ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দলের নেতারা।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মনিরা হকের কাছে তার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়।
তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনায় রেখে এই আসনটিতে বিকল্প প্রার্থীও রেখেছে দলটি। এ কারণে আসনটিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক ও ওই আসনের নির্বাচনি সমন্বয়ক রফিকুল আলম মজনুও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
ফেনী-১ আসন থেকে এর আগে পাঁচ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আজ (সোমবার) খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু তালেব, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার, আলাল উদ্দিন আলালসহ জেলা-উপজেলার নেতা-কর্মীরা।
এই আসনে বিকল্প প্রার্থী ঠিক করে রাখার ব্যাপারে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, নেত্রী অসুস্থ থাকায় বিকল্প প্রার্থী রাখা হয়েছে। যদি শেষ মুহূর্তে তিনি ভোটে দাঁড়াতে না পারেন, তখন বিকল্প চিন্তা করা হবে। তবে খালেদা জিয়া মাঠে না থাকলেও তার পক্ষে প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু তালেবের নেতৃত্বে গত ২১ ডিসেম্বর বিকেলে ফেনী-১ আসন থেকে খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন দলটির নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়া এই আসন থেকে ১৯৯১, ১৯৯৬ (দুইবার), ২০০১ ও ২০০৮ সালের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। আসনটি বরাবরই খালেদা জিয়ার আসন হিসেবে পরিচিত। এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে তিনি তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ইতোমধ্যে এই আসনে তার পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচারপত্র বিলি করছেন স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা।
একই সময়ে ফেনী-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জামায়াত মনোনীত প্রার্থী এস এম কামাল উদ্দিন; ফেনী-২ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া; ফেনী-৩ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
ফেনী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মনিরা হক বলেন, ফেনী-১ আসনে ১৩, ফেনী-২ আসনে ১৬ এবং ফেনী-৩ আসনে ১৬ জনসহ মোট ৪৫ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ছিল আজ (সোমবার) বিকেল ৫টা।
১১ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এরপর গত ১৮ ডিসেম্বর তফসিল-সংক্রান্ত সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি। সেখানে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার সময় দুদিন কমিয়ে আপিল নিষ্পত্তির সময় দুদিন বাড়ানো হয়।
সংশোধিত তফসিলের নির্বাচন সময়সূচি অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ৫ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে, আপিল নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে, আর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে প্রতীক বরাদ্দ করবেন ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হবে ২২ জানুয়ারি। প্রচার চালানো যাবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। আর ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি।