত অবকাঠামো ও নীতি তৈরিতে সরকারের করা উন্নতি ও অগ্রগতি আপনারা অনুসরণ করছেন। আমি নিশ্চিত আপনাদের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতায় আমরা এগিয়ে যেতে পারব।’
লামারকে লেখা চিঠিতে বিজিএমইএ প্রধান বলেন, গত ৭ নভেম্বর সরকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ২০২৩ সালের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে।
ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং শ্রমিক ও নিয়োগকর্তার প্রতিনিধিসহ অংশীজনদের সঙ্গে ব্যাপকভাবে পরামর্শ ও সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
নতুন ন্যূনতম মজুরি অনুযায়ী সপ্তম গ্রেডের শ্রমিকদের মোট ন্যূনতম মাসিক মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা মোট মজুরির ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি এবং মূল মজুরি ৬৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, নতুন ন্যূনতম মজুরি এমন এক সময়ে এসেছে যখন বিশ্ব অর্থনীতি অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তেমনি বাংলাদেশের অর্থনীতিও অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে এই সংকটের প্রভাব পড়ছে, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে জ্বালানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পরিবহনসহ আমাদের সব অভ্যন্তরীণ খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।’
চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার বাড়ায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অর্থায়ন আরও ব্যয়বহুল হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি লিখেছেন, 'আপনারা জানেন, সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ২০১৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক মানের কর্মক্ষেত্র হিসেবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শিল্পকে বিশাল বিনিয়োগ করতে হয়েছে, যা আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে করেছি।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘এখন বৈশ্বিক জলবায়ু অ্যাকশন এজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে, আমাদের কারখানাগুলো জিএইচজি নির্গমন হ্রাস এবং আরও দক্ষ জনশক্তি বাড়াচ্ছে। শুধু তাই নয়, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, শ্রমিকদের স্বাচ্ছন্দ্য ও ক্লান্তি
কমানোর জন্য কারখানাগুলো মেশিন, পদ্ধতি ও উৎপাদন প্রক্রিয়া সময়োপযোগী করছে।’
ফারুক বলেন, ‘এই সমস্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে, বাংলাদেশ একটি নির্ভরযোগ্য, টেকসই এবং সর্বাধিক পছন্দের সোর্সিং গন্তব্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।’ এই সমস্ত উদ্যোগ ও বিনিয়োগগুলো আপেক্ষিক ও নিরঙ্কুশভাবে ব্যবসার উপর প্রভাব ফেলে।’
তিনি বলেন, ‘এখন ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির মাধ্যমে এই শিল্প প্রতিযোগিতা বজায় রেখে শ্রমিকদের উন্নত জীবনযাত্রার মান নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে।’
ফারুক বলেন, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি, বিশেষ করে মূল মজুরি ৬৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে শ্রমিকরা ওভারটাইম সুবিধা, অর্জিত ছুটি নগদীকরণ, উৎসব বোনাসসহ অন্যান্য ভাতার ক্ষেত্রে বেশি লাভবান হচ্ছেন।
তিনি বলেন, 'নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন হলে কারখানাগুলোর ওপর ব্যাপক আর্থিক প্রভাব পড়বে। বর্তমান অর্থনৈতিক ও আর্থিক পরিস্থিতিতে নতুন মজুরি বাস্তবায়ন করা আমাদের অনেক কারখানার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে।’
ফারুক বলেন, শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান নিশ্চিত করা তাদের পাশাপাশি বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সিইওকে লেখা চিঠিতে বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, 'যেহেতু আমরা নতুন ন্যূনতম মজুরি কাঠামো গ্রহণ করেছি, তাই আমরা এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করব এবং দায়িত্বশীল ক্রয় অনুশীলনের ক্ষেত্রে আপনাদের সমর্থন আমাদের প্রয়োজন।’
ভাঙচুর বন্ধ না হলে জীবন ও সম্পদের সুরক্ষায় মালিকেরা কারখানা বন্ধ রাখতে পারবে: বিজিএমইএ
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, যদি কোনো কারখানায় শ্রমিক ভাই-বোনেরা কাজ না করেন, কাজ না করে কারখানা থেকে বের হয়ে যান এবং কারখানা ভাঙচুর করেন; তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিক ভাই-বোন ও সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষায় শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন।
রবিবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় সংগঠনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় বিজিএমইএ সভাপতি বলেছেন, যতদিন না শ্রমিক ভাঙচুর বন্ধ হচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারছে, ততদিন পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষ শিল্প ও সম্পদ রক্ষায় ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন। প্রতিটি উদ্যোক্তার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে বহিরাগতদের হাত থেকে তার নিজস্ব শিল্প ও সম্পদ রক্ষার।’
তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমানে পোশাকখাতে অনেক কারখানায় কাজ কম, ক্রেতারা নতুন করে অর্ডার দেওয়া বন্ধ রেখেছেন, তাই আমরা নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখতে বলেছি। পরিস্থিতি অনূকূলে এলে আবার নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে।’
ফারুক হাসান বলেন, সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ, এ শিল্পকে নিয়ে যারা চক্রান্ত করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন। সেইসঙ্গে শিল্প-কারখানা চালানোর জন্য আমাদেরকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিন। রাজনীতি ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক। এ মূহুর্তে প্রবাসী আয়খাতে মন্থর ধারা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থায় রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প বিশেষ মনোযোগের দাবি রাখে।
সময়ের পরিক্রমায় নূন্যতম মজুরি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেলেও শিল্পের সক্ষমতা সে অর্থে খুব বেশি বাড়েনি জানিয়ে ফারুক হাসান বলেন, চলতি ২০২৩ (পঞ্জিকা বছর) এর প্রথম ৯ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক পোশাক আমদানি ভ্যাল্যুতে কমেছে ২২ দশমিক ৮১ শতাংশ, যেখানে বাংলাদেশ থেকে তাদের আমদানি কমেছে প্রায় ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নে প্রস্তুত বিজিএমইএ: ফারুক হাসান
একই সময়ে সারা পৃথিবী থেকে পরিমাণে আমদানি কমেছে ২৫ দশমিক ১৬ শতাংশ, আর বাংলাদেশ থেকে কমেছে ২৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। শুধুমাত্র আগস্টেই বাংলাদেশ থেকে ভ্যালুতে কমেছে ৩৩ দশমিক ৭১ শতাংশও সেপ্টেম্বরে ৩৪ দশমিক ৭২ শতাংশ।
চলতি ২০২৩ (পঞ্জিকা বছর)- এর প্রথম আট মাসে ইউরোপের বৈশ্বিক আমদানি কমেছে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে কমেছে ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ, শুধুমাত্র আগষ্ট মাসেই কমেছে ২৬ দশমিক ০৬ শতাংশ।
২০২৩ সালের অক্টোবরে দেশের সামগ্রিক রপ্তানি অক্টোবর ২০২২ এর তুলনায় ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে পোশাক রপ্তানির কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রকৃত রপ্তানি পারফরমেন্স ২৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ নিচে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের অন্যতম প্রধান বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পোশাকের দরপতন শুরু হয়েছে, যেটা শিল্পের জন্য নতুন শঙ্কা তৈরি করছে। সার্বিকভাবে বিশ্ববাজার থেকে গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পোশাকের দর ৮ দশমিক ০৩ শতাংশ কমেছে।
তিনি আরও বলেন, একই মাসে (আগস্ট ২০২৩) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যের দর কমেছে ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক কারণের জের ধরে পোশাক শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। বিগত ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সময়ে গ্যাসের মূল্য বেড়েছে ২৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে ২১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত ৫ বছরে পোশাক শিল্পে উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয়; উন্নত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাংক সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে আমাদের ক্রেতাদেরও কস্ট অব ফান্ড বেড়ে গেছে, যার চাপ বহন করতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের।
তিনি আর জানান, ২০১৩ সাল থেকে প্রতিবছরই নিয়মিতভাবে ন্যূনতম ৫ শতাংশ হারে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে কেন্দ্রীয় তহবিল কার্যকর করা হচ্ছে, যা শ্রমিকদের নানামূখী কল্যাণে ব্যয় করা হয়। এই তহবিলের অর্থ শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা পোশাক রপ্তানিতে প্রভাব ফেলবে না: বিজিএমইএ
বাংলাদেশ জুলাইয়ে আরএমজি রপ্তানি করে ৩.৯৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে: বিজিএমইএ
নতুন মজুরি ডিসেম্বর থেকেই বাস্তবায়ন করবে পোশাক শিল্প
সরকারের গঠন করা মজুরি বোর্ড ঘোষিত নতুন মজুরি কাঠামো চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকেই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
তিনি বলেন, আমরা গত ৩১ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলাম, সরকার নতুন যে বেতনকাঠামো ঘোষণা করবে, আমরা পোশাক শিল্পের সব উদ্যোক্তা সেটিই মেনে নেব, শিল্পে যত প্রতিকূলতাই থাকুক না কেন। আমরা ঘোষিত মজুরি মেনে নিয়েছি। যত কষ্টই হোক, এই মজুরি বাস্তবায়ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। নতুন মজুরি কাঠামো আগামী ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
চলমান শ্রমিক বিক্ষোভের মধ্যে বুধবার (৮ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) নূন্যতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা ঘোষণা করেছে সরকার গঠিত ন্যূনতম মজুরি বোর্ড। ঘোষিত নতুন মজুরি কাঠামোতে শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী ৭টি গ্রেডের জায়গায় ৫টি গ্রেড করা হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী মজুরি ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। অনেক উদ্যোক্তার জন্য এই মজুরি দেওয়াই কঠিন হবে। এছাড়াও প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে মজুরি বাড়ানো বহাল রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা পোশাক রপ্তানিতে প্রভাব ফেলবে না: বিজিএমইএ
নূন্যতম মজুরি বোর্ড নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করার পর বেশ কিছু কারখানায় শ্রমিকদের ধর্মঘট ও কারখানা ভাঙচুর করায় দুঃখও প্রকাশ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।
শিল্পের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় ও ক্রেতাদের আস্থা বিনষ্ট হয়- এমন কাজ না করতেও শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
দেশ ও শিল্পের স্বার্থে এবং কর্মসংস্থানকে সুরক্ষিত রাখতে শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার থেকে কারখানায় কাজ করবেন বলে আশা করছেন ফারুক হাসান।
আরও পড়ুন: নতুন ডিসিটিএস স্কিম যুক্তরাজ্যের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব তৈরি করতে পারে: বিজিএমইএ সভাপতি
পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ
পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন মজুরি কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে মজুরি ঘোষণা করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।
২০১৮ সালে সর্বশেষ পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সেই অনুযায়ী, পোশাক শ্রমিকরা ৮ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি পাচ্ছিলেন। সেই হিসেবে আগের তুলনায় ন্যূনতম মজুরি বেড়েছে ৪ হাজার ৫০০ টাকা। মজুরি বৃদ্ধির হার ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নে প্রস্তুত বিজিএমইএ: ফারুক হাসান
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সংস্থার (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার আগেই একদল বহিরাগত নিরীহ গার্মেন্টস শ্রমিকদের উসকানি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার নভেম্বরের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের জন্য নতুন ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করতে পারে এবং বিজিএমইএ সদস্য কারখানাগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে। তাই মজুরি ঘোষণার আগে শ্রমিকদের অস্থিরতা ও আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে পোশাক খাতের সাম্প্রতিক শ্রমিক অস্থিরতা ও ন্যূনতম মজুরি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'আমরা আশা করি, ন্যূনতম মজুরি বোর্ড নভেম্বরের মধ্যে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করবে এবং সরকার নতুন বেতন কাঠামো হিসেবে যা-ই ঘোষণা করুক না কেন, গার্মেন্টস শিল্পে যত চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন, তা মেনে নেবেন। আগামী ডিসেম্বর থেকে নতুন মজুরি কাঠামো কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি।
আরও পড়ুন: জানুয়ারি-আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ: ওটেক্সা
তিনি বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়ার পাশাপাশি জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আমাদের শ্রমিক ভাই-বোনেরা কতটা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, সে বিষয়ে আমরা পুরোপুরি অবগত। প্রতিটি উদ্যোক্তার দুর্দশায় আমরা তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্যোক্তাদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিটি শ্রমিক ভাই-বোনকে যথাসম্ভব ভালো রাখা। শ্রমিকরা আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের প্রাণ। তারা যদি ভালো হয়, তাহলে ইন্ডাস্ট্রি ভালো থাকবে।’
ফারুক বলেন, 'আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, গত কয়েকদিন ধরে বহিরাগতদের প্ররোচনায় কিছু পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কাজ না করে কারখানা ছেড়ে চলে যাচ্ছে, কারখানা ভাঙচুর করছে, ফলে অনেক উদ্যোক্তা কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন।’
আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, বহিরাগতদের উসকানির কারণে পোশাক কারখানা, চামড়া কারখানা, রাসায়নিক গুদাম, ফেব্রিক গুদাম, দোকানপাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ইইউতে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১১.৪৭%
চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ইইউতে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১১.৪৭%
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৫ দশমিক ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।
বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেলের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘স্পেনে ২৩ দশমিক ২৬ শতাংশ, ফ্রান্সে ৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ, নেদারল্যান্ডসে ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং ইতালিতে ২৩ দশমিক ২২ শতাংশ আমাদের রপ্তানি বেড়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার জার্মানিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ কমে ১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমেছে।
তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ২ দশমিক ০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে যুক্তরাজ্য ও কানাডায় রপ্তানি যথাক্রমে ২১ দশমিক ৩৫ শতাংশ ও ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ৩৫২ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।
