পূর্ববিরোধের জের ধরে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে দুজন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত ১৯ জনকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রশাসন উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরের পরপরই উত্তেজনা দানা বাঁধতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ই সংঘর্ষে রুপ নেয়। এরপর বিকাল ৫টা থেকে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ফেসবুকে একে অপরের বিরুদ্ধে লেখালেখি নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আশাহিদ আলীকে গত ৪ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলার আনমুন এলাকায় মারধর করেন অপর গণমাধ্যমকর্মী সেলিম তালুকদার ও তার লোকজন। এ সময় আনমুন গ্রামের লোকজন হামলাকারীদের মধ্য থেকে ২ তরুণকে আটক করে পুলিশে দেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে পানিতে ডুবে দুই শিশু নিহত
পুলিশে দেওয়া এই দুই তরুণের বাড়ি উপজেলার তিমিরপুর গ্রামে। এ ঘটনায় তিমিরপুর গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এ নিয়ে তিন দিন আগে ওই দুই গ্রামের মানুষের মারামারিও হয়। সেই মারামারির সূত্র ধরে গতকাল (সোমবার) দুপুরে ঘোষণা দিয়ে আনমুন ও তিমিরপুর গ্রামের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে জড়ো হতে থাকেন নিজ নিজ এলাকায়। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুপক্ষ।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের লোকজন ইটপাটকেল, বল্লম, ধারালো অস্ত্রসহ নানা দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করেন। সংঘর্ষকালে উভয় পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হন। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি দোকানপাট। এতে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে পূর্ব তিমিরপুরের ফারুক মিয়া (৪০) ও আনমনু গ্রামের রিমন মিয়া (২৫) নামে দুই ব্যাক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কামরুজ্জামান জানান, ওই ঘটনার নিয়ন্ত্রণ ও পরিস্থিতি যাতে আর অবনতি না হয়, সে কারণে সোমবার বিকাল ৪টা থেকে নবীগঞ্জ উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
আজ মধ্যরাত পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো. রুহুল আমিন।