আরও পড়ুন: জানুয়ারি-আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ: ওটেক্সা
বিজিএমইএ পরিচালক বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে অপ্রচলিত বাজারে পোশাক রপ্তানি ২৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে ২ দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রধান অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ায় রপ্তানি যথাক্রমে ৩৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ, ৫৪ দশমিক ১১ শতাংশ এবং ৩৭ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বেড়েছে। তবে ভারতে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন: আরএমজি শিল্পে ন্যূনতম ১৭ হাজার ৫৬৮ টাকা মজুরির সুপারিশ সিপিডির
জানুয়ারি-আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ: ওটেক্সা
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (ওটেক্সা) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের প্রথম আট মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৫ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী দেশ বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিলে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৩৮.৫৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে
ওটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক পোশাক আমদানি ২২ দশমিক ৭৭ শতাংশ কমে ৫৩ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ৬৯ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার।
চীন, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়াসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্থানীয় পোশাক আমদানির উৎসগুলো মূল্য ও পরিমাণ উভয় দিক থেকেই উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।
সবচেয়ে বড় পোশাক আমদানির উৎস চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি কমেছে ২৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস ভিয়েতনাম থেকে আমদানি কমেছে ২৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, মেক্সিকো, হন্ডুরাস, পাকিস্তান ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি কমেছে যথাক্রমে ২১ দশমিক ৫৯ শতাংশ, ২৬ দশমিক ০৯ শতাংশ, ২৭ দশমিক ২৮ শতাংশ, ৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ, ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ, ২৯ দশমিক ২৪ শতাংশ ও ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় ইউনিয়নে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৯.৯৩ শতাংশ
এলডিসি-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাধার সম্মুখীন হতে পারে: বাণিজ্য সচিব
আরএমজি শিল্পে ন্যূনতম ১৭ হাজার ৫৬৮ টাকা মজুরির সুপারিশ সিপিডির
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) রবিবার (৮ অক্টোবর) জীবনযাত্রার ব্যয়ের গবেষণার ভিত্তিতে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের কর্মীদের জন্য প্রবেশ স্তরে ন্যূনতম মজুরি ১৭ হাজার ৫৬৮ টাকা সুপারিশ করেছে।
বর্তমানে, গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর-এ মজুরি বোর্ড দ্বারা নির্ধারিত হয়েছে ৮ হাজার টাকা।
সিপিডি জানিয়েছে, বিদেশি ক্রেতারা পোশাক প্রতি অতিরিক্ত ৭ সেন্ট দিলে কারখানার মালিকরা এই মজুরি দিতে চাপে পড়বেন না।
পোশাক খাতের জন্য ন্যূনতম মজুরি সংশোধন, মনিটরিং ও সুপারিশ সংলাপে সিপিডি এই প্রস্তাব দিয়েছে। ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাবিত বৃদ্ধি সিপিডি কর্তৃক পরিচালিত গার্মেন্টস সেক্টরের উপর একটি ব্যাপক জরিপের ফলাফলের মাধ্যমে করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঝুঁকিপূর্ণ ৮৫৬টি পোশাক কারখানায় নজরদারির সুপারিশ সিপিডির
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ৭৬টি কারখানায় ২২৮ জন শ্রমিক নিয়ে জরিপ করে তারা এ প্রস্তাব দিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ও সিনিয়র গবেষণা সহকারী তামিম আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ন্যূনতম মজুরি বোর্ডে মালিক প্রতিনিধি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের শ্রমিক প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সরকার ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল একটি নতুন ন্যূনতম মজুরি বোর্ড স্থাপন করেছিল। ত্রিপক্ষীয় পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে আরএমজি শিল্পের জন্য নতুন ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
বোর্ড ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছে, এবং আগামী মাসের মধ্যে নতুন ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ন্যূনতম মজুরির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে এই কারণে যে এটি আরএমজি শিল্পের সামগ্রিক প্রতিযোগিতা এবং শ্রমিকদের জীবিকার উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে।
তাই, মজুরির বর্তমান কাঠামো পরীক্ষা করা এবং শ্রমিকদের ন্যায্য ন্যূনতম মজুরি পেতে দেয় এমনভাবে একটি নতুন মজুরি নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: সচেতনতার অভাবে দূষণের মারাত্মক ঝুঁকি : সিপিডি
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি আমদানিতে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন বাংলাদেশের: সিপিডি